27/08/2022
যাদু টোনার লক্ষণসমূহ:
বিমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
বিভিন্ন ধরনের যাদু টোনা বা কুফুরিকালাম এ আক্রান্তদের বিভিন্ন রকম উপসর্গ কিছু লক্ষন দিলাম মিলিয়ে দেখুন......
1। একাকী সময় কাটানো। নীরব থাকা, কেউ কথা বলতে চাইলে বিরক্ত মনে করা। বুক ধরফড় করা। খাবারে অরুচি হওয়া। শরীর ব্যাথা বেদনা করা। অবসাদগ্রস্থ থাকা। মাঝে মধ্যে বমি বমি ভাব হওয়া।, বদহজম হওয়া।
যদি আপনি স্বপ্নে মল মুত্র দেখেন, অথবা নিজেকে বা অন্যকে মলমুত্রে মাখানো দেখে থাকেন অথবা নিজেকে নোংরা পুকুর বা পানিতে গোসল করতে দেখেন,স্বপ্নে জিনা করতে দেখেন,মহিলা বা পুরুষ কে নগ্ন দেখেন ।
2। যৌন ক্রিয়ার আকাঙ্ক্ষা বেড়ে যাওয়া, মেয়ে বাজি করা, মাদক আসক্ত হওয়া,ধর্ম কর্ম এর অনুশাসন না মানা, নামাজ কালাম পড়তে ইচ্ছা না করা , ভুল পথে চালিত হওয়া।
3। প্রায় ই মাথা ধরা বা ব্যাথাহয়ে থাকে, চেহারায় ও মাথায় গোটা হওয়া,
চেহারা কালো হওয়া, চেহারার উজ্জ্বলতা কমে ভয়ানক হয়ে যাওয়া ।
4। গলা বা কণ্ঠ খারাপ থাকা, চোখ লাল থাকা, জ্বালা করা
সর্ব শরীরে সূচ এর খোঁচার মতো করা, শরীর জ্বালাপোড়া করা ।
5। হাঁটু তে কব্জি তে কোমরে, ঘাড়ে এবং শরীরের হাড়ের জয়েন্টে ব্যাথা করা, শরীর কাপুনি দেয়া, অস্বাভাবিক ঘাম হওয়া ।
6। শরীর সব সময় গরম থাকা, নাক, মুখ, হাতের তালু, পায়ের পাতা দিয়ে গরম ভাপ বের হওয়া বা জ্বালাপোড়া করা।
7। হার্টবিট বেড়ে যাওয়া, মনে যে কোন ব্যাপারে ভয় লাগা, মন ঘাবড়ানো, মনে আজব আজব চিন্তা আসা, দিনে বা রাতে আজেবাজে ভয়ানক স্বপ্ন দেখা, শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, শ্বাসে দুর্গন্ধ হওয়া।
8। খাবার খাওয়ার ঘণ্টা খানেকের মধ্যে আবার ক্ষিদা লাগা,
শরীর লিকলিকে হওয়া যাওয়া, পেটে ব্যাথা থাকা, পেট ফুলে থাকা,
পায়খানা, প্রস্রাবে, গ্যাস এ প্রচণ্ড দুর্গন্ধ বের হওয়া।
9। দিনে দিনে শরীরের শক্তি কমে যাওয়া, মাথা ভারী হওয়া, শরীর ভারী হওয়া, ঔষধ কাজ না করা , ঔষধ প্রথমে কাজ করলেও পড়ে রিএকশন করা, যেকোনো কাজ হওয়ার কথা থাকলেও হয়না, কোনোকিছু ই এগোয় না, কাজ করার ইচ্ছা কমে যাওয়া, সোজাকথায় দিনে দিনে অলস হয়ে যাওয়া ।
এছাড়াও আরো অনেক আলামত আছে যা পরবর্তীতে পোষ্ট করব ইন শা আল্লাহ।
যাদুর প্র্রতিকার:
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। যাদুটোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসার বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে:
এক: যাদুকর কিভাবে যাদু করেছে সেটা আগে জানতে হবে। উদাহরণতঃ যদি জানা যায় যে, যাদুকর কিছু চুল নির্দিষ্ট কোন স্থানে অথবা চিরুনির মধ্যে অথবা অন্য কোন স্থানে রেখে দিয়েছে। যদি স্থানটি জানা যায় তাহলে সে জিনিসটি পুড়িয়ে ফেলে ধ্বংস করে ফেলতে হবে যাতে যাদুর কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায়, যাদুকর যা করতে চেয়েছে সেটা বাতিল হয়ে যায়।
দুই: যাদু নষ্ট করার ক্ষেত্রে ঝাড়ফুঁকের বড় ধরনের প্রভাব রয়েছে: এর পদ্ধতি হচ্ছে-
যাদুতে আক্রান্ত রোগীর উপর অথবা কোন একটি পাত্রে আয়াতুল কুরসি অথবা সূরা আরাফ, সূরা ইউনুস, সূরা ত্বহা এর যাদু বিষয়ক আয়াতগুলো পড়বে। এগুলোর সাথে সূরা কাফিরুন, সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস পড়বে এবং রোগীর জন্য দোয়া করবে।
দোয়াগুলো পড়ে পানিতে ফুঁ দিতে হবে। এরপর যাদুতে আক্রান্ত ব্যক্তি সে পানি পান করবে। আর অবশিষ্ট পানি দিয়ে প্রয়োজনমত একবার বা একাধিক বার গোসল করবে। তাহলে আল্লাহর ইচ্ছায় রোগী আরোগ্য লাভ করবে।
তিন : সাতটি কাঁচা বড়ই পাতা সংগ্রহ করে পাতাগুলো গুঁঁড়া করবে। এরপর গুঁড়াগুলো পানিতে মিশিয়ে সে পানিতে উল্লেখিত আয়াত ও দোয়াগুলো পড়ে ফুঁ দিবে। তারপর সে পানি পানি করবে; আর কিছু পানি দিয়ে গোসল করবে। যদি কোন পুরুষকে স্ত্রী-সহবাস থেকে অক্ষম করে রাখা হয় সেক্ষেত্রেও এ আমলটি উপকারী। সাতটি বড়ই পাতা পানিতে ভিজিয়ে রাখবে। তারপর সে পানিতে উল্লেখিত আয়াত ও দোয়াগুলো পড়ে ফুঁ দিবে। এরপর সে পানি পান করবে ও কিছু পানি দিয়ে গোসল করবে।
যাদুগ্রস্ত রোগী ও স্ত্রী সহবাসে অক্ষম করে দেয়া ব্যক্তির চিকিৎসার জন্য বরই পাতার পানিতে যে আয়াত ও দোয়াগুলো পড়তে হবে সেগুলো নিম্নরূপ:
১- সূরা ফাতিহা পড়া।
২- আয়াতুল কুরসি তথা সূরা বাকারার ২৫৫ নং আয়াত পড়া।
اَللّٰهُ لَآ اِلٰهَ اِلَّا ھُوَۚ اَلْـحَيُّ الْقَيُّوْمُ لَا تَاْخُذُهٗ سِـنَةٌ وَّلَا نَوْمٌۭ لَهٗ مَا فِي السَّمٰوٰتِ وَمَا فِي الْاَرْضِۭ مَنْ ذَا الَّذِيْ يَشْفَعُ عِنْدَهٗٓ اِلَّا بِاِذْنِهٖ ۭ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ اَيْدِيْهِمْ وَمَا خَلْفَھُمْ ۚ وَلَا يُحِيْطُوْنَ بِشَيْءٍ مِّنْ عِلْمِهٖٓ اِلَّا بِمَا شَاۗءَۚ وَسِعَ كُرْسِـيُّهُ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضَ ۚ وَلَا يَـــــُٔـــوْدُهٗ حِفْظُهُمَاۚ وَھُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيْمُ
৩- সূরা আরাফের যাদু বিষয়ক আয়াতগুলো পড়া। সে আয়াতগুলো হচ্ছে-
قَالَ إِنْ كُنْتَ جِئْتَ بِآيَةٍ فَأْتِ بِهَا إِنْ كُنْتَ مِنَ الصَّادِقِينَ (106) فَأَلْقَى عَصَاهُ فَإِذَا هِيَ ثُعْبَانٌ مُبِينٌ (107) وَنَزَعَ يَدَهُ فَإِذَا هِيَ بَيْضَاءُ لِلنَّاظِرِينَ (108) قَالَ الْمَلَأُ مِنْ قَوْمِ فِرْعَوْنَ إِنَّ هَذَا لَسَاحِرٌ عَلِيمٌ (109) يُرِيدُ أَنْ يُخْرِجَكُمْ مِنْ أَرْضِكُمْ فَمَاذَا تَأْمُرُونَ (110) قَالُوا أَرْجِهْ وَأَخَاهُ وَأَرْسِلْ فِي الْمَدَائِنِ حَاشِرِينَ (111) يَأْتُوكَ بِكُلِّ سَاحِرٍ عَلِيمٍ (112) وَجَاءَ السَّحَرَةُ فِرْعَوْنَ قَالُوا إِنَّ لَنَا لَأَجْرًا إِنْ كُنَّا نَحْنُ الْغَالِبِينَ (113) قَالَ نَعَمْ وَإِنَّكُمْ لَمِنَ الْمُقَرَّبِينَ (114) قَالُوا يَا مُوسَى إِمَّا أَنْ تُلْقِيَ وَإِمَّا أَنْ نَكُونَ نَحْنُ الْمُلْقِينَ (115) قَالَ أَلْقُوا فَلَمَّا أَلْقَوْا سَحَرُوا أَعْيُنَ النَّاسِ وَاسْتَرْهَبُوهُمْ وَجَاءُوا بِسِحْرٍ عَظِيمٍ (116) وَأَوْحَيْنَا إِلَى مُوسَى أَنْ أَلْقِ عَصَاكَ فَإِذَا هِيَ تَلْقَفُ مَا يَأْفِكُونَ (117) فَوَقَعَ الْحَقُّ وَبَطَلَ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ (118) فَغُلِبُوا هُنَالِكَ وَانْقَلَبُوا صَاغِرِينَ (119) وَأُلْقِيَ السَّحَرَةُ سَاجِدِينَ (120)قَالُوا آمَنَّا بِرَبِّ الْعَالَمِينَ (121) رَبِّ مُوسَى وَهَارُونَ (122)
[সূরা আরাফ, আয়াত: ১০৬-১২২]
৪- সূরা ইউনুসের যাদুবিষয়ক আয়াতগুলো পড়া। সেগুলো হচ্ছে-
وَقَالَ فِرْعَوْنُ ائْتُونِي بِكُلِّ سَاحِرٍ عَلِيمٍ (79) فَلَمَّا جَاءَ السَّحَرَةُ قَالَ لَهُمْ مُوسَى أَلْقُوا مَا أَنْتُمْ مُلْقُونَ (80) فَلَمَّا أَلْقَوْا قَالَ مُوسَى مَا جِئْتُمْ بِهِ السِّحْرُ إِنَّ اللَّهَ سَيُبْطِلُهُ إِنَّ اللَّهَ لَا يُصْلِحُ عَمَلَ الْمُفْسِدِينَ (81) وَيُحِقُّ اللَّهُ الْحَقَّ بِكَلِمَاتِهِ وَلَوْ كَرِهَ الْمُجْرِمُونَ
[সূরা ইউনুস, আয়াত: ৭৯-৮২]
৫- সূরা ত্বহা এর আয়াতগুলো পড়া। সেগুলো হচ্ছে-
قَالُوا يَا مُوسَى إِمَّا أَنْ تُلْقِيَ وَإِمَّا أَنْ نَكُونَ أَوَّلَ مَنْ أَلْقَى (65) قَالَ بَلْ أَلْقُوا فَإِذَا حِبَالُهُمْ وَعِصِيُّهُمْ يُخَيَّلُ إِلَيْهِ مِنْ سِحْرِهِمْ أَنَّهَا تَسْعَى (66) فَأَوْجَسَ فِي نَفْسِهِ خِيفَةً مُوسَى (67) قُلْنَا لَا تَخَفْ إِنَّكَ أَنْتَ الْأَعْلَى (68) وَأَلْقِ مَا فِي يَمِينِكَ تَلْقَفْ مَا صَنَعُوا إِنَّمَا صَنَعُوا كَيْدُ سَاحِرٍ وَلَا يُفْلِحُ السَّاحِرُ حَيْثُ أَتَى (69)
[সূরা ত্বহা, আয়াত: ৬৫-৬৯]
৬- সূরা কাফিরুন পড়া।
৭- সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস ৩ বার করে পড়া।
৮- কিছু দোয়া দরুদ পড়া।