26/04/2025
২০১১ সালের কথা। মাত্র ইন্টার্ন শেষ করেছি। ঢাকায় এসে দেখি প্রাইভেট হাসপাতাল গুলো জবের জন্য রীতিমত কাড়াকাড়ি অবস্থা । ডিউটি ডাক্তার খুঁজে পায় না তারা। তাই খুব সহজে একজন পাশ করা ডাক্তার হ্যান্ডসাম স্যালারিতে জব পেয়ে যেতো। তখন চাকুরির জন্য বিয়া আটকে থাকত না।
যারা একটু চতুর, তারা একসাথে ৩ হাসপাতালে একি রোস্টারে জব করত। আমার MMC এর এক বড় ভাই একি সাথে পাশাপাশি ৩ হাসপাতালে একি রোস্টারে ডিউটি করত (মডার্ণ, কিডনি এন্ড জেনারেল, প্যানোরমা হাসপাতাল) 😛 । বলা চলে ৩ হাসপাতালে একসাথে অন কল ডাক্তার। সাথে সাথে মৌসুমী ডাক্তার হিসেবে কুমিল্লা, নোয়াখালীর বড় মাত্রায় খ্যাপ। সাথে চলত পোস্ট গ্রাজুয়েশন অনাহারী (অনারারী) ট্রেইনিং।
কিন্তু দিন বদলে গেছে। এখন দিনে দিনে পাশ করা ডাক্তার এর সংখ্যা এতোই বেড়েছে যে, ছোট খাটো একটা হাসপাতালে একজন ডিউটি ডাক্তার পদের জন্য ধন্না দিতে হয় মাসের পর মাস। বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন করা ডাক্তার এর সংখ্যাই প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজারের মতো আর বেনামে, ভুয়া ডাক্তার লাখ ছাড়াবে।
পোস্ট খালি নাই নোটিশও দেখা যায় অনেক হাসপাতালে। সিভি জমা দিয়ে রেখে ধুলায় গড়ায়। তবুও কল আসে না। আজকাল দেখি প্রাইভেট হাসপাতাল গুলো বিনা বেতনে চিকিৎসক খুঁজতেছে। প্রতিযোগিতার মার্কেটে সুযোগ নিচ্ছে প্রাইভেট হাসপাতাল গুলো।
এদিকে এমবিবিএস পাশ করে বাবা মায়ের কাছে হাত পাতাও লজ্জার ব্যাপার। অন্য দিকে বয়স ও বিবাহের দিকে তাকানোর সময় নাই পোস্ট গ্রাজুয়েশন এর কথা ভেবে। দোটানায় নাও বেয়ে কুল কিনারা নাই বেশির ভাগের। সরকার এমবিবিএস পাশের গ্যারান্টি দিলেও সরকারী চাকুরীর নিশ্চয়তা দেয় না। আশির দশকের মত পাশের পর সরকারি চাকুরি ও মোটরসাইকেল পাওয়া এখন রীতিমত ইতিহাস।
সরকারী মেডিকেলে না হয় খরচ কম, কিন্তু প্রাইভেট মেড়িকেলে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা খরচ করে এমবিবিএস পাশ করে নামের সাথে বেকার ডাক্তার লাগানোর কষ্ট কেউ বুঝবে না। বন্ধুমহল ভাববে আপনি হাজার ডলার কামান মিনিটে মিনিটে।
এখনি ভাবার সময়। কি অবস্থা হবে আরো ৫ বছর পর। কি অবস্থা হবে ১৫ বছর পর।। পোস্ট ফাঁকার জন্য খুন করে সিট দখল করতে হবে।।
সবাই ভাবে ডাক্তার মানেই হেব্বি টাকাওয়ালা। কিন্তু সেটা শুধুমাত্র কয়েকজন নামকরা বড় মাপের প্রফেসরের বেলায় প্রযোজ্য। বাকিরা গড়ের মাঠের না খাওয়া জমিদার। সো, এখনি চিন্তা করে দেখেন। ড্রিম কিন্তু ড্রিম নয়, এখন নাইটমেয়ার হয়ে গেছে।