16/05/2023
★ব্যাথা, বেদনা, বাত, বাতের ব্যাথা, গিরা ব্যাথা★
Posted :- Miss.Nilufa Yesmin.
ব্যথার ধরন, ব্যথার কারণ ইত্যাদি লক্ষণ মিলিয়ে ঔষধ খেতে হবে। সব ধরনের ব্যথায় একই ঔষধ খেলে চলবে না।
Aconite nap:
একোনাইট ব্যথার একটি সেরা ঔষধ। সাধারণতঃ ভয়ঙ্কর ধরণের ব্যথা, ছুড়ি মারার মতো ব্যথা, হুল ফোটানোর ব্যথা, ব্যথার চোটে দম বন্ধ হয়ে আসে, ব্যথা যদি হঠাৎ দেখা দেয় এবং ব্যথার চোটে যদি ‘এখনই মরে যাব’ এমন ভয় হতে থাকে, তবে একোনাইট খেতে হবে।
Arnica mont:
যেকোন ধরনের আঘাত, থেতলানো, মচকানো, মোচড়ানো বা উপর থেকে পতনজনিত ব্যথায় আর্নিকা খেতে হবে। পেশী বা মাংশের ব্যথায় আর্নিকা এক নম্বর ঔষধ। শরীরের কোন একটি অঙ্গের বেশী ব্যবহারের ফলে যদি তাতে ব্যথা শুরু হয়, তবে আর্নিকা খেতে ভুলবেন না। যদি শরীরের কোন অংশে এমন তীব্র ব্যথা থাকে যে, কাউকে তার দিকে আসতে দেখলেই সে ভয় পেয়ে যায় (কারন ধাক্কা লাগলে ব্যথার চোটে তার প্রাণ বেরিয়ে যাবে), এমন লক্ষণে আর্নিকা প্রযোজ্য। আঘাত পাওয়ার কয়েক বছর পরেও যদি সেখানে কোন সমস্যা দেখা দেয়, তবে আর্নিকা সেটি নিরাময় করবে।
Bryonia alb:
মাথা ব্যথা, জয়েণ্টের ব্যথা, হাড়ের ব্যথা, মাংশের ব্যথা, বুকের ব্যথা, বাতের ব্যথা প্রভৃতিতে ব্রায়োনিয়া সেবন করতে পারেন যদি সেই ব্যথা নড়াচড়া করলে বেড়ে যায়। ব্রায়োনিয়ার লক্ষণ হলো আক্রান্ত অঙ্গ যত বেশী নড়াচড়া করবে, ব্যথা তত বেশী বৃদ্ধি পেতে থাকে।
Rhus Tox:
পক্ষান্তরে মাথা ব্যথা, জয়েণ্টের ব্যথা, হাড়ের ব্যথা, মাংশের ব্যথা, বুকের ব্যথা, বাতের ব্যথা প্রভৃতিতে রাস টক্স সেবন করতে পারেন যদি সেই ব্যথা নড়াচড়া করলে কমে যায়। রাস টক্সের লক্ষণ হলো আক্রান্ত অঙ্গ যত বেশী নড়াচড়া করবে, ব্যথা তত বেশী কমতে থাকে। খুব ভারী কিছু উঠাতে গিয়ে কোমরে বা শরীরের অন্য কোন স্থানে ব্যথা পেলে রাস টক্স এক নাম্বার ঔষধ।
Chamomilla:
যদি ব্যথার তীব্রতায় কোন রোগী দিগ্বিদিক জ্ঞানশূণ্য হয়ে পড়ে, তার ভদ্রতাজ্ঞানও লোপ পেয়ে যায়, সে ডাক্তার বা নার্সকে পযর্ন্ত গালাগালি দিতে থাকে, তবে তাকে ক্যামোমিলা খাওয়াতে হবে। ক্যামোমিলা হলো অভদ্র রোগীদের ঔষধ।
Colchicum:
কলচিকাম গেটে বাত বা জয়েন্টের ব্যথায় ব্যবহৃত হয়। ছোট ছোট জয়েন্টের বাতে এবং বিশেষতঃ পায়ের বৃদ্ধাঙুলের বাতের ব্যথায় কলচিকাম প্রযোজ্য। কলচিকামের প্রধান লক্ষণ হলো খাবারের গন্ধে বমি আসে এবং আক্রান্ত অঙের জোর/শক্তি কমে যায়।
Hypericum perf:
যেসব আঘাতে কোন স্মায়ু ছিড়ে যায়, তাতে খুবই মারাত্মক ব্যথা শুরু হয়, যা নিবারণে হাইপেরিকাম খাওয়া ছাড়া গতি নেই। শরীরের সপর্শকাতর স্থানে আঘাত পেলে বা কিছু বিদ্ধ হলে হাইপেরিকাম খেতে হবে ঘনঘন। যেমন- ব্রেন বা মাথা, মেরুদন্ড, (পাছার নিকটে) কণ্ডার হাড়ে, আঙুলের মাথায়, অণ্ডকোষে ইত্যাদি ইত্যাদি। (তবে যেসব ক্ষেত্রে পেশী এবং স্নায়ু দুটোই আঘাত প্রাপ্ত হয়েছে বলে মনে হয়, তাতে আনির্কা এবং হাইপেরিকাম একত্রে মিশিয়ে খেতে পারেন।) আঘাতের স্থান থেকে প্রচণ্ড ব্যথা যদি চারদিকে ছড়াতে থাকে বা খিঁচুনি দেখা দেয় অথবা শরীর ধনুকের ন্যায় বাঁকা হয়ে যায় (ধনুষ্টঙ্কার), তবে হাইপেরিকাম ঘনঘন খাওয়াতে থাকুন।
Ledum pal:
সূচ, আলপিন, তারকাটা, পেরেক, টেটা প্রভৃতি বিদ্ধ হলে ব্যথা কমাতে এবং ধনুষ্টঙ্কার/খিচুনি ঠেকাতে লিডাম ঘনঘন খাওয়ান। অর্থাৎ যেসব ক্ষেত্রে কোনকিছু শরীরের অনেক ভেতরে ঢুকে যায়, তাতে লিডাম প্রযোজ্য। এই ক্ষেত্রে লিডাম ব্যথাও দূর করবে এবং ধনুষ্টংকার হলে তাও সারিয়ে দেবে। চোখে ঘুষি বা এই জাতীয় কোনো আঘাত লাগলে লিডাম এক ঘণ্টা পরপর খেতে থাকুন। বাতের ব্যথায় উপকারী বিশেষত যাদের পা দুটি সব সময় ঠান্ডা থাকে।
Kali b**h:
ক্যালি বাইক্রোম প্রধান লক্ষণ হলো ব্যথা আঙুলের মাথার মতো খুবই অল্প জায়গায় হয়ে থাকে, ব্যথা ঘন ঘন জায়গা বদল করে ইত্যাদি ইত্যাদি।
Plantago Major:
দাঁত, কান এবং মুখের ব্যথায় প্লানটাগো মেজর এমন চমৎকার কাজ করে যে, তাকে এক কথায় যাদু বলাই যুক্তিসঙ্গত। পত্রিকায় দেখলাম, একজন প্রখ্যাত সাংবাদিকের দাঁতব্যথা সারাতে না পেরে ডেন্টিস্টরা শেষ পযর্ন্ত একে একে তাঁর ভালো ভালো চারটি দাঁতই তুলে ফেলেছেন। আহা। বেচারা ডেন্টিস্টরা যদি প্লানটাগো’র গুণের কথা জানত, তবে প্রবীন এই সাংবাদিকের দাঁতগুলো বেচেঁ যেতো।
Pulsatilla:
পালসেটিলা’র ব্যথার প্রধান লক্ষণ হলো ব্যথা ঘনঘন স্থান পরিবর্তন করে। আজ এক জায়গায় তো কাল অন্য জায়গায় কিংবা সকালে এক জায়গায় তো বিকালে অন্য জায়গায়।
Lac can:
ল্যাক ক্যান-এর ব্যথার প্রধান লক্ষণ হলো ব্যথা ঘনঘন সাইড/পার্শ্ব পরিবর্তন করে। আজ ডান পাশে তো কাল বাম পাশে কিংবা সকালে সামনের দিকে তো বিকালে পেছনের দিকে।
Bellis perennis:
প্রচণ্ড গরমের সময় অথবা পরিশ্রম করে ঘর্মাক্ত শরীরে আইসক্রিম বা খুব ঠান্ডা পানি খাওয়ার পরে যদি ব্যথা বা অন্য যেকোনও রোগ দেখা দেয়, তবে বেলিস পিরেনিস খাওয়া ছাড়া আপনার মুক্তির কোন বিকল্প রাস্তা নাই।
Mag phos:
ম্যাগ ফস স্মায়বিক ব্যথার এক নম্বর ঔষধ। ইহার ব্যথা অধিকাংশ ক্ষেত্রে ছুড়ি মারা অথবা চিড়িক মারা ধরণের মারাত্মক ব্যথা। আক্রান্ত অঙ্গকে মনে হবে কেউ যেন লোহার হাত দিয়ে চেপে ধরেছে।
Thuja occ:
টিকা (বিসিজি, ডিপিটি, এটিএস, পোলিও, হেপাটাইটিস, এটিএস ইত্যাদি) নেওয়ার কারণে ব্যথা হলে থুজা খেতে হবে। টিকা নেওয়ার কারণে শরীরের বিভিন্ন স্থানে চিড়িক মারা ব্যথা (neuralgia, sciatica) অর্থাৎ স্নায়বিক ব্যথা হয় এবং বার্নেটের মতে থুজা হলো ইহার শ্রেষ্ঠ ঔষধ।
বিঃ দ্রঃ- পোস্ট শেয়ার ও ঔষধের প্রকারভেদ বুঝানোর জন্য ঔষধের নাম আলোচিত করা হয়েছে। তাই সকলের কাছে বিনীত অনুরোধ লক্ষণ মিলে গেলেও ঔষধগুলো কিনবেন না, অবশ্যই করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। আর পোষ্টটি ভাল লাগলে অবশ্যই কমেন্টে ছোট্ট করে একটা Thanks জানাবেন। এতে পোষ্ট শেয়ার করার আগ্রহ জন্মে।