
17/08/2023
শাজাহানপুরে মানবতার ফেরিওয়ালা হুমায়ুন কবির
northcapitalnews.com
‘মানুষ মানুষের জন্য.. জীবন জীবনের জন্য .. একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না ও বন্ধু ! হ্যাঁ সমাজের কিছু মানুষ এখনো রয়েছে যারা বিপদে অসহায় দুঃস্থ্য মানুষের পাশে দাড়ায় । যে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারী, মেধাবী দুস্থ শিক্ষার্থী, ঋণগ্রস্ত অসহায় ব্যক্তি, চিকিৎসাসেবা বঞ্চিত অসহায় রোগী, মূমূর্ষ রোগীকে রক্তাদান, ঈদ উপহার, শীতার্ত দুঃস্থসহ অবহেলিত জনগোষ্ঠীর আর্তমানবতার সেবায় হুমায়ন কবির শাওন অতীতের মতো এখনো উপজেলা ব্যাপী মানবসেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন।
তার বাবা বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার সাজাপুর উত্তরপাড়া গ্রামের ওমর আলী ছিলেন ব্যবসায়ী, মা হালিমা বেগম গৃহিনী। বাবা-মা'র একমাত্র ছেলে শাওন বিজনেস এডমিনিষ্ট্রেশনে স্নাতক শেষ করেন। ছাত্র জীবন থেকেই মানব সেবার নেশা তাকে পেয়ে বসেছে।
বিশেষ করে এ ভয়াবহ কোভিড-১৯ সংক্রমনের সংকট কালীন সময়ে অসহায়, দুঃস্থ্য, প্রতিবন্ধী, কর্মহীন, ঘর বন্দী মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাক| কিছু মানবিক মানুষের মধ্যে মানবতার ফেরিওয়ালা হয়ে ওঠেন হুমায়ন কবির শাওন । তিনি আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগ বগুড়া জেলা শাখার কৃষি ও সমবায় সম্পাদক,শাজাহানপুর উপজেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক, অর্পণ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন কেন্দ্রিয় কমিটির আজীবন সদস্য ও শাজাহানপুর উপজেলা শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক,কমিউনিটি পুলিশিং শাজাহানপুর থানা কমিটির সদস্য, বেজোড়া দক্ষিণপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, ওমর- হালিমা কওমী মাদ্রাসা ও এতিম খানার প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারী সহ বেশিকিছু ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
শাওন' মানব সেবার কাজটিকে আরও বিস্তৃত করতে ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত শাজাহানপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে অংশ নিয়ে হয়েছিলেন নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ।
মাত্র ৩৪ বছর বয়সে তার বাবার মৃত্যুর পর শাওন পারিবারিক ব্যবসা-বানিজ্য দেখা শুনা শুরু করেন। নিজে পরিচালনা করছেন সেমি অটো রাইস মিল, অনলাইন বুটিক হাউজ, গবাদি পশুর খামার, মাছ চাষ, ফসল চাষাবাদ সঙ্গে নিজেকে জড়িয়েছেন স্বেচ্ছাসেবীর ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের মানবিক কর্মকান্ডে।
করোনা মাহামারির ১ম ঢেউ চলাকালে নিজ এলাকায় জীবানু নাশক স্প্রে, মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ, কর্মহীন মানুষকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করেছেন। দ্বিতীয় ঢেউ চলাকালে সিএনজি চালিত টেম্পু নিয়ে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিয়েছেন। শুধু নিজ এলাকাতেই নয়, মানবিক সহায়তা নিয়ে দাঁড়িয়েছেন সিডর ও আইলা দুর্গত এলাকাসহ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শাওন মানবিক কর্মকান্ডে থেকে জানা যায়,বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার মাঝিড়া সুজাবাদ গ্রামে হতদরিদ্র আবু হোসেনের ছেলে ঘুড়ি ওড়াতে গিয়ে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে গুরুতর আহত হয় বেলাল হোসেন নামের ১৪ বছর বয়সী এক কিশোর। সে জীবন বাঁচাতে তার ১টি হাত কেটে ফেলতে হয়েছে। ছেলের চিকিৎসার খরচ জোটানো নিয়ে চোখে অন্ধকার দেখেন হতদরিদ্র বাবা। বিষয়টি জানার পর গত ১১ আগষ্ট অসহায় আবু হোসেনের বাড়িতে হাজির হন তরুণ সমাজ সেবক হুমায়ন কবির শাওন। তার দেওয়া আর্থিক সহায়তায় অসহায় বাবার মুখে ফোটে স্বস্তির হাসি। আমরুল ইউনিয়নের ডেমাজানী দক্ষিণপাড়া গ্রামের ৮০ বছরের বয়ো:বৃদ্ধ ফজলু প্রামাণিক। সহায় সম্বলহীন এই বৃদ্ধের কাঁধে ভর করে আছে মানসিক বিকারগ্রস্ত ১ ছেলে সন্তান। ছাগল পালন করে চলে এই বৃদ্ধের জীবন-জীবিকা। দিন শেষে রাত এসে ছেলে ও ছাগলকে নিয়ে এক ঘরেই ঘুমিয়ে পড়েন বৃদ্ধ ফজলু প্রামাণিক। মানবেতর জীবন যাপনের খবর পেয়ে ২ আগষ্ট’২৩ ওই বৃদ্ধেও বাড়িতে ছুটে যান শাওন। বাড়িয়ে আর্থিক সহায়তার হাত।আমরুল ইউনিয়নের ডেমাজানী পালপাড়ার অন্তরা রাণীর ভাগ্যে জোটেনি ৩০ কেজি চাউলের কার্ড। সুদের উপর নেয়া ২ হাজার টাকা ঘুষ দিয়েও চাউলের কার্ড পেতে ব্যর্থ হন।বিষয়টি জানার পর ১ আগষ্ট অসহায় পরিবারের খোঁজ খবর নেন শাওন এবং নিজ তহবিল থেকে দাদনের টাকা পরিশোধ করে ওই পরিবারকে ঋণ মুক্ত করেন। অন্ধ স্বামীকে নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের বারআঞ্জুল গ্রামের মানসিক বিকারগ্রস্ত ধলী বেগম। গত ২৭ জুলাই’২৩ আর্থিক সহায়তা নিয়ে ওই অসহায় পরিবারের কাছে ছুটে যান মানবতার ফেরিওয়ালা শাওন।
এভাবেই নাম না জানা হাজারো অসহায় মানুষের পাশে নি:স্বার্থ ভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন হুমায়ন কবির শাওন।আমৃত্যু মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে অসহায় ও দুস্থ মানুষকে সহযোগিতা করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে পোস্ট করেন তরুণ এই সমাজ সেবক। এনসিএন/বিআর