23/07/2025                                                                            
                                    
                                                                            
                                            পঙ্গু হাসপাতালের মতো টারশিয়ারি লেভেলের হাসপাতালে ৫-৬ বছর কাটানোর সময় রোজ সকাল বিকাল দেখতাম হাত পা ভাঙ্গা রোগী, পচা গলা রোগী সহ এক একটার চেয়ে এক একটা ভয়াবহ রোগী। হয়তাও কারো পা নাই, হাত নাই, বা পায়ে বড় বড় খাচা লাগানো (ইলিজারব) লাগানো রোগী। যা দেখতে কিছুটা ভয়াবহ।  প্রথম দিন থেকেই এসব দেখে আমার তেমন গায়ে লাগে নাই। নিত্য নৈমত্যিক রুটিন মনে হয়েছে। ফিজিওথেরাপিতে বিপিটি করার সুবাদের পুরো ঢাকায় যতো হাসপাতাল আছে (সরকারি ও কিছু এনজিও) হয়তো ১ টা বাদে বাকি সবগুলোতেই ক্লাস, প্লেসমেন্ট, ইন্টার্ন করার সুযোগ হয়েছিলো। আমাদের প্রায় ৪২+ সাবজেক্ট ছিলো থিসিস সহ। শিশু থেকে বৃদ্ধ, কাটা রোগী, পোড়া রোগী, আইসিইউ রোগী এমন কোনো কিছু বাদ নাই যেখানে ফিজিওথেরাপির ভূমিকা নাই। তাই সবগুলো বিষয়ে প্লেসমেন্ট, ইন্টার্ণ আমরা পুরো ঢাকা শহর ঘুরে ঘুরে করেছিলাম। পঙ্গু, সোহরাওয়ার্দী, হৃদরোগ, নিউরোসাইন্স, বক্ষব্যধি, ঢাকা মেডিকেল, আইসিইউ, বার্ন, সি আর পি, ফিরোজাবাড়ি সহ আরো অনেক যায়গায় গিয়েছিলাম। ইন্টার্নের শেষে বার্ণে যখন যাই তখন আমার এতো বছরের কঠিন হয়ে যাওয়া মন আর সহ্য করতে পারছিলো না। ৫ বছর আগের ইতিহাস সেই স্মৃতি এখনও চোখে ভাসে। ওয়ার্ড, কেবিন, আইসিইউ, এইচডিইউতে যখন যেতাম নিজের উপর কন্ট্রোল রাখাটা খুব বেশি মুশকিল হয়ে যেতো।  এখনো সেই পোড়া রোগীদের চিৎকার কানে ভাসে। ড্রেসিংের আগে ফিজিওথেরাপির সময় রোগীদের চিৎকারে নিজের কাছেই মায়া লাগতো, ড্রেসিং রুম থেকে আসা চিৎকার শুনলে মনে হয় যেনো গিয়ে বলি আর কষ্ট দিয়েন না! বার্নের পেইন ম্যানেজমেন্ট খুবই টাফ। কেনো তার ব্যাখ্যা আগের স্ট্যাটাস আছে। তবুও আমি লিংক কমেন্টে দিয়ে দিবো।  
একটা শিশুর চিৎকার কানে ভাসে এখনো। সম্ভবত ক্লাস থ্রিতে পড়ে। এইযে মাইলস্টোনের বাচ্চাদের বয়সীই হবে। গরম পেট্রোল মুখে পরে মুখ ঝলসে গিয়েছিলো। শুধু বলছিলো আর পারতেসি না মা আর পারতেসি না। গত পাঁচ বছরে এই চিৎকার ভুলি নাই। আর ভুলতেও পারবো না।
আল্লাহ বাচ্চাদের সহায় হোক আমিন!