12/08/2025
#জ্বর বা Fever.....................
যখন দেহের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় তখন তাকে জ্বর বলা হয়। জ্বর ইঙ্গিত দেয় যে শরীরে কোনও ধরণের সংক্রমণ রয়েছে। শরীরের সাধারণ তাপমাত্রা 98.6 F বা 36 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। মুখ বা বগলে থার্মোমিটার রেখে দেহের তাপমাত্রা মাপা যায়। তবে মুখ এবং বগলের উভয় অংশের তাপমাত্রার মধ্যে এক ডিগ্রি এফ এর পার্থক্য রয়েছে।
★★বিভিন্ন প্রকার জ্বরের কারন ও লক্ষনঃ-
★★টাইফয়েড জ্বরঃ-
★★টাইফয়েড জ্বরের কারনঃ-
টাইফয়েড জ্বর স্যালমোনেলা টাইফি নামক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমণে হয়ে থাকে। দূষিত খাবার ও পানির মাধ্যমে প্রধানত দেহে এই জীবাণু ছড়ায় এবং জ্বরসহ নানা ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়। টাইফয়েড একটি পানিবাহিত মারাত্মক রোগ যা দুই ধরনের জীবাণুর সংক্রমণে এই রোগ হয়ে থাকে। (১)‘সালমোনেলা টাইফি’ এবং (২) ‘সালমোনেলা প্যারাটাইফি’। সালমোনেলা টাইফির সংক্রমণে যে জ্বর হয় তাকে টাইফয়েড জ্বর বা ‘এন্টারিক ফিভার’ বলে। আর যদি জ্বর সালমোনেলা প্যারাটাইফির নামক জীবাণুর কারণে হয় তখন তাকে প্যারা টাইফয়েড জ্বর বলে। প্রধানত দূষিত পানি ও খাবার গ্রহণের মাধ্যমেই এই জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার প্রতি উদাসীনতার কারণেও এটি শরীরে প্রবেশ করতে পারে। এছাড়াও টাইফয়েড জ্বর হতে আরোগ্য লাভ করেছেন কিন্তু এই ব্যাকটেরিয়া বহন করছেন এমন কিছু সংখ্যক ব্যক্তিও এই রোগের বাহক হতে পারে। যেভাবেই এই জীবাণু শরীরে শরীরে প্রবেশ করুক না ঢুকার পর তা বৃহদান্ত্রকে আক্রমণ করে। এছাড়া এই ব্যাকটেরিয়া শরীরের পিত্তথলিতে জমা থাকে এবং উপযুক্ত পরিবেশ পেলেই কেবল আক্রমণ করে।
★★টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণসমূহঃ
সাধারণত রোগ-জীবাণু শরীরে প্রবেশের ১০ থেকে ১৪ দিন পর রোগের লক্ষণ সমূহ প্রকাশ পেতে থাকে। জ্বর এ রোগের প্রধান লক্ষণ যা প্রথম চার-পাঁচ দিন জ্বর বৃদ্ধি পায় জ্বর কখনো বাড়ে, কখনো কমে; তবে কোনো সময় সম্পূর্ণ ছেড়ে যায় না। এর প্রধান প্রধান লক্ষণসমূহ নিম্নরুপঃ
★১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত টানা জ্বর হওয়া।
★জ্বরের সঙ্গে মাথাব্যথা, শরীর ব্যথা ও শারীরিক দুর্বলতা দেখা দিতে পারে।
★ক্ষুধামন্দা হওয়া সহ কারো কারো কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।
★শিশুদের ক্ষেত্রে ডায়রিয়া ও বমি হতে পারে।
★গা ম্যাজ ম্যাজ করা সহ রোগীর কফ বা কাশি হতে পারে ।
★প্রচণ্ড পেটে ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
★দ্বিতীয় সপ্তাহে রোগীর পেটে ও পিঠে গোলাপি রঙের দানা দেখা দিতে পারে।
★কারো কারো জ্বরের সঙ্গে কাশি হয়।
★হার্ট রেট বা হৃদস্পন্দন কমে যেতে পারে।
★★কিভাবে টাইফয়েড জ্বর সনাক্তকরণ করা হয়?
পরীক্ষা নিরীক্ষার পর কেবল চিকিৎসকগণ বলতে পারবেন যে কারও টাইফয়েড জ্বর হয়েছে কিনা। টাইফয়েড দ্রুত সনাক্ত করার জন্য ব্লাড কালচার নামক রক্ত পরীক্ষা করতে হয়। যদি নমুনায় স্যালমোনেলা নামক ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পাওয়া যায় তাহলে প্রকার ভেদে টাইফয়েড ও প্যারা- টাইফয়েড পার্থক্য করা হয়। এছাড়া জ্বর হওয়ার ২য় সপ্তাহে “উইডাল টেস্ট” নামে এক ধরনের ননস্পেসিফিক ব্লাড টেস্ট করতে হয় যাতে টাইটার দেখে টাইফয়েড নির্ধারণ করা হয়।
★★ডেঙ্গু জ্বর
★★লক্ষণঃ- ডেঙ্গু জ্বর একটি উচ্চ জ্বর সৃষ্টি করে - 104 এফ ডিগ্রি - মাথা ব্যাথা,পেশী, হাড় এবং জয়েন্টে ব্যথা,বমি বমি ভাব,বমি,চোখের পিছনে ব্যথা,ফোলা গ্রন্থি,ফুসকুড়ি।
কিছু ক্ষেত্রে, লক্ষণগুলি আরও খারাপ হয় এবং এটি জীবন-হুমকি হয়ে উঠতে পারে। রক্তনালীগুলি প্রায়শই ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং ফুটো হয়ে যায়। এবং আপনার রক্ত প্রবাহের ফোটা ফোটাতে জমাট বাঁধার কোষগুলির সংখ্যা (প্লেটলেট)। এটি ডেঙ্গু জ্বর, মারাত্মক ডেঙ্গু বা ডেঙ্গু শক সিনড্রোম নামে একটি গুরুতর ফর্ম হতে পারে।
★★কারণসমূহ
ডেঙ্গু জ্বর মশা দ্বারা ছড়িয়ে থাকা চার ধরণের ডেঙ্গু ভাইরাসের যে কোনও একটির কারণে হয়ে থাকে যা মানুষের আবাসস্থল এবং তার আশেপাশে সমৃদ্ধ হয়। একটি মশা যখন ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিকে কামড় দেয়, তখন ভাইরাসটি মশার মধ্যে প্রবেশ করে। সংক্রামিত মশা যখন অন্য ব্যক্তিকে কামড় দেয় তখন ভাইরাসটি সেই ব্যক্তির রক্ত প্রবাহে প্রবেশ করে।
★★ম্যালেরিয়া জ্বরঃ-
★★ম্যালেরিয়ার কারণ : ম্যালেরিয়া হচ্ছে মশক বাহিত প্লাজমোডিয়াম পরজীবী দ্বারা সৃষ্ট রোগ। এটি কেবল সংক্রমিত স্ত্রী অ্যানোফেলিস মশার কামড়ে হয়। এ পর্যন্ত ষাটের অধিক প্রজাতির ম্যালেরিয়া পরজীবী আবিষ্কার করা সম্ভব হলেও এর মধ্যে ৪টি প্রজাতি মানুষের ম্যালেরিয়ার জন্য দায়ী। প্লাজমোডিয়াম ভাইভাক্স, ফ্যালসিপ্যারাম, ম্যালেরি ও ওভাল-এর যেকোনো একটি জীবাণু বহনকারী মশার দংশনে ম্যালেরিয়া হতে পারে। এর মধ্যে ফ্যালসিপ্যারাম ম্যালেরিয়ার জটিলতা সবচেয়ে বেশি, এমনকি মস্তিষ্ক আক্রান্ত করে জীবনসংহারী হতে পারে। সংক্রমিত মশা যখন কোনো ব্যক্তিকে কামড়ায়, তখন ওই ব্যক্তির রক্তে ম্যালেরিয়ার জীবাণু প্রবেশ করে এবং সে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়।
★★লক্ষণ :নির্দিষ্ট সময় পরপর কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসা এই রোগের প্রধান লক্ষণ। জ্বর সাধারণত ১০৫-১০৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হতে পারে। তবে নিয়মিত ও নির্দিষ্ট বিরতিতে জ্বর আসা-যাওয়া করে যেমন- একদিন পর পর জ্বর, তা তিন চার ঘণ্টা দীর্ঘ হওয়া এবং এরপর ঘাম দিয়ে জ্বর কমে যায়। জ্বর ছেড়ে গেলে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়েও কমে যেতে পারে। এ ছাড়াও মাঝারি থেকে তীব্র কাঁপুনি বা শীত শীত অনুভব, গায়ে প্রচণ্ড ব্যথা, মাথাব্যথা, অনিদ্রা, খাবারের প্রতি আগ্রহ কমে যাওয়া বা ক্ষুধামন্দা, কোষ্ঠকাঠিন্য, বমিবমি ভাব অথবা বমি, হজমে গোলযোগ, অত্যধিক ঘাম হওয়া, খিঁচুনি, পিপাসা লাগা, ক্লান্তি বা অবসাদ অনুভব করা, মাংসপেশি, তলপেটে ব্যথা অনুভব, প্লীহা ও যকৃত বড় হয়ে যাওয়াসহ লোহিত রক্তকণিকা ধ্বংস হওয়ার কারণে অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। ম্যালেরিয়া রোগের জটিলতম ধরন হলো ‘ম্যালিগন্যান্ট ম্যালেরিয়া’। সাধারণ ম্যালেরিয়ার মতো উপসর্গ দেখা দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের জটিলতা যেমন রক্তশূন্যতা, কিডনি বৈকল্য, শ্বাসকষ্ট হওয়া, জন্ডিস, খিঁচুনি, রক্তে গ্লুকোজ কমে যাওয়ার লক্ষণ প্রকাশ পায়। জরুরি চিকিত্সা না পেলে এসব রোগী অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে, এমন কি মৃত্যুও হতে পারে।
★★স্কারলেট জ্বরঃ-
★★কারনঃ- স্কারলেট জ্বর, যা স্কারলেটিনা নামেও পরিচিত, এটি এমন একটি সংক্রমণ যা তাদের স্ট্রেপ গলা রোগীদের মধ্যে বিকাশ করতে পারে। এটি শরীরে একটি উজ্জ্বল লাল ফুসকুড়ি দ্বারা চিহ্নিত করা হয়, সাধারণত উচ্চ জ্বর এবং গলা ব্যথা সহ। একই ব্যাকটেরিয়া যেগুলি স্ট্র্যাপ গলা সৃষ্টি করে তাও স্কারলেট জ্বর সৃষ্টি করে। স্কারলেট জ্বর মূলত 5 থেকে 15 বছর বয়সের শিশুদেরকে প্রভাবিত করে।
★★লক্ষনঃ- একটি ফুসকুড়ি প্রাপ্ত বয়স্ক এবং শিশুদের উভয় ক্ষেত্রেই স্কারলেট জ্বরের সর্বাধিক সাধারণ লক্ষণ। এটি সাধারণত একটি লাল ব্লাচি ফুসকুড়ি হিসাবে শুরু হয় এবং স্যান্ডপেপারের মতো সূক্ষ্ম এবং রুক্ষ হয়ে যায়। লালচে রঙের ফুসকুড়ি যা লাল রঙের জ্বরকে এর নাম দেয়। কোনও ব্যক্তি অসুস্থ বোধ করার আগে বা ট্রাস্টেড সোর্স পরে সাত দিন পর্যন্ত এই ফুসকুড়ি শুরু হতে পারে। ফুসকুড়ি সাধারণত ঘাড়, কুঁচকিতে এবং বাহুতে শুরু হয়। এটি তখন ছড়িয়ে পড়ে সারা শরীরের। বগল, কনুই এবং হাঁটুতে ত্বকের ভাঁজগুলি আশেপাশের ত্বকের চেয়েও গভীর লাল হতে পারে। ফুসকুড়ি কমার পরে, প্রায় সাত দিন পরে, আঙ্গুল এবং পায়ের আঙুলের পরামর্শ এবং কোঁকড়ে থাকা ত্বকটি খোসা ছাড়তে পারে। এটি বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে চলতে পারে।
★★ডাম ডাম জ্বরঃ-
★★লক্ষন ও কারনঃ- একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ। এই রোগের রোগী প্লীহা এবং লিভারের বৃদ্ধি, দেহের ধুলাবালি বর্ণ, অনিয়মিত জ্বর, মাড়ি থেকে রক্ত, দেহের উপর অগ্ন্যুত্পাত দেখা দেয় এবং ক্ষুধা না থাকায় এই লক্ষণগুলি ভোগেন। শরীরে রক্তের অভাব (রক্তাল্পতা) এবং দেহের রঙ কালো হওয়ার কারণে ডাম-ডাম জ্বরের তিনটি লক্ষণ রয়েছে। এই রোগের প্রধান কারণ পরজীবী নামক ভাইরাসের সংক্রমণ। তবে এই জ্বরের প্রকোপ আফ্রিকা দেশগুলোতে বেশি দেখা যায়।
★★বাত জ্বরঃ-
★★কারনঃ- বাতজ্বর (Rheumatic fever) বাতজ্বরে সাধারনত বিটা হেমোলাইটিক স্ট্রেপটোকক্কাস নামক এক ধরনের জীবাণুর সংক্রমনের কারনে হয়। দারিদ্র্য, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাব, ঠাণ্ডা ও স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে এবং অজ্ঞতাই এ রোগের প্রধান কারণ। এছাড়াও, যেসব শিশু দীর্ঘ দিন ধরে খোসপাঁচড়া ও টনসিলের রোগে আক্রান্ত, তাদেরও বাতজ্বরে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি।
★★বাতজ্বরের লক্ষণঃ-
মুখ্য উপসর্গ
চামড়ার নিচে ক্ষুদ্র ব্যথাহীণ পিন্ড অথবা ত্বকে লালচে দাগ, অস্থিসন্ধির প্রদাহজনিত ব্যথা ও ফুলে যাওয়া, একটি সন্ধি ভালো হয়ে গেলে এটি আবার অন্যটিকে আক্রমণ করে, স্নায়ুজটিলতায় পেশির অস্বাভাবিক চলন, হূৎপিণ্ডের প্রদাহ বা কার্ডাইটিস ইত্যাদি।
গৌণ উপসর্গ
জ্বর, অস্থিসন্ধিতে ব্যথা, রক্তে ইএসআর বা সিআরপি বৃদ্ধি, অল্পতে ক্লান্ত বা দুবর্ল বোধ করা, বুকে ব্যথা বা বুক ধড়ফড় করা, শ্বাসকষ্ট।
🏥 আজই যোগাযোগ করুন.....
✅ ইসলামিয়া হোমিও হল – চাঁদপুর সদর,চাঁদপুর।
বিশ্বস্ত হোমিও চিকিৎসার এক বিশ্বস্ত ঠিকানা
📌 ঠিকানা: হাসান আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে, চাঁদপুর সদর
👨⚕️অধ্যাপক, ডা. মোজাম্মেল হক পাটোয়ারী – প্রতিষ্ঠাতা।
👨⚕️ ডা. মাজহারুল হক পাটোয়ারী – সার্বিক তত্ত্বাবধানে।
📞 ফোন: 01922-492624 / 01794-509080
🕘 খোলা থাকে: প্রতিদিন দুপুর ২টা–রাত ১০টা
🌐 সেবা দিচ্ছেন:
১) অফলাইন চেম্বারে সরাসরি চিকিৎসা।
২) অনলাইনে কনসাল্টেশন ও দেশের যেকোনো প্রান্তে ওষুধ সরবরাহ।
৩) প্রবাসীদের বিশস্ত চিকিৎসালয়।
👉
#হোমিওচিকিৎসা