
17/07/2025
পিরিয়ড এর সময় শরীর-মাথা কিছুই কাজ করেনা! এটা প্রায় সব ফিমেল দেরই কমপ্লেইন।
বয়স কম বা বেশি এটা বিষয় না।
কিন্তু কারণটা কি?
পিরিয়ড চলাকালীন দেহে যে হরমোনাল পরিবর্তন গুলো হয় তার পাশাপাশি ঠিকভাবে ঘুম না হওয়া, খাওয়ার রুচি কমে যাওয়া, দেহ থেকে ভালো পরিমাণে রক্ত বের হয়ে যাওয়া সবকিছু একত্রেই মূলত এই দূর্বল বোধ হওয়ার কারণ।
National Sleep Foundation এর মতে শতকরা ৩০ ভাগ নারীরই পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে ঘুম এবং খাওয়া দাওয়ায় ব্যাঘাত ঘটে।
এর সাথে নানান রকমের ক্র্যাম্পস তো আছেই।
এই সময়ে একটু স্বস্তি পাওয়ার যে জিনিস গুলো সাহায্য করতে পারে তা নিয়ে একটু আলোচনা করছি।
১। ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবারঃ
ম্যাগনেসিয়াম muscle relaxing এর জন্য খুবই কার্যকর একটি নিউট্রিয়েন্ট। পিরিয়ডের ব্যাথা থেকে মুক্তি পেতে এটি হতে পারে একটি perfect relief। খাবারের সাথে অথবা সাপ্লিমেন্ট হিসেবে ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণ করলে এই জরায়ু পেশীগুলো রিল্যাক্সড হয় এবং তা ব্যাথার তীব্রতা কমাতে সাহায্য করে।
২। বি ভিটামিনসঃ
Vitamin B1, B2, B6, B9 এবং B12 মেন্সট্রুয়েশন ক্র্যাম্পস থেকে রিলিফ পেতে সাহায্য করে। কিভাবে?
Vit B1 নিউরোমাসকুলার এবং সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম একটিভিটিস এর সাথে জড়িত। অর্থাৎ এটি জরায়ু পেশীগুলোর সংকোচন নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
Vit B2 মূলত দেহে এনার্জি তৈরিতে সাহায্য করে এবং Vitamin B6 ও Folate কে একটিভেট করে। এদের কাজ নিয়ে একটু পর ই বলছি।
Vit B6 দেহে serotonin নামক একটি নিউরোট্রান্সমিটার প্রোডাকশনে সাহায্য করে যা কিনা আমাদের মুড কন্ট্রোল করে।
Vit B9 দেহে এনার্জি উৎপাদন এবং রক্ত পুনরুৎপাদন এর জন্য কাজ করে। এটি Dopamine এবং serotonin নামক নিউরোট্রান্সমিটার তৈরিতেও সাহায্য করে যারা ইমোশন এবং মুড কন্ট্রোল করে।
Vit B12 দেহের ক্ষয় হওয়া রক্তকে পুনরুৎপাদন করতে সাহায্য করে।
এর জন্য B complex সাপ্লিমেন্ট ও গ্রহণ করা যেতে পারে।
৩। হলুদঃ
হলুদে বিদ্যমান বায়োএকটিভ কম্পাউন্ড curcumin এর এন্টি ইনফ্লামেটরি ও এন্টিঅক্সিডেন্ট গুণের কারণে এটি ইনফ্লামেশন এর সাথে সাথে সকল প্রকার ব্যাথা নিরাময়ে কাজ করে ম্যাজিক এর মতো।
৪। হার্বাল চাঃ
বিভিন্ন উপকারী হার্ব যুক্ত চা antiinflammatory এবং antianxiety প্রভাবের সাহায্যে দেহে এক ধরনের আরামদায়ক ভাব এনে দিতে সক্ষম। যা কিনা পিরিয়ড ক্র্যাম্প থেকে কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে।
৫। স্ট্রেস রিলিফঃ
কিছু নারীদের মধ্যে পিরিয়ডকালীন ক্র্যাম্প বেশি হওয়ার একটা বড় কারণ হলো স্ট্রেস। আর স্ট্রেস কমানোর একটি ভালো উপায় হতে পারে মেডিটেশন এবং এক্সারসাইজ।
৬। এক্সারসাইজঃ
এক্সারসাইজ এবডোমেন এরিয়াতে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করার মাধ্যমে পিরিয়ড ক্র্যাম্প কমাতে পারে। এক্ষেত্রে সাহায্য করে স্ট্রেচিং এবং যোগ ব্যায়াম জাতীয় এক্সারসাইজ গুলো।
৭। গরম পানির উষ্ণতাঃ
হট ওয়াটার ব্যাগে গরম পানি নিয়ে তার সাহায্যে পেট ও কোমড়ের ব্যাথার স্থানে শেক নিলে এটি দেহের এই অঞ্চলের পেশীগুলোকে রিলাক্সড করে, রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে এবং ব্যাথার স্থান গুলোতে আরাম ভাব এনে দিতে পারে।
সবশেষে যেগুলো না বললেই নয় এমন কিছু বিষয় হলো -
-এসময় অবশ্যই শরীরকে হাইড্রেটেড রাখার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে।
-চা, কফি, কোল্ড ড্রিংকস সহ বেশি চিনিযুক্ত খাবার গুলো এরিয়ে চলতে হবে।
ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ ফ্রেশ শাক সবজি ও ফলমূল খেতে হবে।
- মোবাইল নেটওয়ার্ক, ওয়াইফাই, সেলুলার ডাটার রেডিয়েশন থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকতে হবে।
- এ সময়ে দিনে অন্তত ৮ ঘন্টা ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।