Centre for Expressive Psychotherapy in Bangladesh

সম্পর্ক■■■■সঙ্গীতের মন্ত্রে মনের শান্তির অন্বেষণ, ‘মিউজ়িক থেরাপি’র উপকারিতা কী? কী ভাবে করা হয়?●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●...
03/08/2025

সম্পর্ক
■■■■সঙ্গীতের মন্ত্রে মনের শান্তির অন্বেষণ,
‘মিউজ়িক থেরাপি’র উপকারিতা কী? কী ভাবে করা হয়?
●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●
মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হচ্ছে ‘মিউজ়িক থেরাপি’। সঙ্গীত এবং তালবাদ্যে নিহিত শক্তিকে কাজে লাগিয়েই জীবনের মূল স্রোতে ফিরে আসছেন অনেকে।

মানুষ কেন সঙ্গীত পছন্দ করে? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে যুগে যুগে অজস্র গবেষণা হয়েছে। বহুমুখী বিশ্লেষণ এবং উত্তরকে পাশে সরিয়ে এ কথা বলাই যায়, সঙ্গীত মানুষের মনে ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে। ভিড়ের মাঝে, লাইভ অনুষ্ঠানে বা ঘরের কোণে একান্ত পরিসরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের সঙ্গীত আমাদের মনকে আচ্ছন্ন করে, শান্তি দেয়। নতুন করে ভাবতে শেখায়।

প্রাচীন কালে রাজপাট সামলানোর মাঝে রাজা বা সম্রাটেরা বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে সঙ্গীতকে বেছে নিতেন। সমুদ্রগুপ্ত নিজে বীণা বাজাতে পছন্দ করতেন। নবাব ওয়াজেদ আলি শাহের সঙ্গীতপ্রীতি তো বহুশ্রুত। বিভিন্ন গবেষণা এবং সমীক্ষা বলছে, কঠিন সময়ে জীবনে নতুন পথের সন্ধান দিতে পারে সঙ্গীত।

সময়ের সঙ্গে ব্যস্ত জীবনে অবসাদে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা যেমন ক্রমবর্ধমান, তেমনই দৈনন্দিন জীবনের ক্রমবর্ধমান ক্লান্তি এবং ইঁদুরদৌড়ে মনকে শান্ত রাখতে এবং নতুন জীবন পেতে নতুন করে সঙ্গীতের সাহায্য নিচ্ছেন অনেকেই। সেখানেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে ‘মিউজ়িক থেরাপি’। শহরেও এখন রয়েছে সুবিধা।

‘মিউজ়িক থেরাপি’ কী

মানসিক স্বাস্থ্যের অন্বেষণে এখন অনেকেই বিভিন্ন ধরনের থেরাপির সাহায্য নিয়ে থাকেন। ‘মিউজ়িক থেরাপি’র ক্ষেত্রে এক জন মনোবিদ ক্লায়েন্টের থেরাপির জন্য সঙ্গীতের সাহায্য নিয়ে থাকেন। কখনও সেখানে বাদ্যযন্ত্র বা তালবাদ্যের সাহায্যও নেওয়া হতে পারে। সঙ্গীতের সঙ্গে সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের যোগসূত্র সুপ্রাচীন হলেও ‘ক্লিনিক্যাল থেরাপি’ আকারে তার ব্যবহার অপেক্ষাকৃত নবীন প্রয়াস।

কাদের প্রয়োজন

মিউজ়িক থেরাপিস্ট চন্দ্রিমা বন্দ্যোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, যে কেউ এই ধরনের থেরাপির সাহায্য নিতে পারেন। সময়ের সঙ্গে ‘মিউজ়িক থেরাপি’র চাহিদাও বেড়েছে। পেশায় ১২ বছরের অভিজ্ঞতাকে সম্বল করেই চন্দ্রিমা বললেন, ‘‘ভাল কথা বা ভাষণ যাকে ‘শব্দ-স্নান’ বলা যেতে পারে, তা আমাদের মনকে প্রভাবিত করে। একই ভাবে সঙ্গীতও আমাদের মনের বন্ধ দরজাগুলো খুলে দিতে পারে। তখন মনের জমা না বলা কথাগুলো বাইরে চলে আসে।’’

তবে জটিল রোগ থেকে সুস্থ হচ্ছেন, ডিমেনশিয়া, অনিদ্রা বা অ্যালঝাইমার্স রোগীদের ক্ষেত্রে এই ধরনের থেরাপি উপকারী। ২০১৭ সালে আমেরিকার ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর কমপ্লিমেন্টারি অ্যান্ড ইন্টিগ্রেটিভ হেল্থ’ ৪২১ জনকে নিয়ে এই বিষয়ে একটি সমীক্ষা করে। দেখা গিয়েছে, তাঁদের অবসাদ এবং উদ্বেগ দূর করতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে সঙ্গীত। অনেকেরই হয়তো স্মরণে থাকবে, ২০২০ সালে হাসপাতালের বিছানায় রোগশয্যায় বর্ষীয়ান অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের চিকিৎসায় চিকিৎসকেরা মিউজ়িক থেরাপির সাহায্য নেন। অভিনেতা তাতে সাড়াও দিয়েছিলেন।

আবার বিশেষ ভাবে সক্ষম ব্যক্তির ক্ষেত্রেও এই থেরাপি উপকারী। বিশেষ ভাবে সক্ষম শিশুদের নিয়েই মূলত কাজ করেন মিউজ়িক থেরাপিস্ট কাকলি চক্রবর্তী। তিনি বললেন, ‘‘ওদের মধ্যে কেউ হয়তো কথা বলে না। কেউ মনের কথা ঠিকমতো প্রকাশ করতে পারে না। সঙ্গীত সেখানে খুব সাহায্য করে।’’

যে কেউ সাহায্য নিতে পারেন

কোনও সমস্যার থেকে মুক্তির জন্য তো বটেই, তবে সাধারণ কোনও ব্যক্তিও মিউজ়িক থেরাপির সাহায্য নিতে পারেন। চন্দ্রিমার কথায়, ‘‘এখন প্রত্যেকের জীবনেই কমবেশি অবসাদ এবং কাজের চাপ রয়েছে। সেগুলি না থাকলেও যে কেউ থেরাপির সাহায্য নিতে পারেন।’’

গান তো সকলেই শোনেন

কমবেশি প্রত্যেকেই গান শুনে থাকেন। কেউ কেউ সঙ্গীত পছন্দ করেন। তা হলে আলাদা করে ‘থেরাপি’ কেন? জানা যাচ্ছে, নিজে গান শুনলেও মন ভাল হয়। কিন্তু সেখানে কথা বলার বা মনের পরিস্থিতি অনুযায়ী সঙ্গীত বেছে দেওয়ার মানুষটি উপস্থিত থাকেন না। আর এক জন মিউজ়িক থেরাপিস্ট সেটাই করে থাকেন। কাকলি যেমন বললেন, ‘‘ভৈরবী রাগটি উচ্চ রক্তচাপ এবং উদ্বেগের ক্ষেত্রে খুব উপকারী। আবার স্মৃতিশক্তি দুর্বল হলে, সে ক্ষেত্রে শিবরঞ্জনী রাগ খুবই কার্যকরী।’’ সঙ্গীত ও সুরের মধ্যে মন ও স্মৃতির পুর্নগঠনের রহস্য লুকিয়ে রয়েছে। চন্দ্রিমার কথায়, ‘‘সঙ্গীত শক্তিশালী। তবে সমস্যা অনুযায়ী তাকে ব্যবহার করা হয়। কত রোগীকে দেখেছি, সঠিক সঙ্গীতের ব্যবহারে নতুন ভাবে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। কেউ বা হারানো ক্ষমতা ফিরে পাচ্ছেন।’’

কী ভাবে করা হয়

এই থেরাপিতে ব্যক্তিকে সাধারণত বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের রাগাশ্রয়ী সঙ্গীত (যেমন মল্লার, ভৈরবী ইত্যাদি) শোনানো হয়। কখনও বিভিন্ন শ্লোকও ব্যবহার করা হয়। পাশাপাশি, চলতে থাকে থেরাপিস্টের সঙ্গে কথোপকথন। দ্বিতীয়ার্ধে ব্যক্তিকে কোনও গানও শোনানো হতে পারে। সেই গানের তালিকায় বহুশ্রুত হিন্দি বা বাংলা গানও (যার মধ্যে অন্যতম রবীন্দ্রসঙ্গীত) থাকতে পারে। কেউ কেউ নিজে গান গেয়েও শোনান। শৈশবে শিল্পী প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সঙ্গীতের তালিম নিয়েছেন চন্দ্রিমা। তিনি বললেন, ‘‘বিভিন্ন জন বিভিন্ন ভাবে থেরাপি করেন। আমি যেমন নিজেই গান গেয়ে শোনাই।’’ সব শেষে মনোবিদ তাঁর বিশ্লেষণ অনুয়ায়ী ক্লায়েন্টকে পরবর্তী পদক্ষেপ বা সেশন সম্পর্কে অবহিত করেন।

বিশেষ ভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে অনেক সময়ে কোনও শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়ামের মাধ্যমে থেরাপি শুরু হয়। সেখানে ধ্যানও থাকতে পারে। যাঁরা কথা বলতে পারেন, তাঁদের সঙ্গীতের বিভিন্ন সরগম অভ্যাসের পাশাপাশি রাগাশ্রয়ী সঙ্গীত শোনানো হয়। আবার শ্রবণশক্তি এবং প্রতিক্রিয়ার উন্নতিতে বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাজিয়েও শোনানো হয়। কাকলি বললেন, ‘‘আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি, বিশেষ ভাবে সক্ষম শিশুরা সঙ্গীত শুনতে বা কোনও বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পছন্দ করে। তাদের মস্তিষ্কে সঙ্গীতের ইতিবাচক প্রভাব অনস্বীকার্য।’’

ক’টা সেশন

‘মিউজ়িক থেরাপি’র প্রতিটি সেশন এক থেকে দেড় ঘণ্টার হতে পারে। ব্যক্তিগত ভাবে বা ছোট ছোট দলেও থেরাপি করানো হয়। ব্যক্তির মানসিক পরিস্থিতির উপরে ‘মিউজ়িক থেরাপি’র সেশনের সংখ্যা নির্ভর করে। কারও কারও ক্ষেত্রে দুই থেকে চারটি সেশনে উপকার পাওয়া যায়। আবার এমন অনেকেই রয়েছেন যাঁরা অন্য কোনও থেরাপির মতোই (যেমন ফিজ়িওথেরাপি) নির্দিষ্ট সময়ান্তরে ‘মিউজ়িক থেরাপি’ নিয়ে থাকেন। যদি কেউ থেরাপি নিয়ে ভাল থাকেন, তা হলে সেশনের সংখ্যাও বাড়তে থাকে।

কোথায় কোথায় হয়

সময়ের সঙ্গে ‘মিউজ়িক থেরাপি’ প্রচারের আলোয় চলে এসেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যাচ্ছে, শহরের বিভিন্ন প্রান্তে সেন্টার রয়েছে। একাধিক বড় হাসপাতালেও আলাদা করে রোগীদের জন্য ‘মিউজ়িক থেরাপি’ ব্যবস্থা করা হয়। বাড়িতে আলাদা করে সেশনের পরিষেবাও দিয়ে থাকেন কেউ কেউ।

সাফল্যের পাশাপাশি ব্যর্থতার পাল্লাও ভারী!
তবুও মেজাজ হারান না অক্ষয়, নেপথ্যে রয়েছে কোন মন্ত্র?

গোপনে অন্য সম্পর্কে সঙ্গী! আঁচ পেয়ে গুমরে মরছেন আপনি, কেন ভালবাসার মানুষেরা ঠকান এ ভাবে?

খরচ কেমন

সাধারণত দলগত থেরাপির থেকে একক স্বাধীন থেরাপির খরচ বেশি। জানা যাচ্ছে, ‘মিউজ়িক থেরাপি’র সেশন প্রতি খরচ ৫০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

ভবিষ্যৎ কী রকম

শহরে এখন মিউজ়িক থেরাপির প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও রয়েছে। তবে সঙ্গীতের ক্ষেত্রে কোনও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড না থাকার কারণে এক এক জন এক এক ভাবে থেরাপি করে থাকেন। আগামী দিনে জীবনের ব্যস্ততা এবং প্রতিযোগিতাপূর্ণ সমাজে শান্তির খোঁজে এই ধরনের থেরাপির গ্রহণযোগ্যতা আরও বাড়বে বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।

https://www.facebook.com/share/p/1CJTgJcb1S/

31/07/2025

সম্প্রতি বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট নিয়োগের একটি বিজ্ঞপ্তি চোখে পড়ল। ৯ম গ্রেডের এই চাকুরির যোগ্যতার শর্ত গুলো দেখে আমি হতবাক। হাসবো না কাঁদবো বুঝতে পারছি না। আচ্ছা, যারা সরকারি এই নিয়োগ নিয়ে কাজ করেন তাদের জ্ঞানের এত ঘাটতি কেন? কেন তারা এই ধরনের শর্ত আরোপ করার আগে আরেকটু পড়াশোনা করেন না? বিজ্ঞাপন অনুযায়ী এই পদে আবেদনের প্রথম শর্ত দেওয়া হয়েছে প্রার্থীকে ব্যাচেলর অফ মেডিসিন হতে হবে অর্থাৎ একজন এমবিবিএস পাশ চিকিৎসক হতে হবে। কি হাস্যকর! যারা এই বিজ্ঞাপনের শর্ত গুলো লিখেছেন তার কি জানেন না সাইক্রিয়াট্রিষ্ট ও ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্টের পার্থক্য? নাকি জেনেও এটা ইচ্ছাকৃত ভাবে করেছেন? বাংলাদেশে তো এখন গণ বিরোধী সরকার নেই, তাহলে তারা কাদের ভয়ে এটা করেছেন?

ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিশ্বব্যাপী একটি স্বীকৃত পেশা যেখানে একজন ব্যক্তিকে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট হতে হলে তাঁকে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যেমন, মনোবিজ্ঞানে অনার্স এবং ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিষয়ে নুন্যতম মাস্টার্স ডিগ্রি ধারী হতে হবে। সময়ের হিসাবে কলেজ ডিগ্রির পরেও নুন্যতম ৭ বছর(ব্রিটিশ সিস্টেম) থেকে ৯/১০ বছর (USA/Canada সিস্টেম)সুপারভাইজড ইন্টার্নশিপ সহ প্রশিক্ষণ নিতে হয়। বাংলাদেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি ১৯৯৭ সনে প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে এই বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি দিয়ে আসছে যেখানে এখন পূর্ণাঙ্গ ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট হতে হলে তাঁকে বর্তমানে ৪ বছরের অনার্স ডিগ্রির পরেও কমপক্ষে আরও সাড়ে তিন বছর একাডেমিক প্রশিক্ষণ ও পাশাপাশি ১ বছরের এর বেশি সময় ইন্টার্নশিপ করার শর্ত পূরণ করতে হয়, সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে সাত বছরের প্রশিক্ষণ। এমনকি একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট হতে হলেও তাঁকে ৪ বছরের অনার্স কোর্স শেষ করে কমপক্ষে ১.৫ বছরের একাডেমিক প্রশিক্ষণ ও ইন্টার্নশিপ শেষ করতে হয় অর্থাৎ সব মিলিয়ে প্রায় ৫.৫/৬ বছরের প্রশিক্ষণ। অথচ বিজ্ঞাপিত ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট পদের প্রাথমিক যোগ্যতা চাওয়া হয়েছে MBBS ডিগ্রী যা কোনোমতেই এই পদের যোগ্যতা হতে পারে না। একজন MBBS ডিগ্রী ধারী কে এই পদের যোগ্য হতে হলে তাঁকে অবশ্যই স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিষয় উচ্চতর ডিগ্রী অর্জন করতে হবে। শুধু ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি নয়, কাউন্সেলিং সাইকোলজি, এডুকেশনাল সাইকোলজির মতো বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রী না নিয়ে কেউ নিজেকে এই বিষয়ের পেশাজীবী হিসেবে দাবি করা একধরনের পেশাগত প্রতারণা। এই বিজ্ঞাপন তো একভাবে সেটাই ইঙ্গিত দেয় যে শুধু ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি নয়, আগামীতে কাউন্সেলিং/এডুকেশনাল সাইকোলজির মতো বিশ্ব ব্যাপী স্বীকৃত পেশায় সরকারি ভাবে লোক নিয়োগের ক্ষেত্রেও MBBS ডিগ্রি প্রাথমিক শর্ত হিসেবে যোগ হয়ে যেতে পারে। এমনকি সরকারি চাকরিতে যেকোনো মনোবিজ্ঞানীদের নিয়োগের ক্ষেত্রেও একই ধরনের শর্ত আরোপ করা হয়ে যেতে পারে।
বাংলাদেশে বর্তমান সময়ে একজন ব্যক্তি শখের বশে বা নিজের ভালো লাগা থেকে কিছু কোর্স করে নিজেকে মনোবিজ্ঞানী হিসেবে unofficially পরিচয় দিতে পারেন, কিন্তু সরকারি ভাবে তাঁকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে কেন?

উল্লেখিত চাকুরির দ্বিতীয় শর্ত হচ্ছে, প্রার্থীর ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিষয়ে ডিপ্লোমা থাকতে হবে। জনাব, with due respect , আপনাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি বাংলাদেশে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিষয়ে কোনও ডিপ্লোমা ডিগ্রি দেওয়া হয় না। হাতে গোনা কিছু বিদেশী প্রতিষ্ঠান (বেশিরভাগই অনলাইন ভিত্তিক) এই বিষয়ে ডিপ্লোমা দেয় বটে তবে সেখানেও যোগ্য হতে হলে সাইকোলজি বা এর সাথে সংশ্লিষ্ট সাবজেক্টে নুন্যতম ডিগ্রী থাকতে হয় এবং ডিপ্লোমা কোর্সও ২ থেকে ৩ বছরের হয়, সেটা কিন্তু উল্লেখ করা নেই। আর সেই বিদেশী অনলাইন প্রতিষ্ঠান গুলো বাংলাদেশে সরকারি ভাবে স্বীকৃত কি? (কমেন্টে স্ক্রিনশট দিয়েছি, দেখে নিন)

চাকুরির তৃতীয় শর্ত হচ্ছে প্রার্থীকে বিএমডিসি কর্তৃক নিবন্ধিত হতে হবে। বিএমডিসি বাংলাদেশে চিকিৎসকদের (মেডিক্যাল ও ডেন্টাল) নিবন্ধনের সরকারি ভাবে স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠান দেশের সাইকোলজিস্টদের নিবন্ধন নিয়ে কাজ করে না (এখন পর্যন্ত)। তারা কিভাবে একজন ব্যক্তি মনোবিজ্ঞানী কিনা সেই যোগ্যতা যাচাই করতে পারে সেটা বোধগম্য না। এই যোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য যোগ্য ব্যক্তি বিএমডিসি তে নেই।

আমি মনে করি একজন ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট যে নীতিগত ও আইনগত কারণে নিজেকে মেডিক্যাল ডক্টর হিসেবে পরিচয় দিতে পারে না, ওষুধ প্রেসক্রাইব করতে পারে না, একজন এমবিবিএস ডিগ্রী ধারী ডক্টর ঠিক একই কারণে স্বীকৃত ডিগ্রী ছাড়া নিজেকে একজন ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট দাবী করতে পারেন না, এটা তার জন্য অবমাননাকর। আমাদের সাইক্রিয়াট্রিষ্ট সহকর্মীদের বলছি, আপনারা এতো পরিশ্রমের সাইক্রিয়াট্রি ডিগ্রী অর্জনের পর নিজেকে কেন ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট হিসেবে পরিচয় দেবেন? নিজেদের ভিজিটিং কার্ডে শুধু এই পরিচয় কি আপনারা কি লিখবেন? কখনোই না, কারণ এটা আপনাদের ডিগ্রী কে খাটো করবে। সাইকোথেরাপিতে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেদেরকে সাইকোথেরাপিস্ট হিসেবে পরিচয় অবশ্যই দিতে পারবেন, সেটা বাড়তি যোগ্যতা। বিজ্ঞাপনে উল্লেখিত পদ কিন্তু তা নয়।

সবশেষে স্বাস্থ্য অধিদফতর, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ বিধি প্রণয়ন কারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, আপনারা সত্যিই যদি ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট নিয়োগ দিতে চান, তবে এই পদের জন্য যথাযথ যোগ্যতা নির্ধারণ করে সংশোধন করুন।দরকার হলে বিশেষজ্ঞ সাইকোলজিস্টদের সাথে আলোচনা করুন। এই পদের বিপরীতে বর্ণিত যোগ্যতা সমূহ কিন্তু মেন্টাল হেলথ এক্ট ২০১৮ তে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্টদের যে সংজ্ঞা দেওয়া আছে তা লঙ্ঘন করছে। আপনারা কি সে বিষয়ে অবহিত আছেন?

এই দেশে অসংখ্য ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট ও কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট দুই যুগেরও বেশী সময় ধরে দেশের মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য সেবায় কাজ করে যাচ্ছে, সরকারি/বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। সম্প্রতি আন্দোলনের ফলে সৃষ্ট ট্রমায় আক্রান্ত ছাত্রছাত্রীদের সহ একটা বিশাল জনগোষ্ঠীকে নিস্বার্থ ভাবে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে এসেছে, আগামীতেও যারা দেশের যেকোনো মানবিক বিপর্যয়ে PFA, সাইকোথেরাপি, কাউন্সেলিং সেবা দেওয়ার জন্য এগিয়ে আসবে, তাদের জন্য এই ধরনের চাকুরির শর্ত দারুণ অবমাননাকর। আপনারা তাদের অবদান কে স্বীকৃতি না দিতে পারেন কিন্তু তাদেরকে আপনদের জ্ঞানের স্বল্পতা দিয়ে খাটো করতে পারেন না। দুই যুগের বেশি সময় ধরে একজন ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট হিসেবে দেশে এবং বিদেশে কাজের অভিজ্ঞতা থেকে বিজ্ঞাপনের এই পদে চাকুরির শর্ত হিসেবে যা উল্লেখ করা হয়েছে তার প্রতিবাদ করছি এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে উপযুক্ত যুক্তি দাবী করছি।

কামাল চৌধুরী
অধ্যাপক ও ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

31/07/2025

Psychosocial Intervention with SIDR effected adolescents in Shoronkhola Bagerhat.

31/07/2025
31/07/2025

Address

Sayeed Villa, House 10, Road 1, Akbarshah Housing Society, Pahartoli
Chittagong
4202

Telephone

+8801819514564

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Centre for Expressive Psychotherapy in Bangladesh posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share

Share on Facebook Share on Twitter Share on LinkedIn
Share on Pinterest Share on Reddit Share via Email
Share on WhatsApp Share on Instagram Share on Telegram