Sunne waz

Sunne waz Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from Sunne waz, Patiya, Chittagong.

19/04/2025

1
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ
শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।
In the name of Allah, Most Gracious, Most Merciful.
(2
الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ
যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ তা’আলার যিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালনকর্তা।
Praise be to Allah, the Cherisher and Sustainer of the worlds;
(3
الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ
যিনি নিতান্ত মেহেরবান ও দয়ালু।
Most Gracious, Most Merciful;
(4
مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ
যিনি বিচার দিনের মালিক।
Master of the Day of Judgment.
(5
إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ
আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি।
Thee do we worship, and Thine aid we seek.
(6
اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ
আমাদেরকে সরল পথ দেখাও,

16/04/2025
07/04/2025

এই তো আর হাতে গোণা কয়েকটি ভবন বাকি আছে। বাকিটা পৃথিবী থেকে মুছে গেছে।

২০০+ কোটি মুসলমানদের সামনে একটি গাজাকে মুছে ফেললো ক্ষুদ্র একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র।

06/04/2025

"মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি, এরপর গা'জা এই পৃথিবী থেকে মুছে যাবে।"
-
গা'জা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় ই/সরা/য়েল গা'জা উপত্যকায় সবচেয়ে ভয়/ঙ্কর ও টানা বো'মাবর্ষণ চালিয়েছে, যার ফলে ৮৬ জনের বেশি ফি'লি'স্তি'নি শ'হীদ হয়েছেন এবং ২৮০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। এটি ছিল যু'দ্ধের সবচেয়ে বিভীষিকাময় রাতগুলোর একটি।

ফি'লি'স্তি'নি সাংবাদিক খালিল আবু ইলি/য়াস ফেস/বুকে লিখেছেন:
"মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি, এরপর গা'জা এই পৃথিবী থেকে মুছে যাবে। তখন আমাদের শুধু বেহেশতেই খুঁজে পাবে। বিদায়, তোমাদের যারা ইতিহাসের সবচেয়ে নিষ্ঠুর 'আরব' হিসেবে পরিচিত হবে।"

একজন ফি'লি'স্তি'নি মেয়ে গা'জা থেকে লিখেছে:
"আমাদের খবর আর তোমাদের বিরক্ত করবে না। আর মাত্র কয়েক দিন, সব শেষ হয়ে যাবে।"
আল্লাহ যেন তাকে কখনো ক্ষমা না করেন, যে আমাদের নিপীড়নের সময় নীরব থেকেছে।

একজন ফি'লি'স্তি'নি শাইখ বলেন:
"আমি ঠিক এখনই আমার মেয়েকে দা'ফন করলাম—শরীর ছিল, কিন্তু মাথা ছিল না।"

- জাবিদুল ইসলাম

06/04/2025

05/04/2025

ধন-সম্পদের গর্বের কারণে কারূনের ধ্বংস

আলহা’মদুলিল্লাহ। ওয়াস-স্বলাতু ওয়াস-সালামু আ’লা রসুলিল্লাহ। আম্মা বাআ’দ।

কারূন নামে মুসা আ’লাইহিস সালামের একজন চাচাতো ভাই ছিলো। কারূনের গলার স্বর ছিল খুবই মিষ্টি। এক সময় সে অত্যন্ত মিষ্টি সুরে তাওরাত কিতাব পাঠ করতো। কিন্তু সামেরী যেমন মুনাফিক ছিল, অনুরূপভাবে আল্লাহর শত্রু এই কারূন-ও মুনাফিক হয়ে গিয়েছিল। সে বড় সম্পদশালী ছিল বলে সম্পদের গর্বে অহংকারী হয়েছিল এবং আল্লাহকে ভুলে গিয়েছিল। তার জাতির লোকদের মধ্যে সাধারণভাবে যে পোশাক পরার নিয়ম প্রচলিত ছিল, সে তার চাইতে অর্ধ হাত নীচু করে পোশাক বানিয়েছিল, যাতে তার গর্ব ও ঐশ্বর্য প্রকাশ পায়। তার এতো বেশী ধন-সম্পদ ছিল যে, তার কোষাগারের সিন্দুকের চাবিগুলো উঠাবার জন্যে শক্তিশালী লোকদের একটি দল নিযুক্ত ছিল। তার অনেকগুলো সিন্দুক ছিল এবং প্রত্যেক সিন্দুকের চাবি ছিল পৃথক পৃথক, যা ছিল অর্ধহাত করে লম্বা। যখন ঐ চাবিগুলো তার সওয়ারীর সাথে খচ্চরগুলোর উপর বোঝাই করা হতো তখন এর জন্যে কপালে ও চার পায়ে সাদা চিহ্নযুক্ত ৬০-টি খচ্চর নির্ধারিত থাকতো। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তাআ’লাই সবচাইতে ভাল জানেন।

কারূনের জাতির সম্মানিত, সৎ ও আলেম লোকেরা যখন তার দম্ভ এবং ঔদ্ধত্য চরম সীমায় পৌঁছতে দেখলেন তখন তারা তাকে উপদেশ দিয়ে বললেন, “এতো দাম্ভিকতা প্রকাশ করো না, আল্লাহর অকৃতজ্ঞ বান্দা হয়ো না, অন্যথায় তুমি আল্লাহর গজবে পতিত হবে। জেনে রাখো যে, আল্লাহ দাম্ভিক লোকদেরকে পছন্দ করেন না।”

উপদেশদাতাগণ তাকে আরো বলতেন, “আল্লাহর দেওয়া যে নিয়ামত তোমার নিকট রয়েছে তার দ্বারা তুমি আল্লাহর সন্তুষ্টি অনুসন্ধান কর এবং আল্লাহর পথে সেখান থেকে কিছু সম্পদ খরচ কর যাতে তুমি আখিরাতের অংশ-ও লাভ করতে পার। আমরা একথা বলছি না যে, দুনিয়ায় তুমি সুখ ভোগ মোটেই করবে না। বরং আমরা বলি যে, তুমি দুনিয়াতেও ভাল খাও, ভাল পান কর, ভাল পোশাক পরিধান কর, বৈধ নিয়ামত দ্বারা উপকৃত হও এবং ভাল বিবাহ দ্বারা যৌন ক্ষুধা নিবারণ কর। কিন্তু নিজের চাহিদা পূরণ করার সাথে সাথে তুমি আল্লাহর হক ভুলে যেয়ো না। তিনি যেমন তোমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন তেমনি তুমি তাঁর সৃষ্ট জীবের প্রতি অনুগ্রহ করো। জেনে রাখো যে, তোমার সম্পদে দরিদ্র লোকদেরও হক রয়েছে। সুতরাং প্রত্যেক হকদারের হক তুমি আদায় করতে থাকো। আর তুমি পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করো না। মানুষকে কষ্ট দেওয়া হতে বিরত থাকো এবং জেনে রেখো যে, যারা আল্লাহর মাখলুককে কষ্ট দেয় এবং পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করে আল্লাহ তাদেরকে ভালোবাসেন না।”

আলেমদের উপদেশবাণী শুনে কারূন যে জবাব দিয়েছিল তা হচ্ছে, “তোমাদের উপদেশ তোমরা রেখে দাও। আমি খুব ভালো করেই জানি যে, আল্লাহ আমাকে যা দিয়েছেন আমি তার যথাযোগ্য হকদার। আর আল্লাহ এটা জানেন বলেই আমাকে এই সব দান করেছেন।”

কারূনের মতো এমন অকৃতজ্ঞ লোকদের ব্যপারে আল্লাহ তাআ’লা ক্বুরআনে বলেছেন, “আর যখন মানুষকে কোন দুঃখ-কষ্ট স্পর্শ করে তখন সে অত্যন্ত বিনয়ের সাথে আমাকে ডাকতে থাকে। অতঃপর যখন আমি তাকে কোন নিয়ামত ও শান্তির সুযোগ দেই তখন সে বলে, এই (নেয়ামত ও শান্তি) আমি আমার জ্ঞানের দ্বারা লাভ করেছি।” সুরা যুমারঃ ৪৯।

আল্লাহ তাআ’লা আরো বলেছেন, “কষ্ট ও বিপদের পর আমি যদি তাকে আমার রহমতে (করুণার) স্বাদ গ্রহণ করাই তখন সে অবশ্যই বলে ওঠে- এটা আমার জন্যেই অর্থাৎ আমি এর হকদার ছিলাম।” সুরা হা মীম সাজদাহঃ ৫০।

যাই হোক, কারূনের উপরে উল্লেখিত উত্তরের পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তাআ’লা বলেন, কারূনের এটা ভুল কথা। আল্লাহ তাআ’লা যার প্রতি সদয় হন তাকেই তিনি সম্পদশালী করে থাকেন এই ধারণা মোটেও ঠিক নয়। ইতিপূর্বে তিনি কারূনের চাইতে শক্তিশালী ও প্রচুর ধন-সম্পদের অধিকারী লোকদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। তাহলে বুঝা গেল যে, মানুষের সম্পদশালী হওয়া তার প্রতি আল্লাহর ভালবাসার নিদর্শন নয়। যে আল্লাহর প্রতি অকৃতজ্ঞ হয় এবং কুফরীর উপর অটল থাকে তার পরিণাম মন্দ হয়ে থাকে। পাপীদেরকে তাদের পাপ সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করার কোন প্রয়োজন হবে না। বরং, তার আমলনামাই তার হিসাব গ্রহণের জন্যে যথেষ্ট হবে। কারূনের ধারণা ছিল যে, তার মধ্যে মঙ্গল ও সততা রয়েছে বলেই আল্লাহ তাআ’লা তার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। তার বিশ্বাস ছিল যে, সে ধনী হওয়ার যোগ্য। তার মতে তাকে আল্লাহ তাআ’লা ভাল না বাসলে এবং তার প্রতি সন্তুষ্ট না থাকলে তাকে এই নিয়ামত প্রদান করতেন না।

এমনি অহংকার ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ কারূন একদিন অতি মূল্যবান পোশাক পরিহিত হয়ে, অত্যন্ত জাঁকজমক সহকারে উত্তম সওয়ারীতে আরোহণ করে, স্বীয় গোলামদের মূল্যবান পোশাক পরিয়ে তাদেরকে সামনে ও পিছনে নিয়ে দাম্ভিকতার সাথে বের হলো। তার এই জাকজমক ও শান-শওকত দেখে দুনিয়াদার লোকদের মুখ আফসোসে ভরে গেল এবং তারা বলতে লাগলো, “আহা! কারূনকে যেরূপ (ধন-সম্পদ, মান-মর্যাদা) দেওয়া হয়েছে আমাদেরকেও যদি তা দেওয়া হতো! প্রকৃতই সে মহাভাগ্যবান।”

আলেমরা তাদের মুখে এই কথা শুনে তাদেরকে এই ধারণা হতে বিরত রাখতে চাইলেন এবং বুঝাতে লাগলেন, “দেখো, আল্লাহ তাআ'লা তাঁর সৎ ও মুমিন বান্দাদের জন্যে নিজের কাছে (জান্নাতে) যা কিছু তৈরী করে রেখেছেন তা এর চাইতে বহুগুণে শ্রেষ্ঠ এবং ধৈর্যশীলগণ ছাড়া অন্য কেউ এটা লাভ করতে পারে না।”

এই আয়াতের ভাবার্থ এটাও হতে পারে যে, এরূপ পবিত্র কথা ধৈর্যশীলদের মুখ দিয়েই বের হয়। যারা দুনিয়ার আকর্ষণ হতে দূরে থাকে এবং পরকালের প্রতি আকৃষ্ট হয়। এই অবস্থায় খুব সম্ভব এই কথা ঐ আলেমদের নয়, বরং তাদের প্রশংসায় এই পরবর্তী কথা আল্লাহর পক্ষ হতেই এসে থাকবে।

কারূনের এমন ঔদ্ধত্য ও বেঈমানীর বর্ণনা দেওয়ার পর এখন তার করুণ পরিণামের বর্ণনা দেওয়া হচ্ছেঃ

সালিম রাদিআল্লাহু তাআ’লা আ’নহু তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “একটি লোক তার লুঙ্গী লটকিয়ে গর্বভরে চলছিল, এমতাবস্থায় তাকে ভূ-গর্ভে ধ্বসিয়ে দেওয়া হয়। কিয়ামত পর্যন্ত সে মাটিতে প্রোথিত হতে থাকবে।” সহীহ বুখারী।

আবু সাঈদ রাদিআল্লাহু তাআ’লা আ’নহু হতে বর্ণিত আছে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “তোমাদের পূর্বে একটি লোক দুইটি সবুজ চাদরে নিজেকে আবৃত করে দম্ভভরে চলছিল, এমতাবস্থায় আল্লাহ তাআ'লা যমীনকে নির্দেশ দিলেন, তাকে গিলে ফেল।” মুসনাদে ইমাম আহমাদ।

হাফিয মুহাম্মাদ ইবনে মুনযির রহি’মাহুল্লাহ তাঁর কিতাবুল আজায়েবে বর্ণনা করেছেন যে, নওফল ইবনে মাসাহিক রাদিআল্লাহু তাআ’লা আ’নহু বলেন, নাজরানের মসজিদে আমি এক যুবককে দেখতে পাই। আমি তার দিকে তাকিয়ে থাকি এবং তার দেহের দৈর্ঘ্য, পূর্ণতা এবং সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয়ে যাই। সে আমাকে জিজ্ঞেস করেঃ “আপনি আমার দিকে তাকাচ্ছেন কেন?” আমি উত্তরে বলি, তোমার সৌন্দর্য ও পূর্ণতা দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে গেছি। সে তখন বলে, “স্বয়ং আল্লাহ-ও আমার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছেন।” তার মুখের কথা মুখেই আছে, হঠাৎ সে ছোট হতে শুরু করে এবং ছোট ও খাটো হতেই থাকে। শেষ পর্যন্ত সে কনিষ্ঠ আংগুলের সমান ছোট হয়ে যায়। তখন তার একজন আত্মীয় এসে তাকে ধরে তার জামার আস্তীনে ভরে নিয়ে চলে যায়।”

এটাও বর্ণিত আছে যে, মুসা আ’লাইহিস সালামের বদ দুয়ার কারণেই কারূন ধ্বংস হয়েছিল। তার ধ্বংসের কারণের ব্যাপারে অনেক ইখতিলাফ বা মতভেদ রয়েছে।

কারূণের ধ্বংসের একটি কারণ এরূপ বর্ণিত আছে যে, অভিশপ্ত কারূন এক ব্যভিচারিণী নারীকে বহু ধন-সম্পদ দিয়ে এই কাজে উত্তেজিত করে যে, যখন মুসা আ’লাইহিস সালাম বনী ইসরাঈলের লোকদের সমাবেশে দাঁড়িয়ে আল্লাহ তাআ’লার কিতাব পাঠ করতে শুরু করবেন ঠিক ঐ সময়ে সে যেন জনসম্মুখে বলে, “হে মুসা! তুমি আমার সাথে এরূপ এরূপ করেছো।” কারূনের এই কথামত ঐ স্ত্রীলোকটি তা-ই করে। অর্থাৎ কারূনের শিখানো কথাই বলে। তার একথা শুনে হযরত মুসা আ’লাইহিস সালাম কেঁপে উঠেন এবং তৎক্ষণাৎ দুই রাকাত নামায আদায় করে ঐ স্ত্রীলোকটির দিকে মুখ ঘুরিয়ে বলেন, “আমি তোমাকে ঐ আল্লাহর কসম দিচ্ছি যিনি সমুদ্রের মধ্যে রাস্তা করে দিয়েছিলেন, তোমার কওমকে ফিরাউনের অত্যাচার হতে রক্ষা করেছেন এবং আরো বহু অনুগ্রহ করেছেন, সত্য ঘটনা যা কিছু রয়েছে সবই তুমি খুলে বল।”

স্ত্রীলোকটি তখন বললো, “হে মুসা! আপনি যখন আমাকে আল্লাহর কসমই দিলেন তখন আমি সত্য কথাই বলছি। কারূন আমাকে বহু টাকা-পয়সা দিয়েছে এই শর্তে যে, আমি যেন বলি আপনি আমার সাথে এরূপ এরূপ কাজ করেছেন। আমি আপনাকে তা-ই বলেছি। এজন্যে আমি আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তার কাছে তাওবা করছি।” তার এ কথা শুনে হযরত মুসা আ’লাইহিস সালাম পুনরায় সিজদায় পড়ে যান এবং কারূনের শাস্তি প্রার্থনা করেন। তখন আল্লাহ তাআ'লার পক্ষ হতে তাঁর নিকট ওহী আসে, “আমি যমীনকে তোমার বাধ্য করে দিলাম।” মুসা আ’লাইহিস সালাম তখন সিজদা হতে মাথা উঠিয়ে যমীনকে বলেন, “তুমি কারূন ও তার প্রাসাদকে গিলে ফেল।” যমীন তা-ই করে।

কারূনের ধ্বংসের এই কারণটি আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিআল্লাহু তাআ’লা আ’নহু ও তাবেয়ী সুদ্দী রহি’মাহুল্লাহ বর্ণনা করেছেন।

দ্বিতীয় কারণ এই বলা হয়েছে যে, একদা কারূনের সওয়ারী অতি জাঁকজমকের সাথে চলতে শুরু করে। সে অত্যন্ত মূল্যবান পোশাক পরিহিত হয়ে একটি অতি মূল্যবান সাদা খচ্চরের উপর আরোহণ করে চলছিল। তার সাথে তার গোলামগুলোও ছিল, যারা সবাই রেশমী পোশাক পরিহিত ছিল। এইভাবে সে চলতেছিল। আর ঐদিকে মুসা আ'লাইহিস সালাম বনী ইসরাঈলের সমাবেশে ভাষণ দিচ্ছিলেন। যখন কারূন তার দলবলসহ ঐ জনসমাবেশের পাশ দিয়ে গমন করে তখন মুসা আ’লাইহিস সালাম তাকে জিজ্ঞেস করেন, “হে কারূন! আজ এমন শান-শওকতের সাথে গমনের কারণ কি?” সে উত্তরে বলে, “ব্যাপার এই যে, আল্লাহ তোমাকে একটি ফযীলত দান করেছেন এবং আমাকেও তিনি একটি ফযীলত দান করেছেন। যদি তিনি তোমাকে নবুওয়াত দান করে থাকেন তবে আমাকে তিনি দান করেছেন ধন-দৌলত ও মান-মর্যাদা। যদি আমার মর্যাদা সম্পর্কে তুমি সন্দেহ পোষণ করে থাকো তবে আমি প্রস্তুত আছি যে, চল, আমরা দুইজন আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করি, দেখা যাক আল্লাহ কার দুয়া কবুল করেন?”

মুসা আ’লাইহিস সালাম কারূনের এই প্রস্তাবে সম্মত হয়ে যান এবং তাকে সঙ্গে নিয়ে অগ্রসর হন। অতঃপর তিনি তাকে বলেন, “হে কারূন! আমি প্রথমে প্রার্থনা করবো, না তুমি প্রথমে করবে?”

সে জবাবে বলে, “আমিই প্রথমে দুয়া করবো।” এই কথা বলে সে দুয়া করতে শুরু করে এবং শেষও করে দেয়। কিন্তু তার দুয়া কবুল হলো না।

মুসা আ’লাইহিস সালাম তখন তাকে বললেন, “তাহলে আমি এখন দুয়া করি?” সে উত্তরে বলে, “হ্যা, কর।” অতঃপর মুসা আ’লাইহিস সালাম আল্লাহ তাআ’লার নিকট দুয়া করেন, “হে আল্লাহ! আপনি যমীনকে নির্দেশ দিন যে, আমি তাকে যে হুকুম করবো তাই যেন সে পালন করে।” আল্লাহ তাআ'লা তাঁর দুয়া কবুল করেন এবং তাঁর নিকট ওহী অবতীর্ণ করেন, “হে মুসা! যমীনকে আমি তোমার হুকুম পালনের নির্দেশ দিলাম।” মুসা আ’লাইহিস সালাম তখন যমীনকে বললেন, “হে যমীন! তুমি কারূন ও তার লোকদেরকে ধরে ফেল।” তাঁর এই কথা বলা মাত্রই তাদের পাগুলো যমীনে প্রোথিত হয়। তিনি আবার বলেন, “আরো ধরো।” তখন তাদের হাঁটু পর্যন্ত প্রোথিত হয়ে যায়। পুনরায় তিনি বলেন, “আরো পাকড়াও কর।” ফলে তাদের কাঁধ পর্যন্ত প্রোথিত হয়। তারপর তিনি যমীনকে বলেন, “তার মাল ও তার কোষাগারও পুঁতে ফেলো।” তৎক্ষণাৎ তার সমস্ত ধন-ভাণ্ডার ও সম্পদ এসে গেল। কারূন সবগুলোই স্বচক্ষে দেখে নিলো। অতঃপর তিনি যমীনকে ইঙ্গিত করলেন, “এইগুলোসহ তাদেরকে তোমার ভিতরে গ্রাস করে নাও।” সাথে সাথে কারূন তার দলবল, প্রাসাদ, ধন-দৌলত এবং কোষাগারসহ যমীনে প্রোথিত হয়ে গেল। এভাবে তার ধ্বংস সাধিত হলো। যমীন যেমন ছিল তেমনই হয়ে গেল।

বর্ণিত আছে যে, সপ্ত যমীন পর্যন্ত তারা প্রোথিত হয়। একটি বর্ণনা এও আছে যে, আজ পর্যন্ত প্রত্যেক দিন তারা এক মানুষ বরাবর নীচের দিকে প্রোথিত হচ্ছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত তারা এই শাস্তির মধ্যেই থাকবে। এখানে বনী ইসরাঈলের আরো বহু রিওয়াইয়াত রয়েছে। কিন্তু আমরা সেইগুলো বর্ণনা করা থেকে বিরত থাকলাম। কারূনের স্বপক্ষে এমন কোন দল ছিল না যে, আল্লাহর শাস্তি হতে তাকে সাহায্য করতে পারতো এবং সে নিজেও আত্মরক্ষায় সক্ষম ছিল না। সে ধ্বংস হয়, নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় এবং তার মূলোৎপাটন করা হয়। আল্লাহ তাআ'লা আমাদেরকে রক্ষা করুন।

মহিমান্বিত আল্লাহ বলেন, পূর্বদিন যারা কারূনের মত হওয়ার কামনা করেছিল তারা তার শোচনীয় অবস্থা দেখে বলতে লাগলো, আমরা ভুল বুঝেছিলাম। সত্যিই ধন-দৌলত আল্লাহর সন্তুষ্টির নিদর্শন নয়। এটা তো আল্লাহর হিকমত বা নৈপুণ্য, তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার জন্যে ইচ্ছা তার রিযক বর্ধিত করেন এবং যার জন্যে ইচ্ছা হ্রাস করেন। তাঁর হিকমত তিনিই জানেন। যেমন আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিআল্লাহু তাআ’লা আ'নহু হতে বর্ণিত আছে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের মধ্যে চরিত্রকে ঐভাবে বন্টন করেছেন, যেমনিভাবে তোমাদের মধ্যে রিযক বন্টন করেছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ যাকে ভালবাসেন তাকেও দুনিয়া (অর্থাৎ ধন-দৌলত) দান করেন এবং যাকে ভালবাসেন না তাকেও দান করেন। আর দ্বীন একমাত্র ঐ ব্যক্তিকে দান করেন যাকে তিনি ভালবাসেন।”

কারূনের মত হওয়ার বাসনাকারীরা আরো বললো, যদি আল্লাহ আমাদের প্রতি সদয় না হতেন তাহলে আমাদেরকেও তিনি ভূ-গর্ভে প্রোথিত করতেন। সত্যি, কাফিররা কখনো সফলকাম হয় না। না তারা দুনিয়ায় কৃতকার্য হয়, না আখিরাতে তারা পরিত্রাণ পাবে।

মূল উৎস গ্রন্থঃ ইমাম ইবনে কাসীর রহি’মাহুল্লাহ রচিত সূরা ক্বাসাসঃ ৭৬-৮৪ নং আয়াতের তাফসীর। (কিছুটা সংক্ষেপিত)।

কারূনের ঘটনা থেকে শিক্ষাঃ
(১) দুনিয়ার ধন-সম্পদ, মান-মর্যাদা আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাকে দেন, এগুলো বান্দার উপরে আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষণ নয়।

(২) দুনিয়াবী উৎকর্ষ যেমন সম্পদ, স্বাস্থ্য, সৌন্দর্য্য, বিদ্যা, বুদ্ধি ইত্যাদির কারণে অনেকের মনে অহংকার জন্ম নেয়। আর অহংকার বাড়তে থাকলে তা মানুষকে কুফুরীর দিকে নিয়ে যায়।

(৩) অহংকারী, পাপী বান্দাকে আল্লাহ একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ছাড় দেন। এই অবস্থা দেখে সাধারণ মানুষেরা ধোকার মাঝে পড়ে, কারণ সীমা লংঘন করেও তারা দুনিয়াতে সামান্য সময় আনন্দ উল্লাসে মেতে থাকে। কিন্তু, আল্লাহ এক সময় জালিম লোকদেরকে কঠোরভাবে পাকড়াও করেন।

(৪) আল্লাহ তার নাফরমান বান্দাদের জন্য কঠোর শাস্তি দাতা৷ এ কারণে আমাদের সর্বদাই আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা উচিত এবং নিজেদের ভুল-ত্রুটির জন্য বেশি বেশি তোওবা ও ইস্তিগফার করা উচিত।

(৫) অত্যাচারিত বান্দার দুয়া কিংবা বদ দুয়া, দুটোই আল্লাহ খুব দ্রুত কবুল করেন।

(৬) কাফিরদের ভোগ-বিলাস ও আনন্দ উপভোগ দেখে মুমিনদের ধোকার মাঝে পড়া উচিত নয়। কারণ, এটা সাময়িক এবং আখিরাতের তুলনায় খুবই সামান্য৷

(৭) চূড়ান্ত সফলতা আখিরাতে, সেইজন্য দুনিয়ার ব্যপারে ধৈর্য্য ধারণ করা প্রকৃত মুমিন ও জ্ঞানী বান্দার লক্ষণ।

04/04/2025

যখন তোমরা আজান শুনতে পাও, তখন মুয়াজ্জিন যা বলে তোমরাও তা বলো।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬১১)

03/04/2025

লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ

03/04/2025

03/04/2025

Test your mobile

Address

Patiya
Chittagong

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Sunne waz posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share

Share on Facebook Share on Twitter Share on LinkedIn
Share on Pinterest Share on Reddit Share via Email
Share on WhatsApp Share on Instagram Share on Telegram