Smart Health Proposal

Smart Health Proposal Health can be promoted by encouraging healthful activities.

Health, according to the World Health Organization, is a state of complete physical, mental and social well-being and not merely the absence of disease and infirmity.

06/11/2024

খরচ কমিয়ে ৭ দিনই যেভাবে পুষ্টিকর খাবার খাবেন

বাজারদরে পেরে না উঠে অনেকেই রোজকার খাদ্যতালিকা থেকে বাদ রাখছেন ডিম, দুধ বা মাছ–মাংসের মতো পদ। দিন শেষে তাই চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে খাবার থেকে পর্যাপ্ত পুষ্টি মিলছে কি না। এই বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েই বারডেম জেনারেল হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ শামছুন্নাহার নাহিদ ও ‘নকশা’র নিয়মিত রন্ধনশিল্পী ফারাহ্‌ সুবর্ণাকে এক টেবিলে বসিয়েছিল ‘অধুনা’। দামি খাবার বাদ দিয়েও কীভাবে প্রতিদিনের পুষ্টিটা ঠিক রাখা যায়, সেই পরামর্শই দিয়েছেন তাঁরা। একই সঙ্গে চারজনের একটি পরিবারের সাত দিনের খাবারের তালিকা কেমন হতে পারে, তারও একটি নমুনা তৈরি করে দিয়েছেন তাঁরা। এই তালিকা তৈরিতে প্রতিদিনের পুষ্টি ও সাশ্রয়ী উপাদানগুলোকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।

প্রতিদিন কতটা পুষ্টি দরকার

শামছুন্নাহার নাহিদ: পুষ্টি নির্ভরই করে বয়সের ওপর। একটি পরিবারে যদি চারজন মানুষ থাকেন, তাহলে তাঁদের বয়স নিশ্চয়ই এক হবে না। কেউ হয়তো প্রাপ্তবয়স্ক, কারও আবার বাড়ন্ত বয়স। থাকতে পারেন প্রবীণ সদস্যও। তাই সরাসরি চারজন বলে পুষ্টির পরিমাণ বোঝানো কঠিন। একই সঙ্গে মানুষগুলোর বয়স, ওজন, উচ্চতা—নানা কিছু নির্ভর করে। তবে আমরা যদি সামগ্রিক দিক বিবেচনায় নিয়ে একটা ধারণা দিতে চাই, তাহলে বলতে হবে, একই রান্নায় কীভাবে সেই পুষ্টির চাহিদা মিটবে। প্রথমত, মানুষটির জন্য শর্করা (কার্বোহাইড্রেড) জরুরি। যা মিলবে চাল, আটা থেকে। এরপর দরকার প্রোটিন। যা দুই ধরনের উপায়ে মিলবে—১. প্রাণিজ প্রোটিন ২. উদ্ভিজ্জ প্রোটিন। তবে প্রাণিজ প্রোটিন খেতে পারলে সবচেয়ে ভালো, সেটা অল্প পরিমাণে খেলেও ভালো কাজ করে। এর মধ্যে আছে ডিম, দুধ, মাছ, মাংস ইত্যাদি। তবে কম খরচে মেলে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন। যেখানে নন–এসেনশিয়াল অ্যামিনো অ্যাসিড অনেক বেশি, তবে এসেনশিয়াল অ্যামিনো অ্যাসিডের একটু ঘাটতি থাকে। ফলে আমরা যদি উদ্ভিজ্জ প্রোটিন খেতে চাই, তাহলে ডাল, ছোলা, বুট, বাদাম থেকে সহজে মিলতে পারে এই প্রোটিন। এবার আসি আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান চর্বি (ফ্যাট) বিষয়ে। আলাদা করে যেটা খাওয়ার দরকার পড়ে না। শুধু খাবারে প্রতিদিন যে তেল খাচ্ছি, সেটা থেকেই এই উপাদানটি শরীর পেয়ে যেতে পারে। এরপর আছে ভিটামিন ও মিনারেলস, যা আগের খাবারগুলো খাওয়ার পর শরীরে সেটা শোষণ ও হজম এবং রোগ প্রতিরোধের জন্য দরকার। এটা লাগে খুবই কম, কিন্তু প্রতি বেলায় জরুরি। শাক, সবজি, ফলমূল বা সালাদ থেকে এটা সহজেই পেতে পারে শরীর।

কারও যদি সামর্থ্য না থাকে, সব কটি উপকরণ দামি খাওয়ার কোনো দরকার নেই। প্রতিদিন যে শর্করা দরকার, সেটা ভাত বা রুটি ছাড়াও চিড়া, মুড়ি, নুডলসের মতো উপকরণ থেকেও মিলতে পারে। প্রোটিন মানেই যে মাছ–মাংস খেতে হবে, সেটা নয়। সবচেয়ে কম খরচে বেশি প্রোটিন মেলে ডিম থেকে। ডিমের দামও বেশি, কিন্তু মাছ বা মাংসের তুলনায় এখনো কম। ১৩ টাকা একটা ডিমের দাম হলে চারজনের পরিবারের জন্য খরচ ৫২ টাকা। এই ৫২ টাকায় এত ভরপুর প্রোটিন আর কিছুতে পাওয়া কঠিন। তাই প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে ডিম একটি ভালো খাবার।

পাশাপাশি শাকসবজি অথবা সালাদের যেকোনো একটা কম খরচে সারতে চেষ্টা করুন। যেটা কম দাম, সেটাই কিনুন। এবার ধরুন ডালটা বাদ যাচ্ছে বা পদ বেশি রান্না করতে গিয়ে খরচ বেড়ে যাচ্ছে। তাহলে চারটি পদকে দুই পদে নামিয়ে এনে রান্নায় কৌশলী হতে চেষ্টা করুন। ধরুন, আপনি সবজি দিয়ে মাছ রান্না করলেন আর ডাল দিয়ে রান্না করলেন শাক। এতে দুই পদ রান্না করেও সহজে পেতে পারেন চার ধরনের পুষ্টি। পাশাপাশি ভিটামিন সি রোজ খেতে চেষ্টা করুন। সেটা কমলা, মাল্টা খেয়ে পূরণ না করে প্রতিদিনের খাবারে কাঁচা মরিচ, লেবু, ধনে পাতা ইত্যাদি রেখে সেখান থেকেও মেটাতে পারেন।

তিনবেলাই খাবেন, নাকি বেশি
পুষ্টিবিদের পরামর্শ হলো তিনবেলার বাইরে আরও এক-দুবেলা কিছু খাওয়া। সেটা দুপুর বা রাতের মতো ভারী খাবার না, নাশতা। একটা কলা, একটা পেয়ারা বা অন্য কোনো দেশি মৌসুমি ফল থেকেও পূরণ হতে পারে এই চাহিদা। একদিন হয়তো খেলেন এক বাটি সেদ্ধ ছোলা, কখনো নুডলস বা এক গ্লাস দুধ। এতেই শরীর ঠিক থাকবে। বাসায় যদি বাড়ন্ত বয়সের শিশু থাকে অর্থাৎ ১৮ বছরের কম বয়সী, তা হলে তার দিকে বিশেষভাবে খেয়াল রাখুন। তার মেধা ও শরীরিক বিকাশের জন্য কিছুটা বাড়তি খাবার জরুরি।

খরচ কমাতে কী করা
ফারাহ্‌ সুবর্ণা: দুইবেলার খাবার একসঙ্গে রান্না করলে নানা দিক থেকে কমে যাবে খরচ। সময় ও জ্বালানি সাশ্রয় হবে। কিছু খাবার যেমন সাত দিনের একসঙ্গে কিনে নিতে পারেন, কিছু খাবার কেনা দরকার হতে পারে দুই দিন পর পর। তবে বাজার করার আগে যদি পদগুলো ঠিক করে নিতে পারেন, তাতে কেনাকাটার বাড়তি খরচ এড়ানো সহজ হবে। যাঁদের বাসায় ফ্রিজ আছে, তাঁরা দু–তিন দিনের রান্না একবারে করেও ফ্রিজে রাখতে পারেন। এতে খরচ আরও কম হবে।

আলাদা আলাদা বক্সে ভরে খাবার রাখুন ফ্রিজে

অনেকে মনে করেন, ফ্রিজে রেখে খেলে খাবারের পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। এই বিষয়ে পুষ্টিবিদের পরামর্শ হলো—খাবার কীভাবে সংরক্ষণ করছেন, তার ওপর মান ঠিক থাকা না–থাকা নির্ভর করে। তাই ঠিকভাবে রান্না ও সংরক্ষণ করা হলে দু–তিন দিনে খাবারের মানে খুব একটা হেরফের হয় না। রান্নার পর খাবার ঠিকমতো ঠান্ডা করে, আলাদা আলাদা পাত্রে ঠিকমতো ঢেকে রাখলে মান ঠিক থাকবে। এখানে অবশ্যই খাবার ঠিকমতো ঢেকে রাখতে হবে। এতে বরং তেল–মসলার খরচ অনেকটা বেঁচে যাবে। সময়ও কম নষ্ট হবে।

প্রতিদিন মাংস বা মাছ না খেয়ে সাত দিনে দুই দিন মাছ রাখুন, একবেলা মাংস, দুই দিন ডিমসহ অন্য কিছু রেখে যদি বাজার করা হয়, তাতেও খরচ কমানো সম্ভব। মোটকথা, সপ্তাহের শুরুতেই আপনাকে হিসাব করে ফেলতে হবে আপনি এই সাত দিন কী কী রাঁধবেন। এরপর কোন বেলার জন্য কতটা উপকরণ দরকার হতে পারে, আন্দাজ করে সেটুকুই বাজার করুন। অনেক সময় আমার দরকার হয়তো দুটি বেগুন, অযথা এক কেজি কিনে আনার দরকার নেই। অথবা চল্লিশ টাকার বাজারের পর অনেক সময় দোকানি ‘৫০ টাকার মিলায়ে দিই’ বলে বাড়তি দিয়ে দেন। এসব ক্ষেত্রে বিনয়ের সঙ্গে ‘না’ বলতে শিখুন।

খাবার নিয়ে সন্তানদের নানা রকম বায়না থাকে। অনেকে আছেন, ‘মাছ খাই না’ বলে এড়িয়ে যান। তাঁদের খাওয়ানোর জন্য কিছুটা ভিন্নভাবে রান্নার চেষ্টা করুন। রুই–কাতলার ঝোল খেতে না চাইলেও তেলাপিয়ার গ্রিল ঠিকই পছন্দ করবে। এতে তেলাপিয়া মাছ কেনায় বরং খরচ আপনার কিছুটা কম হবে। উপকরণেও বাড়তি খরচ হবে না।

চারজনের সাত দিনের বাজার
টাকাপয়সার টান থাকলে একসঙ্গে মাসের বাজার করা অনেকের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। তাই কিছু উপকরণ যদি এক সপ্তাহের জন্যও কিনে রাখতে পারেন, তাতে সংসারে সাশ্রয় হবে। রন্ধনশিল্পী ও পুষ্টিবিদ মিলে এখানে যেমন একটা হিসাব দিলেন—চাল ৪ কেজি, আটা ২ কেজি, তেল ১ লিটার, চিনি ২০০ গ্রাম, ডাল ১ কেজি, পেঁয়াজ ১ কেজি, আদা ২০০ গ্রাম, রসুন ২৫০ গ্রাম, লবণ ২৫০ গ্রাম, আলু ১ কেজি, ডিম ২৮টি ও গুঁড়া দুধ ৩০০ গ্রাম। এই উপকরণগুলো একবারে কিনে ফেলতে পারলে সপ্তাহের জন্য নিশ্চিত থাকতে পারবেন। কেউ কেউ এসব বাজার এক মাসের জন্য একবারে করে নেন, তাতে আরও সাশ্রয়।

এ ছাড়া মাছ, মাংস, সবজি, শাকের মতো কাঁচাবাজার করুন মিলপ্ল্যান ঠিক করে। এসব ক্ষেত্রে মাছ কিনলে হয়তো, দুইবেলার কথা ভেবে পরিমাণ ঠিক করে নিলেন। মাছের মাথা ও লেজ দিয়ে হয়তো আরেক বেলা অন্য কোনো পদ রাঁধলেন। অনেক সবজির খোসা খাওয়া যায়। লাউ দিয়ে যদি মাছ রান্না করেন, লাউয়ের খোসা দিয়ে ডিম বা আলু যোগ করে একটা ভাজি করতে পারেন। এভাবে পরিকল্পনা করতে হবে।

কবে কী রান্না করবেন সেই পরিকল্পনা আগে করে রাখুন

সাত দিনের খাবারে যাতে একঘেয়েমি না আসে, এমনভাবে বুদ্ধি করে পদ নির্বাচন করুন। আপনার পরিবারে কে কী খেতে ভালোবাসে, সেটা আপনিই ভালো বুঝবেন। এরপরও এখানে রান্নাবিদ এক সপ্তাহের একটা মিল প্ল্যান দিয়েছেন, যাতে পুষ্টি ও সাশ্রয়—দুটিই মিলবে।

সাত দিনের সকালের নাশতায় থাকতে পারে রুটি, ভাজি, ডিম বা ডাল। একদিন একেকভাবে রান্না করলে স্বাদ নিয়ে ভাবনা থাকবে না। বেশির ভাগ বাড়িতে দুপুর ও রাতের রান্না একবারে করে ফেলা হয়। এতেও খরচ কমে। সেই হিসাবেই দুপুর ও রাতের দুবেলায় মুল খাবার যেমন হতে পারে—

শনিবার: ভাতের সঙ্গে একটা ভর্তা রাখতে পারেন। আলু, বেগুন, কচু, ডাল ইত্যাদি ভর্তা খেতে পারেন। ভর্তায় পটোল, মিষ্টিকুমড়া বা লাউয়ের খোসাও রাখতে পারেন। মাছের ঝোল বা ভুনা, ডাল রাখুন। মাছের সঙ্গে যদি সবজি দিয়ে ঝোল করেন, তাহলে তার খোসা দিয়ে সেদিন ভর্তাটা করতে পারেন।

রোববার: ভাত, কলমিশাক ভাজি, কাঁচকলা দিয়ে কই মাছের ঝোল ও ডাল। রাতে কেউ চাইলে রুটি খেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে একটা ভাজি রাখতে পারেন।

সোমবার: ভাত বা রুটি। ঢ্যাঁড়সভাজি, ব্রয়লার মুরগি দিয়ে আলুর ঝোল অথবা মুরগি দিয়ে মুগডাল।

মঙ্গলবার: ভাত, লালশাক ভাজি, পাঙাশ মাছ আলু দিয়ে রান্না বা ভুনা ও পাতলা ডাল।

বুধবার: ভাত, কচুরমুখি ভর্তা, মাছভাজা ও ডাল। একবেলা রুটি হলে সঙ্গে রাখতে পারেন পেঁপে দিয়ে মসুর ডালের সবজি।

বৃহস্পতিবার: ভাত, আলু–করলা ভাজি, পাবদা মাছ ও পাতলা ডাল।

শুক্রবার: খিচুড়ি বা ভাতের সঙ্গে পটোলভাজা, মুরগি বা গরুর একটি পদ ও ডাল।

প্রতি বেলা খাবারের সঙ্গে লেবু বা কাঁচা মরিচ নিশ্চিত করুন। এতে দরকারি ভিটামিন সি শরীরে যাবে। পটোল ও মিষ্টি কুমড়ার খোসাও ভাপ দিয়ে রেখে প্রয়োজনমত ভর্তা করে খেতে পারেন।

মাসের শুরুতেই বাজার খরচের পরিকল্পনা করবেন যেভাবেহাসান ইমামমাসের শুরুতে পুরো মাসের বড় বাজারগুলো সেরে নিলে খরচ কিছুটা কম হ...
06/11/2024

মাসের শুরুতেই বাজার খরচের পরিকল্পনা করবেন যেভাবে
হাসান ইমাম

মাসের শুরুতে পুরো মাসের বড় বাজারগুলো সেরে নিলে খরচ কিছুটা কম হবে। মডেল: ফারহানা নিশো

জীবনযাপনের নানা ক্ষেত্রে খরচ বেড়ে যাওয়ায় আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সামঞ্জস্য বিধান করতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। খরচের লাগাম টেনে ধরাটা তাই জরুরি। ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করতে হলেও কমাতে হবে ব্যয়ের খাত। কিন্তু দৈনন্দিন জীবনযাপনে কিছু খরচ চাইলেও বাদ দিতে পারবেন না। এই যেমন খাবার। খাবার তো আর চাইলেও বাদ দিতে পারবেন না। তবে পরিকল্পনা করে সেখান থেকেও কিছু টাকা বাঁচিয়ে নিতে পারবেন।

গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লায়েড হিউম্যান সায়েন্সের (সরকারি গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ) রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক রিনাত ফৌজিয়া বলেন, ‘সংসারের খরচ বাবদ একটা অংশ ব্যয় হয় খাবারে। তাই বাজারের ক্ষেত্রে পরিকল্পনাটা খুব জরুরি। মাসিক আয় থেকে কতটুকু অংশ বাজার খরচে ব্যয় করবেন, সেটা মাসের শুরুতেই ঠিক করে নিন। পুরো মাসের যে বাজারগুলো একবারে করে রাখা সম্ভব, তার তালিকা করে নিন। এতে আপনার টাকাপয়সা ও সময়-শক্তি—দুই–ই সাশ্রয় হবে।’

আপনার মাসিক আয়ের মোট অর্থ কীভাবে বাজেট করবেন, সেই সম্বন্ধে দারুণ এক উপায় বাতলে দিয়েছে জনপ্রিয় বই অল ইয়োর ওর্থ: দ্য আলটিমেট লাইফটাইম মানি প্ল্যান। আপনি যদি মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করেন, তাহলে সেটা ২৫, ১৫ ও ১০ হাজার—এই তিন ভাগ করে ফেলুন। সঞ্চয় খাতে যাবে ১০ হাজার, ১৫ হাজারে নিজের শখ মেটাবেন, বাকি ২৫ হাজার যাবে নিত্য খরচে। এই ২৫ হাজারের মধ্যেই আপনার বাড়িভাড়া, বাজার খরচসহ নানা রকম বিল মেটাতে হবে।

তাই মাসের শুরুতেই ভাড়া ও বিলের টাকা এক পাশে রেখে বাজারের টাকা আলাদা করুন। এই বাজারের টাকা দিয়ে কীভাবে নিজের পুরো মাসের খাবার খরচ মেটাবেন, সেটা নিয়ে ভাবতে বসুন। মাসের শুরুতেই যদি প্রধান বাজারগুলো সেরে নিতে পারেন, তাহলে যেমন টাকা কিছুটা সাশ্রয় হবে, তেমন সময় ও শ্রম কম লাগবে। অধ্যাপক রিনাত ফৌজিয়ার মতে, অনেকের হয়তো মাসে চাল লাগে ২০ কেজি, তিনি যদি ৫ কেজি করে ৪ বারে সেই চাল খুচরা কেনেন, তাহলে খরচ যেমন বাড়বে, নিজের শক্তিরও অপচয় হবে। তাই পরিকল্পনা করে একবারে সেটা কিনে নিলেই ভালো।

পরিবারের খাবারের বাজেট করার সময় দৈনন্দিন পুষ্টির দিকেও বিশেষভাবে নজর রাখতে হবে। ডায়াবেটিস নিউট্রিশনিস্ট সোসাইটি অব বাংলাদেশের সভাপতি পুষ্টিবিদ আখতারুন্নাহার আলো জানালেন, একজন ব্যক্তির খাবারে প্রতিদিন শর্করা (কার্বহাইড্রেট), আমিষ, প্রোটিন, খনিজ লবণ ও ভিটামিন থাকা দরকার। তেলও প্রতিদিনের খাবারে রাখতে হবে। এসব দরকারি উপকরণের কথা মাথায় রেখেই বাজার করতে হবে। তবে প্রোটিন দরকার বলেই প্রতিদিন মাংস বা ডিম খেতে হবে, এমন না। একটু বুদ্ধি খাটিয়ে সপ্তাহের খাবারের মেনু ঠিক করে নিলেই খরচ কমানো যাবে খাবার খাতের ব্যয় থেকে। সেটা কীভাবে করতে হবে, সেই পরামর্শও দিয়েছেন আখতারুন্নাহার।

এক দিন সকালে যদি রুটির সঙ্গে ডিম খান, তাহলে পরদিনের মেনুতে রুটি-ডাল রাখতে পারেন। দুই দিন মাছ খেলেন, এক দিন মাংস, এক দিন নিরামিষ—এভাবে খাবারের মেনু ঠিক করে নিতে পারেন। খিচুড়ি খুবই ভালো ব্যালেন্সড ডায়েট। এক বেলা খিচুড়ি খেলে পর্যাপ্ত পুষ্টি মিলবে, খরচও কমবে। নাশতায় প্রতিদিন দামি খাবার না খেয়ে কখনো ছোলা, কখনো নুডলস খেতে পারেন। দুধের যে উপাদান শরীরে দরকার, সেটা বাদাম থেকেও মেলে। তাই কোনো দিন দুধের বদলে চিনাবাদাম খেলেও ক্ষতি নেই। শাক থেকে মেলে নানা রকম ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, আয়রন ও ফাইবার। তাই প্রতিদিন এক বেলা শাক থাকতে পারে খাবারের তালিকায়। শাকে খরচ যেমন কম, পুষ্টি মিলবে বেশি।

সব পরামর্শের পর বাজারে যখন যাবেন, তালিকা ধরে এমনভাবে বাজার করতে হবে, যাতে অপচয় না হয়। রন্ধনবিদ সিতারা ফেরদৌসের পরামর্শ, আগে পরিবারের সদস্যসংখ্যা হিসাব করে, তারপর কোন জিনিস কতটুকু কিনবেন, হিসাব করুন। একবারে কেনার ফলে কোনো বাজার যদি বেশি হয়, তাহলে সেটা পরের মাসের তালিকায় যুক্ত করে নিন। জোর করে সেই বাজার চলতি মাসেই শেষ করে ফেলবেন না। বরং নিজের মধ্যে একধরনের সংকল্প রাখতে পারেন, মাস শেষে যেন কিছুটা বাঁচাতে পারেন। এই বাড়তি অংশ পরের মাসে যোগ হওয়ায় কিছু টাকা সাশ্রয় হবে, যেটা চাইলে সঞ্চয়ে যুক্ত করতে পারেন। অনেকটা মুষ্টির চাল জমা করার মতো।

খাবারের জন্য মাসের শুকনা বাজারগুলো শুরুতেই করে নিতে পারেন। কাঁচা বাজার যেহেতু একবারে করে রাখা যায় না, তাই শুকনা বাজারের একটা তালিকা করে সেভাবে মাসকাবারি বাজার করতে হবে। চারজনের পরিবারের যে বাজার যতটুকু করে রাখতে পারেন, তার একটা তালিকা দিয়েছেন সিতারা ফেরদৌস। নিজের প্রয়োজনের সঙ্গে এই তালিকা মিলিয়ে আপনি মাসের বাজার করে নিতে পারেন।

04/11/2024

কিছু মানুষের শরীরে কেন কখনোই ঘামের দুর্গন্ধ হয় না

আমরা অনেকে বয়ঃসন্ধিকাল থেকেই ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করছি। কারণ, বয়ঃসন্ধিকালে মানুষের শরীরে হরমোনজনিত বেশ কিছু পরিবর্তন ঘটে। ফলে শরীরে প্রচুর ঘাম হয়। ঘাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং শরীরের দুর্গন্ধ দূর করতে ডিওডোরেন্টকেই অনেকে একমাত্র সমাধান বলে মনে করে। তবে কিছু মানুষ আছেন, যাঁদের ঘামের দুর্গন্ধ নিয়ে কোনো চিন্তাই করতে হয় না। এর পেছনে কয়েকটি কারণ আছে। মানুষের শরীরে কেন দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয় কিংবা হয় না, কোন কোন বিষয় আমাদের শরীরের স্বাভাবিক গন্ধের ওপর প্রভাব ফেলে, এসব ব্যাপারে বিশেষজ্ঞরা কী বলেন?

আমাদের শরীরে দুর্গন্ধ কেন হয়
ঘামের নিজস্ব কোনো কটু গন্ধ নেই। ঘামের বেশির ভাগই পানি। সঙ্গে থাকে সোডিয়াম ও ক্লোরাইডের মতো কিছু উপাদান। তবে ঘাম কোন ধরনের গ্রন্থি থেকে উৎপন্ন হচ্ছে, তার ওপর আমাদের শরীরে দুর্গন্ধের মাত্রা নির্ভর করে। দুই ধরনের ঘর্মগ্রন্থি শরীরে দুর্গন্ধ সৃষ্টির জন্য দায়ী—এক্রিন ও অ্যাপোক্রিন। এক্রিন গ্রন্থিগুলো পানির মতো এবং গন্ধহীন ঘাম সৃষ্টি করে। এ ধরনের ঘাম শরীরকে ঠান্ডা রাখে। এমন ঘাম সাধারণত গ্রীষ্মকালে আমাদের শরীরে হয় এবং শরীরেই শুকিয়ে যায়।

অন্য দিকে আমাদের শরীরের অ্যাপোক্রিন গ্রন্থিগুলোর কারণে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি। চর্মরোগ–বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরে যেসব স্থানে চুল থাকে, যেমন মাথা, বগল ও কুচকিতে অ্যাপোক্রিন গ্রন্থির পরিমাণ বেশি। এসব গ্রন্থি থেকে উৎপন্ন ঘাম তুলনামূলক ঘন হয়।

এক্রিন গ্রন্থিগুলো থেকে উৎপন্ন ঘামে শুরুতে গন্ধ থাকে না। কিন্তু ত্বকের ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শে আসার পর ঘামের প্রোটিন ও ফ্যাটি অ্যাসিডগুলো সংশ্লেষণের ফলে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়। আমরা যখন ক্লান্ত বা অবসন্ন হই, তখন আমাদের অ্যাপ্রোক্রিন গ্রন্থিগুলো থেকে ঘাম উৎপন্ন হয়। এর অর্থ হলো, যখন আমাদের চাপ বেশি থাকে, তখন আমাদের শরীরে ঘামের দুর্গন্ধ হওয়ার আশঙ্কা বেশি।

এ ছাড়া ট্রাইমেথালামেনুরিয়া নামের একটি রোগের কারণে মানুষের ঘাম, নিশ্বাস ও মূত্র থেকে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়। কিডনি রোগ, ডায়াবেটিস, এমনকি লিভার ফেইলিওরের কারণেও শরীরে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়।

কিছু মানুষের শরীরে কেন দুর্গন্ধ হয় না
কিছু কারণে কারও কারও শরীরে খুব একটা দুর্গন্ধ হয় না। চর্মরোগ–বিশেষজ্ঞদের মতে, পূর্ব এশীয়দের মধ্যে একটি জেনেটিক ভ্যারিয়েশন এবিসিসি১১ নামের একটি প্রোটিনের সৃষ্টিকে প্রভাবিত করে। এই জিন ভ্যারিয়েশনের কারণে একটি নির্দিষ্টসংখ্যক জনগোষ্ঠীর শরীরে তুলনামূলক কম দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়। কারণ, তাঁদের ঘামে প্রোটিনের পরিমাণ কম থাকে। কম প্রোটিন ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শে এসে সংশ্লেষিত হয়ে গন্ধ সৃষ্টিকারী উপাদান কম তৈরি হয়।

২০১০ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, পূর্ব এশীয়দের মধ্যে ৮৫-৯৫ শতাংশ এবং আফ্রিকান ও ইউরোপীয়দের মধ্যে ৩ শতাংশ মানুষ এই জিন বহন করে। মজার ব্যাপার হলো, অপর এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রয়োজন না থাকলেও এবিসিসি১১ জিন ভ্যারিয়েশন বহনকারী ব্যক্তিরা ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করেন।

খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে ঘামের কি সম্পর্ক আছে
হ্যাঁ, জিনগত বিষয় ছাড়াও খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে শরীরের দুর্গন্ধের সম্পর্ক আছে। রেড মিট, অ্যালকোহল, ক্রুসিফেরাস সবজি (যেমন বাঁধাকপি), রসুন, পেঁয়াজের মতো খাবার শরীরে দুর্গন্ধ সৃষ্টির জন্য দায়ী। তাই এসব খাবার যাঁরা বেশি খান না, তাঁরা অন্যদের তুলনায় দুর্গন্ধমুক্ত থাকেন। এ ছাড়া কিছু মসলা, যেমন কারিপাতা, জিরা, মেথিতে এমন কিছু যৌগ আছে, যেসব শরীরে অনেক বেশি সময় ধরে অবস্থান করে। এসবের কারণেও দুর্গন্ধ সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

আমরা কি নিজেদের ঘামের দুর্গন্ধ টের পাই
চর্মরোগ–বিশেষজ্ঞদের মতে, মানুষ নিজের ঘামের দুর্গন্ধ নিজে টের না-ও পেতে পারে। কারণ, আমাদের মস্তিষ্ক আমাদের নিজেদের শরীরের গন্ধের মতো ধ্রুবক (যেসব অপরিবর্তিত থাকে) উদ্দীপনাগুলোকে ছেঁকে ফেলে দেয়। এতে ধীরে ধীরে আমাদের আশপাশের পরিবেশের অপরিচিত গন্ধের প্রতি আমাদের মনোযোগ বৃদ্ধি পায়। ফলে মনে হতে থাকে, আমাদের শরীরে কোনো দুর্গন্ধ হয় না। কিন্তু বাস্তবে আমাদের আশপাশের মানুষেরা আমাদের শরীরের দুর্গন্ধ ঠিকই টের পায়। কাজেই আপনার বন্ধুরা যদি বলে, আপনার শরীরে ঘামের দুর্গন্ধ, তাহলে কথাটা সত্যি হওয়ার আশঙ্কাই বেশি।

শরীরের দুর্গন্ধ দূর করার কিছু উপায়
নিয়মিত গোসল করুন। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন।

ঢিলেঢালা, বাতাস চলাচল করতে পারে—এমন পোশাক পরুন। ঘাম যাতে শরীরে আটকে না থাকে।

প্রচুর পানি খান। পানি ঘামকে পাতলা করে দেয়।

দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী খাবার (পেঁয়াজ, রসুন ইত্যাদি) যতটা সম্ভব কম খান।

ডিওডোরেন্ট ও অ্যান্টিপারসপিরেন্ট ব্যবহার করুন। অ্যান্টিপারসপিরেন্ট ঘাম তৈরি হতে দেয় না।

বগল পরিষ্কার রাখতে বেনজাইল পারঅক্সাইড বডিওয়াশ ব্যবহার করুন। এটি বগলের দুর্গন্ধ দূর করতে পারে।

দুশ্চিন্তা ও অবসাদের কারণে অ্যাপোক্রিন গ্রন্থি থেকে বেশি পরিমাণে ঘাম নির্গত হয়। এই ঘামে দুর্গন্ধের মাত্রা স্বাভাবিক সময়ের ঘামের চেয়ে বেশি। তাই যতটা সম্ভব দুশ্চিন্তা ও অবসাদমুক্ত থাকার চেষ্টা করুন। চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে ধ্যানের মাধ্যমে চাপমুক্ত থাকতে পারলে শরীরে দুর্গন্ধ সৃষ্টির আশঙ্কা কমে।

06/10/2024

মায়ের দুধ কেন পরিপূর্ণ খাবার
অধ্যাপক প্রণব কুমার চৌধুরী

মায়ের দুধ কেন পরিপূর্ণ খাবার
শিশুর জন্মের প্রথম ঘণ্টার মধ্যে শিশুকে মায়ের দুধ দেওয়া ও শাল দুধ খাওয়ানো নিশ্চিত করা জরুরি। ছয় মাস (১৮০ দিন) বয়স পর্যন্ত শিশুকে শুধু মায়ের দুধ খাওয়ালেই চলে। এ সময়ের পর থেকে ঘরে তৈরি বাড়তি খাবারের পাশাপাশি শিশুকে দুই বছর বয়স পর্যন্ত মায়ের দুধ খাওয়ানো উচিত।

ছয় মাস বয়স পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত শিশুর পুষ্টির জন্য যা প্রয়োজন, তার সব উপাদান মায়ের দুধে সঠিক পরিমাণে আছে।

মায়ের দুধ পরিপূর্ণ খাবার যেসব কারণে:

শিশু সহজেই মায়ের দুধ হজম করতে পারে।

শিশুকে বিভিন্ন রোগজীবাণু থেকে রক্ষা করে।

শিশুর সর্বোচ্চ শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি হয়।

মায়ের দুধ সময়ের সঙ্গে শিশুর প্রয়োজন অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়।

প্রচুর পানি থাকে বলে গরমকালেও শিশুকে আলাদা করে পানি দিতে হয় না।

মায়ের দুধে থাকা এনজাইম ‘লাইপেজ’ চর্বি হজমে সাহায্য করে।

মায়ের দুধ খেলে পরবর্তী জীবনে শিশুর ডায়াবেটিস, ক্যানসার, কানের প্রদাহ ও দাঁতের সমস্যা কম হয়।

মায়ের জন্যও উপকারী

জন্মের পরপর শিশুকে মায়ের দুধ দিলে মায়ের রক্তক্ষরণ কম হয়। ব্রেস্ট ফিডিং শারীরিক গড়ন আগের অবস্থায় দ্রুত ফিরতে সাহায্য করে। এটি প্রাকৃতিক জন্মনিয়ন্ত্রণের কাজ করে। সন্তানের ও জরায়ু ক্যানসারের ঝুঁকিও কমায় ব্রেস্ট ফিডিং।

ঘরে তৈরি বাড়তি খাবারের পাশাপাশি শিশুকে দুই বছর বয়স পর্যন্ত মায়ের দুধ খাওয়ানো উচিত।
মনস্তাত্ত্বিক উপকারিতা

ব্রেস্ট ফিডিংয়ের মাধ্যমে শিশু ও মায়ের মধ্যে একটি গভীর ভালোবাসার বন্ধন তৈরি হয়; শিশু কম কান্নাকাটি করে ও মানসিকভাবে পরিতৃপ্ত থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে যে মায়ের দুধ খাওয়া শিশু বুদ্ধিমত্তার পরীক্ষায় প্রক্রিয়াজাত গুঁড়া দুধ খাওয়া শিশুর চেয়ে ১০ গুণ ভালো।

অন্যান্য সুবিধা

মা যেকোনো সময় শিশুকে এ দুধ খাওয়াতে পারেন। এ জন্য তাঁকে কোনো বিশেষ প্রস্তুতি নিতে হয় না। কিনতে হয় না বলে এটি অর্থনৈতিকভাবেও সাশ্রয়ী।

বাইরের কোনো পাত্র, পানি বা সরঞ্জাম কিছুই প্রয়োজন হয় না। তাই জীবাণুর সংক্রমণের সুযোগ নেই।

মায়ের দুধে কোনো জীবাণু নেই বলে শিশুর অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি খুব কম থাকে।

রোগপ্রতিরোধী উপাদান

মায়ের দুধে আছে রোগপ্রতিরোধী বহু উপাদান, যা শিশুকে বিভিন্ন সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ থেকে রক্ষা করে থাকে। এমনই কিছু উপাদান হলো:

জীবাণু ধ্বংসকারী জীবিত শ্বেতকণিকা।

ইমিউনোগ্লোবিউলিন বা অ্যান্টিবডি।

‘বাইফিডাস ফ্যাক্টর’। এটি শিশুর পাকস্থলীতে ‘ল্যাকটোবেসিলাস’ বাড়াতে সাহায্য করে। ল্যাকটোবেসিলাস ক্ষতিকর জীবণু ধ্বংস করে শিশুকে ডায়রিয়ার হাত থেকে রক্ষা করে। এর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা, পাকস্থলীতে লৌহ বেঁধে রাখতে পারে। ফলে যেসব জীবাণু লৌহ ছাড়া বাঁচতে পারে না, সেগুলো ধ্বংস হয় ও শিশু রোগমুক্ত থাকে।

শিশু মায়ের দুধ খেলে পাতলা পায়খানা, শ্বাসনালির অসুখ, এমনকি কান পাকার হারও অনেক কমে। ডায়রিয়াসহ যেকোনো অসুখের সময় শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ানো চালিয়ে যেতে হবে। ফলে শিশু দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে।

ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী, অধ্যাপক ও সাবেক বিভাগীয় প্রধান, শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

05/10/2024

এই ১০ লক্ষণ দেখলে বুঝবেন আপনি অপুষ্টিতে ভুগছেন
ডা. সাইফ হোসেন খান

তেমন কোনো পরিশ্রম ছাড়াই অনেক সময় ক্লান্ত লাগে?

শরীর সুস্থ রাখতে পুষ্টিকর ও সুষম খাবারের বিকল্প নেই। কিন্তু আমাদের অনেকের খাদ্যতালিকায় প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান থাকে না। প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান ছাড়া এসব খাবার আমরা হয়তো অজ্ঞতাবশতই খাই। ফলে অনেকেই অপুষ্টিতে ভোগেন। যার প্রভাব শরীরে বিভিন্নভাবে পড়ে। অপুষ্টির কারণে শরীরে যেসব লক্ষণ দেখা যায়, তারই ১০টি লক্ষণ জেনে নিন।

১. ক্লান্তিবোধ

তেমন কোনো পরিশ্রম ছাড়াই অনেক সময় ক্লান্ত লাগে। অল্প কাজেই অনেকে হাঁপিয়ে ওঠেন। আয়রনের ঘাটতিতে সচরাচর এমনটা হয়ে থাকে। আবার ভিটামিন বি কমপ্লেক্স বা ভিটামিন বি১২-এর অভাবেও ক্লান্তিবোধ হতে পারে। পর্যাপ্ত ক্যালরিযুক্ত খাবারের অভাবেও ক্লান্ত হয়ে পড়তে পারেন। তাই শরীরে শক্তি বাড়াতে এসব পুষ্টি উপাদান গ্রহণ করতে হবে।

২. চুল পড়া

চুলের গঠন মজবুত রাখার জন্য বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান (আয়রন, আমিষ বা প্রোটিন) জরুরি। এ ছাড়া বিভিন্ন ভিটামিন, যেমন বায়োটিন, ভিটামিন ডির অভাবেও চুল পড়া শুরু হতে পারে। এসব পুষ্টিকর উপাদান চুল পাতলা হওয়া প্রতিরোধ করে এবং চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। তবে অন্য যেসব রোগে চুল পড়ে, সেসব রোগকেও মাথায় রাখা উচিত।

আপনারও কি এমন ক্লান্ত লাগে?

পুষ্টির অভাবে নখে অনেক রকম পরিবর্তন হতে পারে

৩. নখ ক্ষয় ও ভঙ্গুর নখ

এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। যদিও আরও কিছু রোগের কারণেও নখের ক্ষয় বা পরিবর্তন হতে পারে। সেসব রোগের উপসর্গ বা লক্ষণ না থাকলে এটি অপুষ্টির কারণে হতে পারে। পুষ্টির অভাবে নখে অনেক রকম পরিবর্তন হতে পারে, যেমন নখ ক্ষয়, নখে সাদা দাগ, নখ নড়বড়ে, নখের গঠনগত পরিবর্তন। জিংক, আয়রন, বায়োটিন—এসব পুষ্টির অভাবে এ রকম হতে পারে।

৪. ত্বকের শুষ্কতা

শরীরে পানিশূন্যতা থাকলে চামড়া শুষ্ক হয়ে যায়, অনেক সময় চামড়া ঝুলে পড়ে। ফ্যাটি অ্যাসিডের অভাবেও এমনটা হতে পারে। কিছু ভিটামিন, যেমন ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি, ভিটামিন ই—এগুলোর অভাবেও ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। চামড়ার নমনীয়তা রক্ষার্থে এসব পুষ্টি উপাদান জরুরি।

৫. দুর্বল রোগ প্রতিরোধক্ষমতা

শরীরে বারবার জীবাণুর সংক্রমণ (যেমন কয়েক দিন পরপরই জ্বর, ঠান্ডাকাশি লেগেই থাকা) পুষ্টিহীনতার লক্ষণ হতে পারে। ভিটামিন সি, জিংক, ভিটামিন ডির অভাবে এ রকম দেখা যেতে পারে। এসব খাদ্য উপাদান রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়।

ভাজাপোড়া খাবারের প্রতি আসক্তি ইঙ্গিত দেয় যে শরীরে লবণ বা চিনির ভারসাম্য নেই

৬. মাংসপেশি চাবানো

অনেকে বলেন, ‘হাত-পা চাবায়’ বা অস্বস্তি বোধ হয়। মেডিকেলের ভাষায় এটাকে বলে ‘ক্র্যাম্পস’। অনেক সমস্যার জন্যই এটি হতে পারে, তবে তা অপুষ্টির একটি লক্ষণ। কিছু কিছু খনিজ লবণ (সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম) মাংসপেশির ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এসব লবণের ঘাটতিতে সচরাচর এই সমস্যা হতে পারে। তাই খাদ্যতালিকায় এসব লবণসমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে।

৭. অস্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি আগ্রহ

ম্যাগনেশিয়াম লবণটি আমাদের ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে। তাই মিষ্টিজাতীয় খাবার, লবণাক্ত খাবার; স্ন্যাকস, যেমন চিপস, ভাজাপোড়া খাবার, ফাস্ট ফুড—এগুলোর প্রতি আসক্তি ইঙ্গিত দেয় যে শরীরে লবণ বা চিনির ভারসাম্য নেই।

৮. ক্ষত ধীরে শুকানো

অনেক সময় দেখা যায় আঘাত পেয়ে ক্ষত সৃষ্টি হলে সহজে শুকাতে চায় না। এটি দুর্বল রোগ প্রতিরোধক্ষমতার ইঙ্গিত। যদিও ডায়াবেটিসসহ আরও কিছু রোগে এ রকম হতে পারে। তবে অধিকাংশ সময় দেখা যায়, কিছু পুষ্টি, যেমন ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি, জিংকের অভাবে এ রকম হয়। ক্ষতস্থান সারিয়ে তোলার জন্য যে কোলাজেন প্রয়োজন, সেগুলোর জন্য এসব ভিটামিন দরকারি। পাশাপাশি আমিষজাতীয় খাবার শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি করে, যা রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। তাই খাদ্যতালিকায় আমিষের ঘাটতিতেও একই লক্ষণ দেখা যায়।

মস্তিষ্কে কিছু রাসায়নিক পদার্থের ভারসাম্য পরিবর্তন হলে মানসিক সমস্যা হতে পারে
মস্তিষ্কে কিছু রাসায়নিক পদার্থের ভারসাম্য পরিবর্তন হলে মানসিক সমস্যা হতে পারেছবি: অধুনা
৯. দুর্বলতা ও মাথা ঝিমঝিম

আয়রন বা চিনির ঘাটতি হলে এ রকম লক্ষণ দেখা যায়। যদিও এ রকম লক্ষণের অনেক কারণ আছে, যাকে চিকিৎসক বিশ্লেষণ করে কারণ নির্ণয় করবেন।

১০. বিষণ্নতা

আমাদের মস্তিষ্কে কিছু রাসায়নিক পদার্থের ভারসাম্য পরিবর্তন হলে মানসিক সমস্যা বা উপসর্গ হতে পারে। মানসিক অস্থিরতা, এমনকি বিষণ্নতা পর্যন্ত হতে পারে। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের ঘাটতিতে এ রকম হতে পারে।

এই লক্ষণগুলো পুষ্টির অভাবে হওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন রোগের কারণেও হতে পারে। এ জন্য একজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। লক্ষণ পর্যালোচনা করে তিনিই চিকিৎসা দেবেন। নিজে নিজে ওষুধ খেতে যাবেন না।

ডা. সাইফ হোসেন খান, মেডিসিন কনসালট্যান্ট, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ধানমন্ডি, ঢাকা

05/10/2024

ঘাড়ে ব্যথা কেন হয়? কী করবেন?
লেখা:
এম ইয়াছিন আলী

অনেক কারণে ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য—

সারভাইক্যাল স্পনডিইলোসিস

সারভাইক্যাল স্পনডিইলাইটিস

সারভাইক্যাল স্পনডিইলিসথেসিস

সারভাইক্যাল রিবস

সারভাইক্যাল ক্যানেল স্টেনোসিস বা স্পাইনাল ক্যানাল সরু হওয়া

সারভাইক্যাল ডিস্কা প্রলেপস বা হারনিয়েশন

মাংসপেশি, হাড়, জোড়া, লিগামেন্ট, ডিস্ক ও স্নায়ুর রোগ বা ইনজুরি

অস্বাভাবিক ভঙ্গিতে নিদ্রা বা অনিদ্রা

উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদ্‌রোগ

হাড় ও তরুণাস্থির প্রদাহ ও ক্ষয়

অস্টিওপরোসিস বা হাড়ের ক্ষয়

হাড় নরম ও বাঁকা হওয়া

রিউমাটয়েড-আর্থ্রাইটিস ও সেরো নেগেটিভ আর্থ্রাইটিস

সারভাইক্যাল অস্টিওআর্থ্রাইটিস

ফাইব্রোমায়ালজিয়া; সামনে ঝুঁকে বা পাশে কাত হয়ে ভারী কিছু তুলতে চেষ্টা করা

হাড়ের সংক্রমণ

ডিস্কাইটিস (ডিস্কের প্রদাহ)

পেশাগত কারণে দীর্ঘক্ষণ ঘাড় নিচু বা উঁচু করে ডেস্কে বসে কাজ করা

কম্পিউটারে কাজ করা

টেলিফোন অপারেটরের কাজ

ছাত্রছাত্রীর চেয়ারে বসে পড়াশোনা করার সময় ঘাড় ও মাথার অবস্থান ঠিকমতো না হওয়া বা উপুড় হয়ে শুয়ে বই পড়া

ড্রাইভিং করার সময় ঘাড় ও মাথা সঠিকভাবে না থাকা

বুক ও পেটের মধ্যকার বিভিন্ন অঙ্গের সমস্যা (যেমন পিত্তথলির পাথর, ডায়াফ্রাম ইরিটেশন ইত্যাদি); হাড় ও স্নায়ুর টিউমার, টরটিকলিস ইত্যাদি।

উপসর্গ

ঘাড়ব্যথা কাঁধ, বাহু, হাত ও আঙুল পর্যন্তও বিস্তৃত হতে পারে। কাঁধ, বাহু, হাত ও আঙুলে অস্বাভাবিক অনুভূতি বা অবশভাব।

ঘাড় জমে আছে এমন অনুভূতি। ঘাড়ের নড়াচড়া ও দাঁড়ানো অবস্থায় কাজ করলে ব্যথা বেড়ে যাওয়া।

ঘাড় নিচু করে ভারী কিছু তোলা বা অতিরিক্ত কাজের পর তীব্র ব্যথা। হাঁচি-কাশিতে বা সামনে ঝুঁকলে ব্যথা বেড়ে যাওয়া।

ঘাড়ব্যথা মাথার পেছন থেকে শুরু হয়ে সামনেও আসতে পারে। ব্যথার জন্য ঘুম ভেঙে যেতে পারে। ব্যথার সঙ্গে জ্বর, ঘাম, শীত ভাব বা শরীর কাঁপানো ইত্যাদি লক্ষণও থাকতে পারে।

চিকিৎসা

কনজারভেটিভ চিকিৎসা: ১. ব্যথানাশক ওষুধ সেবন, ২. ফিজিওথেরাপি। ফিজিওথেরাপিতে বিভিন্ন ম্যানুয়াল বা ম্যানুপুলেশন থেরাপি, থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ করানো হয়। কখনো দুই থেকে তিন সপ্তাহ সম্পূর্ণ বিশ্রামে থেকে চিকিৎসা নিতে হতে পারে।

সার্জিক্যাল চিকিৎসা: স্বাভাবিক চিকিৎসায় ভালো না হলে, ব্যথা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকলে, স্নায়ুর সমস্যা দেখা দিলে, বাহু, হাত ও আঙুলে দুর্বলতা এবং অবশভাব দেখা দিলে কিংবা প্রস্রাব-পায়খানার নিয়ন্ত্রণ না থাকলে দ্রুত সার্জিক্যাল চিকিৎসা নিতে হবে।

প্রতিরোধ

সামনে ঝুঁকে দীর্ঘক্ষণ কাজ না করা। মাথার ওপর কোনো ওজন না নেওয়া।

শক্ত বিছানায় ঘুমানো। মধ্যম আকারের বালিশ ব্যবহার, যার অধের্ক মাথা ও অর্ধেক ঘাড়ের নিচে থাকবে।

তীব্র ব্যথা কমলেও ঘাড় উঁচু-নিচু করা অথবা মোচড়ানো (টুইসটিং) বন্ধ করা।

সেলুনে কখনো ঘাড় না মটকানো।

কাত হয়ে শুয়ে পড়া বা টেলিভিশন না দেখা।

কম্পিউটারের মনিটর চোখের লেভেলে রাখা।

ব্যথা হলে গরম প্যাড, গরম পানির বোতল দিয়ে সেঁক দেওয়া।

ঘাড়ের পেশি নমনীয় ও শক্তিশালী হওয়ার ব্যায়াম করা।

ভ্রমণকালে সার্ভাইক্যাল কলার ব্যবহার।

এম ইয়াছিন আলী, চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্ট, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল, ধানমন্ডি, ঢাকা

30/09/2024

কৈশোরে সঠিক পুষ্টি কেন জরুরি
অধ্যাপক প্রণব কুমার চৌধুরী

কৈশোরে দেহের চাহিদামতো পুষ্টিকর ও সুষম খাবার না পেলে দৈহিক বৃদ্ধি যথাযথ হয় না
কৈশোরে দেহের চাহিদামতো পুষ্টিকর ও সুষম খাবার না পেলে দৈহিক বৃদ্ধি যথাযথ হয় নাছবি: সংগৃহীত
কৈশোরে শরীর দ্রুত বৃদ্ধি পায়। ঘটতে থাকে শরীরের কাঠামোগত পরিবর্তন। মেয়েদের শারীরিক বৃদ্ধি দ্রুত হয় ১০ থেকে ১৩ বছর বয়সের মধ্যে; আর ছেলেদের ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সে। এ সময় শরীরে গ্রোথ হরমোন বেশি তৈরি হয়, যা দ্রুত দৈহিক বৃদ্ধির নিয়ামক। এর সঙ্গে সেক্স হরমোনের বৃদ্ধি হয়, যা কিছু হরমোনজনিত ও শারীরিক বৃদ্ধির পেছনে কাজ করে। এ সময়ে দেহের চাহিদামতো পুষ্টিকর ও সুষম খাবার না পেলে দৈহিক বৃদ্ধি যথাযথ হয় না।

কৈশোরে শিশু তার মোট উচ্চতার ১০-২০ শতাংশ ও মোট ওজনের ২৫-৫০ শতাংশ প্রাপ্ত হয়। এ জন্য এ সময়কার পুষ্টির ওপর নির্ভর করে তাদের শারীরিক উচ্চতা ও ওজন বৃদ্ধি। এ ছাড়া পরবর্তী জীবনে নারীর গর্ভ ও প্রসবকালীন ঝুঁকি এবং কম ওজনের শিশু জন্মদান রোধে কিশোরীর পুষ্টি গুরুত্বপূর্ণ।

কৈশোরে অপুষ্টিজনিত সমস্যা

শক্তি বা এনার্জির অভাব।

অণুপুষ্টির অভাব, যেমন আয়রন বা লৌহের অভাবজনিত রক্তস্বল্পতা।

খাদ্যাভ্যাসে সমস্যা—স্থূলকায় শরীর, হৃদ্‌যন্ত্রের সমস্যা, অ্যানোরেক্সিয়া নার্ভোসা।

অল্প বয়সে গর্ভধারণ।

অস্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ।

লৌহের অভাবজনিত রক্তস্বল্পতার কারণ

স্বল্প আহার।

নানা ধরনের সংক্রমণ; যেমন ম্যালেরিয়া, গুঁড়া কৃমির সংক্রমণ।

অতিরিক্ত রক্তস্রাব।

অতিরিক্ত বা দীর্ঘকালীন পরিশ্রম।

রক্তস্বল্পতার পরিণতি

শারীরিক পরিশ্রমের সক্ষমতা হ্রাস পাওয়া।

বোধশক্তির ঘাটতি।

গর্ভধারণে ঝুঁকি।

বিকাশ-বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়া।

মেধাবিকাশে পিছিয়ে পড়া।

কৈশোরে অপুষ্টি রোধে করণীয়
সুষম খাদ্য গ্রহণ। সুষম খাদ্যে সব কটি উপাদান থাকতে হবে। খেতে হবে শর্করাজাতীয় খাবার; যেমন ভাত, রুটি, মুড়ি, গুড়, মধু, আলু, চিড়া।

আমিষজাতীয় খাবার; যেমন ডিম, দুধ, মাছ, মাংস, ডাল, বাদাম, বিচি। আয়রনসমৃদ্ধ খাবার; যেমন মাংস, কলিজা ও গাঢ় সবুজ শাকসবজি। ভিটামিন এ-সমৃদ্ধ খাবার; যেমন কলিজা, পাকা পেঁপে, আম, গাজর, মিষ্টিকুমড়া, ছোট মাছ, ডিম, সবুজ শাকসবজি ও হলুদ রঙের ফলমূল। ভিটামিন সি–যুক্ত, আয়োডিনসমৃদ্ধ খাবার (সামুদ্রিক মাছ ও সমুদ্রতীরবর্তী এলাকার শাকসবজি) ও আয়োডিনযুক্ত লবণ গ্রহণ জরুরি।

কৈশোরে প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে
কৈশোরে প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ গ্লাস পানি পান করতে হবেছবি: সংগৃহীত
প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ গ্লাস পানি পান এবং গরমকালে বেশি পানি পান করা।

চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীর পরামর্শ অনুযায়ী আয়রন, ফলিক অ্যাসিড বড়ি সেবন।

চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ছয় মাস অন্তর কৃমিনাশক বড়ি খাওয়ানো।

খাওয়ার আগে-পরে সাবান ও পরিষ্কার পানিতে হাত ধোয়ার অভ্যাস।

স্বাস্থ্যসম্মত পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা। খালি পায়ে টয়লেটে না যাওয়া।

ঋতুস্রাবের সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা। এ সময় সুষম খাদ্য গ্রহণ ও সব ধরনের স্বাভাবিক কাজকর্ম করা।

অধ্যাপক ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী, সাবেক বিভাগীয় প্রধান, শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

16/02/2024

স্মার্ট হতে চান? আজই বাদ দিন এই ৮ বদভ্যাস
সাদিকুর রহমান খান

স্মার্টনেস শব্দটা শুনলেই আমরা নড়েচড়ে বসি। কখনো শ্রদ্ধায়, কখনো কৌতূহলে। আবার কখনোসখনো একটু ঈর্ষাও যে হয় না, তা-ইবা অস্বীকার করি কী করে! স্মার্ট হওয়াকে অনেকেই মনে করে খুব কঠিন কিছু। আবার কেউ মনে করে, খুব বুদ্ধিমান বা মেধাবী না হলে বোধ হয় স্মার্ট হওয়াই যাবে না। অথচ আমাদের অনেক ছোট ছোট কাজ, অভ্যাস আর চিন্তার মধ্যেই যে স্মার্টনেস লুকিয়ে থাকে, সেটাই-বা আমরা কয়জন জানি? স্মার্ট হতে হলে কোনো কোনো কাজ আমাদের করা উচিত হবে না। এই কাজগুলোর কোনোটা যদি আমার-আপনার অভ্যাসে থেকে যায়, তবে স্মার্টনেসের পথের এই বাধাগুলো দূর করে ফেলার মোক্ষম সময় কিন্তু এখনই। ‘রেড ফ্ল্যাগ’ আট অভ্যাসগুলো দেখে নিন।

আত্মতুষ্টিতে ভোগা

বিভিন্ন গবেষণা ও প্রতিবেদন জানাচ্ছে, অনলাইনের দুনিয়ায় বড় হওয়া ‘জেন-জি’র একটা বড় অসুবিধা হলো ‘অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস’। ‘আপনাকে বড় বলে বড় সেই নয়’ লাইনটা আমরা পড়ে ফেলি সেই ছোটবেলাতেই। আর এটাই ‘স্মার্টনেস’ অর্জনের প্রথম ধাপ। নিজেকে কখনোই খুব বেশি মেধাবী মনে করা যাবে না। বা নিজের দক্ষতা নিয়ে আত্মতুষ্টিতে ভোগা যাবে না। স্মার্ট লোকজন আত্মবিশ্বাস আর আত্মতুষ্টিকে কখনোই গুলিয়ে ফেলেন না। বরং তাঁরা সব সময়ই তাঁদের কমতি নিয়ে সচেষ্ট থাকেন। নতুন নতুন জিনিস শেখার মধ্যে নিজেকে ব্যস্ত রাখেন। আরও ভালো কিছুর জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েন।

তাড়াহুড়ো

আমাদের ছোটবেলার আরেকটা শিক্ষা ‘স্লো অ্যান্ড স্টেডি উইনস দ্য রেস’। স্মার্ট মানুষের মধ্যে আপনি তাড়াহুড়ো জিনিসটা পাবেন না। বরং তারা অনেক সময় এবং ধৈর্য নিয়ে যেকোনো কাজ শেষ করতে পছন্দ করেন। ফলাফল? সময় বেশি লাগলেও কাজ হয় মানের দিক থেকে সেরা। লম্বা সময় টিকে থাকতে হলে টেকসই, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিন, ধীরে ধীরে এগোন।

স্মার্ট হওয়া কঠিন কিছু নয়

গড়পড়তা লোকজন যখন জেতার জন্য এবং নিজেকে বড় দেখানোর জন্য তর্ক করেন, স্মার্ট লোকজন তখন তর্ক করেন নিজের ভুলত্রুটি খুঁজে বের করার উদ্দেশ্যে। তর্কে জিততে পারা আনন্দের, সন্দেহ নেই। কিন্তু স্মার্ট লোকজন নিজেদের আরও উন্নত করার স্বার্থেই এই আনন্দ বিসর্জন দিতে দুবার ভাবেন না। কিছু বিষয় সময়ের হাতে ছেড়ে দেন। সময়ই জবাব দিয়ে দেয়।

নতুন সমস্যা, পুরোনো সমাধান

ক্যারিয়ার, সম্পর্ক বা যেকোনো ক্ষেত্রেই সমস্যা এলে লেগে থাকা, হাল না ছাড়া খুব ভালো গুণ, সন্দেহ নেই। কিন্তু কখনো কখনো শুধু চেষ্টা করে যাওয়াই কোনো সমস্যার সমাধান দিতে পারে না। বরং আপনি কোন পথে চেষ্টা করছেন, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হয়ে দাঁড়ায়। স্মার্ট লোকজন কখনোই পুরোনো সমাধান ধরে বসে থাকেন না, বরং যে সমস্যা যত পুরোনোই হোক, সমাধানের নতুন নতুন পথ বের করতে তাঁরা ক্লান্ত হন না।

চিন্তাভাবনা ছাড়াই কাজ করা

না, স্মার্ট লোকজন কোনো কিছু করার আগেই সবকিছু ঠিক করে নিয়ে তারপর সেই কাজ করতে বসেন না। তবে তাঁরা ফলাফল, লাভক্ষতি বা ঝুঁকি বিচার না করে সাধারণত কোনো কাজ করেন না। তার মানে এই না যে তাঁরা কখনোই হঠকারিতা বা সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন না। তবে তাঁরা কাজের ক্ষেত্রে হঠকারিতাকে কোনো ধরনের প্রশ্রয় দেন না।

আমাদের বেশির ভাগ অর্থপূর্ণ কাজকে নিষ্ফল করে ফেলার জন্য এই দুটি জিনিসই যথেষ্ট। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আর শো-অফের এই দুনিয়ায় স্মার্ট লোকজন এসব সস্তা প্রশংসা থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখেন। তাঁরা কাজের সঙ্গে চমৎকার একটা বোঝাপড়া এবং সন্তুষ্টির সম্পর্ক গড়ে তোলেন। ফলে দিন শেষে তাঁর কাজই তাঁর হয়ে কথা বলে।

অন্যের ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল হওয়া

কারও কাছ থেকে সহযোগিতা চাওয়া আর কারও ওপর নির্ভরশীল হওয়ার মধ্যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য আছে। স্মার্ট লোকজন এই পার্থক্যটা মাথায় রাখেন। হ্যাঁ, তাঁদেরও দুর্বলতা থাকে, কমতি থাকে। কিন্তু এই দুর্বলতার ভার তাঁরা অন্যের ওপর চাপিয়ে দেন না। বরং তাঁরা নিজেদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করার পরেই কেবল মানুষের সহযোগিতা চান, তার আগে নয়।

ভুলকে প্রশ্রয় দেওয়া

ভুলকে প্রশ্রয় দেওয়ার একমাত্র অর্থ হলো, সেই ভুলটাকে আরও বড় হয়ে আপনার জীবনে ফিরে আসার সম্ভাবনা তৈরি করে দেওয়া। গড়পড়তা লোকজন নিজের ভুলের বিষয়টা বেমালুম চেপে যান। আরেকজনের ঘাড়ে দোষ দিয়ে দায়িত্ব শেষ করেন। আর একজন স্মার্ট মানুষ তখন গভীরভাবে নিজের ভুল নিয়ে চিন্তাভাবনা করেন। শিক্ষা নেন এবং সাবধানতার সঙ্গে পরবর্তী পদক্ষেপ নেন।

সোর্স: দ্য বিজনেস ইনসাইডার, ফোর্বস

Address

Sholakbahar, Chawkbazar-4203, Panchlaish
Chittagong
4000

Telephone

+8801821315154

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Smart Health Proposal posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Practice

Send a message to Smart Health Proposal:

Share

Share on Facebook Share on Twitter Share on LinkedIn
Share on Pinterest Share on Reddit Share via Email
Share on WhatsApp Share on Instagram Share on Telegram