27/11/2025
এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স : নীরব ঘাতক
এটি আমার একটি রোগীর ব্লাড সিএস রিপোর্ট।
জন্মের পর ছোটখাট একটা জন্মগত ত্রুটির জন্য তার অপারেশন করানো হয় । অপারেশন সুন্দর মত কোন জটিলতা ছাড়াই শেষ হয়। অপারেশনের পরে ইনফেকশন প্রতিরোধের জন্য স্বাভাবিকভাবে যেসব এন্টিবায়োটিক দেওয়া হয় সেগুলো দিয়ে রাখা হয়।
কিন্তু দিন দিন তার অবস্থা খারাপ হতে থাকে, এন্টিবায়োটিক (Ceftazidim, Cefotaxim, Amikacin) পরিবর্তন করে উচ্চ ধাপের এন্টিবায়োটিক (Meropenem, Vancomycin,Cefepime ) দেওয়া হয় , তাতেও বাচ্চার অবস্থা উন্নতি হয় না।
পরে রক্তের সিএস রিপোর্ট যখন আসে, ডাক্তারের মাথায় হাত! প্রায় সাত দিন ধরে চলে আসা সবগুলো এন্টিবায়োটিক ই এই নবজাতক যে জীবাণু দিয়ে আক্রান্ত হয়েছে, তার ক্ষেত্রে রেজিস্ট্যান্ট।
অর্থাৎ এসব ওষুধ এই জীবাণুকে কিছুই করতে পারবে না।
ইতোমধ্যে ইনফেকশন রক্তের মাধ্যমে বিভিন্ন অঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে, যাকে ডাক্তারি পরিভাষায় সেপসিস বলা হয়। অতঃপর সেনসিটিভ থাকা শুধুমাত্র দুটি এন্টিবায়োটিক (Colistin & Tigecycline ) দিয়ে চিকিৎসা শুরু করেও সেপসিস কন্ট্রোলে না আসায় অবশেষে বাচ্চাকে আমাদের আইসিইউ তে পাঠানো হয়।
শিশু আইসিইউতে আমি যখন দেখি, বাচ্চাকে পাই প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট ও খিঁচুনিরত অবস্থায়। সে রাতেই লাইফ সাপোর্টে দিতে হয় এবং কয়েক ঘন্টা ব্যবধানেই তার মৃত্যু হয়।
নবজাতক ও শিশু আইসিউতে কাজ করার সুবাদে প্রতিটা দিন এরকম দৃশ্য দেখা লাগছে। কয়েকদিন আগে একটা প্রতিবেদন দেখলাম , ৪১% রোগীর ক্ষেত্রেই সাধারণ এন্টিবায়োটিক গুলো আর কাজ করছে না। অনেকের কাছে প্রতিবেদনটা অসত্য মনে হলেও, বাস্তবতা প্রতিবেদন এর চেয়েও ভয়ংকর।
সামনে কী ভয়াবহ দিন আসতেছে আল্লাহ্ গফুরুর রহীম জানেন ☹️
- ডা. মোঃ মকছুদুর রহমান রাকিব