01/12/2025
সচেতনতা সবার জন্য, জ্বরকে 'সাধারণ জ্বর' ভেবে ভুল করবেন না ,বর্তমানে কুমিল্লাসহ সারাদেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি বেশ উদ্বেগজনক। শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক—কেউই এখন ঝুঁকিমুক্ত নয়। ভয়ের বিষয় হলো, এবারের ডেঙ্গুর ধরণ কিছুটা ভিন্ন। অনেকেই শুরুর দিকে লক্ষণ বুঝতে পারছেন না, ফলে হাসপাতালে পৌঁছাতে দেরি হয়ে যাচ্ছে এবং ঝুঁকি বাড়ছে।
আপনার পরিবারের সুরক্ষায় ডেঙ্গু সম্পর্কে এই জরুরি তথ্যগুলো জেনে রাখুন এবং মেনে চলুন।
🛑 লক্ষণসমূহ (Symptoms):
জ্বর হলেই নিচের লক্ষণগুলো মিলিয়ে দেখুন:
১. হঠাৎ তীব্র জ্বর (১০৩-১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট)।
২. প্রচণ্ড মাথাব্যথা ও চোখের পেছনে ব্যথা।
৩. শরীরের হাড়, জয়েন্ট বা মাংসপেশিতে তীব্র ব্যথা (যাকে হাড়ভাঙ্গা জ্বর বলা হয়)।
৪. বমি বমি ভাব বা খাবারে অরুচি।
৫. শরীরে লালচে র্যাশ বা দানা ওঠা।
শিশুদের ক্ষেত্রে: অকারণে কান্না করা, খেতে না চাওয়া বা অতিরিক্ত নিস্তেজ হয়ে যাওয়া।
🔸প্রাথমিক ভাবে যা করবেন:
লক্ষণ দেখা দিলে আতঙ্কিত না হয়ে বাসায় এই নিয়মগুলো মানুন:
রোগীকে সম্পূর্ণ বিশ্রামে রাখুন। দৌড়াদৌড়ি বা পরিশ্রম একদম নিষেধ।
সাধারণ পানির পাশাপাশি প্রচুর ডাবের পানি, ওলাইন, ফলের জুস এবং স্যুপ খাওয়ান।
জ্বরের জন্য শুধুমাত্র প্যারাসিটামল ব্যবহার করুন। শরীর বারবার কুসুম গরম পানি দিয়ে মুছে দিন।
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অ্যাসপিরিন বা অন্য কোনো পেইনকিলার ভুলেও খাওয়াবেন না। এতে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বাড়ে।
সবচেয়ে জরুরি: বিপদচিহ্ন (Warning Signs)
অনেকেই ভাবেন জ্বর কমে গেলেই রোগী সুস্থ। কিন্তু মনে রাখবেন, জ্বর কমে যাওয়ার পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা রোগীর জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সময় (Critical Phase)।
এই সময়ে নিচের যেকোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলে এক মুহূর্ত দেরি না করে হাসপাতালে ভর্তি হন:
১. প্রচণ্ড পেট ব্যথা ও ক্রমাগত বমি হওয়া।
২. দাঁতের মাড়ি, নাক বা বমির সাথে রক্ত পড়া।
৩. প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া বা দীর্ঘ সময় প্রস্রাব না হওয়া।
৪. রোগী অতিরিক্ত দুর্বল হয়ে পড়া বা হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া।
৫. শ্বাসকষ্ট হওয়া।
প্রতিরোধেই সুরক্ষা:
* দিনে ও রাতে ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি ব্যবহার করুন।
* শিশুদের ফুল হাতা জামা-প্যান্ট পরিয়ে রাখুন।
* বাড়ির আঙিনা বা ছাদ পরিষ্কার রাখুন, যেন কোথাও পানি জমে না থাকে।
সামান্য সচেতনতাই বাঁচাতে পারে একটি মূল্যবান প্রাণ। নিজে জানুন, অন্যকে জানান।
জনস্বার্থে:
রেইনবো মেটার্নিটি ক্লিনিক, কুমিল্লা
সুস্থ থাকুক আপনার পরিবার, নিরাপদ থাকুক আগামী প্রজন্ম।