Professor Dr. Nilufa Parvin

Professor Dr. Nilufa Parvin DCH, MCPS, FCPS (Paediatrics)
Professor & Head of Department
Mainamoti Medical College
Paediatrician

17/11/2025

জেদী বাচ্চা মানেই বুদ্ধিমান বাচ্চা❗

👉আমরা যখন কোনো শিশুকে জেদ করতে দেখি, বেশিরভাগ সময়ই আমরা বিরক্ত হই। আমরা ভাবি ও কেন কথা শুনতেছে না, কেন এমন করতেছে।

আসলে, বেশিরভাগ সময়েই এই জেদ কোনো সমস্যা নয়, বরং শিশুর বুদ্ধিবিকাশের সবচেয়ে শক্তিশালী লক্ষণ।

জেদ মানে শিশুটি ভাবতে শিখছে

একটি শিশু যখন “না” বলে, কিংবা নিজের মতামত ধরে রাখে—
সে মূলত বোঝাতে চায়, “আমারও বুঝার ক্ষমতা আছে। আমি নিজের মতো সিদ্ধান্ত নিতে চাই।”

এবং এটিই তাকে ভবিষ্যতে আত্মবিশ্বাসী ও সিদ্ধান্তক্ষম একজন মানুষ বানায়।

✅অভিভাবকের প্রথম দায়িত্ব: শান্ত থাকা

শিশুর জেদ যত বাড়ে, আমাদের রাগ তত বেড়ে যায়।
কিন্তু রাগ দেখালেই পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়।

আপনি যদি স্থির, ধীর এবং শান্ত স্বরে কথা বলেন,
শিশুটিও ধীরে ধীরে নরম হয়ে আসে।

কখনও কখনও আপনার শান্ত মুখভঙ্গিই কথার চেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে।

📌জেদ সামলানোর ২টি কার্যকর কৌশলের একটি হচ্ছেঃ

✅খেলার ছলে উল্টো দিকে নেওয়া (Reverse Psychology)

শিশুকে কখনো কঠোরভাবে নিষেধ করলে সে উল্টো সেটাই করতে চায়।
যেমন– আপনি বললেন: “আজ তুমি দুধ খেও না।”
সে বলবে: “না, আমি খাব!”

কারণে সে নিজের সিদ্ধান্তে দৃঢ় থাকতে ভালোবাসে।
এই মানসিকতা বুঝতে পারলে পরিস্থিতি খুব সহজে সামলানো যায়।

✅শিশুকে ছোট্ট “বিকল্প” দেওয়া

শিশুরা আদেশ পছন্দ করে না, কিন্তু পছন্দ করে নিজে সিদ্ধান্ত নেওয়া।

আপনি যদি বলেন— “দুধ খাও।”
সে না-ও বলতে পারে।

কিন্তু যদি বলেন—
“তুমি দুধ গরম খাবে, নাকি ঠান্ডা?”
সে সাথে সাথে একটা বেছে নেবে।

কারণ সিদ্ধান্তটা এবার তার নিজের,
আপনার কথাও মানা হলো, শিশুটিও খুশি।



তবে এটাও সত্যি যে, জেদী শিশুর সঙ্গে আচরণে ধৈর্য থাকতে হবে। তারা নিজের মতো করে ভাবে এবং সেই ভাবনাটাই তাদের শক্তি।

আপনি যদি সেই ভাবনাকে শ্রদ্ধা করেন, তাহলে শিশুটিও আপনাকে শ্রদ্ধা করতে শিখবে।

♦️সাধারণত দুই থেকে পাঁচ বছর বয়সে শিশুরা সবচেয়ে বেশি জেদ প্রকাশ করে। কারণ এই বয়সে তারা স্বাধীন হতে শেখে এবং নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনুশীলন করে।

এটি তাদের স্বাভাবিক বিকাশের একটি ধাপ। আপনি যদি এই সময়টায় ধৈর্য ধরে শিশুর আচরণকে বুঝতে পারেন, তাহলে সে ধীরে ধীরে দায়িত্বশীল হয়ে উঠবে।

জেদকে দমন করার চেষ্টা না করে বরং বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করা উচিত। কারণ জেদ মানে শুধু “না” বলা নয়, এটি এক ধরনের চিন্তার প্রকাশ।

আপনি যদি সেই চিন্তাকে জায়গা দেন, তবে একদিন এই জেদী শিশুই আত্মবিশ্বাসী, সচেতন ও দৃঢ় মানসিকতার একজন মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবে।✅

©️

01/11/2025
01/11/2025

নতুন বাবা-মায়েদের সাধারণ ভুল ও বাস্তব সত্য।

আজকের দিনে প্রায় প্রতিটি পরিবারে দেখা যায় —
বাবা-মা, দাদা-দাদি, নানা-নানি সবাই মিলে ছোট্ট শিশুটিকে যত্ন করার চেষ্টা করেন।
সবাই চায়, “আমাদের বাচ্চাটা যেন একদম হেলদি আর স্মার্ট হয়!”
কিন্তু ভালোবাসার এই অতিরিক্ত যত্নই অনেক সময় হয়ে দাঁড়ায় বিপদজনক!
শিশুর যত্নে কিছু পুরনো ধারণা, কিছু ভুল তথ্য আর কিছু “লোকের কথা” আজও আমাদের সমাজে ভয়ঙ্করভাবে ছড়িয়ে আছে।
চলুন জেনে নেওয়া যাক, সেই ৫টি বড় ভুল ও তাদের পেছনের আসল বিজ্ঞান।

★চোখে কাজল বা সুরমা লাগানো।

বেশিরভাগ বয়স্ক মানুষ বিশ্বাস করেন —
কাজল লাগালে শিশুর চোখ বড় হয়, বা চোখের দৃষ্টি ভালো হয়।
কিন্তু বাস্তবে এটি সম্পূর্ণ মিথ!

গবেষণায় দেখা গেছে, বাজারের বেশিরভাগ কাজল বা সুরমায় lead (সীসা) নামের ক্ষতিকর ধাতু থাকে,
যা শিশুর শরীরে ঢুকলে নিউরোলজিকাল সমস্যা, এনিমিয়া এমনকি ব্রেন ডেভেলপমেন্টেও ক্ষতি করতে পারে।

“চোখে কাজল লাগানো শুধু অকারণ নয়, বরং ক্ষতিকর। শিশুর চোখ নিজের মতোই সুন্দর,
তাকে কেমিক্যাল দিয়ে সাজানোর দরকার নেই।”

★ অতিরিক্ত তেল মালিশের ভ্রান্ত ধারণা।

আমরা ছোটবেলা থেকেই শুনে আসছি —
“তেল মালিশে হাড় শক্ত হয়, শরীর মোটা হয়, ঠান্ডা কম লাগে।”
কিন্তু ডাক্তারদের মতে, এর অনেকটাই ভুল ধারণা।

হ্যাঁ, হালকা তেল মালিশ রক্তসঞ্চালন ভালো করে,
কিন্তু জোরে মালিশ করলে শিশুর কোমল পেশি ও হাড়ে ক্ষতি হয়।
আর অনেক সময় বাবা-মা এমন তেল ব্যবহার করেন যাতে fragrance বা chemical থাকে —
যা শিশুর স্কিনে র‍্যাশ, অ্যালার্জি বা একজিমা তৈরি করে।

সবচেয়ে ভালো হচ্ছে — নরমভাবে, ঘরের তাপমাত্রায় হালকা নারকেল বা অলিভ অয়েল দিয়ে মালিশ করা,
আর পরে কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করানো।

★ “শুধু দুধ দিলেই হবে” এই ভুল ধারণা

৬ মাস পর্যন্ত বুকের দুধই শিশুর জন্য সেরা খাবার —
এ নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই।
কিন্তু সমস্যা শুরু হয় ৬ মাসের পরও যদি কেবল দুধ দেওয়া হয়।

৬ মাসের পর শিশুর শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় আয়রন, ভিটামিন, প্রোটিন ও মিনারেল
দুধে যথেষ্ট থাকে না।
তখন দরকার নরম সলিড খাবার — যেমন খিচুড়ি, ডিম, ফলের পিউরি, ডাল-ভাত ইত্যাদি।

যদি দুধের বাইরে কিছু না দেওয়া হয়,
তাহলে শিশুর growth slow হয়ে যায়, ওজন না বাড়ে, দাঁত ও হাড় দুর্বল হয়,
এবং আয়রন ডেফিসিয়েন্সি অ্যানিমিয়া পর্যন্ত হতে পারে।

তাই ৬ মাসের পর থেকে ধীরে ধীরে শিশুকে বিভিন্ন ঘরে তৈরি খাবারের সঙ্গে পরিচয় করানো শুরু করুন।

★অতিরিক্ত খাওয়ানো ও “ওভার লাভ”

অনেক মা-বাবা মনে করেন — “যত বেশি খাওয়াবো, তত ভালো। বাচ্চা মোটাসোটা দেখাবে।”
কিন্তু ডা. ইমরান প্যাটেল সতর্ক করেছেন —
“এতে শিশুর ডাইজেস্টিভ সিস্টেমের উপর চাপ পড়ে, এবং ভবিষ্যতে মোটাপনা ও হজমের সমস্যা দেখা দেয়।”

বাচ্চা যতটুকু খেতে চায়, ততটুকুই দিন।
ওরা নিজের ক্ষুধা চিনতে পারে।
জোর করে খাওয়ালে, খাবারের প্রতি তাদের ভয় তৈরি হয়।

এছাড়া “ওভার লাভ” — মানে সব সময় কোলে রাখা, কিছু করতে না দেওয়া,
এই অভ্যাস শিশুর mental development ও independence কমিয়ে দেয়।
ওকে নিজের মতো খেলতে ও পড়তে শিখতে দিন —
এটাই ভালোবাসার প্রকৃত রূপ।

★স্ক্রিন টাইম: সবচেয়ে বড় বিপদ!

আজকালকার বাবা-মা ব্যস্ত — তাই শিশুকে শান্ত রাখার জন্য মোবাইল বা ট্যাব হাতে তুলে দেন।
কিন্তু জানেন কি?
২ বছরের কম বয়সী শিশুর জন্য স্ক্রিন একদমই নিষিদ্ধ!

গবেষণায় প্রমাণ হয়েছে —
দীর্ঘ সময় স্ক্রিনে থাকলে শিশুর মধ্যে
• বক্তব্য বিলম্ব (speech delay)
• মনোযোগের ঘাটতি
• বিহেভিয়ারাল সমস্যা
• এমনকি নিদ্রাহীনতা ও স্থূলতা (obesity) দেখা দেয়।

বিকল্প হিসেবে —
শিশুকে রঙের বই দিন, গল্প পড়ান, খেলতে উৎসাহ দিন।
এতে তার ব্রেন ডেভেলপমেন্ট ও সোশ্যাল স্কিল দুই-ই উন্নত হবে।
★ মধু, চা বা প্যাকেট খাবার — শিশুর জন্য নয়!

অনেকেই মনে করেন, “একটু মধু দিলে গলা ভালো থাকে” বা “চায়ে সামান্য চিনি দিলেই ক্ষতি নেই।”
কিন্তু বাস্তবে, এক বছরের কম বয়সী শিশুকে মধু খাওয়ানো মারাত্মক বিপজ্জনক!
এতে বটুলিজম (botulism) নামের মারাত্মক সংক্রমণ হতে পারে,
যা শিশুর স্নায়ুতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

প্যাকেট জুস, বিস্কুট, চকোলেট — এসবেও অতিরিক্ত চিনি, প্রিজারভেটিভ ও ট্রান্স ফ্যাট থাকে।
যা শিশুর লিভার, কিডনি ও দাঁতের জন্য ক্ষতিকর।

★শিশুর জন্মের আদর্শ বয়স

“২২ থেকে ২৬ বছর হলো মা হওয়ার সেরা সময়।”
এই সময়ে মা’দের দেহের হরমোন, হাড়ের শক্তি ও মানসিক স্থিতি সবচেয়ে ভালো থাকে।
বেশি দেরি করলে প্রেগন্যান্সি সংক্রান্ত জটিলতা বাড়ে।



কিছু বাস্তব টিপস:

★শিশুকে ঘরে রাখুন, কিন্তু প্রকৃতির সঙ্গে পরিচয় করান
★ভয় দেখিয়ে কিছু শেখাবেন না
★প্রতিদিন অন্তত ১৫–২০ মিনিট কথা বলুন শিশুর সঙ্গে
★ শিশুর হাসি, কান্না, চোখের ভাষা — সবই এক ধরনের যোগাযোগ
★প্যারেন্টিং মানে কেবল খাওয়ানো নয়, বরং “সংবেদনশীল সম্পর্ক তৈরি করা”

উপসংহার

শিশুর যত্ন মানেই কেবল ওষুধ, খাবার বা পোশাক নয় —
এটা এক ধরনের বিজ্ঞান ও শিল্প।
ভালোবাসার সঙ্গে যুক্ত হতে হবে সচেতনতা ও সঠিক তথ্য।

আজকের বাবা-মায়েদের দায়িত্ব —
পুরনো ভুল ধারণা ভেঙে, আধুনিক বিজ্ঞানভিত্তিক যত্ন শেখা।
কারণ, আজকের ছোট্ট শিশুটি-ই আগামী দিনের বড় মানুষ।
তাকে সঠিকভাবে বড় করা মানেই,
একটা সুস্থ প্রজন্ম গড়ে তোলা।

01/11/2025

বাচ্চার সলিড ফুড শুরুতে যেসব ১০টি সাধারণ ভুল আমরা প্রায়ই করি (আর কিভাবে ঠিক করব!)

একটা শিশু জন্মের পর প্রথম ৬ মাস কেবল মায়ের দুধ বা ফর্মুলা দুধেই বড় হয়।
কিন্তু ছ’মাস পেরিয়ে গেলে যখন আমরা “সলিড ফুড” বা “কমপ্লিমেন্টারি ফুড” শুরু করি — তখনই শুরু হয় আসল পরীক্ষা!

অনেক সময় আমরা ভালো চেষ্টার পরেও কিছু ছোট ছোট ভুল করে ফেলি —
যেগুলো শিশুর খাবারের প্রতি আগ্রহ কমায়, হজমের সমস্যা তৈরি করে, এমনকি খাওয়ার অভ্যাসকেও নষ্ট করে দিতে পারে।

চলুন, জেনে নিই সবচেয়ে সাধারণ ১০টি ভুল এবং তার সহজ সমাধান -

★ভুল ১: জোর করে খাওয়ানো

বাচ্চা না খেলে রাগ করে জোর করে খাওয়ানো অনেক মায়ের অভ্যাস। এতে ওর খাওয়ার প্রতি ভয় আর বিরক্তি দুটোই জন্মায়।
সমাধান: “Responsive feeding” অনুসরণ করুন — খিদে পেলে খেতে দিন, ওর অনুভূতিটা বুঝুন।

★ভুল ২: খাওয়ার সময় টিভি বা মোবাইল

খাওয়ার সময় গ্যাজেট মানে মনোযোগ হারানো। এতে ও বুঝতেই পারে না সে কি খাচ্ছে।
সমাধান: শান্ত পরিবেশে বসে গল্প করতে করতে খাওয়ান। এতে সম্পর্ক, মনোযোগ— দুটোই বাড়ে।

★ভুল ৩: প্রতিদিন একই খাবার

রোজ একই খাবার দিলে ওর মুখে একঘেয়েমি আসে, পুষ্টির ঘাটতিও তৈরি হয়।
সমাধান: রং, টেক্সচার আর স্বাদের বৈচিত্র আনুন — ডালিয়া, রাগি, শাকসবজি, ফল মিশিয়ে নতুন স্বাদে দিন।

★ভুল ৪: খাবারের টেক্সচার ঠিক না রাখা

খুব ঘন বা খুব পাতলা খাবার শিশুর গিলতে কষ্ট হয়।
সমাধান: বয়স অনুযায়ী ধীরে ধীরে টেক্সচার পরিবর্তন করুন — পিউরি → ম্যাশড → সেমি সলিড → ফিঙ্গার ফুড।
এক বছর বয়সের আগে চিনি, লবণ, গরুর দুধ, মধু নয়!

★ভুল ৫: শোয়ানো অবস্থায় খাওয়ানো

এতে চোকিং বা শ্বাসরোধের ঝুঁকি!
সমাধান: সবসময় বসিয়ে (সবচেয়ে ভালো হাই-চেয়ারে) খাওয়ান।

★ভুল ৬: খাবারের মাঝে অযথা স্ন্যাকস

বিস্কুট, চকলেট বা জ্যাম খিদে নষ্ট করে দেয়।
সমাধান: নির্দিষ্ট সময়ে খাবার দিন, রুটিন ঠিক রাখুন।

★ভুল ৭: বেশি ফর্মুলা মিল্ক

অতিরিক্ত ফর্মুলা মিল্ক দিলে খিদে পাওয়ার অনুভূতি হারায়।
সমাধান: বয়স অনুযায়ী দিন—৬–৮ মাসে দিনে ৪–৫ বার, প্রতিবার ১৮০–২১০ ml যথেষ্ট।

★ভুল ৮: খাবারের গ্যাপ না রাখা

দু’ঘণ্টা পরপর খাওয়ানো মানেই ওর খিদে না পেয়ে খাওয়া।
সমাধান: বয়স অনুযায়ী গ্যাপ রাখুন—৬ মাস পর গিয়ে ৪–৫ ঘণ্টা গ্যাপ আদর্শ।

★ ভুল ৯: খিদে পাওয়ার অনুভূতি না তৈরি করা

ও জানেই না খিদে পেলে কেমন লাগে, কারণ সবসময় খাওয়ানো হয়!
সমাধান: রেসপন্সিভ ফিডিং ও নির্দিষ্ট রুটিনে খাওয়ান। খিদে পেলে খাবার দিন, না পেলে জোর নয়।

★ভুল ১০: পর্যাপ্ত পানি না দেওয়া

খাবারে জল থাকলেও আলাদা পানি না দিলে কনস্টিপেশন হয়।
সমাধান: ৬ মাসের পর ফুটানো ঠান্ডা জল দিন। ৬–১২ মাসে প্রতিদিন ৬০–১২০ ml যথেষ্ট।
১ বছর পর পরিমাণ একটু বাড়ান।

এই ছোট ছোট ভুলগুলো না ধরতে পারলে শিশুর খাদ্যাভ্যাস, হজম ও গ্রোথ—সবই প্রভাবিত হতে পারে।
তাই সলিড ফুড শুরু করার সময় থেকেই একটু সচেতন হোন।

মনে রাখবেন — প্রতিটি মিল টাইম একেকটা শিক্ষা, ভালোবাসা আর বিশ্বাসের মুহূর্ত।
আপনার ধৈর্য আর ভালোবাসাই ওর সেরা পুষ্টি।

29/09/2025

শিশুর বিকাশ ও বৃদ্ধি হলো একটি জটিল প্রক্রিয়া:-

★শারীরিক বৃদ্ধি (যেমন, উচ্চতা ও ওজন বৃদ্ধি) এবং মানসিক ও সামাজিক দক্ষতা (যেমন, কথা বলা, খেলাধুলা করা, অন্যদের সাথে মিশতে পারা) একসাথে বাড়ে ও উন্নত হয়।
★এই বৃদ্ধি ও বিকাশ বিভিন্ন ধাপে ঘটে, যার ভিত্তি তৈরি হয় শৈশবের প্রথম বছরগুলোতে।

বৃদ্ধি ও বিকাশের ধারণা :-

★বৃদ্ধি (Growth): এটি একটি পরিমাণগত পরিবর্তন, যেখানে শিশুর আকার, ওজন, বা সংখ্যার পরিবর্তন ঘটে।

★বিকাশ (Development): এটি একটি গুণগত পরিবর্তন, যেখানে শিশুর দক্ষতা, আচরণ, ও মানসিক অবস্থার উন্নতি ঘটে।

শিশুর বিকাশের মূল উপাদান:-

শিশুর বিকাশকে মূলত চারটি প্রধান উপাদানের মাধ্যমে বিবেচনা করা যেতে পারে: -

★শারীরিক বিকাশ: শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বৃদ্ধি, যেমন - হাঁটা, দৌড়ানো, বা লাঠি ধরা।

★মানসিক বা জ্ঞানীয় বিকাশ: শেখার ক্ষমতা, সমস্যা সমাধান, এবং আশেপাশের জগৎ সম্পর্কে জানার ক্ষমতা।

★সামাজিক ও আবেগিক বিকাশ: অন্যদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন, সহানুভূতি, এবং নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা।

★ভাষা ও যোগাযোগ বিকাশ: শব্দ ব্যবহার করে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করা এবং অন্যদের কথা বোঝা।

বিকাশের পর্যায়:-

★প্রারম্ভিক শৈশবকাল: জন্ম থেকে আট বছর বয়স পর্যন্ত এই সময়টি শিশুর বিকাশের ভিত্তি তৈরি করে।

★বিভিন্ন ধাপ: সদ্যজাত শিশু, ইনফ্যান্ট, টডলার, প্রাক-স্কুল, এবং স্কুলগামী শিশুর বিকাশের বিভিন্ন পর্যায় রয়েছে, যেগুলোতে নির্দিষ্ট কিছু দক্ষতা ও আচরণ লক্ষ্য করা যায়।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:-

★ব্যক্তিগত গতি: প্রত্যেক শিশুর বিকাশ তার নিজস্ব গতিতে ঘটে এবং এটি সবার জন্য একই ভাবে হয় না।

★বংশগতি: শিশুর শারীরিক গঠন ও আকার মূলত বংশগতভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়।

★পরিবেশের প্রভাব: শিশুর চারপাশের পরিবেশ, যেমন পরিবার এবং যত্ন, তার বিকাশকে প্রভাবিত করে।

29/09/2025

শিশুর বয়স অনুযায়ী খাবারের তালিকা (সুস্থ ও অসুস্থ অবস্থায়)
★শিশুর সঠিক পুষ্টি গঠনমূলক বিকাশের জন্য অত্যন্ত জরুরি।

০-৬ মাসঃ
★শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধ দিন।
★কোনো ধরনের পানি, দুধ, স্যুপ বা অন্য কোনো খাবার দেবেন না।

৬ মাস - ১২ মাস:
★যতবার চায় ততবার বুকের দুধ দিন।
★বুকের দুধের পাশাপাশি দিন: ভাত-ডাল, খিচুড়ি, হালুয়া, ডিম, মাছ, মাংস, সবুজ শাক-সবজি, পাকা ফল (পেঁপে, কাঁঠাল, কলা, আম)।
★বুকের দুধ খেলে ৩ বার খাবার দিন।
★বুকের দুধ না খেলে ৫ বার খাবার দিন।

১২ মাস - ২ বছর:
★বুকের দুধ চালিয়ে যান যতবার চায়।
★পরিবারে যেসব খাবার খাওয়া হয় তার মধ্যে থেকে পুষ্টিকর খাবার বেছে নিয়ে দিনে ৫ বার খাওয়ান।
★ভাত-ডাল, খিচুড়ি, ডিম, মাছ, মাংস, শাক-সবজি, রঙিন ফল দিন।

২ বছর বা তার বেশি:
★পরিবারে যা খায় তা দিনে ৩ বার দিন।
★মাঝখানে ২ বার হালকা ও পুষ্টিকর খাবার দিন, যেমনঃ তেল মাখানো মুড়ি, রুটি, বিস্কুট, পাকা কলা, পাকা পেঁপে, আম, কাঁঠাল ইত্যাদি।

★প্রতিটি খাবারে শক্তিদায়ক উপাদান থাকা উচিত, যেমনঃ তেলসহ খিচুড়ি, মাংস, ডিম, মাছ বা ডাল এবং সবজি।

★স্মরণ রাখুন: শিশুর খাবারে বৈচিত্র্য ও পুষ্টির ভারসাম্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

29/09/2025

★শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য বয়স অনুযায়ী সঠিক খাবার ও পুষ্টি অত্যন্ত জরুরি।
★৬ মাস পর্যন্ত শিশুকে শুধু মায়ের বুকের দুধ দেওয়া উচিত।
★এরপর ধীরে ধীরে বুকের দুধের পাশাপাশি ফল, সবজি, ভাত-ডাল, মাছ, মাংস, ডিম এবং অন্যান্য পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে।

★বয়স অনুযায়ী খাবারের তালিকা:-

০-৬ মাস:
★শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধ।

৬ মাস - ১২ মাস:
★মায়ের বুকের দুধের পাশাপাশি ভাত-ডাল, খিচুড়ি, হালুয়া, ডিম, মাছ, মাংস, সবুজ শাক-সবজি এবং পাকা ফল (যেমন কলা, পেঁপে) দেওয়া যেতে পারে।

★৭ মাস থেকে: আপেল, কলা, পেঁপে, মিষ্টি আলু, কুমড়া ইত্যাদি নরম ও সেদ্ধ খাবার দিতে পারেন।

★৮-৯ মাস: খেজুর, বেদানা, আঙুর ইত্যাদি ফলও তালিকায় যোগ করা যায়।

★১২ মাস বা তার বেশি: নুডলস, ডিম, মুরগির মাংস , সবজি, ডিম পরোটা, এবং অন্যান্য ঘরে তৈরি সুষম খাবার দিতে পারেন।

প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান:-

★প্রোটিন: চর্বিহীন মাংস, হাঁস-মুরগি, মাছ, ডিম, মটরশুটি, মসুর ডাল, বাদাম ও বীজ থেকে আসে।
★ভিটামিন ও খনিজ: ফল (যেমন আপেল, কলা, পেঁপে, আম), সবজি (যেমন গাজর, কুমড়া, পালং শাক) থেকে পাওয়া যায়।
★ক্যালোরি ও শক্তি: সুজি, চিড়া, চালের ভাতের মাড়, ফলমূল, এবং অন্যান্য খাবারের মাধ্যমে ক্যালোরির চাহিদা পূরণ করা যায়।

গুরুত্বপূর্ণ টিপস:-

★শিশুর খাবারে পর্যাপ্ত পুষ্টি নিশ্চিত করুন।
*শিশুর প্রতিটি খাবারের সাথে প্রোটিন, ফল ও সবজি যোগ করুন।
★শিশুদের জন্য সুষম ও বৈচিত্র্যপূর্ণ খাবার তৈরি করুন, যা তাদের ক্যালরির চাহিদা পূরণ করে।
★শিশুর বয়স বাড়ার সাথে সাথে খাবারের তালিকায় নতুন খাবার যোগ করুন।

21/09/2025

শিশুর পরিপূরক খাবার -

★শিশুকে প্রতিদিন পারিবারিক খাবার দিন।
★প্রতিদিন মাছ/ডিম/মাংস/কলিজা + ঘন ডাল + শাক/সবজি ও হলুদ ফল + তেল বা তেলে ভাজা খাবার এবং দুধ দিয়ে তৈরি খাবার দিন।
★আয়রনযুক্ত খাবার, যেমন- কলিজা, সবুজ শাক ইত্যাদি খেতে দিন।
★শিশুর মানসিক বৃদ্ধি ও বুদ্ধি বিকাশের জন্য আয়োডিনযুক্ত লবণ দিয়ে তৈরি খাবার খাওয়ান।
★খাবার তৈরির আগে ও শিশুকে খাওয়ানোর আগে ভালোভাবে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিন।
★পরিপূরক খাবারের পাশাপাশি শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ান।
★সময় নিয়ে শিশুকে নিজে নিজে খেতে শেখান এবং শিশুকে নিজে নিজে খেতে উৎসাহ দিিন।

17/09/2025

মায়ের দুধ খাওয়ানোর মূল বার্তা -

★জন্মের সাথে সাথেই (১ ঘন্টার মধ্যেই) নবজাতককে শালদুধ সহ মায়্রর দুধ খাওয়ান।
★জন্মের সময় থেকে ৬ মাস পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত শিশুকে শুধুমাত্র মায়ের দুধ খাওয়ান।
★৬ মাস পূর্ণ হওয়ার পর থেকে ২ বছর পর্যন্ত শিশুকে পরিপূরক খাবারের সাথে মায়ের দুধ খাওয়ান।
★কম ওজনের শিশু যদি মায়ের দুধ টেনে খেতে না পারে তবে দুধ চেপে বের করে খাওয়াতে হবে।

Address

Gomati Hospital Pvt. Ltd. , Nazrul Avenue , Kandirpar
Cumilla

Telephone

+8801711748886

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Professor Dr. Nilufa Parvin posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Practice

Send a message to Professor Dr. Nilufa Parvin:

Share

Share on Facebook Share on Twitter Share on LinkedIn
Share on Pinterest Share on Reddit Share via Email
Share on WhatsApp Share on Instagram Share on Telegram