25/05/2025
স্পিচ ডিলে (Speech Delay) বা বাচ্চার কথা বলতে দেরি হলে বাবা-মায়ের ধৈর্য্য ও সঠিক পদক্ষেপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে করণীয় কিছু বিষয় নিচে দেওয়া হলো:
১. **শিশুর সাথে বেশি বেশি কথা বলুন**
প্রতিদিনের কাজগুলো (গোসল, খাওয়া, খেলা) সম্পর্কে বর্ণনা করুন। যেমন: "এখন আমরা হাত ধুবো," "এইটা লাল বল।"
সহজ ও ছোট বাক্য ব্যবহার করুন, উচ্চারণ স্পষ্ট করুন।
শিশুর আওয়াজ বা শব্দের উত্তর দিন (যদি সে "বা-বা" বলে, আপনি বলুন "হ্যাঁ, বলো বাবা !")
২. **ইন্টারেক্টিভ খেলা বাড়ান**
গান, ছড়া, আঙুলের খেলা (যেমন: "টোকা-টোকি মনিমনি") বলুন।
পুতুল/স্টাফড অ্যানিম্যাল দিয়ে স্টোরি টেলিং করুন।
বাচ্চাকে জিজ্ঞাসা করুন: "বলটা কোথায়?" বা "কুকুরটা কি বলছে?"
৩. **বাচ্চার যোগাযোগের চেষ্টাকে উৎসাহিত করুন**
যখন সে আঙুল দিয়ে কিছু দেখায় বা শব্দ করে, সেটার নাম বলুন (যেমন: "ওহ, তুমি গাড়ি দেখেছো! গাড়ি যায় ব্রুম ব্রুম!")।
তাকে কথা বলার সময় দিন, জবাব দিতে চাপ দেবেন না।
৪. **বই পড়ার অভ্যাস করুন**
রঙিন ছবির বই দিন, গল্প বলুন এবং তাকে ছবি দেখিয়ে নাম বলতে উৎসাহিত করুন।
একই বই বারবার পড়ুন—এটি শব্দ শেখার জন্য সহায়ক।
৫. **স্ক্রিন টাইম কমিয়ে দিন**
টিভি/মোবাইল শিশুর ভাষা বিকাশে বাধা দেয়। বদলে লাইভ ইন্টারঅ্যাকশন গুরুত্বপূর্ণ।
৬. **শিশুর শুনার দক্ষতা পরীক্ষা করুন**
যদি শিশু নাম ধরে ডাকলে সাড়া না দেয় বা শব্দের দিকে না তাকায়, অডিওলজিস্টের পরামর্শ নিন।
৭. **বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন**
যদি ২ বছর বয়সে ৫০টির কম শব্দ বলে বা ২-৩ শব্দের বাক্য না বোঝে, **স্পিচ থেরাপিস্ট** বা **শিশু বিকাশ বিশেষজ্ঞ** (Pediatrician/Developmental Specialist) দেখান।
অটিজম বা অন্য ডেভেলপমেন্টাল ডিলে আছে কিনা তা নির্ণয় করুন।
৮. **ধৈর্য্য রাখুন ও ইতিবাচক থাকুন**
শিশুর ছোট ছোট প্রচেষ্টাকে প্রশংসা করুন (হাসি, ক্ল্যাপ, জড়িয়ে ধরা)।
তুলনা করবেন না—প্রতিটি শিশুর বিকাশের গতি আলাদা।
৯. **সামাজিক মিথস্ক্রিয়া বাড়ান**
পার্কে বাচ্চাদের সাথে মিশতে দিন। দেখাদেখি শব্দ শেখার সুযোগ পাবে।
১০. **বাড়ির পরিবেশ পরীক্ষা করুন**
অতিরিক্ত শোরগোল বা স্ট্রেসফুল পরিবেশ ভাষা শিখতে বাধা দিতে পারে।
**মনে রাখবেন:** অনেক শিশুই স্পিচ ডিলে কাটিয়ে পরে স্বাভাবিকভাবে কথা বলে। তবে প্রাথমিক হস্তক্ষেপ (Early Intervention) সবচেয়ে কার্যকরী। যদি চিন্তা হয়, দেরি না করে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।