07/11/2024
🌿💊হোমিওপ্যাথি ঔষধ ব্যবহারে সাবধানতা :-
আমরা অনেকেই শিক্ষা কালীন সময়ে অনেক কিছুই শেখার চেষ্টা করি, কিন্তু পরবর্তীতে চিকিৎসা জীবনের ব্যস্ততা ও বিভিন্ন সমস্যার কারনে আর ঠিকভাবে পড়াশোনা না করতে পারার কারনে অনেক কিছুই আর পরবর্তীতে মনে থাকে না।
এ মনে না থাকার কারনে ভুল হতে পারে,আর এ ভুলের কারণে একজন রোগীর মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে,যা রোগীকে আজীবন কষ্ট দিতে পারে, অনেক সময় রোগী মারা ও যেতে পারে।
অনেক সাধারণ মানুষ তো বটেই, এমন কি অনেক সময় হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক গন ও বলে থাকেন, হোমিওপ্যাথি ঔষধ কোন ক্ষতি করে না।
হাঁ যদি সুনির্বাচিত ঔষধ, জীবনীশক্তি অনুযায়ী সু-সম শক্তি নির্বাচন ও মাত্রার ভুল প্রয়োগ না হয়,হোক তা চিকিৎসক কর্তৃক বা রোগী কর্তৃক, তাহলেই হোমিওপ্যাথি ঔষধ পুরোপুরি নিরাপদ।
মনে রাখবেন কিন্তু তার অন্যথা হলে হোমিওপ্যাথি ঔষধ নিরাপদ নয়।
চিকিৎসক বা রোগীর ভুলের দায়, হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা বিজ্ঞানের উপর দেয়া কোনভাবেই ঠিক নয়।
আমাদের সম্মানিত পাথ ফাইন্ডার গন,এ বিষয়ে উনাদের অভিজ্ঞতা লদ্ধ জ্ঞান হতে, আমাদের জন্য অনেক কিছু রেখে গিয়েছেন, মুল্য হিসেবে যা কি না হীরার চেয়েও মুল্যবান।
কিন্তু আমাদের চরম দুর্ভাগ্য যে, আমরা নতুন কিছু আবিস্কারের চেষ্টা তো করছি ই না, বরং উনাদের কষ্টার্জিত দান করা জ্ঞানের সঠিক ব্যবহার ও করছি না।
আমাদের নোয়াখালীর ভাষায় একটি প্রবাদ আছে তা হলো,দাদায় বলেছে বাঁনতে ধান,বানতে আছি ভিজা ধান।
এর অর্থ হলো দাদায় ধান বাঁনতে বলেছে,আমি যাচাই-বাছাই না করে অন্ধের মতো তা-ই পালন করছি।
বর্তমানে আমাদের অবস্থা ও হয়েছে তাই।
কোন গভীর চিন্তা-ভাবনা নেই,নিজস্ব কোন
গবেষণা নেই, এমনকি আমরা এতোটাই হতভাগা যে, সম্মানিত অথর গনের বিনামূল্যে দান করা সম্পদ ও আমরা আমাদের অযোগ্যতা, অদূরদর্শিতা ও চরম আলসেমীর জন্য সঠিক ভাবে প্রয়োগ করতে না পেরে রোগীর ক্ষতি করে যাচ্ছি।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটিই সত্যি একবার চেম্বার জমে উঠলে খুব কম সংখ্যক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক ই নিয়মিত পড়াশোনা করে থাকেন।
আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, অনভ্যাসে বিদ্যা নাশ।
আজ আমি চেষ্টা করবো বহুল ব্যবহৃত অল্প কয়েকটি হোমিওপ্যাথি ঔষধ নিয়ে আলোচনা করতে।
যাদের পজিটিভ ও নেগেটিভ দিক এবং কি কি সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।
🌿(১)ধীরস্থির ধৈর্যশীল রোগীকে কখনো একোনাইট দেয়া উচিত নয়।
একোনাইটের সাথে অনেকেই পর্যায়ক্রমে অন্য ঔষধ দিয়ে থাকেন, কখনো তা চলবে না।
শরীরে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করে,এমন রোগে একোনাইট উপযোগী নয়।
একোনাইট মোটেও গভীর ক্রিয়াশীল ঔষধ নয়,তাই এক মাত্র তরুণ রোগেই এটি কার্যকরী।
আংশিক লক্ষনে একোনাইট প্রয়োগ করা উচিত নয়,একোনাইট প্রয়োগের পর কিছুক্ষণের মধ্যে উপকার না পেলে একোনাইট আর বার বার কোনভাবেই দেয়া উচিত নয়।
জ্বর শুনলেই উপযুক্ত লক্ষন ছাড়া কোনভাবেই একোনাইট দেয়া উচিত নয়।
একোনাইট একটি বিষাক্ত ঔষধ,এর মাদার টিঙ্কচারের স্থুল প্রয়োগ মানুষ কে মেরে ফেলতে পারে।
কখনো এমন হলে পানিতে বেশি করে লবণ মিশিয়ে বারবার পান করালে,একোনাইট মাদারের বিষ ক্রিয়া নষ্ট হয়ে যায়।
🌿(২) অনেকেই অতি দ্রুত শোথ কমানোর জন্য কখনো কখনো অধিক মাত্রায় এপোসাইনাম Q ব্যবহার করে থাকেন।
এমন করা কোনভাবেই ঠিক নয়।
দীর্ঘদিন এমন করা অত্যন্ত বিপজ্জনক।
এক পর্যায়ে ঔষধ বন্ধ করে দিলে রোগী হার্ট অ্যাটাক করে মারা যেতে পারে।
🌿(৩) টাইফয়েড জ্বরে আর্সেনিক এর লক্ষন থাকলেও অতি সাবধানে বিশেষভাবে চিন্তা করে দেয়া উচিত।
টাইফয়েড এ যদি আর্সেনিক এর লক্ষণ না থাকে,অথচ আর্সেনিক প্রয়োগ করা হয়, তবে তা রোগীর জন্য মারাত্মক বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে ।
ক্যান্সারের অগ্ৰসর অবস্থায় আর্সেনিক এর লক্ষন থাকা সত্বেও আর্সেনিক প্রয়োগ না করাই উত্তম,কারন না হয় রোগীকে মসৃণ মৃত্যু উপহার দেবে।
এ রোগীর মধ্যে আর্সেনিক এর লক্ষণ আছে,আর এ রোগী আর্সেনিক এর,এ দুটি কথার মধ্যে বিশাল প্রার্থক্য আছে।
এখানে অনেক কিছু বোঝার আছে।
শারীরিক যান্ত্রিক পরিবর্তনে আর্সেনিক ব্যাবহার হতে সাবধান হতে হবে।
আর্সেনিক দ্ধারা চিকিৎসা নেয়া রোগীর দুধ পান করা উচিত নয়।
🌿(৫) ব্যাসিলিনাম বর্তমান সময়ের জন্য অতি প্রয়োজনীয় ও বহুল ব্যবহৃত একটি অতি কার্যকরি ঔষধ।
এটি ছাড়া বর্তমান সময়ে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা সেবা চালানো বেশ কঠিন।
তবে এটি ত্রিশ শক্তির নিচে ব্যবহার করা যাবে না,দুইশত শক্তি ই অধিকতর নিরাপদ।
জীবনীশক্তি ভালো হলে উচ্চ শক্তির এক বা দুই মাত্রা প্রয়োগ করে, দীর্ঘদিন পর্যন্ত বাঁধাহীন ভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে।
ঘনঘন প্রয়োগ এবং এর কার্যক্রম চলা কালীন অন্য ঔষধ প্রয়োগ করা চরম অন্যায়।
শুধুমাত্র নিউমোনিয়ায় এটি ঘন ঘন ব্যবহার করার প্রয়োজন হয়।
যে সকল চিকিৎসক গন পঞ্চাশ সহস্রতমিক পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকেন,উনারা ও ৫/০ এর নিচে ব্যবহার না করাই উত্তম।
তবে শিশু ও অতি দূর্বল রোগী ক্ষেত্রে একান্ত বাধ্য হয়ে সর্বনিম্ন ৩/০ ব্যবহার চলতে পারে।
ব্যাসিলিনামের উপযুক্ত লক্ষণ থাকার পর ও ভালো ফল না পেলে লক্ষণানুযায়ী সাহায্যকারী ঔষধ হিসেবে সোরিনাম,সিফিলিনাম এবং থুজা যেটি প্রয়োগ যোগ্য সেটি ব্যবহারে বাধা দুর হয়ে ব্যাসিলিনাম ভালো কাজ করে।
🌿(৬) আমি দেখেছি অনেক চিকিৎসক টনসিল শুনলেই বিনা লক্ষনে মুখস্থ ভাবে ব্যারাইটা কার্ব,ফাইটোলক্বা বা মার্ক সল এ তিনটির যে কোন একটি দিয়ে থাকেন, ভালোভাবে রোগী লিপি না করেই।
এমন করা কোনভাবেই ঠিক নয়।
ব্যরাইটা কার্ব অনেক সময় শারীরিক ভাবে খর্ব নাও থাকতে পারে, কিন্তু মানসিক খর্বতা ছাড়া ব্যারাইটা কার্ব প্রয়োগ করা যাবে না।
ব্যারাইটা কার্ব রোগী আবহাওয়া গরম পছন্দ করে।
ব্যারাইটা ও ক্যালকেরিয়া একটির পর অপরটির ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধ।
হাঁপানির সাথে Emphysema (ফুসফুসে বায়ু জমা)রোগ থাকলে ব্যারাইটা প্রয়োগ করা যাবে না।
🌿(৭) ব্রায়োনিয়ার কমপ্লিমেন্টারি হলো এলিউমিনা,ব্রায়োনিয়ার পর কেলি কার্ব ভালো খাটলেও সাবধান ব্রায়োনিয়ার আগে বা পরে কিন্তু ক্যালকেরিয়া কার্ব দেয়া যাবে না।
এ ছাড়াও জ্বর কাশি কিংবা অন্যান্য রোগে ব্রায়োনিয়া প্রয়োগের পর লেবুর রস পান করা নিষেধ, শুধু লেবুর রস ই নয়, এমন কি অন্যান্য টক দ্রব্য ও খাওয়া বা পান করা নিষেধ।
ব্রায়োনিয়া স্বল্প গভীর ক্রিয়াশীল এন্টি সাইকোটিক এবং এন্টি টিউবারকুলার ঔষধ।
সুনির্বাচিত হলে এর সুষম শক্তির একটি ৩০ বা ২০০ শক্তির মাত্রাই যথেষ্ট, পুনঃ পুনঃ প্রয়োগ সাংঘাতিক ক্ষতিকর।
তবে পঞ্চাশ সহস্রতমিকের নিয়ম ভিন্ন।
🌿(৮) ক্যালকেরিয়া কার্ব আমাদের একটি অতি গভীর ক্রিয়াশীল এন্টি সোরিক ও এন্টি টিউবারকুলার ঔষধ।
আগেই বলেছি ক্যাল্ক কার্ব এবং ব্যারাইটা কার্ব একটির পর আরেকটি চলে না।
আপনারা জানেন তারপরও এখন আপনাদের মনে করিয়ে দিচ্ছি,ক্যাল্কে কার্বের পর সালফার ও এসিড নাইট ব্যাবহার নিষিদ্ধ,এটি স্বয়ং মহাত্মা হ্যানিম্যানের নির্দেশ।
এ ছাড়াও কেলি বাইক্রম এর পর ও কখনো ক্যাল্ক কার্ব দেয়া যাবে না।
যে কোন বয়সের মানুষ,যে কোন ধাতুর রোগী,যে কোন ঔষধের রোগীর জন্য টিকা গ্ৰহন অত্যন্ত ক্ষতিকর, তবে ক্যালকেরিয়া কার্বের ধাতু যুক্ত রোগীর জন্য টিকা গ্ৰহন চরম ক্ষতিকর।
যদি সুনির্বাচিত ক্যাল্ক কার্ব ব্যর্থ হয়, এবং যদি টিকা গ্ৰহনের ইতিহাস পাওয়া যায়, তবে ক্যাল্ক কার্ব এর কম্প্লিমেন্টারি হিসেবে কয়েক মাত্রা সাইলিসিয়া প্রয়োগে টিকার কুফল দূর হয়ে বাধা কেটে গিয়ে,ক্যাল্ক এর কার্যকারিতার সুফল দেখা দেয়।
মনে রাখবেন ক্যাল্ক কার্বের ধাতু যুক্ত রোগীকে কোনভাবেই যেন টিকা দেয়া না হয়।
সাধারণ ভাবে ক্যাল্ক কার্ব একটি অত্যন্ত নিরাপদ ঔষধ, কিন্তু যক্ষা রোগের ক্ষেত্রে যেখানে ফুসফুসে গুটিকা (Tubercular nodes) জম্মে গেছে, সেখানে ক্যাল্ক কার্ব এবং সাইলিসিয়া খুবই বিপজ্জনক, সাথে সালফার ,সাইলিসিয়া,হিপার সালফ,ল্যাকেসিস ও আর্সেনিক ইত্যাদি ঔষধ রোগীকে অতি দ্রুত মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেবে।
🌿(৯)কার্সিনোসিন নিয়ে আমি এর আগেও আমার অনেক পোস্টে বারবার সাবধান করেছি, ক্যান্সার শুনলেই কোনভাবেই কার্সিনোসিন দেয়া যাবে না।
আমি আপনাদের জোর গলায় বলছি, বারবার সাবধান করছি, মনে রাখবেন কার্সিনোসিন কখনোই ক্যান্সার আরোগ্যের ঔষধ নয়,দয়া করে এ কথাটি সারা জীবন ধরে মনে রাখবেন।
তাহলে কার্সিনোসিনের কাজ কি, এবং কোন লক্ষনে আমরা কার্সিনোসিন ব্যবহার করবো ?
কার্সিনোসিনের মুল কাজ হলো ক্যান্সার জাতীয় রোগে,বা এ রোগ ভবিষ্যতে ক্যান্সার এর দিকে মোড় নিতে পারে,এমন রোগ সমুহে গভীর ক্রিয়াশীল, সুনির্বাচিত ও সুষম শক্তির ঔষধ ব্যার্থ হলে, তখন আরোগ্য পথের বাধা দুর করার জন্য ব্যবহৃত ওষুধ।
যেখানে বংশে ক্যান্সার এর ইতিহাস থাকে, সাথে ডায়াবেটিস,ষ্ট্রোক ও পাগল থাকার ইতিহাস থাকে,আর যেখানে রোগীর মধ্যে ক্যান্সারের আতংক থাকে,এ গুলো হলো কার্সিনোসিনের গাইডিং সিম্পটম্পস্, যেখানে আমরা এগুলো পাবো,সেখানে আমরা যথেষ্ট সাবধানতার সাথে কার্সিনোসিন ব্যবহার করতে পারি।
ক্যান্সারের অগ্ৰসর অবস্থায় কার্সিনোসিনের প্রয়োগ রোগীকে দ্রুত মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেবে, সাবধান এতে কোন সন্দেহ নেই।
🌿(১০) সিফিলিস এর মারাত্বক অবস্থায় কখনো ফেরাম মেট, সালফার,গ্ৰাফাইটিস দেয়া যাবে না, এমনকি কষ্টিকাম ও ক্যাল্ক কার্ব দিতেও সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
(১১)ফেরাম ফস রাতে ব্যবহার করতে হলে কমপক্ষে 12X ব্যবহার করতে হবে,না হলে ঘুমের অসুবিধা হবে।
🌿(১২) হিপার সালফার আমাদের মেটেরিয়া মেডিকার অন্যতম সেরা দুমুখো ছুরি, একটি সময় পর্যন্ত খুবই চমৎকার কাজ করবে, কিন্তু অতি দুর্বল রোগী,দূর্বল জীবনীশক্তি এবং যক্ষা ও ক্যান্সারের ন্যায় রোগের অগ্ৰসর ক্ষেত্রে খুবই মারাত্মক,তাই অতি সাবধানে ব্যবহার করতে হবে।
হিপার সালফার একটি অত্যন্ত শীতকাতর ঔষধ,রেপার্টরি অনুযায়ী এটি প্রথম শ্রেনীর শীতকাতর ঔষধ।
শীতকাতর মানে হিপার সালফার মোটেও শীত কালের শীত তো দুরের কথা, সাধারণ ঠান্ডাও সহ্য করতে পারে না।
কিন্তু আমি দেখেছি এবং আমি জানি,অনেক নামকরা হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক এমনকি হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল ও রোগী মোটেও শীতকাতর নয়, বরং ঠান্ডা পছন্দ করে,এমন রোগীকে ও হিপার প্রয়োগ করেছেন,যা কি-না শুধু চরম অন্যায় আর নয়, সাথে রোগীর ক্ষতির কারন ও বটে।
🌿(১৩) আয়োডিয়াম এমনিতে মোটামুটি গঠন মূলক ঔষধ, তবে যক্ষা রোগের একেবারে শেষ অবস্থায় যখন অতিরিক্ত ক্ষুদা ই প্রধান লক্ষন, সারাক্ষণ শুধু খাই খাই যা সত্বেও পেট ভরে না, এমন রোগীকে আয়োডিয়াম প্রয়োগে ক্ষুধা কমে গিয়ে রোগী দ্রুত মারা যেতে পারে।
🌿(১৪) কেলি ফস উচ্চ হতে উচ্চতর শক্তি অধিকতর কার্যকর, যদিও সমাজে ব্যাপক হারে বায়োকেমিকের নিম্ম শক্তি ব্যবহৃত হয়, তবে এটি ঠিক প্রান বাঁচাতে এবং জরুরি কিছু ক্ষেত্রে অবশ্যই নিম্ম শক্তি ব্যবহার করতে হয়।
তবে 6X শক্তি বা তার নিচের শক্তি কোনভাবেই দীর্ঘদিন দেয়া যাবে না।
একান্ত প্রয়োজনে দীর্ঘদিন ব্যবহার করতে হলে অবশ্যই 12X শক্তি ব্যবহার করতে হবে।
🌿(১৫) কেলি কার্ব একটি গভীর ক্রিয়াশীল এন্টি টিউবারকুলার ও এন্টি সিফিলিটিক ঔষধ।
যদিও মহত্মা হ্যানিম্যান উনার সময়ে বলেছিলেন যে,কেলি কার্ব ব্যাতীত যক্ষা রোগ আরোগ্য সম্ভব নয়।
তবুও বর্তমান সময়ে কেলি কার্ব প্রয়োগে সাবধান হতে হবে,যক্ষায় খুবই সাবধানে প্রয়োগ করতে হবে।
এটি অত্যন্ত গভীর ক্রিয়াশীল হবার কারনে ঘনঘন দেয়া যাবে না, এবং প্রয়োগ কৃত মাত্রার কার্যক্রম শেষ হবার আগে আরেক মাত্রা প্রয়োগ চলবে না।
🌿(১৬) ক্রিয়োজোট :- আমার মতে এটি আমাদের মেটেরিয়া মেডিকার সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক ঔষধ।
এর মানে এটা নয় যে এর শক্তি কৃত ঔষধের অপ প্রয়োগে বা ভুল প্রয়োগে আর্সেনিক, সালফার,হিপার সালফার,সাইলিসিয়া,ল্যাকেসিস বা কার্সিনোসিনের মতো মারাত্মক ক্ষতিকর।
বরং আমি যেটি বলতে চাই সেটি হলো যে, এক মাত্র এ ক্রিয়োজোট ঔষধের মধ্যেই সকল ধরনের মায়াজম একই সঙ্গে বিদ্যমান, শুধুমাত্র ভ্যাক্সিনোসিস মায়াজম বাদে।
সোরিনাম যেমন সুগভীর ক্রিয়াশীল এন্টি সোরিক,গভীর ক্রিয়াশীল এন্টি সাইকোটিক, গভীর ক্রিয়াশীল সিফিলিটিক ও গভীর ক্রিয়াশীল এন্টি টিউবারকুলার, কিন্তু এন্টি ক্যান্সেরিক নয়,থুজা যেমন সুগভীর ক্রিয়াশীল এন্টি সাইকোটিক ও সুগভীর ক্রিয়াশীল এন্টি ভ্যাক্সিনোসিস, কিন্তু এন্টি সোরিক নয়, তেমনি আমাদের মেটেরিয়া মেডিকার প্রত্যেকটি গভীর ক্রিয়াশীল ঔষদ একই সাথে সকল মায়াজম কভার করে না
এক মাত্র ব্যাতিক্রম হলো ক্রিয়োজোট, এটি একমাত্র ভ্যাক্সিনোসিস ছাড়া একই সাথে প্রায় সকল মায়াজম বহন করলেও এর প্রধান মায়াজম কিন্তু সিফিলিস ও তারপরে ক্যান্সার মায়াজম।
আর আপনারা সবাই জানেন যে, ক্যান্সার কখনো একক মায়াজম নয়।
আমি ক্যান্সার কে খিচুড়ি মায়াজম নামে অভিহিত করে থাকি,তার মানে বিভিন্ন মায়াজমের একত্র সন্নিবেশ হলো ক্যান্সার মায়াজম।
শিশু কালে বা কিশোর কালে এ ঔষধের রোগী কে এ ঔষধ দ্বারা রোগ মুক্ত না করতে পারলে যৌবন কালে বা প্রৌড় বয়সে এ রোগী শুধু মাত্র ক্রিয়োজোট না,অন্য কোন ঔষধ দ্বারাই আর ভালো করা সম্ভব হয় না।
আমরা অনেকেই দাঁতের ব্যাথা দ্রুত কমানোর জন্য বাহ্যিকভাবে ক্রিয়োজট মাদার টিঙ্কচার ব্যবহার করে থাকি।
যা চরম মাত্রায় অন্যায় এবং রোগীর জন্য মহা ক্ষতিকর।
যদি মানসম্মত ঔষধ মানে ভালো কোম্পানির মাদার টিঙ্কচার হয়, তবে ক্ষতির আশঙ্কা ও বেশি।
আমি দেখেছি এ ঔষধের মাদার টিঙ্কচার দীর্ঘদিন ব্যবহারে রোগীর মুখের ভেতর ও মারাত্মক ক্ষত হতে,এ ছাড়াও রোগীর দাঁত পাটখড়ির মতো হয়ে গিয়ে ভেঙ্গে ভেঙ্গে পড়ে যেতে, এমনকি দীর্ঘদিন ব্যাবহারের ফলে মুখ ও মাড়িতে ক্যান্সার হয়েছে,এমন তিক্ত অভিজ্ঞতা ও আমার আছে।
এমন তিক্ত ও বিরক্তিকর অভিজ্ঞতা কারো জন্য কাম্য নয়।
আমাদের কিছু লেখকের বইতে লেখা আছে,যক্ষা রোগীতে ক্রিয়োজোট Q সেবনে যক্ষার জীবাণু মারা না গেলেও, রোগীর স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়।
আমার মতামত হলো যক্ষার জীবাণু মারা না গেলে শুধু স্বাস্থ্যের উন্নতি করে লাভ কি ?
যদিও সিকেলি কর Q সেবন এর মতো ক্রিয়োজোট Q সেবন কখনোই ততোটা মারাত্মক ক্ষতিকর নয়, তবুও আমি ঐ মতের সম্পুর্ন বিরোধি।
যদিও অল্প কিছুদিনের জন্য ক্রিয়োজোট Q বিশ বা ত্রিশ ফোঁটা করে পানিতে মিশিয়ে সেবন করলে, কোনভাবেই তা সিকেলি কর এর মতো ক্ষতিকর নয়।
তবু ও তা করা আমি মোটেও পছন্দ করি না,কারন দীর্ঘদিন এ ভাবে সেবনের ফলে, হয়তো মানব দেহে ক্রিয়োজোটের প্রুভিং শুরু হতে পারে,বা ক্রিয়োজোটের ন্যায় অতি গভীর ক্রিয়াশীল ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তীব্র ক্ষতির কারন হতে পারে।
অতএব দয়া করে এ সকল বিষয়ে সবাই সতর্ক থাকবেন।
সিফিলিস দোষের মারাত্মক প্রভাবের কারনে পরবর্তীতে এ ঔষধের প্রায় সকল রোগী পরবর্তীতে মারাত্মক ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়।
আমি আবারও বলছি যদি আমার চেম্বারে এমন কিশোর/ কিশোরী,যুবক বা প্রৌঢ় কোন রোগী আসেন,যিনি শিশু কালে ক্রিয়োজোট এর লক্ষন যুক্ত রোগী ছিলেন, কিন্তু দুর্ভাগ্য ক্রমে উনাকে যথাসময়ে ক্রিয়োজোট দ্ধারা চিকিৎসা করা হয় নি।
তাহলে আমি উনার চিকিৎসা করতে অপারগতা প্রকাশ করবো,আর একান্ত বাধ্য হয়ে চিকিৎসা দিতে হলে পূর্বেই জানিয়ে দেবো,এ রোগীর ভালো হবার কোন সম্ভাবনাই নেই বললেই চলে, এমনকি আংশিক উন্নতি ও অনেক বেশি কঠিন।
আমি আমার চিকিৎসা জীবনে যে কয়েকটি ঔষধের লক্ষন যুক্ত রোগীকে সবচেয়ে বেশি ভয় পাই,তার মধ্যে অন্যতম সেরা ঔষধ টি হলো ক্রিয়োজোট।
🌿(১৭) ল্যাকেসিস প্রয়োগের পর টক জাতীয় খাবার গ্ৰহন করা যাবে না,এ ছাড়াও মদ পান ও নিষেধ।
নাইট্রিক এসিডের পর ল্যাকেসিস প্রয়োগ মারাত্মক ক্ষতিকর, কিন্তু ল্যকেসিসের পর নাইট্রিক এসিড কম্প্লিমেন্টারি হিসেবে কাজ করে।
ল্যাকেসিস ও হিপার সালফার এর মতো মারাত্মক দ্বিমুখী ছুরি,হিপারের প্রতিক্রিয়ায় সাধারণত রোগী কিছুদিনের মধ্যেই মারা যায়, কিন্তু ল্যাকেসিস অপপ্রয়োগের ক্ষতি রোগী সারা জীবন ভোগ করে,তাই অতি সাবধানে ব্যবহার করতে।
সাধারণ ভাবে যদিও ল্যাকেসিস যদিও শরীরের বাম দিকের ঔষধ, এবং লাইকোপোডিয়াম শরীরের ডান দিকের ঔষধ,কিন্তু লাইকোপোডিয়াম ও ল্যকেসিস একটি লক্ষন থাকলে অপরটির পর অতি চমৎকার কাজ করে।
🌿(১৮) লাইকোপোডিয়াম গভীর ক্রিয়াশীল এন্টি সোরিক,এন্টি সাইকোটিক ও এন্টি সিফিলিটিক ঔষধ।
লাইকোর সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো এটি প্রায় ক্ষেত্রেই প্রথম দিকে রোগ ভীষণ ভাবে বাড়িয়ে দেয়,তাই অতি সাবধানে এবং যথেষ্ট চিন্তা ভাবনা করে শক্তি নির্ধারণ করতে হবে।
এটি কখনো ঘনঘন ও ধরেই উচ্চ শক্তি প্রয়োগ করা উচিত নয়।
মনে রাখবেন লাইকো ১২ শক্তির নিচে কাজ করে না,তাই উপকার পেতে হলে কমপক্ষে ৩০ শক্তি ব্যবহার করতে হবে।
যৌন অক্ষমতার রোগীর ক্ষেত্রে লাইকোর ভুল বা অপপ্রয়োগ রোগীর সারা জীবনের ক্ষতির কারণ হতে পারে,তাই অবশ্যই সাবধান।
লাইকোর রোগীর থুজার রোগীর মতো কাঁচা পিঁয়াজ রসুন খাওয়া নিষেধ।
আমাদের অনেক মনিষী গন বলে গিয়েছেন,কার্বো ভেজ লাইকোর ক্রিয়া কে উজ্জীবিত করে।
🌿(১৯)আমি হোমিওপ্যাথি ঔষধ সমুহের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভয় পাই যে কয়েকটি ঔষধ কে,তার মধ্যে অন্যতম হলো মার্ক সল।
কারন ল্যাকেসিস, কার্সিনোসিন, আর্সেনিক ইত্যাদি সাধারণ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক গন ততোটুকু ব্যাবহার করেন না, যতোটুকু ব্যবহার করেন মার্ক সল।
আমাশয়ে,টনসিলে, চুলকানিতে, দাঁতের রোগে অনেকেই মুখস্থ মার্ক সল প্রয়োগ করে থাকেন,লক্ষন আছে কি নেই,তা জানার প্রয়োজন ও বোধ করেন না।
Collected from: Dr.Mohibbur Rahman Sir ❤️