17/10/2024
ইবনুল কাইয়্যিম রাহিমাহুল্লাহ তার তিব্বুন নাবাউই বইতে যাদুর চিকিৎসা দুই শ্রেণীতে ভাগ করেছেন। একটি হলো, যাদু কে মূল থেকে তুলে ফেলে যাদুকে নষ্ট করা। দ্বিতীয় পদ্ধতি হলো, যেই অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে যাদু প্রভাব বিস্তার করেছে তা পরিষ্কার করা। অর্থাৎ যেই স্থানটি যাদু প্রভাবিত করেছে।
যখন কোনো অঙ্গ যাদুর মাধ্যমে আক্রান্ত হয় তখন ঐ অঙ্গ পরিষ্কার করে দূষিত উপাদান বের করে নিয়ে আসা আবশ্যক। এই চিকিৎসার মাধ্যমে অকল্পনীয় উপকারীতা পাওয়া যায়।
ইমাম আবু উবাইদা আল-কাসিম রহ. নিজ গ্রন্থ গারিবুল হাদিস-এ আবদুর রহমান ইবনু আবু ইয়ালা রহ.-এর বর্ণনাসূত্রে একটি হাদিস বর্ণনা সংকলন করেছেন। হাদিসটি হলো,
أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ احْتَجَمَ عَلَى رَأْسِهِ بِقَرْنٍ حِينَ طُبَّ.
"যখন রাসুল ﷺ কে যাদু করা হয়েছে তখন তিনি নিজের মাথায় হিজামা ব্যবহার করেছেন।
ইমাম আবু উবাইদাহ আল-কাসিম রহ. হাদিসে উল্লেখিত «طب» শব্দের অর্থ করেছেন, "سُحِرَ« শব্দের মাধ্যমে। যার অর্থ হলো, যাদু করা হয়েছে।
এক শ্রেণির গবেষকদের মতামত হলো, রাসুল ﷺ যখন যাদুগ্রস্ত হলেন তখন এর প্রতিক্রিয়া হিসাবে দেখা গেল, তিনি ধারনা করছেন একটি কাজ করেছেন, অথচ তিনি তা করেননি। রাসুল ﷺ ভেবেছেন, হয়ত এই অবস্থার সৃষ্টি, মূলত রক্তের উপাদান বা এ ধরনের কোনো সমস্যার কারণে হয়েছে। যা দেমাগ পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। এর ফলে তার মেযাজের স্বাভাবিক অবস্থায় পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। তাই চিকিৎসা হিসাবে এই সময় হিজামার ব্যবহারই সর্বোত্তম ছিল। তাই তিনি হিজামা লাগিয়েছেন।
আবু ইবরাহীম হুসনাইন তার Diaries of an exorcist এ লিখেছেন,
যেকোনো অসুস্থতার জন্যই আপনি কাপিং করতে পারেন। ক্যান্সারের জন্য কাপিং করতে পারেন। জ্বীনের সমস্যার জন্যও কাপিং করতে পারেন। কেন? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
'নিশ্চয়ই শয়তান আদম সন্তানের শিরা-উপশিরায় রক্তের মত চলাচল করে।' (বুখারী)
আর কাপিং এর মাধ্যমে দেহের দূষিত রক্ত অপসারণ করা হয়। তাই কাপিং করার সময় দেহের কিছু অংশ কেটে রক্ত টেনে বের করা হয়। এতে শয়তান চলাচলের ক্ষেত্র সংকুচিত হয়ে আসে। অনেক সময় রক্তের সাথে শয়তান রোগীর দেহত্যাগ করতে বাধ্য হয়। উদাহরণস্বরূপ- হয়তো কোনো রোগীর পিঠে জ্বীন অবস্থান করছে। তখন যদি আপনি পিঠে কাপিং করেন এবং সেই রক্ত টেনে বের করে আনেন, তখন শয়তান ঐ রোগীর দেহত্যাগ করতে বাধ্য হয়।
কাপিং এর মাধ্যমে যাদুর চিকিৎসাও করা যায়। আপনি কোনো রোগে আক্রান্ত হন কিংবা নাই হন, সকলের জন্যই কাপিং অনেক উপকারী। সর্বোপরি, এটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সুন্নাহ। তাই আমি সকল মুসলিম ভাই-বোনদের বলছি, জীবনে অন্তত একবার হলেও কাপিং করান। এর অনেক স্বাস্থ্যগত উপকারিতা আছে।
হিজামা একটি সম্পুর্ণ সুন্নাহভিত্তিক চিকিৎসা পদ্ধতি। হিজামায় কোন পার্শপ্রতিক্রিয়া নেই। আসুন আমরা সবাই হিজামা নিয়ে সুস্থ থাকি।