18/09/2023
বিবাহিত দম্পতিদের সন্তান না হওয়ার বিড়ম্বনা সব সমাজেই বিদ্যমান। স্বাভাবিক দাম্পত্য জীবনে সন্তান না এলে তাকে বন্ধ্যাত্ব হিসেবে দেখা হয়। নারীর গর্ভসঞ্চার সত্ত্বেও জীবিত সন্তান প্রসব না হওয়াকেও এক প্রকার বন্ধ্যাত্ব বলা হয়। চলুন জেনে নিই যেসব কারণে নারীরা বন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছেন।
১. অনিয়মিত ঋতুস্রাবের কারণে বন্ধ্যাত্ব দেখা দিতে পারে। সাধারণত একজন নারীর জীবনে ঋতুচক্র শুরু হওয়ার পর থেকে ২১ দিন থেকে ৩৫ দিনের মধ্যে যেটি হয় সেটি নিয়মিত ঋতুস্রাব। আর যদি ২১ দিনের আগে বা ৩৫ দিনের পরে হয় তবে সেটিকে অনিয়মিত ঋতুস্রাব বলে। এর আরও প্রধান কিছু সমস্যা যেমন: ঋতুস্রাবের সময় ব্যথা, যৌন মিলনে ব্যথা, তলপেটে ব্যথা ইত্যাদি।
২. জরায়ু মুখের অসুখ, জরায়ুর অসুখ, জন্মগতভাবে জরায়ু না থাকা বা ছোট জরায়ু, এক বা দুই শৃঙ্গযুক্ত জরায়ু, দুই ভাগে বিভক্ত জরায়ু, জরায়ুতে জীবাণুর সংক্রমণ (টিবি, গনোরিয়া), জরায়ুতে টিউমার প্রভৃতি কারণেও একজন নারী বন্ধ্যা হতে পারেন।
৩. নারীদের বন্ধ্যাত্বের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ এন্ডোমেট্রিওসিস, যা সাধারণত ৩০-৩৫ বছর বয়সী মহিলাদের মধ্যেই বেশি দেখা দেয়। বিলম্বে বিবাহ ও সন্তান নিতে বিলম্ব করা এর একটি প্রধান কারণ।
৪. ডিম্বনালীর অসুখের কারণেও বন্ধ্যাত্ব হতে পারে। ডিম্বনালীর প্রধান কাজ ডিম্বাণু ও শুক্রাণু মিলনের স্থান ঠিক করা এবং ভ্রুণের বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় হরমোনের সৃষ্টি করা। এই ডিম্বনালী যখন জীবাণুর দ্বারা সংক্রমিত হয় তখন এর শ্লেষ্মাঝিল্লির ক্ষতি হয়।
৫. আমাদের দেশে টিবি, গনোরিয়া, স্ট্যাফাইলোকক্কাস, স্ট্রেপ্টোকক্কাস প্রভৃতি জীবাণুর সংক্রমণ ডিম্বনালীতে বেশি হয়ে থাকে। শল্যচিকিৎসার কারণেও ডিম্বনালী ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যেমন: ডি অ্যান্ড সি, এন্ডোমেট্রিয়াল বায়োপসি বা অ্যাপেন্ডিক্সের অপারেশনের ফলেও ডিম্বনালীর অসুখ হতে পারে।
৬. হরমোনের অভাবেও বন্ধ্যাত্ব দেখা দেয়। মহিলাদের ঋতুচক্র এবং ডিম্বাণু নির্গত হওয়া নানা হরমোনের ওপর নির্ভরশীল। এর যেকোনো হরমোনের অভাবে বন্ধ্যাত্ব দেখা দিতে পারে। যেমন: হাইপোথেলামাসের আঘাত, টিউমার, পিটুইটারি গ্রন্থির টিউমার, অ্যাড্রেনাল গ্রন্থির টিউমার, থাইরয়েড গ্রন্থির অসুখ, ডিম্বাশয়ের অসুখ-টিউমার, সিস্ট ইত্যাদি কারণে হরমোনের গোলমাল দেখা দিয়ে থাকে।
৭. নারীর শরীরজাত অ্যান্টিবডি অনেক সময় পুরুষের শুক্্রাণু ধ্বংস করে দেয় বা শুক্রাণুর জরায়ুর মুখে প্রবেশে বাধার সৃষ্টি করে। এই অ্যান্টিবডি পুরুষের রক্ত বা বীর্যে এবং মেয়েদের রক্ত বা জরায়ুমুখের শ্লেষ্মাঝিল্লিতে পাওয়া যায়।
৮. বন্ধ্যাত্বের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হচ্ছে, মানসিক চাপ। অত্যধিক মানসিক চাপ নারীকে বন্ধ্যা করে দিচ্ছে বলে চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা মত দিয়েছেন। এমনকি সন্তান লাভের অদম্য বাসনাও সন্তান ধারণে বাধার সৃষ্টি করতে পারে। এজন্য সন্তান লাভে ইচ্ছুক দম্পতিদের সম্পূর্ণ স্বাভাবিক মানসিক ও শারীরিক অবস্থাতেই চেষ্টা করা উচিত। তাই কোনো ভয়, আতঙ্ক ও দুশ্চিন্তা না করে সৃষ্টিকর্তার কাছে সন্তান লাভের চেষ্টা করলে তারা সফল হতে পারবেন।
৯. পুষ্টির অভাব বা অতিরিক্ত মেদবহুল, বা তলপেটে চর্বি জমার কারণেও নারী বন্ধ্যা হতে পারেন। তাই স্বাস্থ্য সচেতন ও খাবার গ্রহণের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। সমস্যা থাকলেই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
সবশেষে বলা যায়, বন্ধ্যাত্ব একটি জটিল বিষয়। প্রতিটি নিঃসন্তান দম্পতির উচিত স্বামী স্ত্রী দুজনেরই প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা করা। তাহলে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে তারা সন্তান ধারনে সক্ষম হবে।
উপরে উল্লেখিত বিষয়সমূহর একসাথে সমাধানের জন্য বর্তমান বিশ্বের বড় বড় রিসার্চ সেন্টার কাজ করে চলেছে তাদের প্রচেষ্টায় এখন আধুনিক ফর্মুলার ঔষধ সারাবিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং উন্নত ফর্মুলার ঔষধ এখন বাংলাদেশে তাই দেরি না করে মেসেজ করুন ইনবক্সে।