24/07/2021
এই যে, আমরা এত এত ওষুধ সেবন করছি আর ভাবছি, ওষুধই আমাদের সারিয়ে তুলবে, ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল। আমাদের শরীর যদি সাহায্য না করে, কোনোদিনই আমাদের পক্ষে একদম পারফেক্ট ওষুধ তৈরি করা সম্ভব হবে না। প্রতিনিয়ত আমরা জীবাণু শরীরে প্রবেশ করাচ্ছি। প্রতিবার খাবারের সাথে কোটি কোটি জীবাণু প্রবেশ করছে, শ্বাসের সাথে নাক দিয়ে প্রবেশ করছে। কান দিয়ে প্রবেশ করছে। কত দিক দিয়ে শরীর সামলাবে!
এগুলো নিয়ে যদি ভাবতে হতো, তাহলে কারো পক্ষে দৈনিক জীবনে আর কিছু করা সম্ভব ছিলো না। প্রতিদিন যদি আমাদের হিসেব করে শ্বাস-প্রশ্বাস চালাতে হতো, অবস্থা কী দাঁড়াতো তখন? অত সেকেন্ড প্রশ্বাস নিলাম, ওহ আচ্ছা, এবার একটু শ্বাস নিই, এভাবেই হয়ত হতো ব্যাপারটা। কিন্তু না, শরীর চলছে নিজের মতো করেই, আমাদের হিসেব করে চালাতে হচ্ছে না একে। একটুও ভাবতে হয় না আমাদের এই Sympathetic-Parasympathetic ব্যাপারগুলো নিয়ে, এগুলো নিয়ন্ত্রণের জন্য রয়েছে Autonomic Nervous System। এই নার্ভাস সিস্টেমটিই Sympathetic আর Parasympathetic নার্ভের মাধ্যমে অনৈচ্ছিক ব্যাপারগুলো নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।মস্তিষ্কের ১২ জোড়া নার্ভের একজোড়া হলো ভ্যাগাস নার্ভ, প্যারাসিমপ্যাথেটিক অংশটুকুতে দেখা যাচ্ছে প্যারাসিমপ্যাথেটিকের প্রায় পুরোটাই আসছে ভ্যাগাস নার্ভ থেকে। আর সিমপ্যাথেটিক নার্ভের পুরোটা আসছে সুষুম্না কান্ডের বিভিন্ন অংশ থেকে। এভাবেই অটোনোমিক স্নায়ুতন্ত্র শরীরের অনৈচ্ছিক অংশকে নিয়ন্ত্রণ করে চলেছে শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার রয়েছে তিনটি স্তর। প্রত্যেক স্তরের রয়েছে আবার ৬-৭ ধরনের সেনাবাহিনী। কোনো জীবাণু যদি শরীরে প্রবেশ করতে চায় (যেকোনো প্রবেশ পথ দিয়ে; হোক তা মুখ, নাক, কান কিংবা চোখ দিয়ে), প্রথম প্রতিরক্ষা স্তর বাধা প্রদান করবে, জীবাণুকে প্রতিহত করবে ত্বক। জীবাণু যদি যথেষ্ট ক্ষুদ্র হয়, তবেই কেবল এই স্তরকে ফাঁকি দিতে পারবে। তবে ত্বককে কিন্তু ফাঁকি দিতে পারবে না, তা সে যত ক্ষুদ্রই হোক, একে প্রবেশ করতে হবে শরীরের কোনো একটি প্রবেশ পথ দিয়ে। আর ত্বকের কোনো অংশ যদি কেটে যায়, তখন প্রবেশ করতে পারে। তাই জীবাণু প্রবেশ সম্ভব এমন কোনো কিছু দিয়ে যদি ত্বক কেটে যায়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে ইটিএস ইনজেকশন নেওয়া উচিত।
এবার দ্বিতীয় প্রতিরক্ষা স্তর আসবে তার সমুদয় বাহিনী নিয়ে। জীবাণু যদি যথেষ্ট বুদ্ধিমান হয়, তবেই কেবল এই স্তরকে ফাঁকি দিতে পারবে। ধরা যাক, ফাঁকি দিয়েই দিল। এবার তৃতীয় স্তর কোনো কথা ছাড়াই ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করবে। এমনকি কোনো ভালো বস্তুও যদি সনাক্ত করতে না পারে, সেটার উপরেও চালাবে ধ্বংসযজ্ঞ। কেবলমাত্র এই স্তরকে হারিয়ে দিয়েই একটি জীবাণুর পক্ষে আমাদেরকে সংক্রমিত করা সম্ভব।