21/12/2023
সম্প্রতি একটা নাটক দেখলাম -মেহেজাবিন এর 'অনন্যা'।যেখানে হাসবেন্ড বা শ্বাশুড়ি সাপোর্টিভ ছিল না এবং ওর চাকরি নিয়ে ইস্যু ছিল।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে জীবনে এক একজন এক এক রকম জীবন যাপন করে।মা হওয়া নিয়ে অনেক কথাই শুনতে হয়।আমার খুব ইয়াং এজ এ আমার তাইফা জন্ম নেয়।হাসবেন্ড এর দায়িত্ব না হয় এড়িয়ে যাই,কিন্তু একজন বাবা হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে না ভাবার আগেই মা এর গায়ে গিয়ে সোজা আঘাতটা আসে।সে সময় আমার মাকেও বলতে শুনতাম-"আমাদের সময় এত সিজার ছিল না,আমাদের মত তো হয় নাই,পেট কেটে হওয়াইছো,কষ্ট কই?,আমরা পালি নাই?তোমাদের নতুন নতুন জিনিস,এটা কিছু না ওটা কিছু না আরও কত কি!"
আসলে ভালো মা তো পরের বিষয়---
আগে আমি মা হয়ে গেছি,তারপর আমার কাছে দায়িত্ব আসলো সব কিছু থেকে ওকে আশ্রয় দিয়ে খাওয়ানোর,ঘুম পাড়ানোর,খেয়াল রাখার।বিশ্বাস করেন কোনো কিছুর কষ্ট হয় নাই।কিন্তু যখন সকাল ভোরে চোরের মতন ওতটুকুন বাচ্চাকে রেখে অফিসে যেতাম প্রায়ই টেম্পুতে বা বাসে বা রিক্সা বসে কাঁদতাম।
যেদিন আর রক্ষা পেতাম না সেদিন জেগে গেলে রেখে আসতে কলিজা বের হয়ে যেত,খামছে ধরে রাখত।তারপর আসি প্যাম্পাস, ফর্মুলা দুধ এসব মাথায় থাকতো।এরপর যখন অফিসে বাচ্চার বুকের দুধ যারা খাওয়িছে তারা রীতিমতো ওইসব ব্যথা সম্পর্কে অবগত।ওই সময় অফিস, ক্লাস শেষ করে কত রাতে ফিরতাম, এসে দেখতাম ঘুমায় বাট এক্টু পড়েই উঠে যেত আর সারারাত খেলতো আমার সাথে।না ঘুমিয়ে আবার অফিস করতাম,দুপুরে ঘুমের আসন্নে ঝুরতাম মুরগীর মতন।তারপর আসি সিজারের বিষয়ে,এটা অতি সামান্য, হ্যাঁ যার ব্যথা আজীবন ও সারে না। আর আমার বাচ্চাকে তো আর্মি ট্রেইন দিয়ে একা একা বড় করা,এসবেও অনেক নাক গলানি আছে, হয়ত থাকবেও।পড়াশুনা বা কাজে আমার সন্তান তো বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল না,ছিল মানুষের নিছক কটুকথা আর কষ্ট।যেগুলো বেশি সময় থাকে না।তবে স্মৃতিগুলি থেকে যায়।
জব ছেঁড়ে দুনিয়াদারি দেখা আবার জব নেয়া।প্রকৃতপক্ষে, ভালো মা আমি হতে পারিনি আর চাইও না হতে।আমি যেটা অলরেডি সেটা হলো-'আমি মা'।
আর মাকে জাজ করার ক্ষমতা কারো নাই,--"তুই কে হে?"
আর সবচেয়ে বড় কথা আশেপাশে যারা আছে তারা কেবল আছে,রিপিট করেন কি বললাম---কেবল আছে।
মা হিসেবে আপনারটা আপনার সবটুকু কেবল আপনার আর আপনাকেই করতে হবে।
সাফল্য কিসে,কবে,কোথায় আসবে এসব ভেবে কাজ নাই।শুধু সন্তানকে মানুষ করতে হবে,স্বমানুষ হিসেবে অমানুষ নয়।
আর জীবন এর প্রকৃত অর্থ বুজাতে হবে।