03/07/2024
সেরেব্রাল পালসি, অটিজম, এপিলেপসিসহ নানা ধরণের নিউরোডেভেলোপমেন্টাল ডিজর্ডারের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে তাড়াতাড়ি ট্রিটমেন্ট ( বিভিন্ন ধরণের থেরাপি, ড্রাগ) শুরু করা জরুরি।এসব ক্ষেত্রে যত তাড়াতাড়ি ট্রিটমেন্ট শুরু করা যায়, বাচ্চার তত ইমপ্রুভমেন্টের সম্ভাবনা বেশী। এজন্য আর্লি ডায়াগনোসিস করা দরকার।কিন্তু এসব বাচ্চার অধিকাংশ চিকিৎসকের কাছে পৌছায় দেরিতে।প্রথমে গ্রামের কবিরাজ এবং হুজুরের কাছে যায়।কবিরাজ নানা ধরণের টোটকা ফোটকা দেয়।হুজুর পানি পড়া আর ঝাড়ফুঁকের মাধ্যমে চিকিৎসা (?) চালান আর বলেন বয়সের সাথে সাথে ঠিক হয়ে যাবে।বাচ্চা যখন ঠিক হয়না, তখন বাচ্চার অভিভাবকরা বাচ্চাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে আসেন।কিন্তু ততদিনে বাচ্চার ব্রেইন ডেভেলপমেন্টের স্তর অনেকটা পেরিয়ে যায়।এজন্য চিকিৎসা ফলপ্রসূ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।গ্রামের কোয়াক এবং কবিরাজদের বিষয়টা বোঝা যায়।এরা মানুষদের সাথে প্রতারণা চালাচ্ছে এবং বিষয়টা ওরা নিজেরাও জানে।কিন্তু যেসব হুজুর পানি পড়া বা ঝাড়ফুঁকের মাধ্যমে এসব বাচ্চার চিকিৎসা বিলম্বিত করেন, তাদের ব্যাপারটা আসলে কি?
জ্বীন সম্প্রদায়ের কথা কুরআন বা হাদীসে এসেছে।কুরআন শরীফে কিছু কিছু মানুষের কথা বলা হয়েছে যারা জ্বীনগ্রস্ত।দুয়েকটা হাদীসও আছে, যেখানে রাসুল সাঃ কয়েকজনের কথা বলেছেন, যাদেরকে জ্বীনে ধরেছে এবং এদেরকে তিনি কিছু সুরা পড়ে গায়ে হাত বুলিয়ে দিয়েছেন।রাসুল সাঃ এর নিজের উপরও জাদুর প্রভাবের কথা সিরাত গ্রন্থগুলোতে আছে।কিন্তু ইসলাম কখনোই অতিপ্রাকৃত পদ্ধতিতে এসব চিকিৎসা পদ্ধতিকে উতসাহিত করেনি।কাউকে জ্বীনে ধরার লক্ষনের কোনো ল্যান্ডমার্কও ইসলাম ঠিক করে দেয়নি।বড় বড় আলেমদের কেউই এসব পদ্ধতিতে চিকিৎসা করেন না।ইসলাম এসেছে মানুষের অন্তরের রোগ সারাতে, শারিরীক রোগ সারাতে নয়।এজন্য গ্রামের হুজুররা মানুষকে জ্বীনে ধরেছে বলে যেসব ঝাড়ফুঁক করেন, তার অধিকাংশই উনাদের মনগড়া এবং অনুমাননির্ভর।ইসলাম মানুষকে অনুমানে নির্দোষ কথা বলতেও নিষেধ করে।সেখানে চিকিৎসার মত একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যার সাথে জীবন মৃত্যু জড়িত, তা অনুমানের উপর ভিত্তি করে চালানো বিশাল অপরাধ। জেনে বা না জেনে, একশ্রেণীর হুজুর সম্প্রদায় এ অপরাধ করে যাচ্ছেন।ন্যুনতম বিবেচনাবোধ এবং তাকওয়া থাকলে এ কাজ থেকে দূরে থাকা উচিৎ। এ সমন্ধে সচেতনতা সৃষ্টি এবং এ কাজ থেকে মানুষজনকে দূরে রাখার চেষ্টা করা আমাদের অবশ্য কর্তব্য।