18/02/2025
*** মাদকাসক্তির মূল কারণগুলো হলোঃ ***
মাদকের সহজলভ্যতাঃ তরুণ প্রজন্মের মাঝে মাদকের মতো ভয়ানক বিষ ছড়িয়ে পড়ার অন্যতম প্রধান একটি কারণ হলো এর সহজলভ্যতা। আমাদের দেশে প্রায় সকল প্রকার মাদক খুব সহজেই খুঁজে পাওয়া যায়। সিগারেট, গাঁজা, হেরোইন, মদ, ফেন্সিডিলের মতো মাদকগুলো আমাদের চারপাশেই পাওয়া যায় এবং এগুলোর মূল্যও অনেকটা হাতের নাগালে। যার কারণে উপার্জন সক্ষম মানুষের পাশাপাশি বেকার, শিক্ষার্থীরাও এগুলোর প্রতি সহজেই আসক্ত হয়ে পড়ছে।
সঙ্গদোষঃ অনেক সময় মাদকাসক্ত বন্ধুদের কু-প্রভাবেও ভালো ব্যক্তি মাদকের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে। বর্তমান সময়ে এই কারণ বিশাল আকারে মাথা চাঁড়া দিয়ে উঠেছে। ভালো ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা অসৎ সঙ্গে পড়ে মাদক সেবনের প্রতি উদ্ভুদ্ধ হচ্ছে।
সামাজিক ও পারিবারিক অবস্থাঃ সামাজিক ও পারিবারিক পরিবেশের কারণে বেশিরভাগ মানুষ মাদক সেবনের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে। পারিবারিক নিয়মের অভাবে এমনটা ঘটে। এর একটি বড় উদাহরণ হতে পারে বাংলাদেশের বস্তিগুলো। সেখানকার ৯০ শতাংশের অধিক কিশোর-কিশোরী, তরুণ ও প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিরা মাদকাসক্ত। মাদকের প্রভাব কমাতে প্রতিটি পরিবারের লোককে নিজ দায়িত্বে সচেতন হতে হবে এবং তাদের সন্তানদের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে।
হতাশা ও দুশ্চিন্তাঃ তরুণদের মধ্যে এই কারণটা সবচেয়ে বেশি লক্ষণীয়। অনেকে কোনো কাজে ব্যর্থ হয়ে, প্রিয়জনের সাথে বিচ্ছেদ, পারিবারিক অশান্তি ও কোলাহলের কারণে মাদক সেবন করে। তাদের ধারণা হতাশা ও দুশ্চিন্তা কাটিয়ে উঠতে এটি কার্যকর ভূমিকা রাখে। কিন্তু তারা আসলে শেয়ালের ভয়ে বাঘের খাঁচায় আশ্রয় নেয়।
নিছক আনন্দ ও কৌতুহলঃ আমাদের দেশ সহ অনেক দেশের কিশোর কিশোরী ও অল্প বয়সী ছেলে-মেয়েদের মাঝে এই কারণটা বেশি পরিমানে দেখা যায়। তারা অনেক সময় কৌতুহলবসত মাদক গ্রহণ করে। নিজেদেরকে নিয়ন্ত্রন করতে পারবে ভেদে অল্প অল্প করে মাদক নেয়। এভাবে আস্তে আস্তে তারা একপর্যায়ে বড় রকমের মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। যেটা পরে আর কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয় না। আর হলেও তাতে অনেক বেগ পেতে হয়। আবার অনেকে নিজের স্মার্টনেশ দেখাতে মাদককে ব্যবহার করে। যা নিতান্তই বোকামি ছাড়া কিছু নয়।
আমাদের মনে রাখা উচিৎ যে, “একটা সমস্যাকে প্রতিকার করার চেয়ে সেটাকে প্রতিরোধ করায় উত্তম”। কোনো একটা সমস্যা থেকে বেঁচে থাকতে মাদক সেবন করা কখনোই সমাধান হতে পারে না। তাই কোনো অবস্থাতেই এই প্রাণঘাতি মাদককে প্রশ্রয় দেওয়া উচিৎ না।