09/07/2025
আপনার শিশু সন্তান কি খাচ্ছে তার দায় কেবল আপনার ই! বাবা মা দুইজন যতো ব্যস্ত ই থাকেন না কেনো জানতে হবে আপনার কিচেনে আজ কি রান্না হচ্ছে!!! বাহিরের লোক দিয়ে রান্না করালেও ডিরেকশণ টা নিশ্চয়ই আপনাদের কাছ থেকেই আসবে!!
বাবা প্রতিমাসে বা সপ্তাহে বাজারের সময় খেয়াল রাখবেন প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর উপাদান গুলো সারা সপ্তাহের বাজারে থাকলো কিনা!!
৫ ভাগে বাজার করলে ৩ ভাগে শাক সব্জি ১ ভাগে মাছ / মাংস আর ১ ভাগে ফলমূল আছে কিনা নিশ্চিত করুন। কষ্ট করে উপার্জন এর টাকায় আপনার শিশু সন্তান কে দেশীয় ফল দিন। অফিস শেষে চকলেট, চিপস না দিয়ে পছন্দের ফল, খেলনা, সুন্দর রঙ পেন্সিল এনে দিন যা দিন শেষে তার কাজে লাগবো!
কালো কোক দিয়ে আপনার সন্তানের পাকস্থলি টা পচিয়ে দিয়েন না। দাতের এনামেল গুলা নষ্ট করবেন না!!
চকলেট আর কেক দিয়ে দিয়ে ওর ব্রেইন কে আরো হাইপার এক্টিভ করে দিবেন না!!! খেলার মাঠ নেই আমাদের যে দুই/ তিন ঘন্টা ফুটবল খেলে এনার্জি বার্ন করতে পারবে ওরা!!! ওদের কে বাজে খাবারের সাথে পরিচয় করিয়ে দেই আমরা!! অতিথি আসলে তাদের কে সোজাসুজি বলে দিবেন কোক চকলেট না এনে দেশীয় ফল, বিভিন্ন রকমের বাদাম, দুধ, ডিম এগুলা আনতে!! আপনি নিজেও এই খাবার গুলো বাছাই করুন নিয়ে যাওয়ার জন্য। মিষ্টির চেয়ে দই ভালো প্রো বায়োটিক আছে খাবার হজম করতে সাহায্য করবে। ভালো দই নিয়ে যান।
সপ্তাহে ১ দিন নতুন খাবার রান্না করুন। সবাই মিলে বানান বাচ্চাকেও সাথে রাখুন ছোট বাচ্চা হলেও রাখুন সাথে। দেখান কি আন্নদ করে মজা করে খাবার বানানো যায়। সেই খাবার নিয়ে সবাই প্লেট এ করে নিচে বসে পড়ুন হাসা হাসি করে খান, আপনার যে সন্তান খেতে পছন্দ করে না বা একদ্ম ছোট শিশু হাত দিয়ে নিজে খেতে পছন্দ করে না তাকেও বসান। খাবার সামনে দিন। খেতে বলবেন না প্রথম কয়েকদিন কি করে দেখেন। এরপর পাতে অল্প অল্প করে দিন। দেখবেন সবাইকে দেখে আগ্রহ নিয়ে এক সময় বসবে এবং খাবে।
অনেকে আছেন বাচ্চা হয়ত একটু আগেই খেয়েছে কিন্ত নিজে কিছু খাচ্ছেন অই সময়ে বাচ্চার মুখে দিয়ে আসেন. এতে বাচ্চা বিরক্ত হয়। এগুলাও করবেন না আমাদের শরীর একটা বায়োলজিক্যাল ঘড়ি। সেই ঘড়ি সময় মতো নিজেকে সেট করে নেয়। সময়ে অসময়ে মুখে খাবার গুজে দিলে এক সময় খাবারের উপর অভুক্তি আসবে। সময় দিন ক্ষুধা লাগার। বলুক খাবার খাবে। খাবার লাগবে এটা বুঝতেও সময় দিতে হয়। ক্ষুধা লাগ্লে ব্রেইন অটো সিগন্যাল দিবে খাবার খুজবে। সময় দিন ধৈর্য্য রাখুন।
আমাদের চারপাশের এই অসুস্থ পরিবেশে একটা সন্তানকে সুস্থ ভাবে গড়ে তোলা এখন বিরাট একটা চ্যালেঞ্জ হলেও আমরা তাদের কে মৃত্যুর মুখে নিশ্চয় ই ঠেলে দিতে পারি না!! আমরা আমাদের জায়গা থেকে চেষ্টা জারি রাখবো!! আমার সন্তান কি খাচ্ছে কি করছে তাকে গাইড করতে মা বাবার ভূমিকাই প্রধান ও অপরিসীম!!!
লেখা: নিউট্রিশনিস্ট সুমাইয়া সিরাজী
ছবি: সংগৃহিত