12/03/2024
মৃগীরোগের চিকিৎসা
মৃগীরোগের চিকিৎসা প্রধানত দুটি বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল যেমন: ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা ও সার্জারি বা শল্যচিকিৎসা।
ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা: অ্যান্টি-এপিলেপটিক ওষুধগুলোই সাধারণত সকলের নিকট পছন্দসই চিকিৎসাব্যবস্থা। বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক প্রতিবেদন থেকে জানা গিয়েছে, ৭০ শতাংশ ঘটনায় ওষুধ দিয়েই খিঁচুনির উপসর্গগুলো নিয়ন্ত্রণ করা গিয়েছে। এই ওষুধগুলো মস্তিষ্ক থেকে নিঃসৃত হওয়া রাসায়নিকগুলোর পরিমাণ পরিবর্তন করে খিঁচুনির তীব্রতা ও পুনরাবৃত্তির হার হ্রাস করতে সাহায্য করে। মৃগীরোগের যথোপযুক্ত চিকিৎসায় প্রায় সব ধরনের প্রয়োজনীয় অ্যান্টি-এপিলেপটিক ওষুধসমূহ বর্তমানে বাংলাদেশের বাজারে পাওয়া যায়। এমনকি উন্নত বিশে^র সাথে তাল মিলিয়ে মৃগীরোগের নতুন এবং আধুনিক অ্যান্টি-এপিলেপটিক ওষুধসমূহও এখন দেশে সহজলভ্য।
চিকিৎসার শুরুতে ওষুধ অল্প মাত্রায় প্রয়োগ করা হয় এবং খিঁচুনির ঘটনা না থামা পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে ধীরে ধীরে ওষুধের মাত্রা বৃদ্ধি করা হয়। মৃগীরোগের ধরনের ওপরে ওষুধের ধরন নির্ভর করে এবং শুধু একজন চিকিৎসকই এই ওষুধগুলো প্রেসক্রাইব করতে পারেন। সুতরাং ব্যবস্থাপত্রে যেভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, ওষুধগুলো ঠিক সেইভাবেই সেবন করতে হবে। ওষুধের মাত্রা পরিবর্তন করার পূর্বে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিতে হবে। চিকিৎসকের অনুমতি ছাড়া কোনোভাবেই ওষুধ বন্ধ করা যাবে না। রোগীর মানসিক কোনো পরিবর্তন লক্ষ করলে চিকিৎসককে তা জানাতে হবে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অধিকাংশ অ্যান্টি-এপিলেপটিক ওষুধই বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং রোগী কোনো খিঁচুনির উপসর্গ ছাড়াই সুস্থ-স্বাভাবিক জীবন অতিবাহিত করতে পারবেন।
সার্জারি বা শল্যচিকিৎসা: কিছু কিছু ক্ষেত্রে ওষুধের মাধ্যমে খিঁচুনি নিয়ন্ত্রণে না এলে অথবা বেশ কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে শল্য চিকিৎসা করার পরামর্শ দেওয়া হতে পারে। অস্ত্রোপচারের সময় মস্তিষ্কের প্রভাবিত অংশ বাদ দেওয়া হয়। অস্ত্রোপচার তখনই করা হয়, যখন মস্তিষ্কের খুব ছোট এলাকা প্রভাবিত হয় এবং সেই এলাকা শরীরের কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজ যেমন: বাক্শক্তি, শ্রবণশক্তি, চলাফেরা, অঙ্গপ্রত্যঙ্গের নড়াচড়া ও সমন্বয় ইত্যাদির কোনো ক্ষতি করে না।
এছাড়া কিটো-জেনিক ডায়েট, এপিলেপসি সার্জারি, ভেগাল নার্ভ স্টিমুলেশন (ভিএনএস), রেসপন্সিভ নার্ভ স্টিমুলেশন (আরএনএস), ডিপ ব্রেইন স্টিমুলেশন, স্টেরিওট্যাকটিক সার্জারি ইত্যাদির মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়। এসব চিকিৎসা সাধারণত উন্নত বিশ্বের পাশাপাশি বাংলাদেশেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে সম্ভব হয়ে থাকে।
#মৃগীরোগ