
03/05/2025
#কিডনি_রোগ_সহজেই_প্রতিরোধ_করা_যায়।।
প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম।
কিডনি রোগের চিকিৎসা রোগের কারণ, তীব্রতা এবং রোগীর সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে। কিডনি রোগের কিছু সাধারণ চিকিৎসা পদ্ধতি নিচে উল্লেখ করা হলো:
জীবনযাত্রার পরিবর্তন:
* খাদ্য নিয়ন্ত্রণ: লবণ, পটাসিয়াম, ফসফরাস এবং প্রোটিনের গ্রহণ কমিয়ে আনা প্রয়োজন হতে পারে। তরল গ্রহণের পরিমাণও নিয়ন্ত্রণ করা দরকার হতে পারে। একজন ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ এক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে।
* ধূমপান ত্যাগ: ধূমপান কিডনির কার্যকারিতা আরও খারাপ করতে পারে।
* নিয়মিত ব্যায়াম: হালকা থেকে মাঝারি ধরনের ব্যায়াম কিডনির স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
* ওজন নিয়ন্ত্রণ: অতিরিক্ত ওজন কিডনির উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
* অ্যালকোহল পরিহার: অতিরিক্ত অ্যালকোহল কিডনির জন্য ক্ষতিকর।
উপরোক্ত নিয়ম কানুন মেনে চলে কিডনি রোগ প্রতিরোধ করা যায় এবং ইতিমধ্যে কিডনি রোগ হয়ে গেলেও, জটিল চিকিৎসা প্রক্রিয়ায় না গিয়ে ভাল থাকা যায়।।
কিডনি রোগীর চিকিৎসা রোগীর পূর্বের রোগ, জটিলতা , অন্যান্য স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়ে বিস্তারিত জেনে তারপর শুরু করতে হয়। কিডনি রোগীর চিকিৎসা কিডনি বিশেষজ্ঞ বা নেফ্রোলজিস্ট দিয়ে থাকেন।
নীচে একটা ধারণা দেয়া হল:
ওষুধ:
কিডনি রোগের কারণে সৃষ্ট বিভিন্ন সমস্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য ওষুধ ব্যবহার করা হয়, যেমন:
* উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ: এসিই ইনহিবিটরস (ACE inhibitors) বা এআরবিস (ARBs) রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং কিডনির কার্যকারিতা রক্ষা করতে পারে।
* কোলেস্টেরলের ওষুধ (স্ট্যাটিন): উচ্চ কোলেস্টেরল কিডনি রোগের progression ধীর করতে সাহায্য করে।
* ডাইইউরেটিক্স: শরীরে অতিরিক্ত তরল জমা কমাতে সাহায্য করে।
* এরিথ্রোপয়েটিন সাপ্লিমেন্ট: রক্তাল্পতা (অ্যানিমিয়া) কমাতে লোহিত রক্ত কণিকা উৎপাদনে সাহায্য করে।
* ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট: হাড়কে মজবুত রাখতে সাহায্য করে।
* ফসফেট বাইন্ডার: রক্তে অতিরিক্ত ফসফরাস কমাতে সাহায্য করে।
ডায়ালাইসিস:
যখন কিডনি তার কার্যকারিতা প্রায় সম্পূর্ণরূপে হারিয়ে ফেলে (end-stage kidney disease বা ESRD), তখন ডায়ালাইসিসের প্রয়োজন হয়। ডায়ালাইসিস হলো একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ এবং অতিরিক্ত তরল অপসারণ করা হয়। দুই ধরনের ডায়ালাইসিস প্রচলিত:
* হেমোডায়ালাইসিস: এই পদ্ধতিতে একটি মেশিনের সাহায্যে রক্ত ফিল্টার করা হয়। সাধারণত সপ্তাহে কয়েকবার ডায়ালাইসিস সেন্টারে গিয়ে এই চিকিৎসা নিতে হয়, তবে কিছু ক্ষেত্রে বাড়িতেও করা সম্ভব।
* পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস: এই পদ্ধতিতে পেটের মধ্যে একটি ক্যাথেটারের মাধ্যমে ডায়ালাইসিস ফ্লুইড প্রবেশ করানো হয়। এই ফ্লুইড রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ শোষণ করে নেয়, তারপর তা শরীর থেকে বের করে দেওয়া হয়। এই প্রক্রিয়া বাড়িতেও করা সম্ভব।
কিডনি প্রতিস্থাপন:
কিডনি রোগের শেষ পর্যায়ে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা বিকল্প। এই পদ্ধতিতে একজন সুস্থ ব্যক্তির কিডনি (দাতা জীবিত বা মৃত হতে পারে) রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়। প্রতিস্থাপিত কিডনি রোগীর স্বাভাবিক কিডনির কাজ করতে শুরু করে। তবে প্রতিস্থাপনের পর রোগীকে সারা জীবন ইমিউনোসাপ্রেসেন্ট ওষুধ সেবন করতে হয় যাতে শরীর নতুন কিডনিটিকে প্রত্যাখ্যান না করে।
আপনার কিডনি রোগের ধরন ও তীব্রতা অনুযায়ী কোন চিকিৎসা পদ্ধতি সবচেয়ে উপযুক্ত হবে, তা জানার জন্য একজন নেফ্রোলজিস্টের (কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ) সাথে পরামর্শ করা অপরিহার্য। তিনি আপনার শারীরিক অবস্থা মূল্যায়ন করে সঠিক চিকিৎসা পরিকল্পনা নির্ধারণ করবেন।