11/10/2023
শিঙ্গা, হিজামা বা কাপিং নাম গুলো ভিন্ন হলেও জিনিস একই। এটা ৩ হাজার বছর পুরোনো একটা চিকিৎসা ব্যাবস্থা। প্রাচীন মিসরীয় সভ্যতায় সর্বপ্রথম এটার প্রচলন শুরু হয়। পরবর্তীতে এই চিকিৎসা ব্যবস্থা সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে। আমাদের দেশে হিজামা গ্রহণের হার অনেক কম হলেও উন্নত দেশ গুলোতে হিজামা গ্রহণের হার অনেক বেশি। বর্তমানে পৃথিবীতে সবথেকে বেশি হিজামা গ্রহণকারী রাষ্ট্রগুলো হলো: ইংল্যান্ড, থাইল্যান্ড, চীন, সৌদি আরব, মিসর, মালেয়শিয়া, অ্যামেরিকা, এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশ।
•
আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম নিজে শিঙ্গা বা হিজামা নিয়েছেন। হিজামার ব্যাপারে অসংখ্য হাদীস এসেছে।
•
🟢 হিজামা সংক্রান্ত উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হাদীস দেখে নিতে পারেন। এছাড়াও আরও হাদিস রয়েছে।
•
✅ ক) হযরত জাবির রাঃ থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওযাসাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয় হিজামায় শেফা রয়েছে।” সহীহ মুসলিম, হাদীছ নম্বর: ২২০৫
•
✅ খ) হযরত আবদুল্লাহ্ বিন আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “হিজামাকারী কতইনা উত্তম লোক। সে দূষিত রক্ত বের করে মেরুদন্ড শক্ত করে ও দৃষ্টিশক্তি প্রখর করে।” সুনানে তিরমিযী, হাদীছ নম্বর: ২০৫৩
•
✅ গ) হযরত আবু হুরাইরা রাঃ থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “জিবরীল আমাকে জানিয়েছেন যে, মানুষ চিকিৎসার জন্য যতসব উপায় অবলম্বন করে, তম্মধ্যে হিজামাই হল সর্বোত্তম।” আল-হাকিম, হাদীছ নম্বর: ৭৪৭০
•
✅ ঘ) হযরত আবদুল্লাহ বিন উমর রাঃ থেকে বর্ণিত আছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওযাসাল্লাম বলেছেন, খালি পেটে হিজামাই সর্বোত্তম। এতে শেফা ও বরকত রয়েছে এবং এর মাধ্যমে বোধ ও স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পায়।” সুনানে ইবনে মাজা, হাদীছ নম্বর: ৩৪৮৭
•
✅ ঙ) হযরত আনাস রাঃ থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওযাসাল্লাম বলেছেন, কেউ হিজামা করতে চাইলে সে যেন আরবী মাসের ১৭, ১৯ কিংবা ২১ তম দিনকে নির্বাচিত করে। রক্তচাপের কারণে যেন তোমাদের কারো মৃত্যু না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখবে।” সুনানে ইবনে মাজা, হাদীছ নম্বর: ৩৪৮৬
•
✅ চ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) এর সূত্রে নবী (সাঃ) থেকে বর্নিত, “তিনি বলেন রোগমুক্তি তিন জিনিসের মধ্যে রয়েছে। হিজামা লাগানো, মধু পাণ করা এবং আগুন দিয়ে দাগ দেয়ার মধ্যে। তবে আমি আমার উম্মতকে আগুন দিয়ে দাগ দিতে নিষেধ করি”
•
✅ ছ) কালো যাদু বা কুফুরী বিনষ্ট করার উদ্দেশ্যেঃ
ইবনুল কাইয়্যূম (রহঃ) মন্তব্য করেন, রাসুলুল্লাহ রাসুলুল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন যাদু দ্বারা পীড়িত হন তখন তিনি মাথায় সিঙ্গা লাগান এবং এটাই সবচেয়ে উত্তম ঔষধ যদি সঠিকভাবে করা হয়। (যাদ আল মাআদঃ ৪/১২৫-১২৬)
•
🟥 সতর্কতা: বাংলাদেশের বেদে সম্প্রদায় যেভাবে হিজামা করেন, সেটা অত্যন্ত আনহাইজেনিক। এতে একজনের শরীরের রোগ অন্য জনের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। হিজামা নিতে হলে অবশ্যই ট্রেনিং প্রাপ্ত হাজেম বা হিজামা থেরাপিস্ট এর কাছে নিতে হবে। সঠিকভাবে হিজামা গ্রহণ না করলে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।
•
© Hijama Center Kushtia - হিজামা সেন্টার কুষ্টিয়া