05/12/2025
একটা বিষয় খেয়াল করলে দেখবেন—যেসব ছেলেরা ৩০ পেরিয়ে ৩২, ৩৫ বা ৩৮-এ পৌঁছায়, তাদের অনেকের মধ্যেই বিয়ে বা সংসার করার আগ্রহ আর থাকে না।
১৬ থেকে ২৬—এই সময়টাই ছিল তাদের জীবনের সবচেয়ে প্রাণবন্ত সময়: টেস্টোস্টেরন হাই, মেজাজ চড়া, স্বপ্নে ভরা। অথচ এই সময়টাই তারা কাটিয়ে দেয় পড়াশোনা আর ক্যারিয়ারের পেছনে দৌড়াতে দৌড়াতে। যখন একটু স্থির হয়ে দাঁড়ানোর সুযোগ আসে, তখন যৌবনের আগুন নিভে আসছে। আর তখনই শুরু হয় মা-বাবার ‘জাগরণ’—ছেলের জন্য পাত্রী খোঁজা, বিয়ের তাড়া, সামাজিক চাপ।
একসময় ছেলেদের যৌবন শেষ মানে ছিল বার্ধক্য আর মৃত্যু। শরীরটা যেন একেকটা ইঞ্জিন—কঠোর পরিশ্রমের জন্যই তৈরি। একটা ছেলে ৭-৮ ঘণ্টা কাজ করে ১৫ মিনিট বিশ্রাম নিয়ে আবার কয়েক ঘণ্টা টানা কাজ করতে পারে। কিন্তু এই ইঞ্জিন যদি বসে থাকে, তাহলে মরিচা পড়ে। আর তখনই জন্ম নেয় অলসতা, হতাশা, আত্মবিশ্বাসহীনতা।
আজকের শিক্ষিত তরুণদের দিকে তাকান। ১৫-২০ বছর ধরে তারা ‘শিক্ষা’ নিচ্ছে, কিন্তু বাস্তবে কী শিখছে? একটা চটি বইয়ের সমান প্রোডাক্টিভ জ্ঞানও কি তারা অর্জন করছে? বেশিরভাগই না। তারা শুধু বসে বসে দেশের সম্পদ খরচ করছে—না আছে কাজ, না আছে দক্ষতা, না আছে বাস্তবতা বোঝার ক্ষমতা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হল-মেসে তাদের জীবন দেখলে বোঝা যায়—খাওয়া নেই, ঘুম নেই, পরিশ্রম নেই। শুধু টেবিলে বসে বসে পড়া আর ধোঁয়ার মধ্যে হারিয়ে যাওয়া। ক্যারিয়ারের নামে এক ধরনের আত্মপ্রবঞ্চনা। আর যখন ক্যারিয়ার আসে, তখন শরীর-মন দুটোই ক্লান্ত, নিঃশেষ।
দেশে নতুন সম্পদ তৈরি হচ্ছে না। পোশাক, রেমিট্যান্স আর কৃষিই এখনো দেশের মূল চালিকাশক্তি। অথচ যাদের ওপর এই সম্পদের ভার, তারা জীবনের সবচেয়ে প্রোডাক্টিভ সময়টা ব্যয় করে দেয় পরীক্ষার পেছনে, কোচিং সেন্টারে, সনদপত্রের পেছনে। বাস্তব অবদান? প্রায় শূন্য।
একটা রিকশাওয়ালা যে পরিমাণ জিডিপিতে অবদান রাখে, তথাকথিত শিক্ষিত তরুণদের একটা বড় অংশ মিলেও সেই পরিমাণ অবদান রাখতে পারে না। অথচ তাদের জীবনযাত্রা, খরচ, সুযোগ-সুবিধা—সবই অনেক বেশি।
সবকিছু যেন এখন কেবল ‘দায়িত্ব’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিয়েও দায়িত্ব, সন্তান নেওয়াও দায়িত্ব। যৌবনের শেষ প্রান্তে গিয়ে একটা বউ বাড়িতে আনা লাগে, একটা বাচ্চা নিতে হয়—না হলে সমাজ কী বলবে!
৬০ বছরের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক যখন সন্তান নেওয়ার জন্য ভারতে গিয়ে চিকিৎসা করান, তখন সেটাকেই সাফল্য বলা হয়। এরাই আমাদের রোল মডেল!
জ্ঞান অর্জন অবশ্যই দরকার। কিন্তু প্রশ্ন হলো—এই জ্ঞান কি সত্যিই মুক্তি দিচ্ছে, নাকি সিস্টেমের আরেকটা শৃঙ্খল হয়ে দাঁড়াচ্ছে?
একটু ভেবে দেখুন ভাই, সময় এখনো ফুরিয়ে যায়নি। —বিয়ে করতে হবে