10/01/2025
বারোটা বাজবে শুধু মধ্যবিত্তের ,আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি যাওয়া তো দূরে থাক বন্ধু-বান্ধব কেউ ভুলে যাবে
১। বন্ধু বা স্বজন নিয়ে রেস্তোরাঁয় ১০০০ টাকা খেলে আগে ৫০ টাকা ভ্যাট দিলেই চলত। বিল হত ১০৫০। এখন ৩০০ টাকার একটু বেশি খেলেই ভ্যাট দিতে হবে ৫০ টাকা। ৩৩০ টাকা খেলে বিল আসবে ৩৮০ টাকা। তিনগুণ ভ্যাট বাড়লো।
২। মোবাইলে ৩ শতাংশ ভ্যাট যোগ হয়েছে তাতে সবমিলিয়ে ১০০ টাকা রিচার্জে আমাদের থাকবে মাত্র ৪৩ টাকা ৭০ পয়সা। আর ইন্টারনেটের দামে ১০ শতাংশ কর যোগ হয়েছে। আগে কোনও সারচার্জ ছিল না।
৩। রোগীর পথ্য ফল কমলা, আঙুর, আপেল, ডালিম, নাশপাতি, ফলের রসের সারচার্জ কর ২০ শতাংশ থেকে বেড়ে ৩০ শতাংশ হয়েছে। ১৫ শতাংশ বেড়ে ৪৫ শতাংশ হয়েছে বাদামে।
৪। চশমার ফ্রেম, চশমার গ্লাস, সান গ্লাস, বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার, বৈদ্যুতিক খুঁটি, সিগারেট, রং, পটেটো ফ্ল্যাকস এ সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হয়েছে।
৫। আগে পোশাকের দোকানে যে মূল্য লেখা থাকত তা থেকে ৭.৫ পার্সেন্ট ভ্যাট বাড়তি দিতে হত। এখন দিতে হবে ১৫ পার্সেন্ট। অর্থাৎ এই ঈদে ৩ হাজার টাকার একটা পাঞ্জাবি নিলে বিলের উপর ভ্যাট যোগ হয়ে মোট বিল হবে ৩৪৫০ টাকা। দর্জির দোকানে কাপড় বানালে তাতেও ভ্যাট ৫ পার্সেন্ট বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে।
৬। মিষ্টির দোকানের ভ্যাটও সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। ফলে মিষ্টির দামও বাড়বে। উৎসবে এক কেজি মিষ্টি কিনতেও মানুষকে ভাবতে হবে।
৭। বিস্কুট, জুস, ড্রিংক, ইলেকট্রোলাইট ড্রিংক, কেক , আচার, সস এসব পণ্যভেদে ১৫ থেকে ৩০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক এবং ১৫ শতাংশ ভ্যাট বসানো হয়েছে।
৮। সব ধরনের টিস্যুর ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। আগে ছিল সাড়ে ৭ শতাংশ। ভ্যাট বেড়ে দ্বিগুণ হওয়ার ফলে টিস্যুর দামও বাড়বে।
৯। ওষুধের ক্ষেত্রে স্থানীয় ব্যবসায়ী পর্যায়ে ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে। ২.৪ শতাংশ থেকে ৩ শতাংশ করা হয়েছে। পরিমাণটা হয়ত অল্প কিন্তু জনগণের প্রয়োজনকে উপেক্ষার নমুনা এটা।
১০। আমদানি করা সাবানে ১৫ শতাংশ সারচার্জ বেড়ে এখন ৬০ পার্সেন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিটারজেন্ট এ বেড়েছে ১০ শতাংশ।
রোজায় একটু ফল ফ্রুট মানুষ খাবে অতিরিক্ত ১০ শতাংশ ভ্যাট বাড়িয়ে সে সুযোগ আগেই দূরুহ করলো ইন্টেরিম। সামনের ঈদে নতুন জামা কেনাকে কঠিন করলো তারা।
স্বৈরশাসন মুক্ত প্রথম ঈদ আর রোজার যে আনন্দ এই ভ্যাট বাড়ায়ে তার অনেকটাই ম্লান করে দিল ইন্টেরিম।
মোবাইল, ওষুধ, চশমা, টিস্যু, ফলের মত দরকারি জিনিসে ভ্যাট বাড়ালো। অথচ দরকার ছিল হাসিনার যে প্রকল্পগুলোয় দূর্নীতির কারণে এত করের বোঝা চাপাতে হয় সে বোঝা কমানো।
অপ্রয়োজনীয় প্রজেক্ট বাদ দেওয়া। করের ভার থেকে মানুষকে বের হয়ে বাঁচতে দেওয়া। এই ভ্যাট বাড়ানো জনগণকে পাত্তা না দেওয়ারই দলিল। স্বৈরাচার মুক্ত হয়েছে মানুষ। কিন্তু এ রাষ্ট্র জনগণের রাষ্ট্র হয় নাই।
করের বোঝা কমানোর সংস্কার চেয়েছিলাম আমরা, ১০০ টিরও বেশি পণ্যে কর বাড়ানোর সংস্কার না। এ তো শুরু মাত্র।
মো মাহফুজুল হাসান