
07/11/2024
আলহামদুলিল্লাহ। কোন দিন নিজের গল্প করার মতো উল্লেখযোগ্য কিছু পোস্ট দেয়া হয়না আমার। বর্তমান যুগের সাথে আমার এই স্বভাব টা ঠিক যায়না। সব সময় হাসি ঠাট্টা করে, funny post দিয়েই জীবন পার করলাম।আজকে একটু নিজের ঢাক পিটাই 😷😷😷।
এই হলো ফারজানা, বয়স ২৮ বছর। ওর কোল আলো করে যে বাচ্চা টাকে দেখা যাচ্ছে সে ৯ সপ্তাহ পেটে থাকার সময় ই ওর মায়ের ডান ওভারিতে সিস্ট হয়ে নাড়ি পেচিয়ে খুব ভয়াবহ অবস্থা হয়ে যায়। সাধারণত প্রথম তিন মাসে আমরা কোন অপারেশন করিনা পারতপক্ষে। কারণ বাচ্চা নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে। কিন্তু এটাতে অন্য কোন অপশন ছিলো না। তাই সিস্ট অপারেশন করলাম, ৯ সপ্তাহের ভ্রুন মায়ের পেটে আদও থাকবে কিনা অনেক টেনশনে ছিলাম। অপারেশন এর ১৮ দিন পর ফারজানার ব্লিডিং শুরু হয়েছিলো। ভাবলাম শেষ রক্ষা বুঝি হলো না। কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমতে বাচ্চাটা অক্ষত ছিলো ❤️। মনে আশা নিয়ে ওকে কাউন্সিলিং করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠালাম। এরপর পুরা প্রেগ্ন্যাসিতে ফারজানা রেগুলার ফলোআপে এসেছে। যাই হোক ৩৭ সপ্তাহে ওর সিজারিয়ান ডেলিভারি করলাম। এটা ওর দ্বিতীয় সিজার ছিলো। কিন্তু বাচ্চার ওজন ২.৬ কেজি, আর শ্বাসকষ্ট শুরু হলো। NICU তে নিতে হলো। আমার রোগী অপারেশন টেবিল থেকেই কান্না শুরু করলো ছেলের জন্য। ওর অপারেশন তখনো মাঝপথে। আল্লাহর উপর ভরসা আর মনে সাহস রাখতে বলা ছাড়া আমি ওকে বুঝ দেয়ার ভাষা খুঁজে পাচ্ছিলাম না। আজকে ৮ দিন পর্যন্ত বাচ্চা সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়া অব্দি সে আমার কথার উপর আস্থা রেখে এসেছে। যা করার উপর ওয়ালাই করেন, কিন্তু আমরা আমাদের রোগীদের পাশে থেকে মানসিক সাপোর্ট টা অন্তত যদি দিতে পারি তাহলে মনেহয় আল্লাহও খুশি হন। মুশকিল আসান করে দেন। ফারজানা ওর ছেলের নাম রেখেছে - আরিজ 🥰। ভালো থাকুক ওরা মা ছেলেতে। এটাই আমার বড়ো প্রাপ্তি।