13/05/2025
একজন সুস্থ মানুষের জন্য কিছু জরুরি রক্ত পরীক্ষা রয়েছে যা নিয়মিত করানো উচিত। এই পরীক্ষাগুলো রোগ প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করতে এবং স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। এখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ রক্ত পরীক্ষা উল্লেখ করা হলো:
১. কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট (CBC) বা পূর্ণ রক্ত কণিকা পরীক্ষা: এই পরীক্ষাটি রক্তের বিভিন্ন কোষের সংখ্যা এবং অবস্থা সম্পর্কে ধারণা দেয়, যেমন:
* লোহিত রক্ত কণিকা (RBC): অক্সিজেন পরিবহন করে।
* শ্বেত রক্ত কণিকা (WBC): সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।
* প্লেটলেট (Platelets): রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে।
* হিমোগ্লোবিন (Hemoglobin): লোহিত রক্ত কণিকায় অক্সিজেন বহনকারী প্রোটিন।
* হেমাটোক্রিট (Hematocrit): রক্তে লোহিত রক্ত কণিকার অনুপাত।
এই পরীক্ষা রক্তাল্পতা, সংক্রমণ এবং অন্যান্য রক্তের রোগ নির্ণয়ে সাহায্য করে।
২. লিপিড প্রোফাইল (Lipid Profile): এই পরীক্ষা রক্তে বিভিন্ন ধরনের ফ্যাটের (লিপিড) মাত্রা পরিমাপ করে, যেমন:
* টোটাল কোলেস্টেরল (Total Cholesterol)
* এলডিএল কোলেস্টেরল (LDL Cholesterol) - "খারাপ" কোলেস্টেরল
* এইচডিএল কোলেস্টেরল (HDL Cholesterol) - "ভালো" কোলেস্টেরল
* ট্রাইগ্লিসারাইড (Triglycerides)
এই পরীক্ষা হৃদরোগের ঝুঁকি মূল্যায়ন করতে সাহায্য করে।
৩. ব্লাড গ্লুকোজ (Blood Glucose): এই পরীক্ষা রক্তে শর্করার মাত্রা নির্ণয় করে। এটি ডায়াবেটিস এবং প্রি-ডায়াবেটিস শনাক্ত করতে গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত দুটি ধরনের গ্লুকোজ পরীক্ষা করা হয়:
* ফাস্টিং ব্লাড গ্লুকোজ (Fasting Blood Glucose): খালি পেটে শর্করার মাত্রা মাপা হয়।
* HbA1c: গত ২-৩ মাসের গড় রক্ত শর্করা নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে ধারণা দেয়।
৪. থাইরয়েড ফাংশন টেস্ট (Thyroid Function Test): এই পরীক্ষা থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা মূল্যায়ন করে। সাধারণত যে হরমোনগুলো মাপা হয় সেগুলো হলো:
* টিএসএইচ (TSH - Thyroid Stimulating Hormone)
* টি৪ (T4 - Thyroxine)
* টি৩ (T3 - Triiodothyronine)
এই পরীক্ষা থাইরয়েডের সমস্যা যেমন হাইপোথাইরয়েডিজম বা হাইপারথাইরয়েডিজম নির্ণয় করতে সাহায্য করে।
৫. লিভার ফাংশন টেস্ট (Liver Function Test - LFT): এই পরীক্ষা লিভারের স্বাস্থ্য এবং কার্যকারিতা মূল্যায়ন করে। এর মাধ্যমে বিভিন্ন লিভার এনজাইম এবং প্রোটিনের মাত্রা মাপা হয়, যা লিভারের কোনো ক্ষতি বা রোগের ইঙ্গিত দিতে পারে।
৬. কিডনি ফাংশন টেস্ট (Kidney Function Test - KFT): এই পরীক্ষা কিডনির কার্যকারিতা মূল্যায়ন করে। এর মাধ্যমে ক্রিয়েটিনিন, ইউরিয়া এবং অন্যান্য ইলেক্ট্রোলাইটের মাত্রা মাপা হয়, যা কিডনির স্বাস্থ্য সম্পর্কে ধারণা দেয়।
৭. কম্প্রিহেনসিভ মেটাবলিক প্যানেল (Comprehensive Metabolic Panel - CMP): এটি একটি বিস্তৃত পরীক্ষা যেখানে বেসিক মেটাবলিক প্যানেলের (সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্লোরাইড, বাইকার্বোনেট, ক্রিয়েটিনিন, নাইট্রোজেন) সাথে লিভার ফাংশন টেস্টের কিছু উপাদানও অন্তর্ভুক্ত থাকে।
★★★এই পরীক্ষাগুলোর ফ্রিকোয়েন্সি ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে এবং বয়স, পারিবারিক ইতিহাস ও স্বাস্থ্যের অবস্থার উপর নির্ভর করে। আপনার ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এই পরীক্ষাগুলো করানো উচিত। রোগের কোনো লক্ষণ না থাকলেও বছরে একবার অন্তত কিছু বেসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো বুদ্ধিমানের কাজ।
সাভার ডায়াবেটিস সেন্টার
#স্বাস্থ্যসেবা
#সচেতন হন, #সেবা নিন, #সুস্থ থাকুন।