31/01/2024
মাসে দু'বার করে ঋতুস্রাব হচ্ছে? এই 15টি উপায়েই হবে আপনার সমস্যার সমাধান
পিরিয়ড হলেও সমস্যা! আবার না হলে তো ঘোরতর সমস্যা। পিরিয়ডের তারিখ এগিয়ে আসলেই শুরু হয় আতঙ্ক। শুরু হয় পেটে ব্যথা, পা ব্যথা, কোমড় ব্যথা। মনমেজাজ খারাপ হয়ে যায়। আবার নির্দিষ্ট সময়ে ঋতুস্রাব না হলেও শুরু হয় আতঙ্ক। প্রথমেই মাথায় আসে প্রেগন্যান্ট হয়ে যাওয়ার ভয়। আর বিষয়টি সেটি না হলে তো তা আরো চিন্তার হয়ে ওঠে। যাই হোক, আজকের আলোচনা পিরিয়ড না হওয়ার কারণ নিয়ে নয়। আজকের সমস্যা মাসে দু'বার পিরিয়ড হওয়া নিয়ে। মাসে একবার পিরিয়ডের সমস্যা তো কোনওভাবে কাটিয়ে দেওয়া যায়। কিন্তু মাসে দু'বার পিরিয়ড? হ্যাঁ আজকালকার বেহিসেবি লাইফস্টাইলের জন্য অনেক মহিলারই মাসে দু'বার ঋতুস্রাব হয়ে থাকে। এর জেরে কতটা কঠিন হয়ে দাঁড়ায় রোজকার কাজকম্ম করা, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু তারপরেও যেটা চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়ায় সেটি হল আচমকা কেন এমন শরীরের ছন্দপতন!
আমাদের অনেকেই এই সমস্যায় সম্মুখীন হয়েছি। অথবা ভবিষ্যতে সম্মুখীন হতে পারি কিনা সেটাও কেউ বলতে পারে না। আপনার সঙ্গে কি এমন হয়েছে? 15 দিনের ব্যবধানে কি আপনার মাসিক হয়েছে? যাদের হয়েছে তারা তো জানেনই কেন কী থেকে হয়েছে এই সমস্যা। আর যারা এই সমস্যায় পড়েননি। তাদের জন্যও জানিয়ে রাখি। হরমোনের ভারসাম্যহীনতার জন্যই সাধারণত এই সমস্যা হয়ে থাকে।
মাসে দু'বার বা তার বেশি ঋতুস্রাব হওয়া কিংবা এক, দু'মাস ছাড়া ছাড়া ঋতুস্রাব হওয়া; এই ধরনের ঘটনাকে অনিয়মিত ঋতুস্রাব বলে। এই ধরনের ঘটনা ঘটলে তৎক্ষণা সাবধান হওয়া জরুরি। মূলত ২৫ থেকে ২৮ দিনের ব্যবধানে ঋতুস্রাব হয়। যদিও ৩৫ দিনের কম সময়ের ব্যবধানে হলেই তা স্বাভাবিক হিসাবে বিবেচ্য হয়। কিন্তু এই চক্রের উপর-নীচ হলেই তা চিন্তার। কারণ ঋতুস্রাব নারীদেহের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তাই এতে ব্যাঘাত ঘটলে অবশ্যই চিকিৎকের কাছে যাওয়া উচিত। এই সমস্যা গুরুতর হয়ে ওঠার ফলে গর্ভধারণের ক্ষেত্রেও সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে মহিলাদের। এছাড়াও আরও জটিল সমস্যা শরীরে বাসা বাঁধতে পারে মহিলাদের।
15 দিনে পিরিয়ড হওয়ার কারণ কী?
অনিয়মিত ঋতুস্রাবের জেরে ওভারিতে টিউমার এবং ওভারিয়ান ক্যানসারের সম্ভাবনা থাকে। যদি আপনি মেনোপজের দিকে এগিয়ে আসেন, তাহলে অনিয়মিত ঋতুস্রাব স্বাভাবিক। তবে কারণ যাই-ই হোক কেন। অবহেলা না করে চিকিসকের পরামর্শ নিন। কী কী কারণে এমন সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন একজন মহিলা, তার কিছু কারণ রইল আপনাদের জন্য।
1. জন্মনিয়ন্ত্রণ ট্যাবলেটের পরিবর্তন
জন্মনিয়ন্ত্রক পিল খাওয়া আদৌ কি ঠিক? এর কি কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে? জন্মনিয়ন্ত্রক ওষুধের কথা উঠলেই এমন বেশ কিছু প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক করে। অনেক মহিলাই পিরিয়ডসের সমস্যার কারণে এই ধরণের ওষুধ থাকেন। কারণ হরমোন জনিত সমস্যা সমাধানে অনেক সময়ই চিকিৎসকেরা এই ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেন। পিরিয়ড সাইকেল স্বাভাবিক করতে এই ওষুধ খেতে বলেন চিকিৎসকেরাই। ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরন হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এই ওষুধ। হঠাৎ করে যদি এই পিল খাওয়া শুরু করেন, তাহলে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে অতিরিক্ত রক্তপাত হতে পারে। আবার আচমকা এই ওষুধ খাওয়া বন্ধ করলে অতিরিক্ত রক্তপাক হতে শুরু হয়। এটি একটি অস্থায়ী সমস্যা। এটি হরমোনের পরিবর্তনের কারণে ঘটছে। আপনার হরমোনে ভারসাম্যতা যখন ফিরে আসবে তখন আপনার মাসিক চক্রও আবার নিয়মিত হয়ে যাবে। তাই এতে চিন্তার কিছু নেই।
2. আলসারও এর কারণ হতে পারে
আপনার কি আলসার রয়েছে শরীরে? তাহলে পিরিয়ডের সময় প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে পারে। এই রক্তপাতের সঙ্গে ঋতুস্রাবের কোনও সম্পর্ক নেই।
3. গর্ভধারণের কারণে হতে পারে
আমরা মনে করি গর্ভাবস্থা মানেই পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যাওয়া। কিন্তু গর্ভবতী হওয়ার পর মাঝখানে রক্তক্ষরণ হওয়া স্বাভাবিক। বিশেষ করে প্রথম তিন মাসে।
4. একটোপিক প্রেগন্যান্সিও ভুল
মেরিকান প্রেগন্যান্সি অ্যাসোসিয়েশনের মতে, 50 টির মধ্যে 1টি গর্ভধারণ একটোপিক। প্রকৃতপক্ষে, গর্ভাবস্থায়, ভ্রূণের বিকাশ সাধারণত জরায়ুর অভ্যন্তরে ঘটে, তবে কখনও কখনও একটোপিক গর্ভাবস্থাও ঘটে, যেখানে ভ্রূণের বিকাশ ফ্যালোপিয়ান টিউব, ডিম এবং কখনও কখনও গর্ভের বাইরে পেটের যে কোনও জায়গায় ঘটে। এই জায়গাগুলিতে, ভ্রূণ সম্পূর্ণরূপে বিকশিত হয় না। ধীরে ধীরে যখন এর আকার বাড়তে থাকে, তখন এই জায়গাটি ফেটে যায় এবং বেশি রক্তক্ষরণ হয়, যার কারণে কখনও কখনও পরিস্থিতি খুব গুরুতর হয়ে ওঠে, কিন্তু আমরা রক্তপাতকে পিরিয়ডের সাথে সম্পর্কিত ভেবে ভুল করি। সেক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যান। আমেরিকান প্রেগন্যান্সি অ্যাসোসিয়েশনের মতে, 50 টির মধ্যে 1টি গর্ভধারণ একটোপিক।
5. গর্ভপাতের কারণে হতে পারে
গর্ভাবস্থা কিংবা গর্ভপাত। এই দু'সময়েও অতিরিক্ত রক্তপাতের সম্ভাবনা থাকে। আমরা মনে করি গর্ভাবস্থা মানেই ঋতুস্রাব বন্ধ। কিন্তু গর্ভবতী হওয়ার পরেও প্রথম তিন মাসে যৌনমিলন কিংবা ওয়ার্ক আউট করার পরে রক্তপাত হয়ে থাকে। এছাড়া গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে যোনিপথে রক্তপাত হওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু অনেকক্ষেত্রে এটি গর্ভপাতের লক্ষ্মণও হয়ে থাকে। তাই আপনার বাচ্চার উপর এটি ভয়াবহ আঘাত আনতে পারে। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
6. জরায়ুতে ফাইব্রয়েড
মেয়েদের মধ্যে স্ত্রীরোগজনিত সমস্যা যেন ক্রমাগত বাড়ছে। জরায়ুতে ফাইব্রয়েডের সমস্যার জেরেও অতিরিক্ত রক্তপাতের সম্ভাবনা থাকে। জরায়ু এবং ইউটেরাসের মধ্যে দু'টোর সংযোগের জন্য কিছু পেশি থাকে। সে পেশি যদি আচমকা বৃদ্ধি পায় তাকে ফাইব্রয়েড বলে। জরায়ুর প্রাচীরের মধ্যে কিংবা উপরে এই ফাইব্রয়েড বাড়তে থাকে। অধিকাংশ মহিলার শরীরে এই ফাইব্রয়েডের সমস্যা থাকলেও সেটা কেউ বুঝতে পারেন না। যাদের ওজন বেশি, ওবেসিটির সমস্যা থাকে, জেনারেশনে কারোর ফাইব্রয়েড থাকে, গর্ভধারণের ক্ষেত্রে সমস্যা হয়, মাসিক কম বয়সে শুরু হয়, মেনোপজ দেরিতে হয় কিংবা রক্তপাত প্রয়োজনের তুলনায় কম বা বেশি হয়; সেক্ষেত্রে আপনার জরায়ুতে ফাইব্রয়েডের সমস্যা হয়েছে বলে মনে করা হয়। এছাড়া এতে পিরিয়ডের সমস্যা শুরু হতে পারে।
7. ক্যানসার উঁকি মারছে না তো শরীরে
আপনার ডিম্বাশয় বা যোনিপথে ক্যানসার হলে তা রক্তপাতের ক্ষেত্রে পার্থক্য আনতে পারে। ক্যানসারে আক্রান্ত কোনও মহিলার মাসে দুবার রক্তপাতও হতে পারে। তাই এটিকে অবহেলা করবেন না। শরীরের যেকোনও ছোটখাট সমস্যা নিয়ে সবসময় চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
8. পিসিওএস, একটি হরমোনজনিত রোগ
PCOS মানে পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম। এটি একটি হরমোনজনিত রোগ। এই রোগের কারণে অনেক সিস্ট মহিলাদের দু'টো ডিম্বাশয়তেই বাড়তে শুরু করে। এগুলো বড় এবং প্রায়ই অপরিণত ডিমের পাশাপাশি অন্যান্য নিঃসরণ থেকে তৈরি হয়। এর জেরে পিরিয়ড দেরিতে তো হয়ই। অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা তৈরির হওয়ায় অনেকসময় মাসে দু'বার করেও ঋতুস্রাব হয়ে থাকে। এই রোগের কারণে চুল উঠে যাওয়ার সমস্যা তৈরি হয়। এছাড়াও পিসিওএসের ফলে শরীরের অযাচিত জায়গায় লোমের আধিক্য দেখা যায়। ওজন বেড়ে যায় অস্বাভাবিকভাবে। এছাড়া ঋতুস্রাব বন্ধও হয়ে যেতে পারে পুরোপুরি। এই রোগের জেরে ভবিষ্যতে সন্তানধারণে সমস্যা হতে পারে। সেই কারণে অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
9. এন্ডোমেট্রিওসিসের কারণে পিরিয়ড সমস্যা
ডিম্বাশয়ে এই সিস্ট তৈরি হয় এবং এর ভিতরে রক্তপাত হয়। ভিতরে রক্ত থাকার কারণে এই সিস্ট কালো রঙের দেখায়। এই সিস্ট ধীরে ধীরে ডিমের গুণমান নষ্ট করে এবং পরবর্তীতে ডিম্বাশয় ও টিউবকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে। অভ্যন্তরীণ রক্তপাতের কারণে আশেপাশের অঙ্গগুলি একে অপরের সাথে লেগে থাকে। এই কারণে, মাসিকের সময় প্রচুর ব্যথা হয় এবং অনিয়মিত মাসিকের সমস্যাও থাকে। এন্ডোমেট্রিওসিসের কারণে অনেক মেয়েরই মাসে দুবার পিরিয়ড হয়। এ ধরনের রোগীর বন্ধ্যাত্ব হতে পারে। এটির হালকা, মাঝারি এবং গুরুতর গুণমান রয়েছে। সে অনুযায়ী চিকিৎসা করা হয়।
10. STI থেকে জরায়ুর প্রদাহ
কিছু ক্ষেত্রে, STIS (যৌন সংক্রমণ) জরায়ুতে প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে। এ কারণে মাসিক অস্বাভাবিক হওয়ার পাশাপাশি আরও বেদনাদায়ক হতে পারে।
11. থাইরয়েড সমস্যা থাকা
পিরিয়ড এবং বয়ঃসন্ধি সম্পর্কে আপনার মেয়েকে এইভাবে প্রস্তুত করুন
কম থাইরয়েড ফাংশন পিরিয়ডের সময় যোনি থেকে রক্তপাতের সাথে সম্পর্কিত। এই দুটি হরমোন, প্রোজেস্টেরন এবং ইস্ট্রোজেন, একসাথে আপনার মাসিক চক্র নিয়ন্ত্রণ করে। এই হরমোনগুলি থাইরয়েড গ্রন্থি দ্বারা উৎপাদিত হয়, যে কারণে থাইরয়েড সমস্যাগুলি প্রায়ই মাসিক চক্রের অনিয়মের সাথে যুক্ত থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, হাইপারথাইরয়েডিজম মাসিক চক্রে বিলম্ব ঘটায়, অন্যদিকে হাইপোথাইরয়েডিজম মাসিক চক্রের সময় অতিরিক্ত রক্তপাত ঘটায়। এই কারণে, বারবার পিরিয়ড হওয়ার সমস্যা হতে পারে, তাই আপনার থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণে রেখে এই সমস্যাটিও প্রতিরোধ করা যেতে পারে।
12. প্রাথমিক মেনোপজের সময়
45-50 বছর বয়সী একজন মহিলার যদি টানা 12 মাস মাসিক না হয়, তাহলে সেই অবস্থাকে মেনোপজ বলে। এটি স্বাভাবিক, তবে যদি এটি সময়ের আগে ঘটে তবে এটিকে প্রাথমিক মেনোপজ বলা হয়। এ সময় নারীর মাসিক চক্র অবাধে আসে না এবং তার অনিয়মিত ঋতুস্রাবের সমস্যা হয়। প্রায়ই মহিলারা অভিযোগ করেন যে মেনোপজ আসার আগে মাসে দুবার পিরিয়ড হয়। মেনোপজ অবস্থায়ও রক্তপাত ঘটতে পারে, যাকে বেশিরভাগ মহিলারা দ্বিতীয় পিরিয়ড বলে মনে করেন। এমন পরিস্থিতিতে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
13. খুব বেশি স্ট্রেস নেওয়া
যদি একজন মহিলা অনেক বেশি চাপের মধ্যে থাকেন, তাহলেও তার প্রভাব সরাসরি পিরিয়ডের উপর পড়ে। মানসিক চাপের কারণে রক্তে স্ট্রেস হরমোন বেড়ে যায় এবং এর কারণে পিরিয়ড খুব দীর্ঘ বা খুব ছোট হতে পারে। 2015 সালে, মেডিকেল শিক্ষার্থীরা 100 জন মহিলার উপর একটি গবেষণা করেছিল এবং দেখেছিল যে উচ্চ স্ট্রেস লেভেল অনিয়মিত পিরিয়ডের সাথে সরাসরি সম্পর্কিত। আপনি যদি খুব মানসিক চাপে থাকেন তবে আপনার ভারী রক্তপাত হতে পারে, আপনার মাসিক মিস হতে পারে বা ঘন ঘন মাসিক হতে পারে।
14. ওজন হ্রাস এবং ওজন বৃদ্ধি
যদি কোনও মহিলার হঠাৎ ওজন বেড়ে যায় বা হঠাৎ করে ওজন কমে যায়, তবে সেই মহিলার অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা হতে পারে কারণ এই সময়ে হরমোনেরও পরিবর্তন হয়। গবেষণায় বলা হয়েছে, শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ করলে পিরিয়ডের সময়কাল দীর্ঘ সময়ের জন্য অনিয়মিত হতে পারে।
15. যোনি সংক্রমণও এই সমস্যার জন্ম দেয়
কখনও কখনও যোনিপথে সংক্রমণও মাসে দুবার পিরিয়ড হওয়ার কারণ হতে পারে। যেমন, যোনিপথে ফোলাভাব, শুষ্কতা বা সবসময় ভেজা থাকার কারণেও পিরিয়ডের সময় অতিরিক্ত রক্তপাত হতে পারে। এই সংক্রমণের কারণে মাসে দুবার তাদের মাসিকও হতে পারে। অতএব, আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে ভুলবেন না।
মাসে দুবার পিরিয়ড হওয়া এড়াতে টিপস
আপনার শরীর যতটা সহ্য করতে পারে শুধুমাত্র ততটুকু ব্যায়াম করুন। নিজেকে ক্লান্ত করে খুব বেশি ব্যায়াম করবেন না, এতেও পিরিয়ড অনিয়মিত হয়।
শরীরে যত সমস্যাই থাকুক না কেন, জল পান একটি ভালো প্রতিকার। তাই যতটা পারবেন জল পান করুন। সারাদিনে অন্তত 4-5 লিটার পানি পান করুন।
এটি শরীর থেকে টক্সিন বের করে আপনার স্বাস্থ্য ঠিক রাখে।
পিরিয়ডের সময় বেশি ব্যথা হলে যোগব্যায়ামেরও সাহায্য নিতে পারেন। এর জন্য সেরা যোগাসন হল চক্রাসন। এটি নিয়মিত করলে আপনি ব্যথার পাশাপাশি অনিয়মিত পিরিয়ড থেকেও মুক্তি পাবেন।
আপনার জীবনের চাপ যতটা সম্ভব কমিয়ে দিন।
অনিয়মিত পিরিয়ডস কিংবা মাসে দু'বার পিরিয়ড হলে সেটির জন্য অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। তবে আপনার শরীরে কী রোগ বাসা বেঁধেছে সেটা স্পষ্ট করে জানানো সম্ভব নয় প্রথমেই। আল্ট্রাসোনোগ্রাফি এবং আপনার রক্ত পরীক্ষা করার পরই তিনি বলতে পারবেন আপনার ঠিক কী কারণে মাসে দু'বার করে পিরিয়ডস হচ্ছে!
যেকোনো ধরনের শারীরিক ও মানসিক চাপ থেকে নিজেকে দূরে থাকুন।
পিরিয়ড ঠিক রাখতে কী খাবেন?
পিরিয়ডের সময় অনেকসময়ই গ্যাস, অম্বলের সমস্যা হয়। এছাড়া পেট খারাপও হতে পারে। সেক্ষেত্রে নিজের ডায়েট চার্টে কী কী ধরনের খাবার রাখতে পারেন, সেটা একবার দেখে নিন।
- খুব মশলাদার খাবার কিংবা টকজাতীয় খাবার এই সময়ে এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। যতটা সম্ভব হালকা খাবার খান। এতে শরীর এবং মন দু'টোই ভালো থাকবে।
- মধুর সঙ্গে আদা মিশিয়ে খান কিংবা হাফ কাপ জলের মধ্যে সামান্য আদা মিশিয়ে 5-7 মিনিট ফুটিয়ে নিন। মিশ্রণটি ঠান্ডা হলে তাতে মধু মিশিয়ে নিন এবং এই মিশ্রণটি খাবার খাওয়ার পরে দিনে তিনবার অবশ্যই খান। আদার একটি উষ্ণতা প্রভাব রয়েছে, যা শরীরের বিপাককে সঠিক গতিতে করতে সাহায্য করে। যাতে পিরিয়ড খুব অনিয়মিত। নির্দিষ্ট দিনের থেকে অনেক পরে পরে যাদের পিরিয়ড হয় কিংবা খুব অল্পদিনের জন্য পিরিয়ড হয়েই বন্ধ হয়ে যায় তাদের জন্য এটি অব্যর্থ ওষুধ।
- কয়েক মাস টানা যদি আপনি প্রতিদিন কাঁচা পেঁপের রস খেতে পারেন তাহলে পিরিয়ড স্বাভাবিকভাবে হবে। এতে ব্যথাও অনেকটাই কমে যায়। সবুজ, কাঁচা পেঁপে সার্ভিক্সের হাড়ের ফাইবারকে সংযুক্ত করে মাসিক নিয়মিত রাখে।
- মৌরিও নিয়মিত মাসিকের জন্য খুবই ভালো একটি ওষুধ। এতে রয়েছে অ্যান্টিস্পাসমোডিক উপাদান, যা পিরিয়ড নিয়মিত করতে সাহায্য করে।