01/09/2025
বর্তমান বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শিক্ষা কাউন্সিলের রেজিষ্ট্রার মহাদয়ের স্বপদে বহাল হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ও শিক্ষা ব্যবস্থার কোন পরিবর্তন হবে না শুধু কতিপয় ব্যক্তিবর্গের তার সাথে তোলা কিছু ছবি ফেইসবুকে পোস্ট দিয়ে কমেন্ট এবং লাইক ছাড়া....
গত কয়েক বছরে হোমিওপ্যাথির যা হওয়ার দরকার ছিল তার কিছু হয় নাই। স্বাস্থ্যখাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পরিচালনা করার জন্য এবং হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শিক্ষা আইনের বিভিন্ন ধারা দ্রুত বাস্তবায়ন এবং সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে নিম্ন বর্ণিত প্রস্তাবনাঃ
১) সকল হোমিওপ্যাথিক কলেজের হাসপাতাল গুলো চালু করে চিকিৎসা সেবা দেয়া যার ফলে হাতে কলমে দক্ষ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক তৈরি হবে এবং হোমিওপ্যাথিক কলেজের মানোন্নয়নে সহায়ক হবে। মাসিক ত্রৈমাসিক রোগীলিপী অডিট করতে হবে।
২) হোমিওপ্যাথিক কলেজের ল্যাব গুলো আধুনিকায়ন করা যাতে হাতে কলমে সব বিষয়ে সঠিক জ্ঞান আহরণ করে চাকুরীর বাজারে উপযোগী হয়।
৩) প্রত্যেক হোমিওপ্যাথিক কলেজের ফার্মেসী এবং ফার্মাকোপিয়া বিষয়ে যথোপযুক্ত ব্যবহারিক জ্ঞান অর্জন করতে পারে সেই জন্য আলাদা ল্যাব গঠন করা।
৪) যেহেতু হোমিওপ্যাথি একটি পূর্নাঙ্গ চিকিৎসা ব্যবস্থা সেহেতু চিকিৎসা ব্যবস্থার গুনগত মান বৃদ্ধির জন্য পরীক্ষা ভিত্তিক অবশ্যই বিজ্ঞানের ছাত্র ছাত্রী ভর্তি করাতে হবে। ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে বয়সসীমা অবশ্যই ত্রিশ করতে হবে।
৫) বর্তমান যুগ ডিজিটাল যুগ সেহেতু হোমিওপ্যাথিক কাউন্সিলের আওতাভুক্ত কলেজ গুলোর, কাউন্সিলের নিজস্ব ওয়েব সাইট এবং মোবাইল অ্যাপস তৈরি করতে হবে যেন সেখানে ছাত্র, শিক্ষক এবং রেজিষ্টার্ড হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের পরিপূর্ণ তথ্য এবং উপাত্ত থাকে। ছাত্র ভর্তি, ক্লাস রুটিন, পরীক্ষার সমসুচী অটোমেশন অর্থ্যাৎ সকল তথ্য ওয়েব সাইটে হাল নাগাদ করতে হবে।
৬) কলেজগুলোতে ডিপ্লোমা সিলেবাস পরিপূর্ণ ভাবে পড়ানো হয় সেদিকে কাউন্সিলের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
৭) আলাদা হোমিওপ্যাথিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে।
৮) যেহেতু বিগত পঞ্চাশ বছরে বাংলাদেশে কোন বিধিবদ্ধ হোমিওপ্যাথিক ফার্মাকোপিয়া নেই সেহেতু বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শিক্ষা আইন ২০২৩ এর ধারা ২ এর সংজ্ঞায় বর্ণিত উপধারা (১৪) উপধারা অনুযায়ী হোমিওপ্যাথিক ফার্মাকোপিয়া বাস্তবায়ন করতে হবে।
আমেরিকা, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, ভারত এবং পাকিস্তানের আলোকে বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক ফার্মাকোপিয়া (হোমিওপ্যাথিক ঔষধ তৈরির ফর্মুলা) ডকুমেন্ট আকারে প্রকাশ করা যাতে বাংলাদেশে হোমিওপ্যাথিক ঔষধের নিজস্ব কারখানা গড়ে ওঠে। ফলে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে।
আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন হোমিওপ্যাথিক ঔষধ কারখানা তৈরিতে সহযোগিতা করা প্রয়োজন।
৯) বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসি সিলেবাসে হোমিওপ্যাথিক ফার্মেসী অন্তর্ভুক্ত করা যেন হোমিওপ্যাথিক ঔষধ সংক্রান্ত ভুল ধারনা এবং অপপ্রচার দুর হয়।
১০) DHMS ডিপ্লোমা ছাত্র ও চিকিৎসদের উচ্চ শিক্ষার পথ খুলে দিতে যেন ডিপ্লোমাধারীরা উচ্চতর শিক্ষার মাধ্যমে নিজেদের বিকশিত এবং যোগ্যতা প্রমান করতে পারে। ডিপ্লোমা চিকিৎসকদের উচ্চ শিক্ষার পথ সহজ করতে হবে এবং বিএইচএমএস সমমানের ডিগ্রী অর্জনের ব্যবস্থা করতে হবে। যেমনঃ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরাধীন ০৫ টি সরকারি নার্সিং কলেজে ০২ বছর মেয়াদি পোস্ট বেসিক বিএসসি ইন নার্সিং ও পোস্ট বেসিক বিএসসি ইন পাবলিক হেলথ নার্সিং কোর্স আছে।
DHMS চিকিৎসকদেরকে কনডেন্স/গ্রেডেড ডিগ্রি/পোস্ট বেসিক বা যে পদ্ধতিতেই হোক না কেন সময় উপযোগী কোর্স এর মাধ্যমে ব্যাচেলর BHMS ডিগ্রি সম্পন্ন করার সুযোগ সৃষ্টি করা প্রয়োজন এবং সকল হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনে BHMS কোর্স চালু করা প্রয়োজন।
১১) হোমিওপ্যাথিক BHMS ডিগ্রি অর্জন করার পর FCPS (হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন) এবং MD (হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন) ডিগ্রি অর্জন করার ব্যবস্থা করলে চিকিৎসকদের মান উন্নয়ন করা সম্ভব হবে।
১২) প্রত্যেক জেলা এবং বিভাগীয় পর্যায়ে হোমিওপ্যাথিক গবেষণা ইনস্টিটিউট স্থাপন করা প্রয়োজন।
১৩) DHMS চিকিৎসকদের সরকারি চাকুরীর ব্যবস্থা প্রয়োজন এবং BHMS চিকিৎসকদের সরকারি নিয়োগে আসন বৃদ্ধি প্রয়োজন। সকল সরকারি হাসপাতাল ও কমিউনিটি ক্লিনিক এ পূর্ণাঙ্গ হোমিও চিকিৎসা ইউনিট চালু করা:-হাসপাতাল এ- মেডিকেল অফিসার- BHMS -নবম গ্রেড, সহঃমেডিকেল অফিসার- DHMS -দশম গ্রেড।
১৪) বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শিক্ষা কাউন্সিলে সকল BHMS এবং DHMS চিকিৎসকদের সম্মান জনক চিকিৎসক নিবন্ধন এর ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। এবং কাউন্সিলের ওয়েব সাইটে সেগুলো প্রকাশ করা।
১৫) বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শিক্ষা কাউন্সিলের ওয়েব সাইট দ্রুত সংস্কার করা। ডোমেইন নাম, ওয়েব সাইটের কনটেন্ট বা বিষয়বস্ত। কাউন্সিলের ওয়েব সাইটে রেজিষ্টার্ড ডাক্তারদের তথ্য হালনাগাদ থাকতে হবে।
১৬) কাউন্সিল এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এর মাধ্যমে দক্ষ জনবল তৈরি করে সমাজে বিভিন্ন ভুয়া চিকিৎসক বের করে তাদেরকে যথাযথ শাস্তির আওতায় আনা।
১৭) কাউন্সিল এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এর মাধ্যমে দক্ষ জনবল তৈরি করে সমাজে বিভিন্ন সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে কমপক্ষে এক থেকে দুই জন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের পদ সৃষ্টি করা।
১৮) হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ব্যবস্থা সমাজে যথাপোযুক্ত স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য বিভিন্ন টিভি মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়ায় কাউন্সিলের মাধ্যমে বিভিন্ন কার্যক্রম প্রকাশ করা।
১৯) হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শিক্ষা আইন ২০২৩ এর আলোকে গভর্নিং বডি এবং কার্যনির্বাহী পরিষদ দ্রুত সংস্কার করে পুনর্গঠন করতে হবে।
প্রচারে
ডা. মোঃ আম্মার আব্দুল্লাহ
রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক