
21/07/2025
জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউট এর চিকিৎসকরা মাস ক্যাজুয়ালটি ম্যানেজ করতে কিছুটা হলেও অভ্যস্ত। কিন্ত আজ আমরা যে অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছি, তার সাইকোলজিকাল ট্রমা আমরা কতদিনে কাটিয়ে উঠতে পারব, জানিনা।
খবর পাওয়ার পরেই অফিসিয়াল হোযাটসঅ্যাপ গ্রুপে সকলকে নোটিশ করা হয়। এরপরের রেসপন্স এর একটা স্ক্রিনশট দিলাম, সবাই ইনস্ট্যান্ট হাসপাতালে রওয়ানা হয়ে আসছে।
আমাদের সকল চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ড বয় যাঁরা হাসপাতালের বাইরে ছিলেন, এমনকি যারা ছুটিতে ছিলেন, তারাও চলে এসেছেন। কয়েকটা বাচ্চার সিভি লাইন করলাম, তার মধ্য দুজন আমার রামিন এর বয়সী। পুড়ে যাওয়া মুখমন্ডল আর ক্ষণে ক্ষণে পানি পানি বলে বিলাপ নিতে পারছিলাম না।
বিভিন্ন হাসপাতালের অনেকেই ফোন করে সাপোর্ট লাগবে কিনা জানতে চেয়েছেন, সবার কাছে কৃতজ্ঞতা ।
বার্ন পেশেন্ট এর শ্বাসনালী পুড়ে যাওয়া হচ্ছে ভয়ের কথা। অনেকেরই এমন ইনহেলেসনাল ইঞ্জরি হয়েছে।
যারা বেঁচে আছেন তাদের বার্ন পরবর্তি ইনফেকশন হচ্ছে মেইন কনসার্ন। আরেকটা ছবি দিচ্ছি, দেখেন। সারাদিন না খেয়ে খাটা খাটনি করে এরপর বের হওয়ার সময় মেইন গেটে দেখি বিরাট জটলা। উনার সবাই সাংবাদিক, সবাই ভিতরে ঢুকবেন, ছবি, ভিডিও নিবেন। কিন্তু আমাদের আনসার সদস্যরা বাঁধা দিচ্ছিল।
এতজন সাংবাদিক ভাই যদি হাসপাতালে ঢুকে ঘুরতে থাকেন বিভিন্ন জায়গায়, তাহলে ইনফেকশন কন্ট্রোলের কি অবস্থা হবে সেটা বলাই বাহুল্য।
আর বের হয়ে রাস্তায় দেখি অনেক মানুষ, এদের অনেকেই রক্ত দিতে এসেছেন। কিন্তু বার্ন পেশেন্ট এর প্রথম দিনেই রক্ত দরকার নেই। ধীরে ধীরে পরে লাগে রক্ত। তাই রক্ত দেয়ার জন্য সবাই ভিড় না করাটাই ভালো।
আল্লাহ আমাদের এই শোক সইবার শক্তি দান করুন।
লিখা:
ডা.নাজমুল আহসান সিদ্দিকী রুবেল
ঢাকা মেডিকেল কলেজ