
12/01/2025
ডায়াবেটিস এর লক্ষণ
টাইপ 1 ডায়াবেটিসের লক্ষণ:
টাইপ 1 ডায়াবেটিস-এর সূত্রপাত খুব দ্রুত ঘটে এবং নিম্নলিখিত উপসর্গ গুলি হঠাৎ দেখা দিতে পারে:
তীব্র তৃষ্ণা
অতিরিক্ত প্রস্রাবের প্রবণতা
দ্রুত ওজন হ্রাস
প্রচণ্ড ক্ষুধা
দুর্বলতা বা ক্লান্তি
অস্বাভাবিক বিরক্তি
ঝাপসা দৃষ্টি
বমি বমি ভাব
পেটে ব্যথা
অপ্রীতিকর গন্ধের অনুভূতি
চুলকানি
টাইপ ২ ডায়াবেটিসের লক্ষণ :
ডায়াবেটিসের সবচেয়ে সাধারণ রূপটি কে টাইপ 2 ডায়াবেটিস বা ইনসুলিন-অনির্ভর ডায়াবেটিস বলা হয়। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত প্রায় 90% লোকের টাইপ 2 ডায়াবেটিস হয়ে থাকে। টাইপ 2 ডায়াবেটিস কে প্রাপ্তবয়স্ক সূচক (adult-onset) ডায়াবেটিস-ও বলা হয়, কারণ এটি সাধারণত 35 বছর বয়সের পরে প্রকাশ পায়। তবে, ইদানিং ক্রমবর্ধমান সংখ্যক অল্পবয়স্ক মানুষদের-ও টাইপ 2 ডায়াবেটিস হচ্ছে।
টাইপ 2 ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তিরা নিজস্ব ইনসুলিন তৈরি করতে সক্ষম। কিন্তু প্রায়শই, এটি পরিমাণে যথেষ্ট নয় বা কোষ যথাযথ ভাবে প্রতিক্রিয়া করে না। অর্থাৎ ইনসুলিন শরীরের কোষগুলিকে খোলার জন্য চাবি হিসাবে সঠিক ভাবে কাজ করতে পারে না। ফলে শর্করা কোষে প্রবেশ করতে পারে না। একে বলা হয় ইনসুলিন-রেজিস্ট্যান্স। টাইপ 2 ডায়াবেটিস সাধারণত স্থূলকায় ব্যাক্তি এবং ব্যায়াম-রহিত (sedentary) জীবনধারার অভ্যস্ত ব্যাক্তি দের হয়ে থাকে।
টাইপ 2 ডায়াবেটিস-এর লক্ষণ গুলি টাইপ 1 ডায়াবেটিস এর মতোই। কিন্তু টাইপ 2 ডায়াবেটিসের সূত্রপাত সাধারণত ধীর গতিতে হয়। লক্ষণগুলিইও টাইপ 1 ডায়াবেটিসের মতো স্পষ্ট ভাবে লক্ষণীয় হয় না। এই কারণে, অনেকে ভুলবশত অসতর্ক হন।
টাইপ 2 ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:
ধীরে গতিতে ক্ষতস্থান নিরাময়
তীব্র তৃষ্ণা
অতিরিক্ত প্রস্রাবের প্রবণতা
দ্রুত হারে ওজন হ্রাস
অপ্রীতিকর গন্ধের অনুভূতি
হাতে এবং পায়ে ঝিনঝিন
চুলকানি
মূত্রনালীতে সংক্রমণ
ঝাপসা দৃষ্টি
মেজাজ পরিবর্তন
মাথাব্যথা
মাথা ঘোরা
বগল এবং ঘাড়ের কাছে কালচে ছাপ
ডায়াবেটিসের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
টাইপ 1 ডায়াবেটিস চিকিৎসা:
টাইপ 1 ডায়াবেটিস ইনসুলিন ইনজেকশন গ্রহণ করে বা ইনসুলিন পাম্প বা অন্য ডিভাইস ব্যবহার করে চিকিৎসা করা হয়। বাইরে থেকে প্রয়োগ করা (ইঞ্জেকটেড) ইনসুলিন কোষে শর্করা যাতায়াতের চাবি হিসাবে কাজ করে। শরীরের কোষগুলিতে গ্লুকোজ প্রবেশ করে। অবশ্য ইনসুলিন নেওয়ার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ হল কতটা ইনসুলিন নিতে হবে তা সঠিকভাবে জানা কঠিন। এর পরিমাণ অনেক কারণের উপর নির্ভর করে, যেমন-
খাদ্যাভাস
ব্যায়াম
মানসিক চাপ
আবেগ এবং সাধারণ স্বাস্থ্য
ইনসুলিনের কী ডোজ গ্রহণ করা হবে তা নির্ধারণ করা একটি জটিল কাজ। যদি কেউ অত্যধিক ইনসুলিন গ্রহণ করেন, তাহলে তার রক্তে শর্করার মাত্রা বিপজ্জনক ভাবে নিম্ন স্তরে নেমে যেতে পারে। এটিকে হাইপো-গ্লাইসেমিয়া বলা হয়। এতে জীবনের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
একই ভাবে যদি প্রয়োজনের থেকে খুব কম পরিমাণ ইনসুলিন গ্রহণ করা হয় তবে রক্তে শর্করার মাত্রা বিপজ্জনকভাবে বেড়ে যেতে পারে। কিন্তু কোষগুলিতে শর্করার অভাব দেখা দেয়। একে হাইপার-গ্লাইসেমিয়া বলা হয়। এই অবস্থাতে-ও জীবনের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
টাইপ 2 ডায়াবেটিসের চিকিৎসা:
এই ধরনের ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক করার জন্য শরীর দ্বারা উত্পাদিত ইনসুলিনকে আরও ভালোভাবে ব্যবহার করার উপায় খুঁজে বের করা জড়িত। কার্ডিওলজি ডাক্তাররা ডায়েট, ব্যায়াম এবং ওজন কমানোর উপর জোর দেন। তবে রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি হলে শরীরের ইনসুলিন ব্যবহারের ক্ষমতা বেড়ে যায়