24/06/2025
High Voltage Electric Burn Injury
সেদিন রাউন্ড এ দুজন High Voltage Electric Burn এর রোগী পেলাম। 50 প্লাস বয়স, দুজনেই ই এক হাত কনুই এর উপর থেকে কেটে ফেলতে হয়েছে। এছাড়াও আরও কিছু অপারেশন লাগবে। মোটামুটি দেড় দুইমাস হাসপাতালে থাকার ধাক্কা।
আপনারা কিভাবে high voltage electric burn এ আক্রান্ত হলেন, জিজ্ঞেস করতে প্রথম জন জানালেন তার বাসায় কনস্ট্রাকশন এর কাজ চলছে। তিনি বৃষ্টির ভিতর দুইতলার ছাদের কোনায় গিয়েছিলেন ছাতা মাথায় দিয়ে একটা পানির পাইপ ঠিকঠাক কাজ করছে কিনা দেখতে। ছাদের খুব কাছ দিয়ে চলে গেছে হাই ভোল্টেজ ইলেকট্রিক তার। খুব সম্ভবত ছাতার উপরের মেটালের সাথে তার লেগে গিয়েছিল, সেখান থেকে এই দুর্ঘটনা।
দ্বিতীয় জনের দুর্ঘটনাও ছাদেই হয়েছে। শুকাতে দেয়া কাপড় ছাদ থেকে বাতাসে উড়ে গিয়ে পড়েছিল পাশ দিয়ে হাই ভোল্টেজ ইলেকট্রিক তার এ। তিনি পর্দা লাগানোর স্টিলের পাইপ দিয়ে সেটি আনতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ভয়াবহ এই দুর্ঘটনা।
শুধুমাত্র এই দুজন না। আমরা এরকম অনেক রোগী পাই যারা এই রকম নিজ বাড়িতে ছাদে কিংবা বেলকনিতে কাপড় শুকাতে গিয়ে, বাচ্চারা খেলতে গিয়ে, পাশের তারে উড়ে যাওয়া কাপড় লাঠি দিয়ে আনতে গিয়ে high voltage electric burn এ আক্রান্ত হন। বাড়ির মহিলা এবং শিশুরা সবচেয়ে বেশি।
High Voltage Electric Burn সবচেয়ে ভয়াবহ। প্রায় সকল ক্ষেত্রেই জীবন বাঁচাতে হাত কেটে ফেলতে হয়। তাই এই ব্যাপারে সচেতনতা অত্যন্ত জরুরী। বাড়ি তৈরির সময় নিরাপত্তা নিয়ে আমরা খুবই কম ভাবি। আমাদের প্রধান চিন্তা থাকে আমি কিভাবে সবটুকু জায়গা কাজে লাগিয়ে বাড়িটা বড় করতে পারে। একারনে বৈদ্যুতিক পিলার কিংবা হাই ভোল্টেজ ইলেকট্রিক তার ছাদ কিংবা বেলকনির খুবই কাছ দিয়ে চলে যায়, কোথাও কোথাও তো বাচ্চারা হাত দিয়েই এই তার ছুঁয়ে ফেলে। নিজের বাড়িই বাচ্চাদের জন্য হয়ে যায় সবচেয়ে বিপজ্জনক স্হান। তিনতলা এবং চারতলাতে যারা থাকেন তারা সবচেয়ে বিপদে থাকেন, কারন তার খুব কাছ দিয়ে যায়।
তাই নিজেকে নিরাপদ রাখতে সবাই কে সচেতন হতে হবে। ছাদ কিংবা বেলকনির গ্রীলের ফাঁক দিয়ে যদি কোন কাপড়, খেলনা কিংবা চাবি উড়ে দিয়ে হাই ভোল্টেজ ইলেকট্রিক তার এ পড়ে, কোনভাবেই কোন লাঠি দিয়ে বিশেষ করে পর্দা লাগানোর পাইপ দিয়ে সেটি আনার চেষ্টা করা যাবে না। এটি ভয়াবহ। বাচ্চাদের এই ব্যাপারে সচেতন করতে হবে। তারা যেন লাঠি দিয়ে এই তারে খোঁচাখুচি না করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে বড়দের কে।
আর সবচেয়ে ভাল হয় যদি বারান্দা কিংবা ছাদের এই দিকটা বোর্ড দিয়ে বন্ধ করে দেয়া যায়। তাহলে বাচ্চারা আর কোনভাবেই এই তারের সংস্পর্শে আসতে পারবে না।
সবাই খুব সচেতন থাকবেন, নিজেদের নিরাপদ রাখবেন।
ধন্যবাদ।
ডা. নুরুন্নাহার লতা
এমবিবিএস (ডিএমসি) এমএস(প্লাস্টিক সার্জারি) এফএসিএস (ইউএসএ)
এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর (প্লাস্টিক সার্জারি)
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি, ঢাকা, বাংলাদেশ।
চেম্বার
কনসালটেন্ট, প্লাস্টিক, রিকন্সট্রাক্টিভ, হ্যান্ড এন্ড বার্ন সার্জন
এমএইচ সমরিতা হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ, তেজগাঁও, ঢাকা।
রুম নং ২১০
রবিবার, মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার
বিকাল ৪টা থেকে ৬টা
সিরিয়াল:০১৮৭৬২৮৮১১৬