
11/03/2025
**সকাল-সন্ধ্যার আমল**
১. আ’উযু বিকালিমা-তিল্লা-হিত্তা-ম্মা-তি, মিং-শাররি মা-খলাক্ব।
أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ
সকাল-সন্ধ্যায় তিনবার পড়া। বিষ, যাদু এবং অন্যান্য ক্ষতি থেকে বাঁচতে। (জামে তিরমিযী, ৩৫৫৯)
২. বিসমিল্লা-হিল্লাযী লা-ইয়াদ্বুররু মা‘আসমিহী, শাইউং ফিলআরদ্বী ওয়ালা- ফিসসামা-ই, ওয়াহুওয়াস সামি’উল ‘আলীম।
بِسْمِ اللهِ الَّذِي لاَ يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الأَرْضِ وَلاَ فِي السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيعُ العَلِيمُ
সকাল-সন্ধ্যায় তিনবার পড়া। সব ধরনের ক্ষতি এবং বিপদ-আপদ থেকে নিরাপদ থাকতে..। (জামে তিরমিযী, ৩৩৩৫)
৩. সুরা তাওবাহ ১২৯ নং আয়াতের অংশ-
حَسْبِيَ اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ، عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ
যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় সাতবার এটি পাঠ করবে, আল্লাহ তাআলা তাঁর জন্য যথেষ্ট হয়ে যাবেন। (সুনানে আবি দাউদ)
৪. সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক, সুরা নাস: প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় তিনবার করে পড়া। সব ধরনের অনিষ্ট থেকে হিফাজতের জন্য এটা রাসুল স. এর শিখানো আমল। (সুনানে আবি দাউদ)
৫. লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা-শারীকালাহ, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হ্ামদ, ওয়াহুওয়া ‘আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বদীর
لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ ، وَحْدَهٗ لَا شَرِيْكَ لَهٗ ، لَهُ الْمُلْكُ ، وَلَهُ الْحَمْدُ ، وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ
প্রতিদিন সকালে ১০০বার পড়া। এর অনেক বেশি ফজিলত, এবং জ্বিন-শয়তানের ক্ষতি থেকে বাঁচতে এটা পরিক্ষিত আমল। (বুখারি, মুসলিম হাদিস নং ৪৮৫৭) একশতবার না পারলে, সকাল-সন্ধ্যায় অন্তত ১০বার করে পড়া। (আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ)
৬. জিন-শয়তানের ক্ষতি থেকে বাঁচতে প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় (১বার) আয়াতুল কুরসি পড়া। (মুসতাদরাকে হাকিম ১/৫৬২)
**ঘুমের আগের আমল**
ক. ওযু করে ঘুমানো, তাহলে ফিরিশতারা হিফাজতের জন্য দুয়া করতে থাকে। ডান কাত হয়ে ঘুমানো। এমনিতেও সর্বদা ওযু অবস্থায় থাকা সুন্নাত। (আল-মু’জামুল আওসাত)
খ. শোয়ার পূর্বে কোন কাপড় বা ঝাড়ু দিয়ে বিছানা ঝেড়ে নেয়া। (মুসলিম)
গ. আয়াতুল কুরসি পড়া। (বুখারী) সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পড়া। (বুখারী)
ঘ. সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক, সুরা নাস পড়ে হাতের তালুতে ফু দেয়া, এরপর পুরো শরীরে হাত বুলিয়ে নেয়া। (বুখারী)
**অন্যান্য সময়ের আমল**
১. সম্ভব হলে মদিনার আজওয়া খেজুরের ব্যবস্থা করা, না হয় যে কোন আজওয়া খেজুরেও হবে। রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি সাতটি আজওয়া খেজুর সকাল বেলায় আহার করবে সেদিন তাকে কোন বিষ ও যাদু ক্ষতি করতে পারবে না। (বুখারী)
২. ঘুমের মাঝে ভয় পেলে বা অন্যসময় খারাপ অনুভূতি হলে পড়া
أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ الله التَّامَّاتِ مِنْ غَضَبِهِ وَعِقَابِهِ وشَرّ عِبَادِهِ ، ومِنْ هَمَزَاتِ الشّيَاطِينِ وأَنْ يَحْضُرُونِ
আ‘ঊযু বিকালিমা-তিল্লাহিত্তা-ম্মাতি মিন্ গাদ্বাবিহি ওয়া ইক্বা-বিহি ওয়া শাররি ‘ইবা-দিহি ওয়ামিন হামাযা-তিশ্শায়া-ত্বীনি ওয়া আন ইয়াহ্দুরূন।
৩. টয়লেটে ঢুকার পূর্বে দোয়া পড়া-
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ الْخُبْثِ وَالْخَبَائِثِ
আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ’উযুবিকা, মিনাল খুবসি ওয়াল খবা-ইছ। অর্থ: হে আল্লাহ আমি তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি খারাপ জ্বিন ও খারাপ পরী থেকে। (সহীহ মুসলিম, ৩৭৫)
৪. বিয়ের প্রথম রাতে স্ত্রীর কাছে গিয়ে পড়া [*]
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَهَا وَخَيْرَ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا وَشَرِّ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ
[*] এবিষয়ে প্রচলিত একটি ভুল ধারণা হচ্ছে, অনেকে এটি স্ত্রীর মাথায় হাত রেখেই পড়তে হবে। কিছু হাদিসে মাথায় হাত রেখে পড়ার কথা থাকলেও, প্রসিদ্ধ হাদিসগুলোতে কিন্তু স্ত্রীর কাছে গিয়ে শুধু পড়ার কথা আছে। (সুনানে আবি দাউদ ২২৪৩ এবং ইবনে মাযাহ ১৯০৮ দ্রষ্টব্য)
৫. স্ত্রী সহবাসের পূর্বে দোয়া পড়া।
بِسْمِ اللَّهِ، اللَّهُمَّ جَنِّبْنَا الشَّيْطَانَ، وَجَنِّبِ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا
বিসমিল্লাহি আল্লা-হুম্মা জান্নিবনাশ শাইত্বা-না, ওয়া জান্নিবিশ্-শাইত্বানা মা-রযাকতানা। (বুখারী, ৪৮৭০)
৬. দৈনিক একবার হলেও মসজিদে প্রবেশের দোয়া পড়া
أَعُوذُ بِاللَّهِ الْعَظِيمِ وَبِوَجْهِهِ الْكَرِيمِ وَسُلْطَانِهِ الْقَدِيْمِ مِنْ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: মসজিদে প্রবেশের সময় কেউ এটা পড়লে শয়তান বলে, এই ব্যক্তি আজ সারাদিনের জন্য আমার থেকে রক্ষা পেয়ে গেল। (সুনানে আবি দাউদ, ৩৯৩)
৭. বিসমিল্লাহ বলে দরজা-জানালা লাগানো। খাওয়ার আগে এবং ঘরবাড়িতে প্রবেশের সময় বিসমিল্লাহ বলা ও সালাম দেয়া
বাড়িতে প্রবেশ করতে দোয়া পড়া। তাহলে শয়তান বাড়িতে প্রবেশ করতে পারবে না আর ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ পড়ে ঘরের মূল্যবান মালামাল সিন্দুক বা সংরক্ষিত কোনও স্থানে রেখে তার মুখ বন্ধ করা। তাহলে শয়তান বন্ধ মুখ খুলে তা চুরি করতে পারবে না।
হাদিসে এসেছে.
إِذَا دَخَلَ الرَّجُلُ بَيْتَهُ، فَذَكَرَ اللَّهَ عِنْدَ دُخُولِهِ وَعِنْدَ طَعَامِهِ، قالَ الشَّيْطَانُ: لا مَبِيتَ لَكُمْ، وَلَا عَشَاءَ
‘যখন কোনো ব্যক্তি তার ঘরে প্রবেশের সময় ও খাবারের সময় আল্লাহকে স্মরণ করে তখন শয়তান (নিজ সঙ্গীদেরকে) বলে, তোমাদের রাত কাটানোর কোনো জায়গা নেই; তোমাদের রাতের কোনো খাবারও নেই।’ (মুসলিম)
জিন ও শয়তান থেকে হেফাজত থাকতে রাতের কিছু করণীয়ও রয়েছে। হাদিসে পাকে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন এভাবে,
غَطُّوا الإِنَاءَ وَأَوْكُوا السِّقَاءَ وَأَغْلِقُوا الْبَابَ وَأَطْفِئُوا السِّرَاجَ فَإِنَّ الشَّيْطَانَ لاَ يَحُلُّ سِقَاءً وَلاَ يَفْتَحُ بَابًا وَلاَ يَكْشِفُ إِنَاءً فَإِنْ لَمْ يَجِدْ أَحَدُكُمْ إِلاَّ أَنْ يَعْرُضَ عَلَى إِنَائِهِ عُودًا وَيَذْكُرَ اسْمَ اللَّهِ فَلْيَفْعَلْ فَإِنَّ الْفُوَيْسِقَةَ تُضْرِمُ عَلَى أَهْلِ الْبَيْتِ بَيْتَهُمْ
- তোমরা (রাতের বেলা) পাত্রগুলো ঢেকে দাও;
- মশকগুলো (চামড়ার তৈরি পানি রাখার পাত্র বিশেষ)-এর মুখ আটকিয়ে দাও;
- ঘরের দরজা বন্ধ করে দাও এবং
- চেরাগ (আলো) নিভিয়ে দাও।
কারণ, শয়তান মশকের বাঁধন খুলতে পারে না, দরজা খুলতে পারে না এবং পাত্রও উন্মুক্ত করতে পারে না। তবে তোমাদের কেউ পাত্র ঢাকার জন্য একটা কাঠি ছাড়া অন্য কিছু না পেলে যেন তাই রাখে এবং সাথে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে- ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ পড়ে নেয়। কেননা ইঁদুর চেরাগের আগুন থেকে লোকজনসহ বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়।’ (মুসলিম)
সুতরাং রাতে পাত্র আচ্ছাদিত করা বা ঢেকে রাখা, মশকের মুখ আঁটকে দেওয়া, দরজা বন্ধ করা এবং এ সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা; ঘুমের সময় চেরাগের আগুন নিভিয়ে দেওয়া আর সন্ধ্যার পর শিশু ও গৃহপালিত জন্তুগুলোকে (বাড়িতে) আটকে রাখা উত্তম।
**জিনের ক্ষতি থেকে বাঁচার উপায়**
দোয়া অনেক অনেক শক্তিশালী। দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর আশ্রয়ে থাকে মানুষ। যেহেতু মানুষ ছাড়া পৃথিবীতে আরেকটা জাতি থাকে। তারা হলো জিন। জিনরা মানুষদের মতো আল্লাহ তাআলার সৃষ্টি। তাদেরকেও ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। তারা ভালো কাজ করলে জান্নাতে যাবে এবং মন্দ কাজ করলে জাহান্নামে যাবে। তারাও মানুষের মতো ভালো খারাপ হয়ে থাকে। একজন মানুষ যেমন অন্য মানুষের ক্ষতি করতে পারে তেমনই একজন জিনও মানুষের ক্ষতি করতে পারে।
জিনদের বদনজর মানুষের ক্ষতির কারণ হতে পারে। জিনদের অশরীরি স্পর্শ মানুষের ক্ষতি করতে পারে। এছাড়া জিনরাও যাদু করতে পারে। মানুষদের জিনিসও চুরি করতে পারে।
জিন কর্তৃক মানুষের অর্থ-সম্পদ চুরি করার পক্ষে আলেমগণ হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহুর একটি হাদিস তুলে ধরেন। যখন তিনি যাকাতের খাদ্যদ্রব্য পাহারায় নিয়োজিত ছিলেন; তখন শয়তান কর্তৃক তা চুরি করার লম্বা এ ঘটনাটি হাদিসের বিখ্যাত গ্রন্থ বুখারিতে বর্ণিত হয়েছে।
কোরআনে জিনদের ভালো মন্দের ব্যাপারে বলা হয়েছে, (জিনরা বলে) আমাদের কেউ কেউ সৎকর্ম পরায়ণ এবং কেউ কেউ এরূপ নয়। আমরা ছিলাম বিভিন্ন পথে বিভক্ত। (সুরা জিন : আয়াত ১১)
জিনদের অনিষ্টের ব্যাপারে ইমাম ইবনে তাইমিয়া রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,
إن للجن والشياطين لذة في الشر والفتن، يحبون ذلك وإن لم يكن فيه منفعة (الفُرقان بينَ الحقِّ والباطلِ)
জিন-শয়তানরা অনিষ্ট সাধন এবং ফেতনা সৃষ্টি করে মজা পায়। তারা এটা করতে পছন্দ করে। যদিও এতে তাদের কোনো উপকার না থাকে। (আল ফুরকানু বাইনাল হাক্বি ওয়াল বাতিল)
জিনের ক্ষতি থেকে বাঁচার উপায়
জিনের চুরি ও ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে হাদিসের একাধিক বর্ণনা রয়েছে। তাতে ওঠে এসেছে-
আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা
أَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ، مِنْ هَمْزِهِ وَنَفْخِهِ وَنَفْثِهِ
উচ্চারণ : ‘আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইত্বানির রজিম; মিনহামযিহি ওয়া নাফখিহি ওয়া নাফছিহি।’
অর্থ : ‘আমি আল্লাহর কাছে বিতাড়িত শয়তান থেকে তার প্ররোচনা ও ফুৎকার থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।’
জিনের রোগীর রুকইয়াহ (কুরআনের মাধ্যমে চিকিৎসা) করতে গিয়ে আক্রমণাত্মক বা সহিংস জিনের মুখোমুখি হলে কীভাবে সেটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব?
উত্তর:
আমরা আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই তাঁর সৃষ্টি করা সব খারাপ জিনিসের ক্ষতি থেকে, আর আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি যেন তিনি আমাদেরকে শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা করেন।
প্রথমেই মনে রাখা জরুরি, খুব ভায়োলেন্ট হয়ে যায় এমন জিনের ঘটনা অনেক কম। বেশিরভাগ জিন হয়তো চিৎকার, ভয় দেখানো কিংবা হুমকি দিয়ে আতঙ্কিত করার চেষ্টা করে, তবে সত্যিই যারা আক্রমণ করে তাদের সংখ্যা খুবই সামান্য। এজন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করি।
যদি আপনি সত্যিই ভায়োলেন্ট জিনের মুখোমুখি হন, তাহলে কিছু বিষয় মনে রাখা দরকার:
১. সর্বদা মনে রাখবেন, আপনার সুরক্ষা একমাত্র আল্লাহর কাছ থেকেই আসে – তাঁর উপর সম্পূর্ণ ভরসা রাখুন। আল্লাহই পরাক্রমশালী, সর্বশক্তিমান। তিনি যদি আপনাকে রক্ষা করেন, তাহলে কেউ আপনাকে ক্ষতি করতে পারবে না।
২. দোয়া করবেন, বিশেষ করে শত্রুকে পরাস্ত করার জন্য আল্লাহর কাছে নিয়মিত প্রার্থনা করুন। দোয়া কবুলের উপায়গুলো মাথায় রাখুন। শত্রুর মুখোমুখি হলে বা ক্ষতির আশংকা করলে পড়ার দোয়াগুলো পড়ুন। (হিসনুল মুসলিম দ্রষ্টব্য)
৩. জিনকে শারীরিক শক্তি দিয়ে হারানোর চেষ্টা করবেন না। অনেকেই এই ভুলটি করেন। এরচেয়ে বরং কুরআনের মাধ্যমে পরাস্ত করার চেষ্টা করুন।
আমি একবার এমন পরিস্থিতিতে ছিলাম, যেখানে জিনটি আমার হাত মচকে দিতে চেয়েছিল। আমি কিছু কুরআনের আয়াত পড়লাম আর ফুঁ দিলাম, সে সাথে সাথেই হাত ছেড়ে দিল। শারীরিক শক্তি দিয়ে মোকাবিলা করতে গেলে তারা হয়তো জয়ী হতে পারে, কিন্তু কুরআনের সাহায্য নিলে তারা পরাজিত হয়।
** কিছু আলেম পরামর্শ দিয়েছেন, জিন আক্রমণাত্মক হলে বা অতিরিক্ত চিৎকার করলে কানের কাছে ‘সুরা নিসা, ৭৬নং আয়াত’ বারবার পড়তে। হালকা শাস্তি দিতে। এছাড়া রুকইয়ার পানি দিয়ে ওযু বা রুকইয়ার গোসল করিয়ে দিলেও জিন দুর্বল হয়ে ঠাণ্ডা হয়ে যায়।
৪. নিজের সুরক্ষার পাশাপাশি রোগীর সুরক্ষাও নিশ্চিত করুন। ঘরে বা হাতের কাছে এমন কিছু রাখবেন না-যা রোগীর জন্য বিপদজনক হতে পারে, কারণ বেশিরভাগ সহিংস জিন প্রথমে রোগীকেই আক্রমণ করে। রোগীর এতটা কাছে বা এমন পজিশনে থাকবেন না যে চাইলেই আপনাকে আঘাত করতে পারে।
৫. জ্বিনদের আপনাকে ভয় দেখানোর সুযোগ দেবেন না। জিনরা আপনার প্রতিক্রিয়া খেয়াল করে। আপনি যদি তাদেরকে আঘাত করতে বা চিৎকার-চেঁচামেচি করতে বা ভয় দেখাতে দেন, সে বারবার তা করতে থাকবে। এরকম ক্ষেত্রে বলে দিবেন, খারাপ আচরণ করলে রুকইয়াহের মাধ্যমে কঠিন শাস্তি পেতে হবে।
৬. প্রয়োজনে রুকইয়াহর পানি স্প্রে বোতলে রেখে তা ব্যবহার করুন। যদিও সব জিন এতে সমান প্রভাবিত হয় না, তবে অনেক ক্ষেত্রেই এটি কার্যকরী। এছাড়া রুকইয়ার তেল, আতর ইত্যাদিও ব্যবহার করা যায় অবস্থাভেদে।
৭. অন্যদের সাহায্য নিন। রোগীর আত্মীয়দের ভালোভাবে ধরে রাখ বলুন। একাধিক মানুষের উপস্থিতি আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়াবে এবং রোগী ও নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে।
৮. শক্তিশালী কাউকে নিরাপদে নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়ক কিছু পদ্ধতি শিখে রাখুন। দু’এক দিন সময় নিয়ে দক্ষ কারো কাছ থেকে কিছু সুরক্ষামূলক কৌশল শিখে নিন। পূর্বে যেমন বলেছিলাম, এটি ১০০% সমাধান না দিলেও আত্মবিশ্বাস বাড়াবে এবং রোগীকে সামাল দিতে সহায়ক হবে।
৯. রোগীকে শারীরিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করার সময় অতিরিক্ত সতর্ক থাকুন। জীন নিয়ন্ত্রণ নিয়ে থাকাবস্থায় অনেকে উত্তেজিত হয়ে বেদম প্রহার করেন। এমনটা অনুচিত, এতে আইনি ঝামেলায় পড়ার ঝুঁকি থাকে। বিশেষতঃ যেসব দেশে রুকইয়াহকে বৈধ চিকিৎসা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি, সেখানে প্রহার করলে বা কোনো শারীরিক ক্ষতি হলে আপনি আইনি ঝামেলায় পড়তে পারেন।
১০. এরপরেও সব চেষ্টা ব্যর্থ হলে নিজের সুরক্ষার দিকে মনোযোগ দিন এবং রোগীর জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করুন।
মনে রাখবেন, আপনার শত্রুদের উপর আপনি তাদের শক্তির জন্য পরাজিত হন না বরং এটা হয় আপনার পাপের কারণে। তাই নিজের ভুলগুলোর জন্য তাওবা করুন এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন।
الله أعلم