
15/09/2025
নীরব ঘাতক কিডনি রোগ: প্রতিকার ও করণীয় কি ?
মানব দেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ কিডনি। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বজুড়ে কিডনি রোগীদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে আশঙ্কাজনকভাবে। কিডনি সংক্রান্ত বিভিন্ন রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলো খুব প্রকট না হওয়ায় শরীরের ক্ষতি হতে থাকে নিজের অজান্তেই। লক্ষণগুলো যখন প্রকাশ পায় ততদিনে রোগ বেশ জটিল আকার ধারণ করে। তাই কিডনির বিভিন্ন রোগের প্রতিকার ও করণীয় সম্পর্কে ধারণা থাকা খুব জরুরি।
কিডনি সুস্থ আছে কিনা তা বোঝার জন্য প্রথমেই তাকে কিডনি রোগের লক্ষণগুলো সম্পর্কে অবগত হতে হবে।
ক্রনিক কিডনি ডিজিস বা দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ নিয়ে সবার উদ্বেগ থাকে বেশি। এর প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে শরীর দুর্বল লাগার কথা। পাশাপাশি রক্তশূন্যতা বা এনিমিয়া দেখা দিতে পারে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে, রক্তে চিনির পরিমাণ কমে যেতে পারে।
কিডনি পুরোপুরি খারাপ হতে সাধারণত তিন মাসের বেশি সময় লাগে, এই সময়ের মধ্যে দুটো কিডনিই পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। কিডনির কার্যক্ষমতা মাপার একক বা EGFR (Estimated Glomerular Filtration Rate) এর স্বাভাবিক লেভেল ১২৫। এই লেভেল ৩০-এর নিচে না নামলে কিডনি রোগের কোন লক্ষণ দেখা যায় না। তবে যাদের রক্তচাপ বা ডায়াবেটিসের সমস্যা আছে তাদের যদি প্রস্রাব যদি ফেনা ফেনা ধরনের হয় তখন ধারণা করা হয় কিডনি দিয়ে প্রোটিন যাচ্ছে অর্থাৎ কিডনিতে কোন সমস্যা হয়েছে। পাশাপাশি রাতে বারবার প্রস্রাবের বেগ আসবে।
কিডনি রোগের আরেকটি লক্ষণ হিসেবে হাতে পায়ে পানি আসতে পারে ।
কিডনির বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে পানি পান করা খুবই জরুরী। পাশাপাশি বয়স ভেদে কী পরিমাণ পানি পান করা উচিৎ সে বিষয়ে দিক নির্দেশন নিতে হবে। একজন পূর্ণবয়স্ক স্বাভাবিক মানুষের ক্ষেত্রে দিনে ১০ থেকে ১২ গ্লাস বা তিন থেকে সাড়ে তিন লিটার এবং বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ছয় থেকে আট গ্লাস পানি পান করতে হবে। একদম কম বয়সী বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ৪ গ্লাস পানি যথেষ্ট বলে জানান তিনি। তবে অতিরিক্ত পানি পান শরীরের ক্ষতি করতে পারে বলে সতর্ক করেন কিডনি বিশেষজ্ঞ।
কিডনি রোগ যেকোনো বয়সে হতে পারে। তবে যাদের পরিবারে কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার ইতিহাস আছে তাদের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। যাদের পরিবারে কিডনি রোগী আছে বা ছিল তাদের বছরে অন্তত দুবার কিডনি পরীক্ষা করানো উচিৎ। কিডনি দিয়ে প্রোটিন যাচ্ছে কিনা এটা পরীক্ষা করেই কিডনি রোগ শনাক্ত করা সম্ভব ।