05/10/2022
✳️প্রতিদিন রাত ১১টায় ঘুমালে শরীরের উপর কি প্রভাব পরে?
🔺আপনি নিজেই বুঝতে পারেন যখন পর্যাপ্ত ঘুম না হয় তখন শরীর খারাপ লাগা, মেজমেজে ভাব লাগে। কিন্তু আপনি হয়তো বুঝতে পারবেন না এর প্রভাব কতটা সুদূরপ্রসারী হতে পারে।
✅কতটা ঘুম যথেষ্ট?
বেশিরভাগ প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতিদিন সাত থেকে নয় ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন হয়।
মাত্র এক রাতের জন্য ছয় বা সাত ঘণ্টার কম ঘুম আপনার পরের দিনকে প্রভাবিত করতে পারে।
দীর্ঘস্থায়ীভাবে ঘুমের অভাব আপনার রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
✅১. ঘুম এবং হার্টের স্বাস্থ্য:
রাতে ঘুমের সময়, আপনার শরীর হরমোন নিঃসরণ করে। এই হরমোনের মধ্যে কিছু আপনার হার্ট এবং রক্তনালীগুলিকে সুস্থ রাখে। অল্প ঘুমালে বা ঘুমের অভাবে আপনার দেহ এই হরমোন থেকে বঞ্চিত করে। ফলে সৃষ্টি হয় : উচ্চ্ রক্তচাপ, খারাপ হার্ট ফাংশন, এমনকি সময়ের সাথে সাথে হৃদরোগ আর আপনার যদি ইতিমধ্যেই হার্টের সমস্যা থাকে তবে এটি আরও বড় সমস্যা।
✅২. ঘুম এবং রক্তে সুগার নিয়ন্ত্রণ:
ঘুম আপনার মেটাবলিজম নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এই প্রক্রিয়ায় আপনার শরীর খাদ্যকে শক্তিতে রূপান্তরিত করে। ঘুমের অভাব হলে রক্তে সুগারের মাত্রা ওঠানামা করে এবং মেটাবলিজমে সমস্যা সৃষ্টি করে। আপনার ডায়াবেটিস থাকলে এই সমস্যা আরো প্রকট হতে পারে। এছাড়া রাতে ঘুমের অভাবে আপনার টাইপ 2 ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকিও বাড়ায়। রক্তে সুগারের মাত্রা বেশি বেড়ে গেলে মেজাজ খিটমিটে হয়, শরীর দুর্বল লাগে, মানসিক কার্যক্ষমতা কমে যায়।
✅৩. ঘুম এবং স্ট্রেস:
ঘুম আপনার মন এবং শরীরকে শিথিল করতে এবং আপনার সারাদিনের ক্লান্তি থেকে পুনরুদ্ধার করতে সহায়তা করে। আপনি যখন ঘুম থেকে আপনার দেহকে বঞ্চিত করেন, তখন আপনার শরীর স্ট্রেস হরমোন নিঃসরণ করে। এই স্ট্রেস হরমোনের কারণে আপনার আপনি প্রোডাক্টিভ কাজ করতে পারেন না, আপনার মুড খারাপ থাকে, সারাক্ষন টেনশন হতে থাকে।
✅৪. ঘুম এবং প্রদাহ:
ঘুম আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে। যখন আপনি যথেষ্ট ঘুম পান না, তখন আপনার ইমিউন সিস্টেম অনিয়মিত হয়ে যায় এবং দেহে বাসা বাধে প্রদাহ। হয়ত এই প্রদাহ আপনি লক্ষ্য করছেন না কিন্তু এই নীরব ঘাতক ধীরে ধীরে আপনার দেহের অবকাঠামো নষ্ট করে দেয় ও বিভিন্ন ক্রনিক ডিজিজের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। আলসার, ডিমেনশিয়া, হৃদরোগ জাতীয় রোগগুলো ঘুমের অভাবে হয়ে থাকে।
✅৫. ঘুম এবং ওজন:
গবেষণা বলছে যে যারা কম ঘুমায় তাদের ওজন বেশি বা মোটা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে ঘেরলিন এবং লেপটিন নামক হরমোনের ভারসাম্য ব্যাহত করে এবং এই হরমোন গুলো আপনার যা ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। আপনি ওজন কমাতে চাইলে প্রথমেই আপনার ঘুমের রুটিন ঠিক করেত হবে, এছাড়া অনেক ডায়েট বা এক্সারসাইজ করেও আপনার আদর্শ ওজনে পৌঁছাতে পারবেন না।
✅৬. স্লিপ এবং এক্সিকিউটিভ ফাংশন:
অফিসে, স্কুল, কলেজ বা ভার্সিটিতে সবার চেয়ে ভালো পারফর্মেন্স দিতে চাইলে আপনাকে আপনার মেধা খাটাতে হবে। কিন্তু এর জন্য অবশ্যই আপনাকে রাতে ১১ টার মাঝে ঘুমিয়ে পড়তে হবে।
🛑কোন কাজ গুলো দ্রুত ঘুমাতে সাহায্য করে:
🔺১. ঘুমানোর কমপক্ষে ১.৫-২ ঘন্টা আগে রাতের খাবার সেরে ফেলবেন
🔺২. বিছানায় মোবাইল, ল্যাপটপ ব্যবহার করা যাবে না
🔺৩. সন্ধ্যার পরে কোনো ক্যাফেইন ইনটেক করবেন না
🔺৪. সকাল ৫টায় উঠে সারারাত জেগে যে কাজ করেন তা শেষ করুন
🔺৫. যাদের পেশার কারণে রাত জাগতে হয় তারা পুষ্টিবিদের বা ডাক্তারের পরামর্শ নিন।।।