 
                                                                                                    14/09/2025
                                            বাংলাদেশে গরু মোটাতাজাকরণ একটি লাভজনক এবং স্বল্প মেয়াদী ব্যবসা। বিশেষ করে ঈদুল আযহার সময় গরুর ব্যাপক চাহিদা থাকায় এই সময়ে এটি আরও বেশি লাভজনক হয়ে ওঠে। এই ব্যবসা শুরু করার জন্য কিছু নির্দিষ্ট পদ্ধতি এবং বিষয় সম্পর্কে ধারণা থাকা প্রয়োজন।
গরু মোটাতাজাকরণের মূল পদ্ধতি ও ধাপসমূহ:
১. গরু নির্বাচন: মোটাতাজাকরণের জন্য সঠিক গরু নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত, ২ থেকে ৫ বছর বয়সী রোগা, শীর্ণকায় এবং সুস্থ গরু নির্বাচন করা লাভজনক। দেশী সংকর জাতের ষাঁড় বা বলদ এই কাজের জন্য উপযুক্ত। এছাড়াও গরুর দাঁত, চোখ, মল এবং শারীরিক গঠন দেখে সুস্থ গরু চেনা যায়।
২. কৃমিমুক্তকরণ ও টিকা প্রদান: গরু কেনার পর পরই এর পেটের কৃমি দূর করার ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য অভিজ্ঞ প্রাণিচিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কৃমিনাশক ঔষধ ব্যবহার করতে হবে। একই সাথে গরুকে বিভিন্ন রোগের টিকা যেমন - তড়কা, গলাফুলা, খুরা রোগ ইত্যাদি দিতে হবে।
৩. সুষম খাদ্য ব্যবস্থাপনা: গরু মোটাতাজাকরণের প্রধান অংশ হলো সুষম ও পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহ। এটি গরুর দ্রুত ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।
 * আঁশ জাতীয় খাবার: খড়, কাঁচা ঘাস, ইউরিয়া মোলাসেস ব্লক (ইউএমবি) ইত্যাদি গরুকে পর্যাপ্ত পরিমাণে দিতে হবে।
 * দানাদার খাবার: ভুট্টার গুঁড়ো, গমের ভুসি, চালের খুদ, খৈল, মটর, খেসারি, লবণ, চিটাগুড় ইত্যাদি মিশিয়ে একটি সুষম মিশ্রণ তৈরি করে গরুকে খাওয়াতে হবে।
 * খাদ্য প্রদান পদ্ধতি: গরুকে দিনে ২ বার দানাদার খাবার এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে আঁশ জাতীয় খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে হবে।
৪. বাসস্থান ও পরিচর্যা: গরুর জন্য পর্যাপ্ত আলো-বাতাসপূর্ণ এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার জায়গা নিশ্চিত করতে হবে। গরুকে প্রতিদিন নিয়মিত গোসল করানো এবং শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
৫. বাজারজাতকরণ: সাধারণত ৯০ থেকে ১২০ দিনের একটি প্রকল্পে গরুকে মোটাতাজাকরণ করা হয়। ঈদুল আযহার বাজারকে লক্ষ্য করে ৩-৪ মাস আগে থেকে এই কাজ শুরু করলে বেশি লাভবান হওয়া যায়। গরু বিক্রি করার জন্য স্থানীয় হাট-বাজার বা সরাসরি ক্রেতার কাছে বিক্রি করা যেতে পারে।
লাভজনক ব্যবসার কিছু দিক:
 * কম সময়ে অধিক লাভ: গরু মোটাতাজাকরণ একটি স্বল্প মেয়াদী বিনিয়োগ, যা ৩-৪ মাসের মধ্যেই লাভসহ মূলধন ফেরত দেয়।
 * কর্মসংস্থানের সুযোগ: এটি বেকার যুবকদের জন্য একটি চমৎকার আত্মকর্মসংস্থানমূলক উপায়।
 * প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণ: এই ব্যবসা দেশের মাংসের ঘাটতি পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
 * কম বিনিয়োগ: অন্যান্য ব্যবসার তুলনায় এই ব্যবসায় তুলনামূলক কম বিনিয়োগে শুরু করা সম্ভব।
গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ:
 * গরু মোটাতাজাকরণ ব্যবসা শুরু করার আগে এ বিষয়ে সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া যেতে পারে।
 * গরু কেনার সময় অভিজ্ঞ লোকের সাহায্য নেওয়া ভালো।
 * ক্ষতিকর স্টেরয়েড বা হরমোন ইনজেকশন ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে, কারণ এটি গরুর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এবং মানুষের জন্য বিপজ্জনক। প্রাকৃতিক ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে এই ব্যবসা পরিচালনা করা উচিত।
Dr. Ashik's Vet Care  Centre  
Dr-Ashik Billah Dvm                                        
 
                                                                                                     
                                                                                                     
                                                                                                     
                                                                                                     
                                                                                                     
                                                                                                     
                                                                                                     
                                                                                                     
                                                                                                     
                                         
   
   
   
   
     
   
   
  