28/07/2025
জিম করার সময় বা জিম করে আসার পর কেউ কেউ হৃদরোগে (হার্ট অ্যাটাক) আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা শুনলে আমরা সবাই আতঙ্কিত হয়ে যাই। এমন ঘটনা কিছু ক্ষেত্রে ঘটে, তবে এগুলোর পেছনে একাধিক সম্ভাব্য কারণ থাকতে পারে। নিচে তা ব্যাখ্যা করছি:
➡️ মূল কারণগুলো কী হতে পারে?
গোপন হৃদরোগ বা হার্টের সমস্যা আগে থেকেই ছিল:
অনেকেই জানেন না যে তাদের আগে থেকেই করোনারি আর্টারি ডিজিজ, হাইপারটেনশন, বা কার্ডিওমায়োপ্যাথি আছে।
ব্যায়ামের সময় হঠাৎ হার্টের ওপর চাপ বাড়লে হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়, ফলে পূর্ববর্তী সমস্যা থেকে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।
অনিয়মিত বা অতিরিক্ত ব্যায়াম (Overexertion):
যারা হঠাৎ করে, গাইডেন্স ছাড়াই, অতিরিক্ত ওজন তোলা শুরু করেন বা একসাথে অনেকক্ষণ ব্যায়াম করেন, তাদের হার্টের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে।
বিশেষ করে যারা আগে ব্যায়ামের অভ্যাসে ছিলেন না, তাদের জন্য এটা বিপজ্জনক হতে পারে।
ডিহাইড্রেশন বা ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্য হারানো:
ঘাম ঝরলে শরীর থেকে সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম চলে যায়, যা হার্ট রিদম ব্যাহত করতে পারে।
এর ফলে আনিয়ন্ত্রিত হার্টবিট বা হার্ট অ্যারিথমিয়া হতে পারে।
স্টেরয়েড বা প্রি-ওয়ার্কআউট সাপ্লিমেন্টের অপব্যবহার:
কিছু জিম উৎসাহীরা অ্যানাবলিক স্টেরয়েড, ফ্যাট বার্নার, বা হেভি ক্যাফেইনযুক্ত প্রি-ওয়ার্কআউট ড্রিংক ব্যবহার করেন।
এগুলো রক্তচাপ বৃদ্ধি করে, এবং হার্টের ওপর ঝুঁকি তৈরি করে।
পর্যাপ্ত বিশ্রামের অভাব ও মানসিক চাপ:
ঘুমের অভাব, মানসিক স্ট্রেস, এবং দুশ্চিন্তার কারণে ব্যায়ামের সময় হার্ট ঠিকভাবে কাজ না করে।
➡️ কে ঝুঁকিতে আছেন?
যাদের বয়স ৩০-এর উপরে এবং পূর্বে কখনো ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি করেননি,
ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা ফ্যামিলি হিস্ট্রিতে হৃদরোগ আছে, ধূমপান করেন বা অতিরিক্ত ওজন আছে, যারা সাপ্লিমেন্ট বা স্টেরয়েড নিচ্ছেন.
✅ প্রতিরোধে করণীয়:
ব্যায়াম শুরুর আগে মেডিকেল চেকআপ করানো উচিত — বিশেষ করে ECG, BP, এবং লিপিড প্রোফাইল।
ওয়ার্ম আপ ও কুল-ডাউন অপরিহার্য — হঠাৎ ব্যায়াম শুরু বা বন্ধ না করা।
প্রফেশনাল ট্রেইনারের গাইডেন্সে ব্যায়াম করা উচিত।
ডিহাইড্রেশন এড়াতে ব্যায়ামের আগে-পরে পানি খাওয়া উচিত।
সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
জিম করা স্বাস্থ্যকর, তবে নিজের শরীরের সক্ষমতা বুঝে, সচেতনতার সাথে, গাইডেড পদ্ধতিতে করলে এটি খুবই উপকারী। সমস্যা হয় তখনই, যখন আমরা অন্ধভাবে অনুশীলন করি বা ঝুঁকির লক্ষণগুলো উপেক্ষা করি।
আপনার শরীর আপনার সঙ্গী — তাকে ভালোবাসুন, সময় দিন।
আপনার সুস্বাস্থ্যের জার্নিতে পাশে রাখুন একজন পুষ্টিবিদ।
✍️ Nutritionist & Diet Consultant:
Helena Akter
BSc(Hons) & MSc in Food & Nutrition
PGT ( Clinical Nutrition & Dietetics) BADN
Training on Clinical Nutrition & Dietetics- BIRDEM
Experienced in Personalized Diet Counselling
Specialist in Child Nutrition and Lifestyle Management.