19/09/2022
🍁 পা মচকে গেলে কি করণীয় ?
*****************************
🌿 পা মচকে যাওয়া / Ankle sprain
পা মচকে যাওয়া খুব সাধারন একটি সমস্যা।আমাদের চেম্বারে প্রায়ই এই ধরনের সমস্যা নিয়ে রুগীরা আসে। চলার পথে ছোট-খাটো গর্তে পা পড়ে, সিঁড়ি দিয়ে ওঠা- নামা করার সময়, খেলা-ধূলা করার সময় এ সমস্যা হতে পারে। তাছাড়া দৈনন্দিন জীবনে রিকশা কিংবা বাস থেকে নামার সময়, জুতার সমস্যার কারনে বিশেষ করে মেয়েরা যারা উঁচু হিল জুতা ব্যাবহার করেন, তাদের এধরনের সমস্যা খুব বেশী হয়ে থাকে।
মচকে যাওয়ার সাথে সাথে আক্রান্ত স্হান ফুলে যায় এবং ব্যাথার অনুভূত হয়। এই ব্যাথা এবং ফুলে যাওয়া নির্ভর করে মচকে যাওয়ার ধরনের উপর। সাধারনত প্রতিটি জয়েন্টের চারপাশে ছোট বড় অনেকগুলো লিগামেন্ট থাকে এবং এই লিগামেন্টগুলো অসংখ্য ফাইবার দারা তৈরী। মচকে যাওয়ার সময় এই লিগামেন্টের ফাইবারগুলো কিছু ছিঁড়ে যায়। আঘাতপ্রাপ্ত লিগামেন্ট এবং তাদের ফাইবারের উপরই ব্যাথা এবং ফুলে যাওয়ার তীব্রতা নির্ভর করে। অনেক সময় আঘাতপ্রাপ্ত স্হানের ছোটছোট রক্তনালী ছিঁড়ে গিয়ে আক্রান্ত স্হান নীল বর্ণ ধারণ করে ( bruise discoloration)।
সামান্য পা মচকালে এর চিকিৎসা ঘরেই সম্ভব, তবে অতিরিক্ত ব্যাথা এবং ফুলে গেলে ডা. এর স্বরণাপন্ন হতে হবে। অনেক সময় আঘাত প্রাপ্ত লিগামেন্টের সাথে হাঁড়ের কিছু অংশ ভেংগে চলে আসে ( একে বলে Avulsion Fracture ), সে ক্ষেত্রে এক্সরে করা বান্চনীয়।
🐞 পা মচকালে অতিদ্রুত করণীয় ঃ
🌸 আঘাত প্রাপ্ত পাঁয়ের উপর ভর দিয়ে হাঁটা বন্ধ করুন।
🌸 পায়ে যত দ্রুত সম্ভব ঠান্ডা বরফ অথবা পানির ছেঁক দিন -- সরাসরি বরফ না দিয়ে বরফের ব্যাগ ( ice bag / cold water bag ) দিয়ে ২০-৩০ মিনিট ধরে রাখুন। বরফ না পেলে তুলা কিংবা তোয়ালে ভিজিয়ে আধা ঘন্টা হাল্কা ভাবে প্যাঁচিয়ে রাখুন, এতে আঘাত পরবর্তী প্রদাহ কমে যাবে।
🌸 কোন ধরণের মালিশ করবেন না।
🌸 আক্রান্ত স্হান উঁচু করে রাখুন- সাধারণত একটি বালিশের উপর পাঁ রাখাটাই ভালো।
🌸 অনেক সময় পাঁয়ে ক্রেপ ব্যান্ডের ব্যাবহারের নির্দেশ দেয়া হয়, এই ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে এটি যেনো বেশী টাইট / শক্ত হয়ে রক্ত চলাচলের বিঘ্ন না ঘটায় ( compartment syndrome )।
প্রাথমিক চিকিৎসার পরেও যদি ব্যাথা এবং ফুলে যাওয়ার তীব্রতা বেশী থাকে, সে ক্ষেত্রে নিকটস্থ হাসপাতালে অর্থোপডিক ডা. এর পরামর্শ নিন। একটি এক্সরে করে নেয়া ভালো ( কোন ফ্রেকচার আছে কি- না সেটা দেখার জন্য )। প্রয়োজনে ২-৩ সপ্তাহের জন্য প্লাস্টার দিতে হতে পারে। ব্যাথা নাশক প্রয়োজন হতে পারে। ডায়াবেটিস থাকলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখুন।