09/11/2022
কীভাবে প্রেগন্যান্সি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখবেন?
১) নিয়মিত চেকআপঃ
আপনি ইতিমধ্যেই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে থাকলে প্রতিদিন শুগার লেভেল চেক করুন। বাসায় বসেই অথবা বাসার একদম কাছে কোন ঔষধের দোকান বা ক্লিনিক থেকেও চেক করতে পারেন। বাসায় বসে চেক করতে VivaChek Ino ডায়বেটিস মেশিন কিনে নিতে পারেন।
নিয়মিত চেকআপ-এর মাধ্যমে আপনি বুঝতে পারবেন যে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আপনি যা কিছু করছেন তা কার্যকর হচ্ছে কিনা। এতে করে আরো সাবধান হবার প্রয়োজন থাকলে তা আগে থেকেই বুঝে যাবেন।
আর যদি আপনি প্রেগন্যান্সি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত নাও হয়ে থাকেন, তবুও সপ্তাহে একবার করে ব্লাড শুগার চেক করুন এবং নিচের লক্ষণ গুলোর কথা খেয়াল রাখুন।
· অতিরিক্ত ক্লান্তি
· মুখের ভেতর শুষ্কভাব অনুভব করা
· স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পানি পিপাসা পাওয়া
· বারবার প্রস্রাব হওয়া
· ইনফেকশন সহজে না সাড়া, অথবা বারবার হওয়া
· চোখে ঘোলাটে দেখতে পাওয়া
মনে রাখবেন, সমস্যা সমাধানের প্রথম ধাপ হচ্ছে সঠিকভাবে সমস্যা নির্ণয় করা।
২) যা কিছু খেতেপারবেনঃ
ডায়াবেটিস মানেই আপনি শর্করাজাতীয় খাবার খাওয়া বন্ধ করে দেবেন তা নয়। শর্করা জাতীয় খাবার ছাড়া মানুষ চলতে পারেনা, আর গর্ভাবস্থায় তো আরো পারবেন না। তবে শর্করার মধ্যেও ভাল-মন্দ দুই ধরণেরই আছে। এছাড়া ব্যালান্সড ডায়েট করতে গেলে শর্করার পাশাপাশি আপনাকে আমিষ, সব্জি, এবং ফলমূলও যোগ করতে হবে
আপনার ডায়েটে আজ থেকেই যোগ করুনঃ
· আটার রুটি (লাল আটা হলে ভাল)
· ভালভাবে সিদ্ধ করা ডিমের সাদা অংশ
· ছোলা সেদ্ধ
· কাজু বাদাম, কাঠ বাদাম ইত্যাদি
· মাছ এবং মুরগি (ভালভাবে সিদ্ধ করে রান্না করা)
· মেথি ডাল
· টকদই
· শাক ও সব্জি
· ফলমুল
· নন ফ্যাট মিল্ক
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ আমরা এখানে ডায়াবেটিক রোগিদের জন্য কিছুভাল খাবারের কথা উল্লেখ করেছি মাত্র। একজন পুস্টি বিশেষজ্ঞই পারেন আপনার উচ্চতা,ওজন, জীবন-যাপনের ধরণ ইত্যাদি বিশ্লেষণ করে খাবারের পরিমাণ এবং আর কি খাবেন বা বাদ দেবেন তা নির্ধারণ করে দিতে।
৩) যা কিছু খাওয়াবন্ধ করবেনঃ
· সাদা চালের ভাত (একদম না পারলে অল্প করে লালচালের ভাত খাবেন)
· পাউরুটি (প্রসেসড ফুড ভাল নয়, স্পেশালিপ্রেগন্যান্সি ডায়াবেটিক অবস্থায়)
· ফ্রুট ড্রিঙ্ক/জুস [১০০ গ্রাম ফলের চেয়ে ১০০গ্রাম জুসে শর্করা অনেক বেশি]
· ফাস্ট ফুড
· গরু-খাসীর মাংস অথবা চিংড়ি ভুনা
· খাবারে বাড়তি লবণ
· চিনি দিয়ে তৈরি যেকোনও খাবার (মিস্টি, শেমাই,পায়েস, কেক, ইত্যাদি)
· অপাস্তুরিত দুধ (যা সরাসরি খামার থেকে দিয়েযায়)
চা খাবার অভ্যাস থাকলে তা দিনে ২ কাপের বেশি না এবং অবশ্যই চিনি ছাড়া। তবে বাংলাদেশে জন্মে মিস্টি স্বাদ তো একবারে ছেড়ে দেয়া যায় না। তাই চিনির বিকল্প যেমন ZeroCal ব্যবহার করতে পারেন। এটি আপনার পাশের ফার্মেসি ও জেনারেল স্টোরেই পাবেন।
৪)খাবারের টাইমিংঃ
প্রেগন্যান্ট অবস্থায় এমনিতেই সকালে ঘুম থেকে উঠে অনেক অস্বস্তি লাগে, আর ডায়াবেটিস থাকলে এটি আরও বেড়ে যায়। তাই সকালে ঘুম থেকে ওঠার সাথে সাথেই সল্ট বিস্কুট/ক্র্যাকারস ইত্যাদি খেয়ে নেবেন।
সকালের নাস্তা আর দুপুরের খাবারের মাঝে (টি টাইম) একটা আপেল/কমলা/পেয়ারা খেয়ে নেবেন। বিকালে ছোলা সেদ্ধ খেতে পারেন। প্রতিবেলার খাবার টাইম মত খাবেন এবং কোন বেলার খাবার বাদ দেবেন না। না খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা আরো জটিল হয়ে পড়ে।
৫) হাল্কা এক্সারসাইজঃ
মনে রাখবেন, প্রেগন্যান্ট অবস্থায় আপনি কোন ভারী ব্যায়াম করতে পারবেন না। তবে হাটাহাটি, সাতার কাটা ইত্যাদি করতে পারেন। বাইরে গিয়ে হাটা অসুবিধা হলে বাসায় জগিং অথবা সাইক্লিং মেশিন কিনে নিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন যাতে নিজের ওপর অতিরিক্ত ধকল না পড়ে।
নিয়মিত হাল্কা এক্সারসাইজ আপনার শরীরের বাড়তি ক্যালরি কম রাখতে সাহায্য করবে। তবে নিচের এই অবস্থাগুলো আপনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হলে এক্সারসাইজ করার আগে আপনার গাইনী ডাক্তারের পরামর্শ নিনঃ
· রক্তপাত হওয়া
· আগে এক/একাধিকবার মিসক্যারিজ(গর্ভপাত)
· আগে প্রি-ম্যাচিউরড ডেলিভারি হয়েছে
এরকম প্রয়োজনীয় তথ্য সমৃদ্ধ পোস্ট পেতে আমাদের পেইজ ফলো করুন।
ধন্যবাদ