25/11/2023
ইব্রাহিম কিসকো,ফি*লি**স্তি*নের গা-যার বাসিন্দা।ঢাকা মেডিকেলের ৭৮ ব্যাচের স্টুডেন্ট।প্রায় দুই বছর আগে যখন ও ডিএমসিতে এসেছিল তখন আমার পাকিস্তানি ব্যাচমেট মোহাম্মদ আমির আমাকে নক দিয়েছিল ওর ব্যাপারে।কারন ইব্রাহিম ইংরেজি পারতো না তখন,শুধু আরবিতে কথা বলতো।আমির শুনেছে আমি আরবি শিখছি তো আমি কমিউনিকেশনে হেল্প করতে পারবো কি না!
যাই হোক তখন ব্যস্ততার কারনে আর ইব্রাহিমের সাথে যোগাযোগ করা হয়ে ওঠে নি।
রিসেন্টলি ওর একটা ভিডিও মে বি অনেকেই দেখেছেন যে এইবারে বোম্বিং শুরুর পর ওর ফেমিলির সাথে প্রায় ৭ দিনের মতো যোগাযোগ করতে পারে নাই।বেচে আছেন কি শাহাদাহ বরন করেছেন ততটুকু আপডেটও তার কাছে ছিলো না!
নির্ঘুম,দুশ্চিন্তার কয়েক শত ঘন্টা পরে ইব্রাহিম জানতে পেরেছে তার পরিবার বেচে আছে তবে তাদের বাড়ি বোমা মেরে গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
ইব্রাহিমের বংশের নাম কিসকো।এই পর্যন্ত ইব্রাহিমের বংশের প্রায় ৭৬ জন সদস্য শাহাদাত বরন করেছেন।ইব্রাহিমের বয়স মাত্র ২১/২২ এর মত অথচ যে অলরেডি ৪ টা যুদ্ধে এটেন্ড করেছে।ও গল্পে গল্পে বলতেছিলো
"আমরা যুদ্ধের দিনগুলোতে রাতে এই প্রিপায়েরেশন নিয়েই থাকতাম যে পরবর্তী ভোর আমার অন্য জগতে হতে পারে"।
ও যখন শুরুতে এখানে এসেছিল ও আমাদের খাদ্যাভ্যাস জেনে অবাক হয়েছিল যে আমরা তিনবেলা পেটপুরে খাই।অথচ ও গা-জ্জায় একবেলা/দুই বেলা খেয়েই সবাইকে খুশি থাকতে দেখেছে।
আমাদের আড্ডায় পাকিস্তানি হাম্মাদও উপস্থিত ছিলো।হাম্মাদ ওর গল্প শুনতেছিলো আর মাঝে মাঝেই বলে উঠতেছিলো
" তাদের(ইব্রাহিমদের) যে দিকটা আমাকে অবাক করে তা হলো তাদের ধৈর্য্য।এটা তারা কিভাবে অর্জন করেছে আর কিভাবে ধরে রাখতেছে তা বিস্ময় লাগে।"
এটা আমারও বিস্ময় লাগে।ফি*লিস্তিন,সিরিয়া,ইয়েমেনে.....যারা বেচে আছেন এটাকে কি আদোও জীবন বলে??বোমার শব্দে ঘুম ভেঙে পরিবারে কাউকে মৃত দেখা,একবেলা খাবার পানির জন্য আকাশের পানে তাকিয়ে থাকা,শীত কিংবা গরম তাবুই শেষ ভরসা....দূর্দশার গল্পের শেষ নেই।
ইব্রাহিম হাসি মুখেই বললো,
"আল্লাহ শামের জন্য সেরকম মানুষই হয়তো পাঠিয়েছেন যাদের বিশ্বাস এত স্ট্রং থাকবে যে পৃথিবীর সবচেয়ে কষ্ট ও কাঠিন্যের জীবন পেয়েও তারা আল্লাহর কাছে সবচেয়ে শোকরকারী মানুষ হবেন"।
আমি টপিক চেঞ্জ করে ইব্রাহিমকে ক্যারিয়ার নিয়ে কিছু প্রশ্ন শুরু করলাম।ইব্রাহিম বললো,,
"ব্রাদার,আমরা আগে(যুদ্ধের দিনে) এটা জানতাম না আগামীকাল পৃথিবীতে থাকবো কি না।আর এখন এটা কিভাবে ভাবি আগামী ৩/৪ বছর পরে আমি কোথায় কি করবো!হ্যা,কিছু পরিকল্পনা তো আছে।কিন্তু আমাদের জীবন তো অনেক বেশী আন-প্রেডিক্টেবল।আল্লাহ আমাদের জন্য যেভাবে যেখানে যা রাখছেন তাতেই সন্তুষ্ট'।
ওর কথায় আমি বুঝলাম ওরা এমন এক জাতি যাদেরকে আল্লাহ জীবনের স্বাদ দিয়েছেন সবচেয়ে কষ্টের মধ্যেও।
ইব্রাহিম উঠতে উঠতে বললো,
"I firmly believe that one day we will live one of the most peaceful,satisfying,heavenly life on earth"
"When i see their videos how they become grateful to Allah it seems like they are already living the heavenly life",I added.
From Sabbir Hossain Sagor