18/01/2024
জীবনে কখনো কোমর ব্যথায় কষ্ট করেনি এমন মানুষের সংখ্যা কম। কারও অল্প সময়ের জন্য, কারও দীর্ঘ সময়ের জন্য এটি হয়। কোমর ব্যথা অনেক কারণে হতে পারে।
কোমর ব্যথার জন্য আমরা নিজেরাই অনেকাংশে দায়ী। যেমন আমরা অনেকেই জানি না দেহের সঠিক অঙ্গভঙ্গি কোনটি, ভুল কোনটি। তবে যদি সঠিক নিয়মে ওঠা-বসা এবং কাজ করা যায় তবে ৭০% কোমর ব্যথা ভালো হয়ে যায়। মেরুদন্ডের নিচের দিকে অবস্থিত কোমরের যে অংশ থাকে তাকে আমরা লাম্বার রিজন বলে থাকি। মেরুদন্ডের প্রতিটি হাড়ের মধ্যে একটি নরম অংশ থাকে, যাকে আমরা ডিস্ক বা ইন্টার ভারটিবেরাল ডিস্ক বলে থাকি। আঘাতজনিত কারণে, অতিরিক্ত জার্নি, ওজনের জিনিস নিয়ে চলা, অতিরিক্ত শুয়ে-বসে কাজ করা, ভারী জিনিস বহন করে চলা ইত্যাদি নানা কারণেই ব্যথা হয়ে থাকে। যাদের বয়স ৪০-এর বেশি তাদের মেরুদর হাড়ের ক্ষয়জনিত কারণে ব্যথা হয়ে থাকে। কিডনির সমস্যার কারণে কোমরে ব্যথা হয়, যা পুরোপুরি ঠিক নয়। কোমর ব্যথা হলে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করলে ব্যথা থেকে মুক্তি মিলবে।
কোমর ব্যথার কারণ
কোমর ব্যথার অনেক কারণ আছে। তার মধ্যে কিছু কমন কারণ হলো
উপুড় হয়ে কোনো ধরনের ভারী বস্তু ওঠানো। দীর্ঘক্ষণ বসে বা দাঁড়িয়ে কাজ করলে। কোমরের মাংসপেশি দুর্বল হলে। কোমরে কোনো ধরনের আঘাত পেলে। বয়সের কারণে হাড়ের ক্ষয় হলে। চখওউ বা ডিস্ক প্রলাপ্সের কারণে। অতিরিক্ত ওজনের জন্য। মেরুদ-ের হাড়ের গঠনগত কারণে। আর্থ্রাইটিসের কারণে। মেরুদন্ডের টিউমার বা বোন টিউমারের কারণে। মেরুদন্ডের ডিফরমিটির কারণে। নরম ফোমের বিছানায় দীর্ঘক্ষণ শুয়ে থাকলে। দীর্ঘক্ষণ উপুড় হয়ে শুয়ে বই পড়লে বা সোফায় শুয়ে টিভি দেখলে।
প্রতিকার
উপুড় হয়ে কোনো ধরনের ভারী বস্তু ওঠানো যাবে না। নরম ফোমের বিছানায় দীর্ঘক্ষণ শুয়ে থাকা যাবে না। অতিরিক্ত ওজন কমাতে হবে। বসার সময় সোজা হয়ে বসতে হবে। কোন পজিশনে বসে দীর্ঘক্ষণ অফিস অথবা বাসায় কম্পিউটার, ল্যাপটপ চালাবেন তা জানা। দীর্ঘ ভ্রমণ করার সময় গাড়ির মাঝামাঝি আসন গ্রহণ করতে হবে।
চিকিৎসা
কোমর ব্যথায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আছেন, তাদের সঙ্গে পরামর্শ নিয়ে NSAID-জাতীয় ওষুধ এবং মাসল রিলাক্সিন, ভিটামিন-বি১, বি৬, বি১২-জাতীয় ওষুধ সেবন করা যেতে পারে। ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক ব্যায়াম নিয়মিত করলে কোমর ব্যথার উপশম পাওয়া সম্ভব। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। ব্যথার ধরনভেদে বিশ্রামের সময় নির্ভর করবে। গরম পানির সেঁক নিলে ভালো উপকার পাওয়া যাবে। ভ্রমণ করার সময় কোমরের সাপোর্ট বেল্ট (Lumber Corset) ব্যবহার করলে উপকার হবে। ভিটামিন, ক্যালসিয়াম এবং প্রোটিনজাতীয় খাবার বেশি খেতে হবে। শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কোমর ব্যথার সঠিক ফিজিওথেরাপির কলাকৌশল জানা থাকলে আর চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ফিজিওথেরাপি দেওয়া হলে অপারেশনের প্রয়োজন পড়ে না।