03/06/2025                                                                            
                                    
                                                                            
                                            গর্ভাবস্থায় রক্তশূন্যতা: কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার।
গর্ভাবস্থায় রক্তশূন্যতা গর্ভকালীন জটিলতার অন্যতম কারণ। এটি বিশ্বব্যাপী সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা। স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে গর্ভকালীন রক্তশূন্যতার জন্য ২০ শতাংশ নারীর মৃত্যু হয়।
গর্ভকালীন রক্তশূন্যতা কী
একজন গর্ভবতী নারীর রক্তে যদি হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ ১১-এর কম থাকে, সে ক্ষেত্রে এ অবস্থাকে গর্ভকালীন রক্তশূন্যতা বলা হয়।
গর্ভাবস্থায় রক্তশূন্যতার কারণ
গর্ভাবস্থায় রক্তশূন্যতার বেশ কিছু কারণ রয়েছে।
১. গর্ভাধারণের কারণে রক্তস্বল্পতা হতে পারে। কারণ এ সময় শরীরের জলীয় উপাদান বেড়ে যায়। তখন রক্তের লোহিত কণিকা কম তৈরি হয়। সে কারণে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়।
২. আয়রনযুক্ত খাবার কম খেলে রক্তশূন্যতা হয়।
৩. গর্ভাবস্থায় বমি হওয়াকেও রক্তশূন্যতার জন্য দায়ী করা হয়।
৪. গর্ভাবস্থার আগে থেকেই রক্তস্বল্পতা থাকতে পারে। গর্ভাবস্থার পর সেটি বেড়ে যেতে পারে।
৫. ভুল খাদ্যাভ্যাস, অর্থাৎ সুষম ও সঠিক খাবার না খেলে রক্তশূন্যতা হতে পারে। এর প্রভাব তো রয়েছেই। এখনকার অনেক গর্ভবতী মা জাংক ফুড বা পচনশীল খাবার খেয়ে থাকেন। এটি রক্তশূন্যতার ঝুঁকি তৈরি করে। আমরা স্বাভাবিকভাবেই জানি লালশাক, কচুশাক, ছোট মাছ, ডিম, শিং মাছ, কাঁচা কলা, আনারের মতো খাদ্যে আয়রন রয়েছে। গর্ভাবস্থায় অনেকেই এসব খেতে চান না বা খেতে পারেন না।
৬. ফোলেটের অভাবেও রক্তশূন্যতা হয়। ফোলেট হলো এক ধরনের ভিটামিন বি, যা শরীরে নতুন কোষ তৈরি করতে দরকার হয়। এটি রক্তের লোহিত কণিকা গঠনে সহায়তা করে। গর্ভাবস্থায় রোজই ফোলেটের চাহিদা বাড়ে। ফোলেটের অভাবে স্বাস্থ্যকর লোহিত কণিকার পরিমাণ কমে যেতে পারে। ফোলেটের অভাবজনিত রক্তাল্পতায় শিশুর নিউরাল টিউবের অস্বাভাবিকতা (স্পিনা বিফিডা) দেখা দিতে পারে। একই সঙ্গে জন্মের সময় কম ওজনের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যগত জটিলতা দেখা দিতে পারে।
৭. আয়রনের অভাবজনিত রক্তশূন্যতা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। এ ছাড়া লোহিত কণিকা সময়ের আগেই ভেঙে গেলে রক্তশূন্যতা হয়।
৮. দীর্ঘস্থায়ী নানা রোগ, যেমন: কিডনি ড্যামেজ বা অকেজো, লিভার অকার্যকর, থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা, আর্থ্রাইটিস, যক্ষ্মাসহ নানাবিধ রোগে রক্তশূন্যতা হতে পারে।
লক্ষণ
গর্ভাবস্থায় রক্তশূন্যতার কিছু সাধারণ লক্ষণ রয়েছে। এগুলো হলো ক্লান্তি অনুভব ও দুর্বলতা, মাথা ঘোরা, শ্বাস–প্রশ্বাসের সমস্যা হওয়া, দ্রুত বা অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, বুকে ব্যথা, হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া, ঠোঁটের কোণে ক্ষত, জিহ্বায় ঘা।
এই লক্ষণগুলো প্রাথমিকভাবে হালকা হতে পারে, তবে এগুলো উপেক্ষা করলে পরবর্তী সময়ে ঝুঁকির কারণ হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে লক্ষণগুলো আরও খারাপ দিকে যেতে পারে। তাই উল্লিখিত লক্ষণ বা উপসর্গগুলোর কোনোটি থাকলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
জটিলতা
অতিরিক্ত রক্তস্বল্পতা তথা রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ ৭ এর কম হলে মা ও গর্ভের শিশুর বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে প্রি-একলাম্পসিয়া, কার্ডিয়াক ফেইলিউর, রোগ সংক্রমণ ও প্রসব-পরবর্তী অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ।
প্রতিকার১. গর্ভধারণের আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হবে।
২. রক্তে হিমোগ্লোবিন শতকরা ১০ গ্রামের কম থাকলে চিকিত্সকের পরামর্শ নিতে হবে।
৩. কলিজা, মাংস, ডিম, সবুজ শাকসবজি, মটরশুঁটি, শিম, কলা, পেয়ারা, আনারের মতো আমিষ, ভিটামিন ও আয়রনসমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খেতে হবে।
৪. ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আয়রন ট্যাবলেট খেতে হবে।
৫. কোনো সংক্রমণ থাকলে দ্রুত চিকিত্সা করাতে হবে। গর্ভকালীন সময়ে নিয়মিত চেকআপ ও শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতি তিন মাসে অন্তত একবার করে হিমোগ্লোবিন পরীক্ষা করাতে হবে।
৬. রক্তাল্পতা থাকলে চিকিত্সকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিত্সা করাতে হবে। সুস্থ শিশুর জন্মের প্রধান শর্ত মায়ের পূর্ণ সুস্থতা। তাই উভয়ের সার্বিক সুস্থতার জন্য গর্ভবতী মায়ের সুস্থতা নিশ্চিত করতে হবে।
আলহাজ্ব ডা:মো:শহীদুল্লাহ 
ডি.এইচ.এম. (ঢাকা),,
সি.এমএস( কলিকাতা,ভারত)।
জার্মান হোমিও হল,আটানি বাজার রোড, মুক্তাগাছা,ময়মনসিংহ। 
সিরিয়াল দিতে যোগাযোগ করেন এই নাম্বারে: 01923102332