02/07/2020
আস সালামু আলাইকুম!
আশা করছি করোনা মহামারীর এই চরম সংকটকালীন সময়টাতে সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজকে যে বিষয় নিয়ে কথা বলব তা হল ভিটামিন ডি।
কারন এই লকডাউন আমরা সবাই ঘরবন্দী। আমাদের বাইরে বের হওয়া হচ্ছে না ফলে সূর্যের আলো আমাদের শরীরের সংস্পর্শে আসতে পারছে না তাই আমাদের শরীর পর্যাপ্ত ভাবে Vitamin D সংশ্লেষ হতে পারছেনা। আমরা জানি যে, সকাল ১১ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত সূর্যের আলো আমাদের শরীরে এই ভিটামিন টি তৈরি করতে সাহায্য করে।এই ভিটামিন আমাদের শরীরে Immunity বৃদ্ধি করে যা শরীরে করোনার মত প্রাণঘাতী ভাইরাস কে বাসা বাঁধতে দেয় না। এছাড়া বিভিন্ন Case Study তে দেখা যায় যে, অধিকাংশ মহিলা যারা ঘরবন্ধী থাকে এবং সূর্যের আলোর সংস্পর্শে কম আসা হয় তাদের Vitamin D Deficiency থাকে। ফলে তাদের বিভিন্ন রোগসহ ওজন বেড়ে যাওয়া, মেদ ভুঁড়ি হওয়া এবং Osteoporosis এর মতো রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাছাড়া একটা নির্দিষ্ট বয়সের পরে মেনোপোজে Vitamin D Deficiency দেখা যেতে পারে। তবে আজকাল এত বেশি Vitamin D Deficiency র লক্ষণ দেখা যাচ্ছে যে, ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে স্কুল পড়ুয়া শিশু-কিশোর, মধ্য বয়সী পুরুষ ও বৃদ্ধ সবার মধ্যেই বিদ্যমান।
বিশেষ করে মাঝ বয়সীরা যারা দিনের বেশিরভাগ সময় কাটিয়ে দেন অফিসে তাদের অজান্তেই এই দীর্ঘ সময়ের সূর্যের আলোর আনুপস্থিতি তাদেরকে Vitamin D Difficiency এর ঝুঁকিতে ফেলে দিচ্ছে। কিছু গবেষণায় দেখা যাচ্ছে যে, যাদের Vitamin D Difficiency বেশি তাদের করোনা সংক্রমিত হবার ঝুঁকিও বেশি। তাই সময় এসেছে নিজেকে নিয়ে ভাবার এই Micro Nutrient এর ঘাটতি বড় কোন রোগের কারন হতে পারে, ভাবা যায়!?
আচ্ছা এখন আসা যাক, কেন আমাদের শরীরে কমে যাচ্ছে ভিটামিন ডি?
প্রথমেই বলা যায় সূর্যের আলোতে কম আসা, রাত জাগা, শরীরে ভিটামিন ডি এর সঞ্চয় কম থাকা, প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ভিটামিন ডি Rich food কম রাখা, প্রাণীজ প্রোটিন কম খাওয়া, ছোট বেলায় দুধ ও দুগ্ধজাতীয় খাবার কম খাওয়া।আজকাল Dairy Product বা দুধেও Vitamin D কম পাওয়া যাচ্ছে যার কারণ রোদে চড়া ঘাস খাওয়া গরুর দুধ আমরা পাচ্ছি না। আমরা পাচ্ছি Farm Based গরুর দুধ তাও আবার বহুলাংশে ভেজাল। তাছাড়া ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার কম খাওয়া, ঔষধের প্রভাব, ডায়বেটিস, Kidney Disease, Gall blader stone থাকলে Vitamin D Difficency হতে পারে।
এখন আসা যাক আমাদের করনীয় কি তা জেনে নেই।
Vitamin D Rich food খেতে হবে। যদিও Vitamin D Rich food খুব বেশি নেই তবে অবশ্যই রোগ অনুযায়ী কোন খাদ্য উৎস থেকে খাবার নির্বাচন করবেন তার অবশ্যই তারতম্য থাকবে।
Vitamin D দুই ভাবে পাওয়া যায়।
(১) Vitamin D2 Argocalceferol যা উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে এবং
(২) Vitamin D3 Cholecalciferol যা প্রানিজ্জ উৎস থেকে পাওয়া যায়।
কিন্ত যে উৎস থেকেই আমরা গ্রহণ করিনা কেন সূর্যের আলো Vitamin D সংশ্লেষণের জন্য জরুরি।
সাধারণত আমরা ভিটামিন ডি; ডিমের কুসুম, দেশি গরুর দুধ Dairy Product, Fortified Milk, Cod Liver oil, সামুদ্রিক মাছ, প্রাণীজ আমিষ, মাশরুম, গরুর কলিজা ইত্যাদি থেকে পেয়ে থাকি।
আমাদের প্রতিদিন (400-800 IU Vitamin D) গ্রহণ করলে প্রতিদিনের চাহিদা পূরণ হয়ে যায়।
যদি আপনার Vitamin D Difficency থাকে তবে অবশ্যই কোন Health Specialist পরামর্শে Supplement নিতে পারেন।
যেটা অবশ্যই ঠিক রাখতে হবে, সেটা হল পর্যাপ্ত ঘুম। ৬/৭ ঘণ্টা আমাদের অবশ্যই ঘুমাতে হবে কারণ রাত ১০ টা থেকে রাত ৩ টার মধ্যে Repairing Hormone গুলো বেশি Secretion ঘটে।সেই সাথে আরও একটি কথা না বললেই নয় তা হল, নিয়মিত ব্যায়াম। আপনি যদি সকালের রোদে কমপক্ষে ১০-৪৫ মিনিট যে কোন ধরনের ব্যায়াম করেন তাহলে আপনি নিজেই বুঝবেন আপনার Benefit!
আপনার Weight loss, নিদ্রাহীনতা, Joint pain সব উধাও হয়ে যাবে, সব থেকে বড় বিষয় আপনি Sun Shine Vitamin টি পাচ্ছেন।
সবার সুস্থতা কামনা করে, শুভেচ্ছা জানিয়ে শেষ করছি।
স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সংক্রান্ত তথ্য পেতেঃ
https://web.facebook.com/Fouzias-Nutrition-Corner-102608351505802