
12/08/2025
রবীন্দ্র সঙ্গীতের যোগ্য গায়ক
আনোয়ারুল হোসেন।
Shirin Soraiya
রবীন্দ্রনাথের সমস্ত সৃষ্টিকর্মের মধ্যে সবচেয়ে গভীরভাবে নিজেকে প্রকাশ করেছেন তাঁর গানের মধ্যে। তিনি নিজেই বলে গিয়েছেন,বাঙালী তাঁর সৃষ্টি সম্ভারের অন্যান্য সকল শাখা সম্পর্কে যা-ই ভাবুক,তাঁর গানকে কোনোদিনই ভুলতে পারবেনা। স্বাধীন সুরবিহারের সুযোগ নিয়ে কেউ যেন গানকে বিকৃত করতে না পারে সেজন্য তাঁর ইচ্ছাতেই গান স্বরলিপিবদ্ধ করা হয়। বহুখন্ডে প্রকাশিত স্বরবিতানে রবীন্দ্র সঙ্গীতের স্বরলিপি পাওয়া যায়। রবীন্দ্রনাথ তাঁর গান নিয়ে যেমন আত্মবিশ্বাসী ছিলেন তেমনি ছিলেন স্পর্শকাতর। এজন্য তিনি বলেছিলেন তাঁর গান যেন যথাযথভাবে গাওয়া হয়। তাই একদিকে যেমন তিনি তাঁর গানের কথার মর্ম উপলব্ধির জন্য গায়কদের বলেছেন,তেমনি বলেছেন সাংগীতিক দক্ষতা অর্জন করতে। এই দুইয়ের সম্মিলনেই রবীন্দ্র সঙ্গীতের প্রকৃত রুপ ফুটে ওঠে। এই রুপ ফুটিয়ে তোলাই রবীন্দ্র সঙ্গীতের বিশুদ্ধতা। রচয়িতা যেভাবে সঙ্গীত রচনা করেছেন তাকে ঠিক সেভাবে গাইতে হবে-এমন করে গাওয়াটাই হবে রচয়িতার সার্থকতা। রবীন্দ্রনাথের গান শিল্পী ইচ্ছামত ভঙ্গি দিয়ে গাইলে,তাতে গানের স্বরুপ নষ্ট হয় সন্দেহ নেই। গায়কের কন্ঠের উপর রচয়িতার জোর খাটেনা,সুতরাং ধৈর্য ধরে থাকা ছাড়া অন্য কোনো পথ থাকেনা। কন্ঠস্বরকে নিষ্কম্প ও স্বরজ্ঞান সাধনা করতে হবে,মুদারার "সা"-নির্ধারণের উপায় জানতে হবে,বাদ্যধ্বনি ও কন্ঠধ্বনিকে মিলিয়ে এক ধ্বনিতে পর্যবসিত করার কৌশল,তাল ও লয়ের ধারণা এবং সঠিক নিয়মানুযায়ী চর্চা করতে হবে। রবীন্দ্র সঙ্গীতের দুটি দিক আছে। প্রথমটি গানের ভাবসম্পদের দিক,অন্যটি গানের ভাবসম্পদকে আয়ত্ত ও অনুধাবন করা এবং প্রথাসম্মত শিক্ষার দ্বারা সুর ও তালের প্রস্তুতিকে পূর্ণ করে তোলা। এ দুটি দিকের মিলন যার মধ্যে ঘটবে সে-ই হবে রবীন্দ্র সঙ্গীতের যোগ্য গায়ক।
১৩/০৮/২০২৫
রাত ১২ টা ৮ মিনিট বাংলাদেশের সময় এখন।