21/10/2025
জনসেবা বন্ধের ষড়যন্ত্র? সেন্ট্রাল হাসপাতাল, পাবনা দ্রুত খুলে দেওয়ার জোর দাবি:
পাবনার স্বাস্থ্যসেবা মানচিত্রে সেন্ট্রাল হাসপাতাল একটি সুপরিচিত এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নাম। এর সুদীর্ঘ পথচলায় এটি কেবল একটি চিকিৎসা কেন্দ্র হিসেবেই নয়, বরং হাজারো রোগীর ভরসা ও আস্থার প্রতীক হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে। কিন্তু সম্প্রতি এই স্বনামধন্য, রোগীবান্ধব ও জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠানটিকে কেন্দ্র করে এক গভীর ও দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ‘ভয়ংকর মিথ্যা নারী হয়রানির অভিযোগ’ উত্থাপন করে হাসপাতালটিকে বন্ধ করে দেওয়ার যে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উঠেছে, তার বিরুদ্ধে আজ পাবনাবাসীকে সোচ্চার হওয়ার সময় এসেছে।
আস্থার প্রতীক সেন্ট্রাল হাসপাতাল:
সেন্ট্রাল হাসপাতাল, পাবনা দীর্ঘদিন ধরে মানসম্মত সেবা, অভিজ্ঞ চিকিৎসক এবং মানবিক আচরণের জন্য স্থানীয় জনগণের কাছে প্রিয়। জটিল অপারেশন থেকে শুরু করে সাধারণ চিকিৎসা—সব ক্ষেত্রেই এই হাসপাতাল নির্ভরযোগ্য ভূমিকা পালন করে আসছিল। প্রতিষ্ঠানটির নিরবচ্ছিন্ন সেবা বহু মানুষের জীবন বাঁচিয়েছে এবং স্বাস্থ্যের নিশ্চয়তা দিয়েছে। স্থানীয় স্বাস্থ্যসেবা খাতে এটি এক বড় শূন্যতা পূরণ করে। এই জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানটি সাময়িক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পাবনা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার অসংখ্য রোগী মারাত্মক ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
মিথ্যা অভিযোগ ও ষড়যন্ত্রের কালো থাবা:
অভিযোগ উঠেছে, সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এই হাসপাতালের বিরুদ্ধে নারী হয়রানির মতো একটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর ও গুরুতর মিথ্যা অভিযোগ সাজানো হয়েছে। যদি এই অভিযোগের পেছনে ব্যবসায়িক প্রতিহিংসা, ব্যক্তিগত আক্রোশ বা অন্য কোনো কুটিল ষড়যন্ত্র কাজ করে থাকে, তবে তা শুধু একটি হাসপাতালের ক্ষতি করছে না, বরং সমগ্র স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট করছে।
আমরা নারী হয়রানির মতো জঘন্য অপরাধের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে বিশ্বাসী এবং এর সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করি। কিন্তু একইসাথে, যদি তদন্তে প্রমাণিত হয় যে এই অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং এটি কেবল হাসপাতাল বন্ধ করার একটি হাতিয়ার ছিল, তবে এর নেপথ্যের ষড়যন্ত্রকারীদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা জরুরি। একটি জনপ্রিয় হাসপাতালকে অকার্যকর করার এই অপচেষ্টা মূলত বৃহত্তর জনস্বার্থের বিরুদ্ধে একটি আঘাত।
দ্রুত হাসপাতাল খুলে দেওয়ার আহ্বান কেন জরুরি?
হাসপাতাল বন্ধ থাকার কারণে সৃষ্ট ভোগান্তি এখন চরমে। জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন এমন অসংখ্য রোগী অন্যত্র গিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন, যা অনেক ক্ষেত্রে জীবন-মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
১. জনভোগান্তি নিরসন: হাসপাতালটি বন্ধ থাকায় রোগীদের চিকিৎসা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। সেন্ট্রাল হাসপাতাল দ্রুত চালু হলে হাজার হাজার মানুষের স্বস্তি ফিরবে।
২. স্বাস্থ্যসেবার ধারাবাহিকতা: এই অঞ্চলের স্বাস্থ্যসেবার ভারসাম্য বজায় রাখতে সেন্ট্রাল হাসপাতালের ভূমিকা অনস্বীকার্য। এর দীর্ঘ অনুপস্থিতি জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
৩. কর্মসংস্থান রক্ষা: হাসপাতালটির সাথে জড়িত অসংখ্য কর্মকর্তা-কর্মচারীর জীবিকা এই প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরশীল। তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে।
৪. ষড়যন্ত্রের প্রতিরোধ: যদি ষড়যন্ত্রের অভিযোগ সত্যি হয়, তবে হাসপাতালটি দ্রুত খুলে দেওয়া কেবল জনসেবার স্বার্থেই নয়, বরং ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশ্য ব্যর্থ করার জন্যও প্রয়োজন।
আমাদের দাবি:
সেন্ট্রাল হাসপাতাল, পাবনার শুভাকাঙ্ক্ষীরা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে জোরালো দাবি জানাচ্ছে:
দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত: নারী হয়রানির অভিযোগের সত্যতা দ্রুততার সাথে ও নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা হোক।
ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ উন্মোচন: যদি অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়, তবে এর নেপথ্যে যারা ষড়যন্ত্র করেছে, তাদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।
অবিলম্বে হাসপাতাল খুলে দেওয়া:
জনস্বার্থ বিবেচনা করে এবং তদন্ত শেষ হওয়ার আগে যেন জনসেবা বন্ধ না থাকে, সেই লক্ষ্যে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেন্ট্রাল হাসপাতালের কার্যক্রম পুনরায় চালু করার নির্দেশ দেওয়া হোক।
পাবনার মানুষ বিশ্বাস করে, মিথ্যা বেশি দিন স্থায়ী হয় না। ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে সেন্ট্রাল হাসপাতাল তার সেবার দুয়ার আবার উন্মুক্ত করবে এবং জনসেবার আলোয় আলোকিত হবে। জনস্বার্থে এই প্রতিষ্ঠানকে অবিলম্বে সচল করা হোক—এটাই পাবনাবাসীর সম্মিলিত দাবি।