19/07/2025
জাম গ্রীষ্মকালীন একটি পুষ্টিকর ফল। স্বাস্থ্যের পক্ষে ভীষণ উপকারী এ ফল টি খেতে দারুণ সুস্বাদু। ভর্তা হিসেবে গরমে খেতে খুবই ভালো লাগে। তবে এ ফলটি বেশি সময় স্হায়ী হয় না, দ্রুত পেকে শেষ হয়ে যায়।
জামের পুষ্টি গুণ
পাকা জামে ভিটামিন এ, সি,, ক্যালসিয়াম, আয়রন, পটাশিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনসিয়াম ইত্যাদি পর্যাপ্ত পরিমাণ পাওয়া যায়।
প্রতি ১০০ গ্রাম জামে
পানি --৮৩.১৩ গ্রাম
শর্করা --১৫.৫৬ গ্রাম
আয়রন-- ১৯ গ্রাম
ক্যালসিয়াম-- ১৯ গ্রাম
ফসফরাস --১৭ গ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম -- ১৫ গ্রাম
পটাসিয়াম --৭৯ গ্রাম
সোডিয়াম ১৪ গ্রাম
রিবোফ্লাভিন. ১২গ্রাম
নিয়াসিন --.২৬ গ্রাম
প্যান্টোথেনিক এসিড--.১৬ গ্রাম
B6--.১৬ গ্রাম
ভিটামিন সি --১৪.৩ মিলিগ্রাম
ঔষধি গুণে ভরপুর জামের রয়েছে অনেক উপকারিতা। যেমন
১. এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে--
জামে ভালো পরিমাণে ভিটামিন সি থাকায় এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং সংক্রমণ রোধ করে।
২. হাড়কে শক্তিশালী ও মজবুত করে-
জামে রয়েছে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, ফলে এটি আমাদের হাড়কে শক্তিশালী ও মজবুত করে।
৩. সংক্রমণ রোধ করে -
জামে ভিটামিন সি, ম্যালিক এসিড, অক্সালিক এসিড, ট্যানিন থাকে ফলে জাম ম্যালেরিয়া রোধ, ব্যাকটেরিয়ারোধী,এবং গ্যাস্ট্রোপ্রটেক্টিভ হিসেবে কাজ করে।
৪. ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে --
জামের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম থাকায় এটা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। জামে জ্যাম্বোলিন নামক এক ধরনের উপাদান রয়েছে এটা স্টার্চকে শর্করায় রুপান্তরিত হতে বাধা দেয়। যার ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৫. উচ্চ রক্তচাপ রোধ করে --
জামে প্রচুর পটাসিয়াম থাকার কারণে এটি আমাদের উচ্চ রক্তচাপ রোধ করে হৃদরোগ সৃষ্টি থেকে রক্ষা করে।
৬. হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে --
জামে রয়েছে আ্যলজিনিক এসিড, এলাজিক এসিড বা এলজিটেনিন্স এন্থোসায়ানিন এবং এন্থোসায়ানিডিন্স। এগুলো শক্তিশালী এন্টিঅক্সিডেন্ট। একারণে জামপ্রদাহরোধী,রোগপ্রতিরোধক এবং কোলেস্টেরলের জারণ রোধ করে হৃদরোগ সৃষ্টিকারী প্লাকগঠনে বাঁধা দেয়।
৭. পরিপাকে সাহায্য করে --
জামে যথেষ্ট পরিমাণে ফাইবার থাকাতে যকৃতকে সক্রিয় করে এবং বিভিন্ন এনজাইম নিঃসরণ বাড়িয়ে হজম ক্ষমতা বাড়ায়।
৮.ক্যান্সার প্রতিরোধ করে --
জামে কেমোপ্রটেকটিভ বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। গবেষণায় দেখা গেছে জামের নির্জাসে রেডিওপ্রটেক্টিভ উপাদান রয়েছে যা ক্যান্সার রোধে ভুমিকা রাখে। জামে পলিফেনলের উপস্থিতির কারণে এটি অ্যান্টকারসিনেজেনিক হওয়ায় ক্যান্সার রোধে ভুমিকা রাখে।
৯. মুখ ও দাঁতের সুস্থতায় ভূমিকা রাখে--
জামের ভিটামিন এবং মিনারেলস্ মুখের দুর্গন্ধ দূরকরে, দাঁত ও মাড়ি শক্ত করে এবং দাতের মাড়ির ক্ষয়রোধ করে। এছাড়া আয়ুর্বেদিক ঔষধ হিসেবে ডায়রিয়া ও আমাশয় নিরাময়ে জামপাতা ব্যবহার করা যায়।
১০.মানষিক স্বাস্থ্যে উপকারী --
কালোজাম টিস্যুকে টানটান হতে সাহায্য করে যা ত্বককে তারুণ্যদীপ্ত করে এবং স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
১১. ত্বককে হাইড্রেট রাখতে পারে--
জামে প্রচুর পরিমানে পানি থাকে বলে এটি শরীরকে হাইড্রেট ও স্বাস্থ্যবান করে।
১২.জাম ডিটক্সিফায়ার হিসাবে দেহে কাজ করে।
১৩. জাম জরায়ু, ডিম্বাশয়, মলদ্বার ও কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে কোলনকে সুস্থ রাখে।
১৪. এনিমিয়া দূর করে -- কালোজামে ভালো পরিমাণে আয়রন থাকায় এটা হিমোগ্লোবিন তৈরি করে এবং দেহের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন পৌঁছে দেহকে সুস্থ রাখতে ভুমিকা রাখে।
১৫. জামের ভিটামিন এবং সি চোখ ও ত্বকেকে সুস্থ রাখে।
১৬. জাম ব্রন নিরাময় করে এবং ত্বকের তৈলাক্তভাব দূর করে