Dr S. M. Masum Ferdous Dinar

  • Home
  • Dr S. M. Masum Ferdous Dinar

Dr S. M. Masum Ferdous Dinar I am a Doctor. Try to help others. Want to expand my digital universe.

সাক্ষাৎ একটি থ্রিলার ও মার্ডার মিস্ট্রি বছর আগে চট্টগ্রামের রাউজানের একটি পুকুর থেকে ভেসে ওঠে কম্বল। পুকুরে এমন মোটা কম্...
08/05/2025

সাক্ষাৎ একটি থ্রিলার ও মার্ডার মিস্ট্রি

বছর আগে চট্টগ্রামের রাউজানের একটি পুকুর থেকে ভেসে ওঠে কম্বল। পুকুরে এমন মোটা কম্বল কে ফেলবে? আশেপাশের বাড়ির প্রতিবেশীরা একে অপরের দিকে মুখ চাওয়াচাওয়ি করে। কম্বলের রহস্য কী?

কিছু প্রতিবেশীর সন্দেহ হয়। তারা পুলিশকে জানায়, ডুবুরিকে জানায়। পুলিশ ডুবুরির সাহায্যে পুকুর থেকে অর্ধগলিত এক লাশ উদ্ধার করে। কোনভাবেই লাশের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয় না। আশেপাশের বাড়ি বা এলাকার কেউ মিসিং হয়নি সহসাই। তাহলে এই লাশ কার?

২০১৭ সালের একটা বিকেল। ঘরে ঢুকেই কেমন একটা সুঘ্রাণ পাচ্ছিল দুই কন্যা। মা'কে জিজ্ঞেস করতে থাকে কিসের ঘ্রাণ এটা। মা তেমন একটা গা করেন না।

পুরো ঘটনাটা বুঝতে যেতে হবে আরও কয়েকদিন পেছনে।

২০১৭ সালের জুন মাস। বর্ষার মৌসুমে চট্টগ্রামে নিজের ঘর থেকে বের হয়ে যায় নাছিমা আক্তারের ছেলে। তারপর বাড়িতে আর ফেরে না। বিদেশ ভুইয়ে স্বামীকেও জানান না, ছেলে নিখোঁজ হবার কথা। ঘটনাচক্রে সেসময়ই দেশে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন নাছিমা আক্তারের স্বামী নাজিম। তিনি কাউকে কিছু না বলে সারপ্রাইজ দিতে হুট করেই হাজির হন স্ত্রী নাছিমা আক্তারের সামনে। কিন্তু সেকি! সারপ্রাইজ হবার বদলে বিরক্তই হন স্ত্রী নাছিমা।

স্বামী নাজিম কারণ বুঝতে পারে না। কিছু একটা বেখাপ্পা লাগে তার। বিষয়টা ধরতে পারেন দ্রুতই। তার ছেলে কোথায়?

স্ত্রী নাছিমা আক্তার স্বীকার করেন ছেলে নিখোঁজ হয়েছে বেশ অনেকদিন হলো, অনেক খোঁজাখুজি করেও পাননি। সাথে এও স্বীকার করেন এই বিষয়টা স্বামী নাজিমকে জানাতে চাননি। কিন্তু এত বড় ঘটনা কীভাবে চাপিয়ে রাখল নাছিমা?

সন্তান নিখোঁজের ঘটনা ক্রমেই রূপ নেয় দাম্পত্য কলহে। নাজিমের কেন যেন কিছুই ভালো ঠেকে না। প্রতিদিন রাতেই ঝগড়া হতে থাকে নাছিমার সঙ্গে। নাছিমা যেন সহ্যই করতে পারে না নাজিমকে। এই চলমান দাম্পত্য জটিলতার পূর্ণাঙ্গ ফলাফল আসে ২০১৭ সালের ১৮ই আগস্ট।

সেদিন ঝগড়ার এক পর্যায়ে স্ত্রী নাছিমাকে চড় মারে নাজিম। সঙ্গে সঙ্গেই ক্রোধে জ্বলে ওঠে নাছিমা। ধাক্কা দিয়ে দরজার কাছে ফেলে দেয় নাজিমকে। দরজার কানায় লেগে মাথার হাড় সঙ্গে সঙ্গে ভেঙে যায় নাজিমের। প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ শুরু হয়। নাছিমা স্থির হয়ে এই দৃশ্য দেখে। একসময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে নিথর হয়ে আসে নাজিমের দেহ। কিছুদিন আগেই স্ত্রীকে সারপ্রাইজ দিতে আসা নাজিম নিজের ঘরের মেঝেতে মরদেহ হয়ে শুয়ে থাকে।

নাজিম যেহেতু কাউকে জানিয়ে আসেনি, তিনি যে বাংলাদেশে আছে এই বিষয়ে পাসপোর্ট ছাড়া কোন প্রমাণ এই পৃথিবীতে ছিল না। নাছিমা সঙ্গে সঙ্গে ঘরে গিয়ে ড্রয়ার থেকে পাসপোর্ট বের করে উনুনের উপর ছেড়ে দেয়। কয়েক মুহুর্তেই জ্বলে ভস্ম হয়ে যায় সদ্য মৃত্যুবরণ করা নাজিমের বাংলাদেশে থাকার একমাত্র প্রমাণ।

ঠাণ্ডা মাথায় আলমারী থেকে কম্বল বের করে নাছিমা। স্বামী নাজিমের মরদেহ কম্বল দিয়ে পেচিয়ে স্টোররুমে রাখে। তীব্র সুঘ্রাণের পারফিউম একে একে ছড়িয়ে দেয় স্টোররুমে। এত বেশি পারফিউম ব্যবহার তিনি করেছিলেন যে, পুরো বাড়ি ঘ্রাণে ম ম করছিল।

২০১৭ সালের আগস্ট মাসের বিকেল। ঘরে ঢুকেই কেমন একটা সুঘ্রাণ পাচ্ছিল দুই কন্যা। মা'কে জিজ্ঞেস করতে থাকে কিসের ঘ্রাণ এটা। মা তেমন একটা গা করেন না। দুই কন্যাকে জানান, বাবা হুট করেই বিদেশ চলে গেছেন।

সাতদিন স্টোররুমে পরে থাকে নাজিমের মরদেহ। প্রতিদিন নিয়ম করে পারফিউম আর আতর দিয়ে স্টোররুম ভরিয়ে ফেলতেন তিনি। কোন ক্রমেই পচা লাশের গন্ধ বাইরে আসেনি। সাতদিন পর কম্বল টেনে ঘর থেকে বের করে পাশেই পুকুরে ফেলে দেন। নাজিম নামের একজনের পরিচয় পৃথিবী থেকে হারিয়ে যায়।

কিছুদিন পরই পুকুর থেকে ভেসে ওঠে কম্বল। পুলিশ ডুবুরি দিয়ে উদ্ধার করে অর্ধ গলিত লাশ। পরিচয়হীন এই লাশ নিয়ে বিপাকে পরে পুলিশ। বেশ কিছুদিন পুলিশ তদন্ত করেও সুরাহা করতে পারে না। তাই দুই বছরের মাথায় নিয়ম অনুযায়ী কেসটি চলে যায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডির কাছে। সূত্রহীন এই কেসে সিআইডির সন্দেহ হয় নাছিমা আক্তারের পরিবার নিয়ে।

কেন সাত বছর পেরিয়ে গেলেও নাছিমা আক্তারের স্বামী একবারের জন্যও ফিরল না বাংলাদেশে। জুলাই অভ্যুত্থানে আরব আমিরাতের বেশ কয়েকজন প্রতিবাদ করে সেখানকার সরকারের জনরোষের স্বীকার হয়েছিলেন, ছাড়াও পেয়েছেন। নাছিমা আক্তারের স্বামী নাজিম তবে কোথায় গেল?

ঘটনার প্রায় সাত বছর পর নাছিমা আক্তার ও তার দেবরকে আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে নিজের স্বামী নাজিমকে খুন করে পুকুরে ফেলে দেয়ার কথা স্বীকার করে নাছিমা আক্তার।

গতকাল সংবাদ সম্মেলন করে সাত বছর আগের সূত্রহীন এই মার্ডার কেসের সমাধান প্রকাশ করেছে সিআইডি। সেসময় আটককৃত নাছিমা আক্তারকেও প্রথমবারের মতো সামনে আনা হয়।

ট্রেনঃ পৃথিবীর সবচেয়ে আন্ডাররেটেড ঘাতকের রহস্য এবং "হ্যাবিচুয়াল কনফিডেন্স"২০১৭ সালের পহেলা এপ্রিল আমেরিকান নিউজ চ্যানেল ...
04/05/2025

ট্রেনঃ পৃথিবীর সবচেয়ে আন্ডাররেটেড ঘাতকের রহস্য এবং "হ্যাবিচুয়াল কনফিডেন্স"

২০১৭ সালের পহেলা এপ্রিল আমেরিকান নিউজ চ্যানেল "এনবিসি" তে একটা আশ্চর্যজনক ভিডিও প্রচার করা হয়। জেফ রোসেন নামের একজন রিপোর্টারের করা এক্সপেরিমেন্টাল রিপোর্ট। এক্সপেরিমেন্টের নাম "আসলেই কি ট্রেন লাইনে দাঁড়ালে পেছনে আসা ট্রেনের শব্দ শোনা যায় না?"

এক্সপেরিমেন্টে পরে আসি। প্রথমে প্রেক্ষাপট।

আমাদের অনেকেরই ধারণা ট্রেনে কাটা পড়ে কেবল বাংলাদেশীরাই মারা যায়। বাংলাদেশের মানুষজন বেকুব, ইতর। তারা সিগন্যাল মানে না। হেডফোন লাগিয়ে লাইনে হাঁটে। ট্রেনে কাটা পড়ার এটাই মূল কারণ।

ট্রেনে চাপা পড়ার এটা অবশ্যই একটা কারণ, কিন্তু একমাত্র না। সম্ভবত সবচেয়ে বড়ো কারণও নয়। মোবাইল ও হেডফোনের সঙ্গে মানুষের পরিচয়ের বয়স ১৫-২০ বছর। তার আগে কি এসব ঘটনা ঘটেনি? অনেক ঘটেছে, প্রচুর ঘটেছে।

ব্রিটেনের মতো দেশে প্রতি বছর ৫০০ টার মতো ঘটনা ঘটে যেখানে লোকজন অসতর্কভাবে ট্রেনের নিচে পড়ে বা একদম শেষ মুহূর্তে উদ্ধার পায়। মানুষ মরে খোদ আমেরিকাতেও। শুধু ২০১৩ সালেই আমেরিকায় ট্রেনের লাইনে জীবন গেছে ৭৮৪ জন মানুষের।

ব্যাক টু এক্সপেরিমেন্ট।

ট্রেনে কাটা পড়ার খবর দেখলে প্রায় প্রত্যেকটা মানুষের মাথায় প্রশ্ন আসে, "লোকটা ট্রেনের শব্দ শুনল না কেন?" এত ভারী একটা বাহন। ঝকঝক শব্দ, হুইসেলের তীব্র আওয়াজ..কিছুই কীভাবে কারো কানে যায় না?

সদূর আমেরিকায় এনবিসি রিপোর্টার জেফ রোসেনও একই ধাঁধায় আটকে যান। ধাঁধার উত্তর না পেয়ে ক্যামেরা সমেত একদিন নিজেই চলে যান ট্রেন লাইনে। ট্রেন আসার উল্টো দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে থাকেন লাইনে। সামনে ক্যামেরা। লোকজন আছে যথাযথ প্রোটেকশন নিয়ে।

কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর একটা ট্রেন আসে রোসেনের পেছনে। সাপের মতো বাক নিয়ে এগোয়৷ কিন্তু একি! রোসেনের খবর নেই! ট্রেন আরো কাছে আসে, তবুও রোসেনের কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। একসময় পেছনে ঘাতকের উপস্থিতি টের পান রোসেন, ট্রেন তাকে অতিক্রম করে। তিনি হিসেব কষে দেখেন, ট্রেনের শব্দ প্রথম শোনা ও ট্রেন তাকে অতিক্রম করে চলে যাবার মাঝখানের সময় মাত্র ৫ সেকেন্ড!

আরেকটা ফ্যাক্টর আছে এখানে। এই বিশেষ স্থানে ট্রেনটার গতি ছিল বেশ কম। মাত্র ২৫ মাইল পার ঘন্টা। ইউএসএ তে গড়ে ৭০ মাইল বেগে চলে এই অজগর। আরেকবার হিসেব করা হলো। দেখা গেল, ট্রেনের গতি ৭০ থাকলে রোসেন সময় পেতেন মাত্র দুই সেকেন্ডেরও কম। অর্থাৎ সরে যাবার কোনো সুযোগই ছিল না। (এই ভিডিও লিংক কমেন্ট বক্সে দিচ্ছি)

আমেরিকান জনপ্রিয় টিভি চ্যানেল 'এনবিসি' অবশেষে স্বীকার করতে বাধ্য হয়, ট্রেনের শব্দ শোনা ব্যাপারটা এতটা সরল না। এসব এক্সিডেন্টে ভিক্টিমের খামখেয়ালির পাশাপাশি আছে বিরাট এক রহস্য। কিছুটা সায়েন্স, কিছুটা সাইকোলজি। সেই রহস্যের ব্যাখা পরে দিই।

গতকালকে এক তরুণ ফটোগ্রাফার মারা গেছে। একটা লাইনে দাঁড়িয়ে সে অন্য লাইনে ট্রেনের ভিডিও করছিল। কেউ বলছে ট্রেন নয়, ফুলের ছবি তোলা ছিল তার উদ্দেশ্য। যাই হোক, ঠিক তখনই পেছন থেকে এসে দ্বিতীয় একটা ট্রেন তাকে ধাক্কা মারে। স্পট ডেড।

দুইটা ট্রেন একসাথে চলে আসার কারণে সবাই ভাবছে এটাই তাহলে মূল কারণ। দুইটা ট্রেনের শব্দকে সে আলাদা করতে পারেনি। হতেও পারে কারণ আসলে তাই। কিন্তু ট্রেন দুইটার জায়গায় একটা হলেও আসলে এমন ঘটার সম্ভাবনা ছিল। এর কারণটা জেফ রোসেন কিছুটা ব্যাখা করেছেন।

আচ্ছা বলুন তো, বাংলাদেশে কত মানুষ এমন দুর্ঘটনায় মারা যায়? এক্সাক্ট ফিগার আমার ধারণা খুব কম মানুষ জানেন।

প্রথম আলো বলছে, ২০২৩ সালে ট্রেনে চাপা পড়ে মৃত্যু ঘটেছে ১ হাজার ৬৪ জনের। দিনে গড়ে প্রায় ৩ জন। মৃত্যুগুলোর বিস্তারিত ক্যাটাগরি আলাদা করা হয়েছে সেই রিপোর্টে।

১০৬৪ জনের ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে মরেছে ২৩ জন, আত্মহনন ও কারণ জানা যায়নি এমন মৃত্যু ১৩৪ টি। সবচেয়ে আলোচিত "কানে এয়ারফোন" ঘটনায় মারা গেছে মাত্র ১৮ জন। ট্রেনের লাইনে বসে গল্প, আড্ডাবাজি ও গেইম খেলা এবং লাইন ধরে হাঁটার সময় এক্সিডেন্টে মৃত্যুর সংখ্যা ৫০২ জন। রেল ক্রসিং এ প্রাণ গেছে ৩৮৭ জনের।

প্রচুর ঘটনা ঘটেছে যেখানে একসাথে একাধিক মানুষ চাপা পড়েছে। এই সংখ্যা দুইজন থেকে পাঁচজন অব্দি আছে। এখন বলুন তো, পাঁচজন মানুষ যখন এক দল হয়ে বসবে বা হাঁটবে, এদের কানে কি এয়ারফোন থাকার কথা?

এক সঙ্গে সকলে বধির হয়ে গেল কীভাবে? এই ম্যাজিকটা কী?

আমি অনেক ঘাটাঘাটি করেছি। কোনো গবেষণা, কোনো এনালাইসিস কোথাও ঠিকঠাক মতো প্রশ্নটার জবাব দিতে পারেনি। কিন্তু প্রচুর আর্টিকেল পেয়েছি যেখানে এই রহস্যটাকে স্বীকার করা হয়েছে। বহু লোক বলেছেন, তাদের লাইফে এই অভিজ্ঞতা হয়েছে। তাদের কানে এয়ারফোন ছিল না, তারা খুব অসতর্ক ছিলেন তাও নয়। শুধু লাইনটার দিকে নজর ছিল না এবং হঠাৎ তারা আবিষ্কার করেছেন গায়ের সাথে ঘেষে একটা ট্রেন বুলেটের মতো চলে যাচ্ছে।

দুর্বল কিছু ব্যাখা আছে। এসব ব্যাখার একাংশ সায়েন্টিফিক, অন্য অংশ সাইকোলজিক্যাল। সায়েন্টিফিক একটা ব্যাখামতে, ধাতব মোটা লাইন ট্রেনের কিছু শব্দ ভাইব্রেশনের মতো করে খেয়ে ফেলে। লাইনের কাছাকাছি দাঁড়ানো মানুষের কাছে মূল শব্দটা পৌঁছায় না।

আরেক ব্যাখা বলে, ট্রেন দৈর্ঘ্য-প্রস্থে অসম একটা বাহন। অনেক লম্বা কিন্তু কম চওড়া। তার শব্দ সামনের দিকে V এর উল্টো শেইপে বাতাস কেটে আসে। এ কারণে একদম মুখোমুখি দাঁড়ানো ব্যক্তির কানে পুরোপুরি যায় না।

ট্রেন লাইনের অবস্থান নিয়েও আলোচনা আছে। সড়ক-মহাসড়কের পাশে বিল্ডিং থাকে। বিল্ডিং না থাকলেও গাছগাছালি খুব একটা থাকে না দুপাশে। কিন্তু ট্রেন লাইনের ব্যাপারটা অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিপরীত। চারপাশে গাছ থাকে বেশিরভাগ স্থানে। গাছের পাতা ট্রেনের শব্দ এবসর্ব করে ফেলে অনেকটা। ঐ যে সাউন্ডপ্রুফ ঘরের দেয়ালের মতোন।

সায়েন্টিফিক ব্যাখাগুলোর চেয়ে সাইকোলজিক্যাল ব্যাখা আমার কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য লেগেছে।

শহরের কথা যদি ভাবেন, একজন পথচারীকে মোটামুটি সব সময় সকল ইন্দ্রিয় সজাগ রেখে পথ চলতে হয়। মূল সড়কের কথা বাদই দিলাম। একটা ছোটো গলির ভেতরেও অসতর্ক থাকলে রিকশা ধাক্কা দিয়ে দিতে পারে। ইন্দ্রিয়গুলোর এক্টিভ থাকার একটা সীমা আছে। মানুষ যখন রেল ক্রসিং এর কাছাকাছি আসে, নিজের অজান্তে সে রিলাক্সড হয়ে যায়। সড়কে বহু রকম বাহন চলে। ট্রেন লাইনে চলে একটা বাহনই। সেটাও অনেকক্ষণ পরপর আসে। একাধিক নয়, একটা। সো, চিল। একটু ফোন বের করে নোটিফিকেশন চেক করি। অফিস, বাসা, বাচ্চা, প্রেমিক বা প্রেমিকার কথা ভাবি।

দ্বিতীয় ব্যাখাটা ইন্টারেস্টিং এবং বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য।

এটা ব্যাখা করার আগে ট্রেনে চাপা পড়ে মৃত্যুর ঘটনাগুলো গভীরভাবে এনালাইসিস করা দরকার।

সর্বশেষ মারা যাওয়া আলোচিত ফটোগ্রাফের কথাই বলি। তার পোস্ট করা সর্বশেষ ভিডিও রেল স্টেশনের। ২৩ এপ্রিল কুমিল্লায় ট্রেনে একসাথে কাটা পড়েছিল ৩ কিশোর। এরা স্টেশনের টোকাই। সারাদিনই ট্রেন লাইনের আশেপাশে ছিল তাদের আনাগোনা।
গত বছরের জুলাইয়ে নরসিংদীতে ৫ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করার সময় একজন উদ্ধারকারী কাটা পড়ে আরেক ট্রেনে। গত বছরের নভেম্বরে লালমনিরহাটে ট্রেনের লাইনে বসে টাকা ভাগাভাগির সময় মারা যান ৪ দিনমজুর। লাইনে বসার আগে তারা স্টেশন মসজিদে নামাজ পড়ে আসে।

এই চারটা ঘটনাকেই এনালাইসিস করেন।

ফটোগ্রাফার তরুণের রেল স্টেশনে পোস্ট করা ভিডিও বলছে, ট্রেন লাইন ও ট্রেনের সাথে তার সখ্য আগেই ছিল। জীবনে প্রথমবার লাইনে দাঁড়িয়ে সে দুর্ঘটনার শিকার হয়নি। তিনটা কিশোরের ঘর বাড়িই রেল স্টেশন। তারা নিশ্চয়ই জানে ট্রেন কত দ্রুত আসে, কীভাবে যায়। লাইনে কাটা পড়া লাশ উদ্ধারে যে ব্যক্তি এসেছেন তিনি দক্ষ ও অভিজ্ঞ। অনকোরা ও অস্থানীয় কেউ লাশ উদ্ধারে যাবে না। রেল লাইনে বসে টাকা ভাগ করা ও স্টেশনে নামাজ পড়া শ্রমিকেরাও স্টেশন এলাকার বলেই ধারণা করা যায়।

প্রশ্ন হলো, এদের সবার এমন পরিণতি কেন ও কীভাবে হলো?

উত্তরটাই হলো সর্বশেষ ব্যাখা।

"হ্যাবিচুয়াল কনফিডেন্স"।

দীর্ঘদিনের অভ্যস্ততা মানুষের মনে এক ধরনের আত্মবিশ্বাস তৈরি করে। যে কোনো ঝুঁকিপূর্ণ কাজে প্রথমে ভয় লাগে। ঐ যে কোনো এলাকায় প্রথম গেলে লোকজন ফোন মানিব্যাগ শক্ত করে চেপে ধরে যেরকম। এই বুঝি পকেট কেটে ফেলল কেউ। পেছনে পায়ের শব্দ শুনলে সতর্ক হয়। বেশ কিছুদিন যাবার পরেও যখন কিছুই ঘটে না, শুরুর সতর্কভাবটা ধীরে ধীরে আর থাকে না। এটা প্রত্যেকটা মানুষের খুবই ন্যাচারাল একটা অভ্যাস। তারপর যখন একদিন পকেটটা সত্যি সত্যিই কাঁটা যায়, মানুষের মনে পড়ে সতর্কতায় কোনো ছুটির দিন নাই। টার্গেট ফিলআপ নাই। সতর্ক ও সাবধান প্রতিদিনের কাজ।

যারা ট্রেনের সাথে বেশি পরিচিত, স্টেশনে বা স্টেশনের কাছাকাছি কাজ করে, প্রতিদিন ক্রসিং পার হতে হয়...এরা জীবনে বহুবার লাইন পার হবার আগে হয়তো সাবধানে পেছনে ফিরে তাকিয়েছে। প্রতিবার দেখেছে, ট্রেনের খোঁজ নেই। এরপর নিজের অজান্তে তারা অভ্যস্ত হয়েছে। ব্রেনে সিগন্যাল গেছে, লাইনে ট্রেন থাকার সম্ভাবনা খুবই কম। আমি ৩-৪ ফুটের লাইনে পা রাখব আর ঠিক তখনই বাতাস ফুঁড়ে একটা জিনিস এসে আমাকে ধাক্কা মারবে এমন হয় নাকি! এই জিনিস এমনিই লেট করে। সো, নো টেনশন।

এটাই হ্যাবিচুয়াল কনফিডেন্স। এই আত্মবিশ্বাসে মানুষ চোখকে কাজে লাগায় না। কান ঠিকমতো কাজ করে না। হ্যাবিচুয়াল কনফিডেন্স তাকে আরো বলে, পুরো শহরে ট্রেন লাইনটাই সেইফ। যত জায়গা দিয়ে সে হেঁটেছে, প্রত্যেকটা জায়গায় রিক্সা, গাড়ি, বাইক এমনকি মানুষের ধাক্কা খাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। ট্রেন লাইন এমন একটা স্থান যেখানে কেবল ট্রেনই চলে। আর ট্রেন আসে দীর্ঘ সময়ের বিরতিতে। ক্রসিং এ গদা ফেলার পরেও কয়েক মিনিট পাওয়া যায়। লাইন পার হতে লাগে কয়েক সেকেন্ড। অর্থাৎ, নিশ্চিন্তে সামনে ফেলো পা।

ভাগ্য ও ইন্দ্রিয় বিশ্বাসঘাতকতা করে ফেলে একদিন। পত্রিকায় ছোটো করে নিউজ "অমুক জায়গায় ট্রেনে কাটা পড়ে একজনের মৃত্যু"। মানুষ সেই খবর স্কিপ করে। যেমন স্কিপ হয়তো ভিক্টিমও করতো। মানুষ খবর পড়লে শুরুতেই প্রশ্ন করে " এত শব্দ কানে শুনলো না কেন?" এই প্রশ্ন ভিক্টিমের মাথায়ও একদিন ছিল।

লেখা প্রায় শেষ।

ট্রেনে কতটা ভয়ানক, ট্রেনে কত মানুষের প্রাণ যায় এটা কম মানুষ জানতেন বলে আমার ধারণা। গত বছর শুধু ভৈরবে মারা গেছেন ৮৫ জন, আখাউড়ায় ৬৫। বছরে এক হাজার মানুষের প্রাণ চলে যাচ্ছে রেললাইনে। এটা সেই বিরল দুর্ঘটনা যেখানে চালকের দায় শূন্য। ক্রসিং এ সিগন্যালম্যানের অবহেলা বাদ দিলে কর্তৃপক্ষ ও সরকারের দায় খুব বেশি নেই। দায় ও দুর্ভাগ্যের প্রায় পুরোটাই ভিক্টিমের।

এখন বলি, এই লেখা কেন লিখেছি।

জেফ রোসেনসহ দুনিয়ার সকলের মতো আমার মনেও প্রশ্ন ছিল, মানুষ কেন ট্রেনের শব্দ শুনে না? কান কি বন্ধ করে রাখে নাকি?

গত বছরের কোনো একদিন কাওলা রেল ক্রসিং এ প্রশ্নের আংশিক উত্তর পেলাম। আমার স্ত্রী তন্বীসহ হেঁটে যাচ্ছিলাম ক্রসিং এর দিকে। রাস্তায় গদা ফেলে রাখা। আমাদের দুজনের কারো কানেই হেডফোন এয়ারফোন নেই। কথাবার্তা বলছি না কেউই। তবে কিছুটা অন্যমনস্ক ছিলাম। মুহূর্তের খামখেয়ালিতে ক্রসিং এর বাঁশের সাইড ঘেষে একটু সামনে চলে গেছি। না, ক্রসিং পার করার ইনটেনশন ছিল না। শুধু একটা পা চলে গেছে সামনে। তারপর খেয়াল হয়েছে। থেমে গেছি দুজনেই। মাথা তুলেছি। আর তখনই ভীষণ অবাক ও ভয়ংকর আতংক নিয়ে দেখলাম একটা ট্রেন চলে যাচ্ছে বাতাস কেটে।

একে অপরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করলাম আমরা। দুজনের চোখেমুখে একটাই প্রশ্ন।

"শব্দ পেলাম না কেন?"

যাই হোক, এটা লেখাটা ভিক্টিমের কেয়ারলেস হবার জাস্টিফিকেশন নয়। কেউ দয়া করে বেশি বুঝে এমন উপসংহারে যাইয়েন না। আমি শুধু ট্রেনের কাঁটা পড়ে মৃত্যুর সংখ্যার ভয়াবহ বাস্তবতা ও পেছনের কারণে একটা ব্যাখা দিলাম।

অনুরোধ করছি, ট্রেনের লাইনের কাছাকাছি গেলে নিজের কানকে একবিন্দু বিশ্বাস করবেন না। ট্রেনের শব্দ আসলেই শোনা যায় না নতুবা বিশেষ সময়ে কান প্রতারণা করে এটা বাস্তব ফ্যাক্ট। লাইন ও ক্রসিং এ গেলে শুধুমাত্র ও একমাত্র চোখের ওপর নির্ভরশীল হোন। আর অবশ্যই সিগন্যাল ভেঙে দৌড় বা হাঁটা দেবেন না।

সকল ভিক্টিমের আত্মার শান্তি কামনা করছি।
Collected from Joynal abedin

পেহেলগামের আইকোনিক ছবির পাশাপাশি এই ছবিটাও দেখা উচিত। এই গল্পও জানা দরকার।ছবির মায়ের নাম সায়রা, সায়রার কোলে তার শিশু সন্...
01/05/2025

পেহেলগামের আইকোনিক ছবির পাশাপাশি এই ছবিটাও দেখা উচিত। এই গল্পও জানা দরকার।

ছবির মায়ের নাম সায়রা, সায়রার কোলে তার শিশু সন্তান আজলান। আজলান নয় মাস মায়ের পেটে বড়ো হয়েছে, বাকি নয় মাস মায়ের কোলে। বাবা ফারহান ইলেক্ট্রেশিয়ান। আজলান পরিবারের প্রথম ও একমাত্র সন্তান। সায়রা ও ফারহানের বিয়েটা প্রেমের। সন্তানসহ চূড়ান্ত সুখের জীবন কাটাচ্ছিল তারা। বিনা নোটিশে সন্তান জড়িয়ে ধরে কাঁদবার মতো কিছুই ঘটেনি সায়রার জীবনে। পরিবারে দৃশ্যত কোনো জটিলতা নেই। অসুখ নেই, মৃত্যু নেই, দুর্যোগ নেই।

তবে, একটা “কিন্তু” আছে। কিন্তু’র নাম সবুজ-নীল। দুইটা রঙের ব্যবধান কত যে ভয়ানক হতে পারে, অমানবিকতার সর্বোচ্চ সীমা ছাড়িয়ে যেতে পারে, নরক নামিয়ে দিতে পারে সুখী শান্ত পরিবারে; সেটার সাক্ষী হয়েছে সায়রা-ফারহান দম্পত্তি। স্বামী-স্ত্রীতে কলহ অনুপস্থিত, ঝামেলা নেই দুই পরিবারেও। তবুও আচমকা একদিন তারা নোটিশ পেল, ফারহান ও সায়রাকে এখন থেকে আলাদা থাকতে হবে।

প্রেম জটিল, পৃথিবী জটিল তারচেয়েও বেশি। দুই জটিলতার কাঁটাতার পেরিয়ে দুনিয়ায় অতি অল্প সংখ্যক ভাগ্যবান ভালোবাসার মানুষ নিয়ে ঘর বাঁধতে পারে। সায়রা-ফারহান শুধু ভাগ্যবান নয়, সাহসীও। তাই করাচির মেয়ে সায়রা ঘর তো বটেই, দেশ ছেড়ে এসে কবুল করেছিল দিল্লীর ছেলে ফারহানকে। সায়রা ফারহান একে অপরকে কবুল করেছে ঠিকই কিন্তু ভারত-পাকিস্তান তো আর পরস্পরকে কবুল বলেনি! ফলে, তারা এক ঘরে এক বিছানায় বসবাস করলেও তাদের চামড়ায় চিরস্থায়ীভাবে তখনো পোস্টারের মতো সেঁটে আছে দুই পরিচয়...নীল পাসপোর্টের ভারতীয় এবং সবুজ পাসপোর্টের পাকিস্তানি। এই দুই রঙ খালি চোখে দেখা যায় না। বিদ্বেষের লেজার লাইটে রঙগুলো ধরা পড়ে সময়ে সময়ে।

লেজার জ্বালিয়ে দিল পেহেলগাম। ২৫ জন ভারতীয় খুন হলেন ভূ-স্বর্গের মাটিতে। তাদের আরেক পরিচয়, তারা সকলেই হিন্দু। কাশ্মীরি এক মুসলমান যুবক প্রাণ হারালেন পর্যটক বাঁচাতে গিয়ে, পশ্চিম বাংলার এক মুসলিম জওয়ানের প্রাণ গেল অভিযানে। তাদের গল্প ও নাম ব্লার করে দিল মিডিয়া। মার্কেটে এখন সবচেয়ে দামী পণ্যের নাম ‘ঘৃণা’। ঘৃণা বিক্রি করতে হলে এসব ব্লার করা লাগে।

ভারতের মাটিতে থাকা সকল পাকিস্তানিকে পত্রপাট বিদায় জানালো হলো। পাকিস্তান খেলায় পিছিয়ে থাকবে কেন? তারাও জানিয়ে দিল, হিন্দুস্থানি ওয়াপাস যাও। দিল্লীতে প্রেমের সংসার করা ফারহান ও সায়রার দুয়ারে চলে গেল লাল নোটিশ। সায়রাকে তার পাকিস্তানি সবুজ পাসপোর্টসহ বিদায় নিতে হবে ভারত ভূমি থেকে।

ভাবুন তো, সন্তানসমেত দুইটা মানুষ শান্তি ও স্বস্তির সংসার করছেন। আচমকা কেউ একটা কাগজ নিয়ে বলল, তোমাদের বিচ্ছেদ হয়েছে। তোমরা আলাদা হও। চোখের সামনে থেকে দূরে যাও। দূরে, দূরে, অনেক দূরে। একদম ভিন্ন দেশে। সহ্য করা যেত এমন খবর?

অবশ্য সায়রা ও ফরহান তখনো জানতো না, তাদের জন্য আসল বিপদ ও দুঃখ সামনে অপেক্ষা করছে। এ তো শুধু সিনেমার ট্রেইলার!

স্যুটকেসে মা ও শিশু সন্তাদের কাপড় এবং বুকে এক পাহাড় কষ্ট-অভিমান নিয়ে দিল্লী থেকে পাঞ্জাবের ওয়াগাহ বর্ডার ক্রসিং এ আসল পরিবারটা। বিদায়ী আলিঙ্গন করল স্বামী স্ত্রী। একজন সান্ত্বনা দিল অন্য জনকে। বলল, “আবার শীঘ্রই দেখা হবে।”

আজলানকে কোলে নিয়ে ক্রসিং এ পা দিল সায়রা। গার্ডরা তার পাকিস্তানী পাসপোর্ট চেক করল। বের করতে বলল শিশুর পাসপোর্ট। দুনিয়াতে নরক নেমে আসল তখনই। আজলানের পাসপোর্টের রঙ যে নীল! আজলান জন্মসূত্রে ভারতীয়। দুই দেশের তালাক হয়েছে। অতএব পাকিস্তানে তার যাওয়া নিষেধ।

তরুণ ইলেক্ট্রেশিয়ান ফারহান, অল্প বয়সী গৃহবধূ সায়রা এবং অবোধ নয় মাসের শিশু সন্তান আজলান তখন জমে গেছে। তারা অবাক বিস্ময়ে আবিষ্কার করেছে, তারা আসলে তাদের না। স্বামী স্ত্রীর না, স্ত্রী স্বামীর না এমনকি বাচ্চাটাও নয় আপন মায়ের। তাদের মা-বাবা একটাই। দেশ। তারা ভারতের, তারা পাকিস্তানের। পাকিস্তানি মা ভারতে নিষিদ্ধ, ভারতীর শিশু নিষিদ্ধ পাকিস্তানে।

অসহ্যকর এক বিচ্ছেদ রচিত হলো ওয়াগাহাতে। গার্ডদের হাতে পায়ে ধরে করা আকুতি বিফলে গেল। পুত্রকে চোখের জল চুমুতে স্নান করিয়ে বিদায় নিতে হলো মাকে। ফারহান তখন সন্তানকে ফিডার দিয়ে ভুলিয়ে রাখতে ব্যস্ত। কিন্তু ভুলিয়ে রাখা কি এতই সহজ? নয় মাসের শিশু রাজনীতি না বুঝুক, মা তো বুঝে। সে বুঝতে পারছিল মায়ের গন্ধ ক্রমশ দূরে সরে যাচ্ছে।

দেড় ঘন্টা পর গার্ডরা ডাক দেয় ফারহানের নাম ধরে। জানায়, সন্তানসহ ফারহানকে ক্রসিং এর ভেতরে যেতে হবে। অবশেষে বুকটা হালকা হয় ফারহানের। সে ভাবে, যাক শেষ মুহুর্তে গার্ডদের নিশ্চয়ই মায়া হয়েছে। কোথাও কেউ বুঝতে পেরেছে, দুনিয়ার কোনো আইন, নিয়ম, নোটিশ জোর জবস্তি করে মা ও সন্তানকে আলাদা করতে পারে না।

ফারহানের ভুল ভাঙ্গে দ্রুত। ক্রসিং এর ভেতরে গিয়ে দেখে, অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে সায়রা। সন্তানশোক নিতে পারেনি মস্তিষ্ক। ফারহানকে ডাকা হয়েছে কিঞ্চিৎ মানবতার খাতিরে, যেন সায়রা আরেকজন বাচ্চাকে কোলে নেবার সুযোগ পায়। বড়ো কারণ, সায়রার জ্ঞান তো ফেরানো লাগবে।

দ্বিতীয় দফায় বিচ্ছেদ হয় মা-ছেলের, স্বামী ও স্ত্রীর। তারা আর জানে না, কবে তাদের আবার দেখা হবে। কবে মা সন্তানকে জড়িয়ে ধরার সুযোগ পাবে। মা ও মায়ের বুকের দুধবিহীন আজলানের বাকি সময় কেমন কাটবে তাও অজানা।

ওয়াগাহ বর্ডার। ঐ যে যেখানে ভারত ও পাকিস্তানের জওয়ানরা পা উঁচু করে গ্যালারিভর্তি দর্শকের সামনে কসরত করে প্রতিদিন। এখানে গত কয়েকদিনে এমন অমানবিক ঘটনা ঘটেছে দেদারসে।

ওড়িশ্যার হালিমা বেগমের সংসার সায়রার মতো এত অল্প দিনের নয়। করাচি থেকে এসেছেন তিনিও। তবে তাঁর কবুল বলার হয়ে গেছে পঁচিশ বছর। দুই পুত্র তাগড়া জোয়ান। স্বামী জীবিত নন। ২৫ বছরেও তাঁকে কবুল করেনি ভারত। “ভারত ছাড়” নোটিশ গেছে তাঁর দরজাতেও। ওড়িশ্যা থেকে ওয়াগাহ পর্যন্ত আসতে তাঁর সময় লেগেছে দুইদিন। বর্ডার ক্রস করে করাচী আরো একদিনের যাত্রা। পঞ্চাশ বছরের এই নারী কোনোদিন একা ভ্রমণ করেননি। ২৫ বছরের ব্যবধানে করাচীর সকলের সঙ্গে ব্যবধান হয়ে গেছে আজীবনের। তিনি আর কাউকে চেনেন না, তাঁকেও কেউ চেনে না।

তাঁর দুই পুত্র সান্ত্বনা দিয়ে বলেছে, তারা নিয়ে যাবে করাচী। মাকে নিরাপদ স্থানে রেখে তবেই ফিরবে। কিন্তু বর্ডারে এসে তারা জানতে পারল, নয় মাসের শিশু আজলানের সঙ্গে তাদের বিশেষ পার্থক্য নেই। তাদের নীল ভারতীয় পাসপোর্ট আটকে গেল পাকিস্তানের বেড়ায়। মা সন্তানের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটল এখানেও। হৃদয়বিদীর্ণ হবার জায়গাটা শুধু ভিন্ন। সায়রা অজ্ঞান হয়েছিল বর্ডারের এপাশে ফেলে যাওয়া অবোধ সন্তানের দুশ্চিন্তায়, মুসাইব ও জুবাইর নামের এই দুই ভাই অজ্ঞানপ্রায় হলো বর্ডারের ওপাশে ফেলে দেয়া অসহায় মায়ের ভাবনায়।

আরো কত গল্প। ভারতীয় নারী রুকশার বিয়ে করেছিল পাকিস্তানিকে। চার সন্তানসহ তারা আত্মীয়ের বিয়ের জন্য বেড়াতে এসেছিল ভারত। পাকিস্তানী সবুজ সন্তানেরা কাঁদতে কাঁদতে বিদায় নিয়েছে বিয়ের অনুষ্ঠানের আগেই। নীল মা আটকে গেছে জাতীয়তাবাদের ছাকনিতে। কর্ণাটকের রামশার তিন সন্তানের জুটেছে একই ভাগ্য। ঘাটলে বের হবে এমন অনেক অনেক গল্প।

স্বামীর লাশের পাশে বসে থাকা স্তব্ধ স্ত্রীর আইকোনিক ছবিটা দেখে মর্মামত হয়েছিল পুরো ভারত। বাংলাদেশে এখন যে কোনো মাপকাঠিতে ভারত বিরোধিতা সবচেয়ে বেশি। তাও আমার নিউজফিডে অন্তত শতবার দেখেছি ছবিটা। জগতের প্রত্যেকটা স্বভাবিক চিন্তার মানুষ এমন ছবি দেখে মর্মাহত হতে বাধ্য। আমিও থমকে গিয়েছিলাম সেদিন।

পেহেলগামে প্রাণ হারানো মানুষগুলো প্রাণ হারানোর আগে জানতো না তাদের অপরাধ কই। ওয়াগাহতে পরিবার, সন্তান ও মায়ের সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়া মানুষজনও ঠিকঠাক বুঝে উঠতে পারছে না তারা কোথায় দোষ করেছে। জীবন হারানোর চেয়ে মর্মান্তিক কিছু নেই। তবুও পেহেলগ্রামের ভিক্টিকরা অন্তত সারা দুনিয়ার সহানুভূতি পেয়েছে। লাশ পেয়েছে ফুল, আত্মীয় পেয়েছে সহানুভূতি। ওয়াগাহ’র মানুষজনের ভাগ্যে ফুল নেই, সহানুভূতি নেই। কিছুই নেই।

একটা বিখ্যাত গান আছে না? “পৃথিবীটা নাকি ছোটো হতে হতে...ড্রয়িং রুম রাখা বোকা বাক্সতে বন্দি”...পৃথিবী আসলেই ছোটো হচ্ছে। এখন আর ড্রয়িং রুমের বোকা বাক্স টেলিভিশনে নয়, বন্দি হয়েছে সাড়ে ছয় ইঞ্চি মোবাইল ফোনে। এই ঘৃণা বাক্স মানুষের জগত সীমাবদ্ধ করছে, ছোটো করে দিচ্ছে মন। বিভাজনের মাত্রা ক্ষুদ্রতর হচ্ছে ক্রমশ। এতটাই ক্ষুদ্র, আইন করে আলাদা করা হচ্ছে মা ও সন্তান।

যুদ্ধের গন্ধ নাকে আসলেই মানুষ এখন আনন্দ পায়। ধরেই নেয়, যুদ্ধ মানেই তার জয় নিশ্চিত। যুদ্ধ লাগলেই প্রতিপক্ষ ভীষণ শায়েস্তা হবে। ইন্টারনেট জুড়ে উৎসব। ভারত-পাকিস্তান এমনকি বাংলাদেশের বিভিন্ন পেজ ঘুরলে মনে হয়, ক্রিকেট বা ফুটবল বিশ্বকাপের চেয়েও আনন্দদায়ক উত্তেজনাকর ইভেন্ট হলো যুদ্ধ।

যুদ্ধ শব্দটা দেখলেই আমার চোখে ভাসে অনেকগুলো শিশুর ছবি। বেশ কিছু বয়স্ক মানুষের অবয়ব। আমার কানে আসে শিশুর কান্না, মায়ের আর্তনাদ। আমার ভয় লাগে। মা বিহীন আজলান অথবা স্বামী সন্তানহীন হালিমা কীভাবে টিকে থাকবে, কল্পনা করে অশান্তি লাগে। বিনা গুলিতেই মানুষ পরিবার ও সন্তান হারানো শুরু করেছে। যুদ্ধ শুরু হলে কী হবে?

ফারহান ও সায়রা যখন আজলানকে জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করছে, তখন ফারহানের মা আয়েশা সে দৃশ্যের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন, “ইয়ে সাব পেয়ার ক্যা মারি হ্যায়”। সোজা বাংলায় এরা সব প্রেমের মরা।

তিনি আরো বলেন, “পাতাল ম্যায় পেয়ার কার না, পার পাকিস্তান ম্যায় কাভি মাত কার না।”

বলিউড এক সময় “ম্যায় হু না”র মতো মুভি বানিয়েছিল। ঘৃণার বদলে প্রেমের আহবান জানানো হয়েছিল তাতে। বছর দশেক আগেও বলিউড বানিয়েছে “বাজরাংগী ভাইজান’ এর মতো অসাধারণ এক সিনেমা। হনুমান ভক্ত ভারতীয় যুবকের পাকিস্তানি এক শিশুর প্রতি দরদের আখ্যান। এখন এসব অতীত। বলিউড হয়ে গেছে ঘৃণা প্রকাশের বম্ব। পাকিস্তানি কোনো কিছু দেখি না। তারা ঘৃণার বদলে ভালোবাসার গোলাপ ছড়াবে এটা পাগল হলেও বিশ্বাসযোগ্য নয়।

আয়েশা বেগমের মতো পাকিস্তানের অনেকেও হয়তো এখন বলছে, নরকে গিয়ে প্রেম করো কিন্তু ভারতে নয়। ধীরে ধীরে এসব চিন্তা ও আহবান ছড়িয়ে যাবে চারপাশে। ভালোবাসার আদান প্রদান বন্ধ হবে চিরস্থায়ীভাবে। বাজরাঙ্গি একটা শিশুকে পরিবারের কাছে দেবার জন্য অবৈধভাবে বর্ডার ক্রস করে তালি পেয়েছে। এখন বৈধভাবে শিশুদেরকে পরিবার থেকে করা হচ্ছে বিচ্ছিন্ন।

এখানে দোষ ভারতের নাকি পাকিস্তানের, মুসলিমের নাকি হিন্দুর, মোদির নাকি নওয়াজের...এসব ভিন্ন আলোচনা। সেদিকে যেতে ইচ্ছে করছে না। আমি শুধু জানি, আজলান-সায়রা-হালিমা এদের কোনো দোষ নেই। কোথাও ত্রুটি নেই। তাদের ওপর অবিচার হয়েছে।

এই অবিচারের শোধ প্রকৃতি ফিরিয়ে দেবে। মানুষ খুন করে জেলে গেলেও মা দুধের শিশু সঙ্গে রাখতে পারে। সায়রার কোনো অপরাধ ছিল না। এক কণা ত্রুটি নেই, এক বিন্দু ভুল নেই। ভুল একটাই, ভিনদেশীকে ভালোবাসা এবং নিয়ম ও আইন মেনে বিয়ে করা।

ভালোবাসার অপরাধে দুইটা দেশ রীতিমতো আইন করে তার সন্তান কেড়ে নিয়েছে। প্রেমের অপরাধে হালিমাকে ফেলে দিয়েছে পাঞ্জাবের রাস্তায়। মানুষ এসব সেলিব্রেট করছে অনলাইনে।

যেখানে প্রেমের দায়ে আইন করে সন্তান কেড়ে নেয়া হয়, মাকে ছুঁড়ে ফেলা হয় এবং গণ মানুষ এসব উদযাপন করে...সেটা শুধু অপরাধ থাকে না। এটা মহাপাপ। এত বড়ো পাপের দায় মেটাতে হবে না?

দায় অবশ্যই মিটবে। দায় শোধ হবে কাশ্মিরে গুলিতে, মুম্বাইয়ে হামলায়, পেশায়ার-বেলুচে গাড়িবোমায় নয়তো ইউপি-গুজরাটে দাংগা বুলডোজারে। সমস্যা হলো, আমাদের মতো মানুষকে কষ্ট পেতে হবে প্রতিবার। প্রত্যেকটা ঘটনায় আমরা মর্মাহত হবো, প্রত্যেকটা কান্না আমাদেরকেই ছুঁয়ে যাবে।

মানুষের মন নিয়ে জন্মালে এই যন্ত্রণা বোধহয় আজীবন নিতে হয়।

কাউন ছিলো গরীবের খাবার। এক সময় প্রায় প্রতিটি গ্রামেই ফক্সটেইল মিলেট বা কাউনের চাষ হতো। কাউন চালের ভাত এবং জাউ বেশ জনপ্র...
14/02/2025

কাউন ছিলো গরীবের খাবার।
এক সময় প্রায় প্রতিটি গ্রামেই ফক্সটেইল মিলেট বা কাউনের চাষ হতো। কাউন চালের ভাত এবং জাউ বেশ জনপ্রিয় ছিল। চৈত্র বৈশাখ মাসে ক্ষেতে ক্ষেতে কাউনের ছড়া দুলতো। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে ইরি,বোরো ধানের আবাদ শুরু হয়। এরপর থেকে ক্রমেই কমতে থাকে কাউন চাষ। ইরি বোরো চাষ যত বিস্তার লাভ করে কাউনের চালের চাহিদাও পড়তে থাকে। কৃষকেরা ততই কাউন চাষ কমিয়ে দেয়। গরিবদের খাবার কাউন এখন উচ্চ দামে বিক্রি হয়।

আশার কথা হলো কাউন চাষে আবার কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। কারণ এখানে খরচ কম লাভ বেশি। প্রায় সব ধরণের মাটিতেই কাউনের চাষ করা যায়। কাউন চাষে সার,বি*ষ প্রয়োগ করা লাগে না। বাজারে কাউন সহজলভ্য হলে অগণিত মানুষ অপুষ্টি, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, অবেসিটি, অভারওয়েট, ক্যান্সার ইত্যাদি ভয়াবহ সমস্যা থেকে প্রতিকার পাবে।

জোয়ার, বাজরা, রাগি, শ্যামাচাল, কাউন, চিনা, ঢেমসি ইত্যাদি দানাশস্যকে মিলেট বলা হয়। প্রতিকূল ও শুষ্ক পরিবেশে এই ফসল আবাদ হতে পারে! অল্প বৃষ্টিপাতে অনুর্বর মাটিতেও মিলেটের ফলন ভাল হয়! তাই একে বলা হয় 'অলৌকিক শস্য' বা 'মিরাকল মিলেট'। অতএব সঙ্গত কারণেই এই ফসলের উৎপাদন রাসায়নিক সার, কীটনাশকের উপর নির্ভরশীল নয়।

গম ও ধানের চেয়ে মিলেট প্রায় ৩-৫ গুণ বেশি পুষ্টিকর। অনুমান করা হয় প্রাগৈতিহাসিক যুগে ধানের চেয়ে মিলেট চাষই বেশি হতো। ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রায় ১৬ রকমের মিলেট চাষ হয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- সরগাম (জোয়ার), পার্ল মিলেট (বাজরা), ফিংগার মিলেট (রাগি), বার্নইয়ার্ড মিলেট (শ্যামা চাল), ফক্সটেল মিলেট (কাউন), বাকহুইট (কুট্টু), লিটল মিলেট (কুটকি), প্রোসো মিলেট (চীনা), কোডো মিলেট (কোড়ো), অ্যামারান্থাস (চৌলাই), ব্রাউনটপ মিলেট ইত্যাদি। গুজরাট, রাজস্থান সহ ভারতের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে বিভিন্ন মিলেট থেকে তৈরি নানারকম খাবার বেশি খাওয়া হয়।

এদেশে অতিথি আপ্যায়নে, উৎসব-পার্বণে কাউনের পায়েশের বেশ প্রচলন আছে। ধানের চালের মতই কাউনের চাল দিয়ে পোলাও, বিরিয়ানী, ভাত, জাউ, খিচুরি, পায়েস ইত্যাদি করা যায়। আর গমের আটার মতই কাউনের আটা দিয়ে রুটি, পরোটা, বেকারিজ, বিস্কুট ইত্যাদি সবই হয়। এই খাবারগুলো খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর। কাউন চালের ভাত খেতে খুব সুস্বাদু। এই ভাত সবজি সিদ্ধ দিয়ে খেলে খুব তৃপ্তি পাওয়া যায়।

ফক্সটেইল মিলেট বা কাউন সহজে হজমযোগ্য সুপারফুড। কাউনের চালে পর্যাপ্ত পরিমাণ মিনারেলস থাকায় নারী ও শিশুদের জন্য বিশেষভাবে উপকারি খাদ্য। কাউনে ক্যালসিয়াম, জিংক, ফসফরাস এবং ম্যাগনেসিয়ামের মতো প্রয়োজনীয় খনিজ রয়েছে। গর্ভবর্তী মহিলাদের শরীরে আয়রনের অভাব দেখা যায়। কাউন এই আয়রনের অভাব দূর করতে পারে। শারীরিক সৌন্দর্য ও ওজন ঠিক রাখার জন্য ফক্সটেইল মিলেট বা কাউন রোজকার ডায়েটে রাখা উচিত।

কাউনের উপকারিতা—
* কাউন হলো নিরামিষ প্রোটিনের সমৃদ্ধ উৎস। প্রতি 100 গ্রাম কাউনে APEDA-এর মান অনুযায়ী 12.3 গ্রাম প্রোটিন থাকে!
* ধানের তুলনায় কাউনে আয়রনের পরিমাণ বেশি থাকে, যা আয়রনের ঘাটতিজনিত রক্তাল্পতা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। (nutritionvalue.org)
* কাউনের চাল ও আটা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উৎকৃষ্ট খাদ্য। কাউন একটি লো জিআই শস্য। এতে থাকে প্রোটিন, ফাইবার ও মিনারেলস।
* কাউন কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। যাদের সকালটা অনেক কষ্টের হয় তাদের জন্য কাউনের খাবার ভীষণ উপকারী।
* কাউনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করে, ইনফেকশন, হৃদরোগ, ক্যান্সার এবং ক্রনিক রোগের ঝুঁকি কমায়।
Collected

বর্গমূল মনে রাখার দারুণ কৌশল
30/01/2025

বর্গমূল মনে রাখার দারুণ কৌশল

21/12/2024

চলেন গুগলের একটা ম্যাজিক দেখাই!!!
Google Chrome ব্রাউজারে গিয়ে chicxulub শব্দটা লিখে সার্চ করুন!!
১-৩ সেকেন্ডের মাঝে দেখবেন আপনার ফোনের ডিসপ্লেতে উল্কাপিণ্ড উড়ে যাচ্ছে!!
ট্রাই করে কমেন্টে স্ক্রিনশট দিয়েন...☠️
Copied

ভারতের বিরুদ্ধে এমন বোল্ড স্টেইটমেন্ট আমি আগে কখনো দেখি নাই--প্রেস বিজ্ঞপ্তিঢাকা, ২৬ নভেম্বর ২০২৪আজ (২৬ নভেম্বর ২০২৪) ভা...
27/11/2024

ভারতের বিরুদ্ধে এমন বোল্ড স্টেইটমেন্ট আমি আগে কখনো দেখি নাই--

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

ঢাকা, ২৬ নভেম্বর ২০২৪

আজ (২৬ নভেম্বর ২০২৪) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে প্রদত্ত এক বিবৃতির প্রতি বাংলাদেশ সরকারের গভীর মনোযোগ আকর্ষিত হয়েছে।

বাংলাদেশ সরকার গভীর দুঃখ এবং মর্মবেদনার সঙ্গে লক্ষ্য করছে যে, শ্রী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারের বিষয়টি ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। শ্রী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে আনীত নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অথচ এমন বিভ্রান্তিকর বিবৃতি শুধু ঘটনা বিকৃত করে না, এটি দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার চেতনাকে ব্যাহত করে।

এ ধরনের বিবৃতি বাংলাদেশের বহুধর্মী ও বহুজাতিক সমাজে বিদ্যমান সম্প্রীতির চিত্রকে অস্বীকার করে। এটি বাংলাদেশের জনগণ এবং সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টা ও প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন হতে পারে না, যা সব ধর্মের মানুষের জন্য শান্তি ও সম্প্রীতি নিশ্চিত করতে নিবেদিত।

বাংলাদেশ সরকার দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অপরাধীদের বিচারহীনতার সংস্কৃতি চিরতরে নির্মূল করা জরুরি। এক্ষেত্রে, বাংলাদেশ সরকার ধর্মীয় সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘু নির্বিশেষে সকলের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ।

বাংলাদেশ পুনরায় স্মরণ করিয়ে দিতে চায় যে, প্রতিটি নাগরিকের—তার ধর্মীয় পরিচয় যা-ই হোক না কেন—ধর্ম পালনের, ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনের এবং স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকার রয়েছে। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং সকল নাগরিকের নিরাপত্তা বজায় রাখা সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার। গত মাসে দেশের সর্বত্র শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজার উদযাপন এর জীবন্ত উদাহরণ।

বাংলাদেশ সরকার আরও স্পষ্ট করে জানাতে চায় যে, দেশের বিচার ব্যবস্থা সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং কোনোভাবেই সরকার এর কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করে না। উল্লিখিত বিষয়টি বর্তমানে আদালতের এখতিয়ারে রয়েছে এবং এটি যথাযথ আইনগত প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই সমাধান হবে।

বাংলাদেশ সরকার দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় সর্বাত্মক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আজ বিকেলে চট্টগ্রামে অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের নির্মম হত্যাকাণ্ডে সরকার গভীর শোকাহত ও উদ্বিগ্ন। যে কোনো মূল্যে ধর্মীয় সম্প্রীতি অক্ষুণ্ণ রাখতে সংশ্লিষ্ট এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
Collected

🔴 কাঠের হিসাব কিভাবে করতে হয় এবং চেরাই কাঠ ও গোল কাঠ হিসাবের সহজ পদ্ধতিঃ-✅ কাঠের হিসাব:কাঠের হিসাব করা অনেক সহজ। কাঠ মাপ...
26/11/2024

🔴 কাঠের হিসাব কিভাবে করতে হয় এবং চেরাই কাঠ ও গোল কাঠ হিসাবের সহজ পদ্ধতিঃ-
✅ কাঠের হিসাব:
কাঠের হিসাব করা অনেক সহজ। কাঠ মাপার হিসাবকে অনেকে কঠিন মনে করে। কিন্ত কাঠ মাপার হিসাব একদম সহজ। শুধু কয়েকটি কথা মনে রাখলেই চলবে।
আপনি যদি কাঠের মাপ না জানেন তাহলে কাঠ ব্যবসায়ী আপনাকে ভুলভাল হিসাব দিয়ে আপার থেকে বেশি টাকা নিয়ে নিতে পারে। অনেক কাঠ ব্যবসায়ী এরকমটা করে থাকে।

ব্যবসায়ীরা এই চিটিং সহজেই করতে পারে, কারণ বেশিরভাগ মানুষ কাঠের হিসাব করতে পারেনা। তাই কাঠ ব্যবসায়ী যত কিউবিক ফিট (কেবি) বলে, মানুষ বিশ্বাস করে তত কিউবিক ফিট (কেবি) টাকা দিয়ে আসে।

ব্যবসায়ীরা সাধারণ মানুষের এই অজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আপনি যদি একটু সচেতন হতেন তাহলে আপনার থেকে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিতে পারত না।

জেনে নিন কীভাবে চেরাই কাঠ ও গোল কাঠের হিসাব করতে হয়।

✅চেরাই কাঠের মাপ:
চেরাই কাঠ পরিমাপ করা একদম সহজ। আপনি দুইটি সূত্র মুখস্ত রাখতে পারলেই চেরাই কাঠ ও গোল কাঠের হিসাব করতে পারবেন।

চেরাই কাঠ পরিমাপের জন্য একটি সূত্র এবং গোল কাঠ পরিমাপ করার জন্য একটি সূত্র।

নিম্নের ১ম ছবিটি লক্ষ্য করুন এবং বুঝার চেষ্টা করুন। এখানে দৈর্ঘ্য ১০০ ফিট, প্রস্থ ১৪ ইঞ্চি এবং উচ্চতা বা পুরত্ব ২ ইঞ্চি রয়েছে। এখন সবগুলোকে গুণ করে ১৪৪ দিয়ে ভাগ করলে বের হয়ে যাবে এখানে কত কিউবিক ফুট বা ঘন ফুট কাঠ রয়েছে। এখন আসুন বাস্তবে হিসেব করে দেখি এখানে কতটুকু কাঠ রয়েছে।

(একটি জিনিস সব সময় মনে রাখতে হবে, দৈর্ঘ্য হবে ফুটে এবং প্রস্থ ও উচ্চতা বা পুরত্ব হবে ইঞ্চিতে, না হয় হিসেব মিলবে না।)

সূত্র: (দৈর্ঘ্য × প্রস্থ × পুরত্ব ) ÷ ১৪৪
= কিউবিক ফিট বা কেবি
সূত্রমতে (দৈর্ঘ্য ১০০ ফুট × প্রস্থ ১৪ ইঞ্চি × পুরত্ব ২ ইঞ্চি ) ÷ ১৪৪
= (১০০ × ১৪ × ২) ÷ ১৪৪
= ২৮০০ ÷ ১৪৪

২৮০০ কে ১৪৪ দিয়ে ভাগ করলে হয় ১৯.৪৪ কিউবিক ফিট বা কেবি প্রায়।
অর্থাৎ ১৯.৪৪ কিউবিক ফিট বা কেবি কাঠ রয়েছে এখানে।

✅গোল কাঠের হিসাব:
নিম্নে ২য় ছবিটি লক্ষ্য করুন এবং বুঝার চেষ্টা করুন।
এখানেও একটি জিনিসি মনে রাখতে হবে, দৈর্ঘ্য হবে ফুটে এবং গোল বেড় হবে ইঞ্চিতে।
সূত্র: ( দৈর্ঘ্য × গোলবেড়ি × গোলবেড়ি) ÷ ২৩০৪ = কিউবিক ফিট বা কেবি
সূত্রমতে: (দৈর্ঘ্য ৪০ ফুট × ২০ ইঞ্চি × ২০ ইঞ্চি) ÷ ২৩০৪
বা ( ৪০ × ২০ × ২০ ) ÷ ২৩০৪
বা ১৬,০০০ ÷ ২৩০৪
এবার ১৬,০০০ কে ২৩০৪ দিয়ে ভাগ করলে হয় ৬.৯৪ ।
অর্থাৎ ৬.৯৪ কিউবিক ফিট বা কেবি কাঠ আছে

বি:দ্র: গাছ যদি একদিকে মোটা ও অপরদিকে চিকন হয় তাহলে মাঝামাঝি গোলবেড়ির মাপ নিতে হবে বা মোটা অংশে একটি মাপ, মাঝে একটি মাপ এবং চিকন অংশে একটি মাপ নিয়ে গড় করতে হবে।

যেমন: মোটা অংশ ৪০ ইঞ্চি, মাঝে ২০ ইঞ্চি এবং চিকন অংশ ১৪ ইঞ্চি মোট ৭৪ ইঞ্চি। অর্থাৎ ৪০+২০+১৪ = ৭৪ ইঞ্চি। এই ৭৪ ইঞ্চিকে ৩ দিয়ে ভাগ করে গড় বেড় করলে হবে ২৪.৬৭ ইঞ্চি।
Collected

Collected image and Info
#

Address


Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Dr S. M. Masum Ferdous Dinar posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Practice

Send a message to Dr S. M. Masum Ferdous Dinar:

Shortcuts

  • Address
  • Alerts
  • Contact The Practice
  • Claim ownership or report listing
  • Want your practice to be the top-listed Clinic?

Share