01/05/2025
পেহেলগামের আইকোনিক ছবির পাশাপাশি এই ছবিটাও দেখা উচিত। এই গল্পও জানা দরকার।
ছবির মায়ের নাম সায়রা, সায়রার কোলে তার শিশু সন্তান আজলান। আজলান নয় মাস মায়ের পেটে বড়ো হয়েছে, বাকি নয় মাস মায়ের কোলে। বাবা ফারহান ইলেক্ট্রেশিয়ান। আজলান পরিবারের প্রথম ও একমাত্র সন্তান। সায়রা ও ফারহানের বিয়েটা প্রেমের। সন্তানসহ চূড়ান্ত সুখের জীবন কাটাচ্ছিল তারা। বিনা নোটিশে সন্তান জড়িয়ে ধরে কাঁদবার মতো কিছুই ঘটেনি সায়রার জীবনে। পরিবারে দৃশ্যত কোনো জটিলতা নেই। অসুখ নেই, মৃত্যু নেই, দুর্যোগ নেই।
তবে, একটা “কিন্তু” আছে। কিন্তু’র নাম সবুজ-নীল। দুইটা রঙের ব্যবধান কত যে ভয়ানক হতে পারে, অমানবিকতার সর্বোচ্চ সীমা ছাড়িয়ে যেতে পারে, নরক নামিয়ে দিতে পারে সুখী শান্ত পরিবারে; সেটার সাক্ষী হয়েছে সায়রা-ফারহান দম্পত্তি। স্বামী-স্ত্রীতে কলহ অনুপস্থিত, ঝামেলা নেই দুই পরিবারেও। তবুও আচমকা একদিন তারা নোটিশ পেল, ফারহান ও সায়রাকে এখন থেকে আলাদা থাকতে হবে।
প্রেম জটিল, পৃথিবী জটিল তারচেয়েও বেশি। দুই জটিলতার কাঁটাতার পেরিয়ে দুনিয়ায় অতি অল্প সংখ্যক ভাগ্যবান ভালোবাসার মানুষ নিয়ে ঘর বাঁধতে পারে। সায়রা-ফারহান শুধু ভাগ্যবান নয়, সাহসীও। তাই করাচির মেয়ে সায়রা ঘর তো বটেই, দেশ ছেড়ে এসে কবুল করেছিল দিল্লীর ছেলে ফারহানকে। সায়রা ফারহান একে অপরকে কবুল করেছে ঠিকই কিন্তু ভারত-পাকিস্তান তো আর পরস্পরকে কবুল বলেনি! ফলে, তারা এক ঘরে এক বিছানায় বসবাস করলেও তাদের চামড়ায় চিরস্থায়ীভাবে তখনো পোস্টারের মতো সেঁটে আছে দুই পরিচয়...নীল পাসপোর্টের ভারতীয় এবং সবুজ পাসপোর্টের পাকিস্তানি। এই দুই রঙ খালি চোখে দেখা যায় না। বিদ্বেষের লেজার লাইটে রঙগুলো ধরা পড়ে সময়ে সময়ে।
লেজার জ্বালিয়ে দিল পেহেলগাম। ২৫ জন ভারতীয় খুন হলেন ভূ-স্বর্গের মাটিতে। তাদের আরেক পরিচয়, তারা সকলেই হিন্দু। কাশ্মীরি এক মুসলমান যুবক প্রাণ হারালেন পর্যটক বাঁচাতে গিয়ে, পশ্চিম বাংলার এক মুসলিম জওয়ানের প্রাণ গেল অভিযানে। তাদের গল্প ও নাম ব্লার করে দিল মিডিয়া। মার্কেটে এখন সবচেয়ে দামী পণ্যের নাম ‘ঘৃণা’। ঘৃণা বিক্রি করতে হলে এসব ব্লার করা লাগে।
ভারতের মাটিতে থাকা সকল পাকিস্তানিকে পত্রপাট বিদায় জানালো হলো। পাকিস্তান খেলায় পিছিয়ে থাকবে কেন? তারাও জানিয়ে দিল, হিন্দুস্থানি ওয়াপাস যাও। দিল্লীতে প্রেমের সংসার করা ফারহান ও সায়রার দুয়ারে চলে গেল লাল নোটিশ। সায়রাকে তার পাকিস্তানি সবুজ পাসপোর্টসহ বিদায় নিতে হবে ভারত ভূমি থেকে।
ভাবুন তো, সন্তানসমেত দুইটা মানুষ শান্তি ও স্বস্তির সংসার করছেন। আচমকা কেউ একটা কাগজ নিয়ে বলল, তোমাদের বিচ্ছেদ হয়েছে। তোমরা আলাদা হও। চোখের সামনে থেকে দূরে যাও। দূরে, দূরে, অনেক দূরে। একদম ভিন্ন দেশে। সহ্য করা যেত এমন খবর?
অবশ্য সায়রা ও ফরহান তখনো জানতো না, তাদের জন্য আসল বিপদ ও দুঃখ সামনে অপেক্ষা করছে। এ তো শুধু সিনেমার ট্রেইলার!
স্যুটকেসে মা ও শিশু সন্তাদের কাপড় এবং বুকে এক পাহাড় কষ্ট-অভিমান নিয়ে দিল্লী থেকে পাঞ্জাবের ওয়াগাহ বর্ডার ক্রসিং এ আসল পরিবারটা। বিদায়ী আলিঙ্গন করল স্বামী স্ত্রী। একজন সান্ত্বনা দিল অন্য জনকে। বলল, “আবার শীঘ্রই দেখা হবে।”
আজলানকে কোলে নিয়ে ক্রসিং এ পা দিল সায়রা। গার্ডরা তার পাকিস্তানী পাসপোর্ট চেক করল। বের করতে বলল শিশুর পাসপোর্ট। দুনিয়াতে নরক নেমে আসল তখনই। আজলানের পাসপোর্টের রঙ যে নীল! আজলান জন্মসূত্রে ভারতীয়। দুই দেশের তালাক হয়েছে। অতএব পাকিস্তানে তার যাওয়া নিষেধ।
তরুণ ইলেক্ট্রেশিয়ান ফারহান, অল্প বয়সী গৃহবধূ সায়রা এবং অবোধ নয় মাসের শিশু সন্তান আজলান তখন জমে গেছে। তারা অবাক বিস্ময়ে আবিষ্কার করেছে, তারা আসলে তাদের না। স্বামী স্ত্রীর না, স্ত্রী স্বামীর না এমনকি বাচ্চাটাও নয় আপন মায়ের। তাদের মা-বাবা একটাই। দেশ। তারা ভারতের, তারা পাকিস্তানের। পাকিস্তানি মা ভারতে নিষিদ্ধ, ভারতীর শিশু নিষিদ্ধ পাকিস্তানে।
অসহ্যকর এক বিচ্ছেদ রচিত হলো ওয়াগাহাতে। গার্ডদের হাতে পায়ে ধরে করা আকুতি বিফলে গেল। পুত্রকে চোখের জল চুমুতে স্নান করিয়ে বিদায় নিতে হলো মাকে। ফারহান তখন সন্তানকে ফিডার দিয়ে ভুলিয়ে রাখতে ব্যস্ত। কিন্তু ভুলিয়ে রাখা কি এতই সহজ? নয় মাসের শিশু রাজনীতি না বুঝুক, মা তো বুঝে। সে বুঝতে পারছিল মায়ের গন্ধ ক্রমশ দূরে সরে যাচ্ছে।
দেড় ঘন্টা পর গার্ডরা ডাক দেয় ফারহানের নাম ধরে। জানায়, সন্তানসহ ফারহানকে ক্রসিং এর ভেতরে যেতে হবে। অবশেষে বুকটা হালকা হয় ফারহানের। সে ভাবে, যাক শেষ মুহুর্তে গার্ডদের নিশ্চয়ই মায়া হয়েছে। কোথাও কেউ বুঝতে পেরেছে, দুনিয়ার কোনো আইন, নিয়ম, নোটিশ জোর জবস্তি করে মা ও সন্তানকে আলাদা করতে পারে না।
ফারহানের ভুল ভাঙ্গে দ্রুত। ক্রসিং এর ভেতরে গিয়ে দেখে, অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে সায়রা। সন্তানশোক নিতে পারেনি মস্তিষ্ক। ফারহানকে ডাকা হয়েছে কিঞ্চিৎ মানবতার খাতিরে, যেন সায়রা আরেকজন বাচ্চাকে কোলে নেবার সুযোগ পায়। বড়ো কারণ, সায়রার জ্ঞান তো ফেরানো লাগবে।
দ্বিতীয় দফায় বিচ্ছেদ হয় মা-ছেলের, স্বামী ও স্ত্রীর। তারা আর জানে না, কবে তাদের আবার দেখা হবে। কবে মা সন্তানকে জড়িয়ে ধরার সুযোগ পাবে। মা ও মায়ের বুকের দুধবিহীন আজলানের বাকি সময় কেমন কাটবে তাও অজানা।
ওয়াগাহ বর্ডার। ঐ যে যেখানে ভারত ও পাকিস্তানের জওয়ানরা পা উঁচু করে গ্যালারিভর্তি দর্শকের সামনে কসরত করে প্রতিদিন। এখানে গত কয়েকদিনে এমন অমানবিক ঘটনা ঘটেছে দেদারসে।
ওড়িশ্যার হালিমা বেগমের সংসার সায়রার মতো এত অল্প দিনের নয়। করাচি থেকে এসেছেন তিনিও। তবে তাঁর কবুল বলার হয়ে গেছে পঁচিশ বছর। দুই পুত্র তাগড়া জোয়ান। স্বামী জীবিত নন। ২৫ বছরেও তাঁকে কবুল করেনি ভারত। “ভারত ছাড়” নোটিশ গেছে তাঁর দরজাতেও। ওড়িশ্যা থেকে ওয়াগাহ পর্যন্ত আসতে তাঁর সময় লেগেছে দুইদিন। বর্ডার ক্রস করে করাচী আরো একদিনের যাত্রা। পঞ্চাশ বছরের এই নারী কোনোদিন একা ভ্রমণ করেননি। ২৫ বছরের ব্যবধানে করাচীর সকলের সঙ্গে ব্যবধান হয়ে গেছে আজীবনের। তিনি আর কাউকে চেনেন না, তাঁকেও কেউ চেনে না।
তাঁর দুই পুত্র সান্ত্বনা দিয়ে বলেছে, তারা নিয়ে যাবে করাচী। মাকে নিরাপদ স্থানে রেখে তবেই ফিরবে। কিন্তু বর্ডারে এসে তারা জানতে পারল, নয় মাসের শিশু আজলানের সঙ্গে তাদের বিশেষ পার্থক্য নেই। তাদের নীল ভারতীয় পাসপোর্ট আটকে গেল পাকিস্তানের বেড়ায়। মা সন্তানের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটল এখানেও। হৃদয়বিদীর্ণ হবার জায়গাটা শুধু ভিন্ন। সায়রা অজ্ঞান হয়েছিল বর্ডারের এপাশে ফেলে যাওয়া অবোধ সন্তানের দুশ্চিন্তায়, মুসাইব ও জুবাইর নামের এই দুই ভাই অজ্ঞানপ্রায় হলো বর্ডারের ওপাশে ফেলে দেয়া অসহায় মায়ের ভাবনায়।
আরো কত গল্প। ভারতীয় নারী রুকশার বিয়ে করেছিল পাকিস্তানিকে। চার সন্তানসহ তারা আত্মীয়ের বিয়ের জন্য বেড়াতে এসেছিল ভারত। পাকিস্তানী সবুজ সন্তানেরা কাঁদতে কাঁদতে বিদায় নিয়েছে বিয়ের অনুষ্ঠানের আগেই। নীল মা আটকে গেছে জাতীয়তাবাদের ছাকনিতে। কর্ণাটকের রামশার তিন সন্তানের জুটেছে একই ভাগ্য। ঘাটলে বের হবে এমন অনেক অনেক গল্প।
স্বামীর লাশের পাশে বসে থাকা স্তব্ধ স্ত্রীর আইকোনিক ছবিটা দেখে মর্মামত হয়েছিল পুরো ভারত। বাংলাদেশে এখন যে কোনো মাপকাঠিতে ভারত বিরোধিতা সবচেয়ে বেশি। তাও আমার নিউজফিডে অন্তত শতবার দেখেছি ছবিটা। জগতের প্রত্যেকটা স্বভাবিক চিন্তার মানুষ এমন ছবি দেখে মর্মাহত হতে বাধ্য। আমিও থমকে গিয়েছিলাম সেদিন।
পেহেলগামে প্রাণ হারানো মানুষগুলো প্রাণ হারানোর আগে জানতো না তাদের অপরাধ কই। ওয়াগাহতে পরিবার, সন্তান ও মায়ের সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়া মানুষজনও ঠিকঠাক বুঝে উঠতে পারছে না তারা কোথায় দোষ করেছে। জীবন হারানোর চেয়ে মর্মান্তিক কিছু নেই। তবুও পেহেলগ্রামের ভিক্টিকরা অন্তত সারা দুনিয়ার সহানুভূতি পেয়েছে। লাশ পেয়েছে ফুল, আত্মীয় পেয়েছে সহানুভূতি। ওয়াগাহ’র মানুষজনের ভাগ্যে ফুল নেই, সহানুভূতি নেই। কিছুই নেই।
একটা বিখ্যাত গান আছে না? “পৃথিবীটা নাকি ছোটো হতে হতে...ড্রয়িং রুম রাখা বোকা বাক্সতে বন্দি”...পৃথিবী আসলেই ছোটো হচ্ছে। এখন আর ড্রয়িং রুমের বোকা বাক্স টেলিভিশনে নয়, বন্দি হয়েছে সাড়ে ছয় ইঞ্চি মোবাইল ফোনে। এই ঘৃণা বাক্স মানুষের জগত সীমাবদ্ধ করছে, ছোটো করে দিচ্ছে মন। বিভাজনের মাত্রা ক্ষুদ্রতর হচ্ছে ক্রমশ। এতটাই ক্ষুদ্র, আইন করে আলাদা করা হচ্ছে মা ও সন্তান।
যুদ্ধের গন্ধ নাকে আসলেই মানুষ এখন আনন্দ পায়। ধরেই নেয়, যুদ্ধ মানেই তার জয় নিশ্চিত। যুদ্ধ লাগলেই প্রতিপক্ষ ভীষণ শায়েস্তা হবে। ইন্টারনেট জুড়ে উৎসব। ভারত-পাকিস্তান এমনকি বাংলাদেশের বিভিন্ন পেজ ঘুরলে মনে হয়, ক্রিকেট বা ফুটবল বিশ্বকাপের চেয়েও আনন্দদায়ক উত্তেজনাকর ইভেন্ট হলো যুদ্ধ।
যুদ্ধ শব্দটা দেখলেই আমার চোখে ভাসে অনেকগুলো শিশুর ছবি। বেশ কিছু বয়স্ক মানুষের অবয়ব। আমার কানে আসে শিশুর কান্না, মায়ের আর্তনাদ। আমার ভয় লাগে। মা বিহীন আজলান অথবা স্বামী সন্তানহীন হালিমা কীভাবে টিকে থাকবে, কল্পনা করে অশান্তি লাগে। বিনা গুলিতেই মানুষ পরিবার ও সন্তান হারানো শুরু করেছে। যুদ্ধ শুরু হলে কী হবে?
ফারহান ও সায়রা যখন আজলানকে জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করছে, তখন ফারহানের মা আয়েশা সে দৃশ্যের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন, “ইয়ে সাব পেয়ার ক্যা মারি হ্যায়”। সোজা বাংলায় এরা সব প্রেমের মরা।
তিনি আরো বলেন, “পাতাল ম্যায় পেয়ার কার না, পার পাকিস্তান ম্যায় কাভি মাত কার না।”
বলিউড এক সময় “ম্যায় হু না”র মতো মুভি বানিয়েছিল। ঘৃণার বদলে প্রেমের আহবান জানানো হয়েছিল তাতে। বছর দশেক আগেও বলিউড বানিয়েছে “বাজরাংগী ভাইজান’ এর মতো অসাধারণ এক সিনেমা। হনুমান ভক্ত ভারতীয় যুবকের পাকিস্তানি এক শিশুর প্রতি দরদের আখ্যান। এখন এসব অতীত। বলিউড হয়ে গেছে ঘৃণা প্রকাশের বম্ব। পাকিস্তানি কোনো কিছু দেখি না। তারা ঘৃণার বদলে ভালোবাসার গোলাপ ছড়াবে এটা পাগল হলেও বিশ্বাসযোগ্য নয়।
আয়েশা বেগমের মতো পাকিস্তানের অনেকেও হয়তো এখন বলছে, নরকে গিয়ে প্রেম করো কিন্তু ভারতে নয়। ধীরে ধীরে এসব চিন্তা ও আহবান ছড়িয়ে যাবে চারপাশে। ভালোবাসার আদান প্রদান বন্ধ হবে চিরস্থায়ীভাবে। বাজরাঙ্গি একটা শিশুকে পরিবারের কাছে দেবার জন্য অবৈধভাবে বর্ডার ক্রস করে তালি পেয়েছে। এখন বৈধভাবে শিশুদেরকে পরিবার থেকে করা হচ্ছে বিচ্ছিন্ন।
এখানে দোষ ভারতের নাকি পাকিস্তানের, মুসলিমের নাকি হিন্দুর, মোদির নাকি নওয়াজের...এসব ভিন্ন আলোচনা। সেদিকে যেতে ইচ্ছে করছে না। আমি শুধু জানি, আজলান-সায়রা-হালিমা এদের কোনো দোষ নেই। কোথাও ত্রুটি নেই। তাদের ওপর অবিচার হয়েছে।
এই অবিচারের শোধ প্রকৃতি ফিরিয়ে দেবে। মানুষ খুন করে জেলে গেলেও মা দুধের শিশু সঙ্গে রাখতে পারে। সায়রার কোনো অপরাধ ছিল না। এক কণা ত্রুটি নেই, এক বিন্দু ভুল নেই। ভুল একটাই, ভিনদেশীকে ভালোবাসা এবং নিয়ম ও আইন মেনে বিয়ে করা।
ভালোবাসার অপরাধে দুইটা দেশ রীতিমতো আইন করে তার সন্তান কেড়ে নিয়েছে। প্রেমের অপরাধে হালিমাকে ফেলে দিয়েছে পাঞ্জাবের রাস্তায়। মানুষ এসব সেলিব্রেট করছে অনলাইনে।
যেখানে প্রেমের দায়ে আইন করে সন্তান কেড়ে নেয়া হয়, মাকে ছুঁড়ে ফেলা হয় এবং গণ মানুষ এসব উদযাপন করে...সেটা শুধু অপরাধ থাকে না। এটা মহাপাপ। এত বড়ো পাপের দায় মেটাতে হবে না?
দায় অবশ্যই মিটবে। দায় শোধ হবে কাশ্মিরে গুলিতে, মুম্বাইয়ে হামলায়, পেশায়ার-বেলুচে গাড়িবোমায় নয়তো ইউপি-গুজরাটে দাংগা বুলডোজারে। সমস্যা হলো, আমাদের মতো মানুষকে কষ্ট পেতে হবে প্রতিবার। প্রত্যেকটা ঘটনায় আমরা মর্মাহত হবো, প্রত্যেকটা কান্না আমাদেরকেই ছুঁয়ে যাবে।
মানুষের মন নিয়ে জন্মালে এই যন্ত্রণা বোধহয় আজীবন নিতে হয়।