
16/07/2022
বেশি পরিমাণে প্রোটিন বা আমিষ খেলে অথবা অ্যালকোহল জাতীয় খাবার বেশি খেলে দেহে পিউরিন নামক নন এসেনসিয়াল এমাইনো অ্যাসিড তৈরি হয় । এই পিউরিন থেকেই ইউরিক অ্যাসিড তৈরি হয় । এই ইউরিক অ্যাসিড প্রথমে রক্তে চলে যায় । সেখান থেকে কিডনির মাধ্যমে প্রস্রাবের সঙ্গে দেহ থেকে বের হয়ে যায় । রক্তে যদি ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বৃদ্ধি পায় এই অবস্থাকে বলা হয় হাইপারইউরিসেমিয়া ।
আমাদের প্রতিদিনের খাবারের মধ্যে কিছু আছে যেগুলোতে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেশি । আবার কিছু পুষ্টিকর খাবার আছে যেগুলো ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে ওষুধের মত কাজ করে ।
♦ যেসব খাবার খাবেন না : ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গেলে নিজের খাদ্য তালিকায় প্রোটিনের পরিমাণ নিয়ন্ত্রিত করুন । ডাল, দুধ ইত্যাদি খাবার এড়িয়ে চলুন । আবার দেশী ছোলা, রাজমা, কাবুলি ছোলা, মটর খাওয়া উচিত নয় । এ ছাড়াও ব্রকোলি, মাশরুম, রেড মিট, মিষ্টি ফল, পেস্ট্রি, বার্গার খাবেন না ।
কৃত্রিম রং, চিনি বা কর্ন সিরাপ দেওয়া খাবার একেবারে বন্ধ করা উচিত । কোলা জাতীয় পানীয়, রং দেওয়া জেলি, জ্যাম, সিরাপ, কৌট বন্দি ফ্রুট জ্যুস খাওয়া চলবে না । স্মোকড ও ক্যানড ফুড খাওয়া চলবে না । আচার, চানাচুর, নোনা মাছ খাওয়া বন্ধ রাখতে হবে ।
মাছ, মাংস প্রোটিনের গুরুত্বপূর্ণ উৎস । আমিষ খাবারে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন পাওয়া যায় । তাই মাছ, মাংসও খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিন । অতিরিক্ত পরিমাণে প্রোটিন কিডনিতে বিপরীত প্রভাব বিস্তার করে । কারণ এর ফলে ইউরিনের মাধ্যমে প্রয়োজনাতিরিক্ত মাত্রায় ক্যালশিয়াম শরীর থেকে নির্গত হয়ে যায় । অন্য দিকে প্রোটিন যুক্ত খাবার দাবারে উপস্থিত পিউরিনের কারণে শরীরের এর পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং স্টোন তৈরি হতে পারে ।
কিডনি স্টোনের সমস্যা হলে খাবারে লবণের পরিমাণ কমিয়ে দিন । টমেটোর রস, প্যাকেটজাত খাবার খাবেন না । প্যাকেটজাত খাবারে অধিক পরিমাণে লবণ থাকে ।
★ নিয়ন্ত্রণ করবেন যেভাবে : ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে এবং কিডনিতে স্টোনের সমস্যা দেখা দিলে অধিক পরিমাণে পানি পান করুন । প্রতিদিন আড়াই থেকে তিন লিটার পানি পান করবেন । পানি দেহের যে কোনো ধরনের বিষকে দূর করতে সহায়তা করে । এ ক্ষেত্রে ইউরিক এসিড নিয়ন্ত্রণেও কার্যকর পানি । ফলে ইউরিক অ্যাসিডের ঘনত্ব কমে এবং তা প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায় ।
♥ কী কী খাবেন ?
ব্ল্যাক চেরির জুস ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ কম করে । কিডনি স্টোনের সমস্যা থাকলে এই জুস পান করে উপকার পেতে পারেন । ব্ল্যাক চেরিতে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটারি গুণ বর্তমান থাকে, যা ইউরিক অ্যাসিড কম করতে সাহায্য করে ।
অ্যাপেল সিডার ভিনেগারও ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ কম করতে সাহায্য করে । এতে উপস্থিত অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটারি গুণ শরীরে ক্ষারীয় অ্যাসিডের ভারসাম্য বজায় রাখে ।
অধিক আঁশযুক্ত খাবার যেমন- সবুজ শাকসবজি এবং ফলমূল । এই আঁশযুক্ত খাবার শরীর থেকে ইউরিক এসিড মল আকারে বের করে দেয় ।
চর্বিহীন মাংস খেতে হবে । এ ক্ষেত্রে মুরগির মাংস উত্তম । তবে চামড়া এবং পাখনা খাওয়া যাবে না । কারণ এতে প্রচুর চর্বি থাকে । তাছাড়া পরিমাণ মতো মাছ এবং কুসুম ছাড়া ডিম খাওয়া যাবে । ফ্যাট ছাড়া দুধ বা স্কিম মিল্কও খেতে পারবেন ।
বেশি বেশি টক ফল বা ভিটামিন-সি জাতীয় খাবার খেতে হবে । গ্রিন টি ইউরিক এসিড কমাতে সহায়তা করে । তাই ইউরিক এসিড কমাতে নিয়মিত গ্রিন টি পান করতে পারেন ।
ওজন স্বাভাবিক রাখতে সপ্তাহে ১৫০ মিনিট ব্যায়াম করুন ।
সূত্র : ঢাকা টাইমস