
22/08/2025
হৃদরোগ এখন আর বয়স্কদের সমস্যা নয়, এটি যেকোনো বয়সের মানুষের জন্য একটি বড় ঝুঁকি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (BBS, ২০২২) তথ্য অনুযায়ী, দেশে মোট মৃত্যুর প্রায় ১৭.৪৫% হার্ট অ্যাটাকজনিত কারণে ঘটে। আবার Resolve to Save Lives (২০২৩) এর তথ্য অনুযায়ী, দেশের মোট মৃত্যুর প্রায় ৩৪%-এর কারণ হৃদরোগজনিত সমস্যা। এই ঝুঁকি কমাতে জীবনযাপনে কিছু পরিবর্তন আনা জরুরি।
■ ঝুঁকিতে কারা ?
যারা উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় ভুগছেন, যারা ধূমপান করেন এবং অলস জীবনযাপন করেন, তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি বেশি। নিয়মিত ফাস্টফুড, তৈলাক্ত ও অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার খেলে এই ঝুঁকি আরও বাড়ে। অপর্যাপ্ত ঘুম এবং অতিরিক্ত মানসিক চাপও হৃদরোগের অন্যতম কারণ।
হৃদরোগের লক্ষণগুলো সম্পর্কে সচেতন হোন
বুকে বা বাম পাশে তীব্র ব্যথা, বুকে চাপ লাগা বা জ্বালাপোড়া, শ্বাসকষ্ট, অতিরিক্ত ঘাম, মাথা ঘোরা এবং বমি ভাব—এগুলো হার্ট অ্যাটাকের সাধারণ লক্ষণ। অনেক সময় ব্যথা ঘাড় বা কাঁধেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
■ হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখার উপায় ?
হৃদরোগ প্রতিরোধে খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাপনে কিছু সাধারণ পরিবর্তন আনা যেতে পারে:
* খাবারের পরিবর্তন: সাদা ভাতের পরিবর্তে ব্রাউন রাইস বা লাল চাল বেছে নিন, যা ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। পরিশোধিত তেলের বদলে এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল বা সানফ্লাওয়ার অয়েল ব্যবহার করুন। রেড মিটের পরিবর্তে চামড়া ছাড়া মুরগির মাংস বা সামুদ্রিক মাছ খান, যা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের ভালো উৎস। অতিরিক্ত লবণ, চিনি এবং তৈলাক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। স্ন্যাকস হিসেবে বাদাম, সিদ্ধ ছোলা, বা ফলমূল খেতে পারেন।
* নিয়মিত ব্যায়াম: প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা বা ব্যায়াম করলে হৃদরোগের ঝুঁকি ২৫–৩০% পর্যন্ত কমে যেতে পারে।
* পর্যাপ্ত ঘুম: নিয়মিত ৬-৮ ঘণ্টা ঘুমানো জরুরি। পর্যাপ্ত ঘুম মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে, যা হার্টের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
* মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ: স্ট্রেস কমাতে যোগব্যায়াম, মেডিটেশন বা পছন্দের কোনো কাজ করতে পারেন।
মনে রাখবেন, ছোট ছোট পরিবর্তনই আপনার হৃদযন্ত্রকে সুস্থ ও সচল রাখতে পারে।